পরবাসে গত দু বছরে অগুনতি ভালো গল্প এবং দুর্দান্ত কিছু রম্যরচনা পড়েছি (বিশেষ করে সমরেন্দ্র নারায়ণ রায় ও রঞ্জন রায়ের)। কিন্তু আমি মূলত উপন্যাসের পাঠক। সম্প্রতি যে দুটো উপন্যাস পরবাসে ধারাবাহিকভাবে বেরিয়ে শেষ হয়েছে তাদের নিয়ে এই চিঠি।
শাম্ভবী ঘোষের কোথাও জীবন আছে অনেক দিন ধরেই পড়ছিলাম। অনেকগুলি তরুণ বয়সের চরিত্র নিয়ে লেখা এই উপন্যাস কিছুক্ষণের জন্য পাঠককেও তার ইস্কুল-কলেজের দিনে ফিরিয়ে দেবে। নানা রঙ ও স্বাদের ঘটনার মধ্যে দিয়ে লেখাটি পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করে। কখনোই বোরিং মনে হয়নি। সংলাপ এই লেখার প্রাণ - তা এত সবল যে মনে হয় চলচ্চিত্র দেখছি! খুবই ভালো লেগেছে।
সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের (সম্ভবত প্রথম) উপন্যাস পরিক্রমার প্রথম দুটি বা তিনটি পরিচ্ছেদ প্রকাশের আগে প্রিভিউ করার সৌভাগ্য হয়েছিল। ঘটনা আর চরিত্র দুই-ই জোরদার মনে হয়েছিল তখন এবং আশা করেছিলাম বাকি অংশ শীগ্গিরই পড়তে পারা যাবে। উপন্যাসটা শেষ পর্যন্ত গোয়েন্দা গল্প দাঁড়াবে, না কি সেটা একটা শহর আর সময়ের বিচিত্র চরিত্রদের সঙ্গে সাধু-অসাধু বিচার না করে আমাদের পরিচয় করাতে চলেছে - সে সব তখনো বোঝা যায়নি। এখন গোটা উপন্যাস পড়ার পর বুঝতে পারছি যে লেখক দুটোই করতে চেয়েছিলেন এবং সফল হয়েছেন। এই উপন্যাসের প্লটেও প্যাঁচ আছে যার জন্য শেষ পরিচ্ছেদ অবধি রহস্যের রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তগুলির আসায় বিরাম নেই। দময়ন্তী চরিত্র বোধহয় বাংলায় অভিনব। এরকম উপন্যাস পরবাসে আরো দেখতে চাই!
এই দুটি উপন্যাসেরই নামকরণ কীভাবে হল সেটা জানতে কৌতুহল হচ্ছে। কোথাও জীবন আছে - মিলান কুন্দেরার বই-এর নাম মনে পড়িয়ে দেয়। কিন্তু এই উপন্যাসের পক্ষে শব্দগুলো বেশি নিরাশাব্যঞ্জক শোনাচ্ছে না?
পরিক্রমা নাম কেন? কীসের পরিক্রমা?
ইন্দ্রনীল দাশগুপ্ত (২৯শে ডিসেম্বর, ২০২১; indranil...@hotmail...)
শাম্ভবী ঘোষের উত্তরঃ মতামত পাঠানোর জন্য ইন্দ্রনীলবাবুকে অজস্র ধন্যবাদ। আমার উপন্যাসের নামকরণ হয়েছে জীবনানন্দের 'পাখিরা' কবিতাটি থেকে। 'কোথাও জীবন আছে, জীবনের স্বাদ রহিয়াছে ...' এই পঙ্ক্তিটির উদ্ধৃতি দিয়েই উপন্যাস শেষ হয়। আমার কাছে কিন্তু এই কবিতাটি আশাব্যঞ্জকই মনে হয়েছে। কবিতাতে পরিযায়ী পাখিদের শীতের দেশ ছেড়ে উষ্ণতার দেশে যাত্রা করার কথা বলা হয়েছে -- সেখানে নীড় বেঁধে সন্তানের জন্ম দেবার আশা বুকে নিয়ে তারা উড়ে চলেছে। এক হিসেবে এই মেয়েরাও সেই পাখিদের মতোই এক সুদীর্ঘ যাত্রার শুরু করেছে, সেই জন্যেই 'কোথাও রয়েছে পড়ে শীত পিছে, আশ্বাসের কাছে তারা আসিয়াছে ...' এই লাইনটি দিয়েই উপন্যাস শেষ হচ্ছে। বস্তুত আমি এলিয়ট এবং জীবনানন্দের বিভিন্ন কবিতার পঙ্ক্তির উদ্ধৃতি দিয়েছি তাদের মনের আশা-নিরাশার দোলাচলের প্রতীক হিসেবেই। এলিয়টের অনেক কবিতাই হতাশাব্যঞ্জক, কিন্তু জীবনানন্দের কবিতার মধ্যে কঠিন জীবনবোধের সাথে মিশে আছে জীবনের প্রতি বিস্ময় এবং আকাঙ্ক্ষা।
সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের উত্তরঃ প্রথমেই ইন্দ্রনীলবাবুকে ধন্যবাদ জানাই। এই মতামতগুলো খুব উৎসাহ দেয়।
পরিক্রমার আভিধানিক অর্থ ভ্রমণ। এক শহর থেকে অন্য শহরে। এক জায়গায় থিতু হয়ে বসতে না বসতেই - চলো মুশাফির অন্য কোথা, অন্য কোনোখানে। প্রথম পর্ব লিখে শেষ করে মনে হয়েছিল, পরের পর্বে সময়ের টানে চরিত্ররা হয়তো বেলাগাঁওয়ের মধ্যবিত্ত পরিবেশ ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবে। পরিক্রমণ শব্দটার একটা অর্থ - চারদিকে ঘোরা। হয়তো তাদের কেউ বা সবাই একসময় কলকাতা ফিরে যাবে। ফিরে যেতে পারুক না পারুক প্রবাসী মাত্রেই ফেরার ইচ্ছেটা আজীবন মনের মধ্যে পুষে রাখে।
তাই পরিক্রমা।
অসাধারণ একটি গল্প যা সব বয়সী মানুষের উপযোগী।
শ.ম. শহীদ (২৩শে ডিসেম্বর, ২০২১; sbt...@gmail...)
খুব ভাল লাগল। বিশেষ করে বিমান ভ্রমনের বর্ণনা অপূর্ব।
নিখিল দত্ত (২০শে ডিসেম্বর, ২০২১; dutta...@yahoo...)
সুন্দর সাবলীল গল্প। মন ভরে যায়। সম্পূর্ণ বাস্তব। বিদেশে কৃতি ছাত্র শিক্ষককে সবসময় মনে রাখে, কিন্তু কিছু দিতে পারে না। অচিন্ত্য এই বিষয়ে লিখে তাদের মনোবাসনাকে প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে।
সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস (১২ই ডিসেম্বর, ২০২১; SCB...@GMAIL...)
ভারি সুন্দর লেখা। ভূগোলের প্রতি ভালোবাসাকে লেখক কাহিনীতে খুব সহজ ও সুন্দর করে প্রকাশ করেছেন, যা সত্যিই অসাধারণ!
শ্রীতমা (১১ই নভেম্বর, ২০২১; sritam...@gmail...)
একজন ভালো শিক্ষকের গুরুত্ব অপরিসীম। এই লেখাটি পড়ে সেটাই আবার বুঝলাম।
কোয়েল মজুমদার (২৮শে অক্টোবর, ২০২১; koyel...@gmail...)
এমন অভাবনীয় সুন্দর গল্প পড়লাম যে মন্তব্য না করে থাকা গেল না। শিক্ষক ছাত্রের সম্পর্ক নিয়ে একটা নজির গড়ে দিলেন গল্পকার অচিন্ত্য দাস মহাশয়। অশেষ ধন্যবাদ জানাই লেখক এবং পরবাস টিমকে।
স্বরূপ মণ্ডল (২৬শে অক্টোবর, ২০২১; bivar...@gmail...)
মুগ্ধ হয়েছি, কাহিনী বিন্যাসে, বক্তব্যে, উপস্থাপনায়।
সুপ্রতিম দত্ত (১২ই ডিসেম্বর, ২০২১; supratim...@gmail...)
চমৎকার লাগল। সত্যিই ভিতরকণিকার থেকে দূরে এমন কোনো জায়গা আছে!
লেখার শুরুতে অলংকরণটি ভারি মানানসই।
হীরক সেনগুপ্ত (১২ই ডিসেম্বর, ২০২১; hiraksengupta...@gmail...)
ভেতর অবধি কাঁপিয়ে দিলো। কয়েক মুহূর্ত চুপ করে বসে ছিলাম। খুব ভালো লাগলো লেখা টা।
কোয়েল মজুমদার (২৫শে অক্টোবর, ২০২১; koyel...@gmail...)
মোহাবিষ্ট হয়ে পড়ে গেলাম। তথ্য সমৃদ্ধ কিন্তু ভারী নয়, অসাধারণ লেগেছে। আর নতুন করে হৃষিকেশ মুখার্জীকে আবিষ্কার করলাম।
কোয়েল মজুমদার (২২শে নভেম্বর, ২০২১; koyelm...@gmail...)
চমৎকার কবিতা; কবিকে সাধুবাদ জানাই । তবে নবম লাইনে "জীবনের প্রান্তিক স্টেশনে" প্রত্যাশা করছিলুম।
দত্তাত্রেয় দত্ত (১৪ই নভেম্বর, ২০২১; dattatreya...@gmail...)
রম্য ইতিহাস শ্রেণীতে ফেলেছে পরবাস, কিন্তু লেখাটা প্রায় সবটুকুই ইতিহাসের। একটা নির্দিষ্ট কালপর্বে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে সমসাময়িক বিভিন্ন ঘটনা ও চরিত্র কিভাবে ঘটমান বর্তমানে ক্রিয়া করছে, সে জিনিস লেখনীর সীমায় ধরা চাট্টিখানি কথা নয়।
সামান্য একটু খুঁত আছে। শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের দারাশুকোর স্টাইলে চরিত্রগুলোর ডায়ালোগের ধারাবাহিকতা হোঁচট খেয়েছে তার আগে-পরে ইতিহাসের তথ্যের বর্ণনায়, আর সে তথ্য মোটেও হালকা ফুলকা ক্যাজুয়্যাল নয়। ফলে উপন্যাসে ডায়ালগের যে ভূমিকা, তা আর ততোটা বড়ো থাকে নি। কিন্তু সব মিলিয়ে লেখক যা নামিয়েছেন, ইতিহাসের আগ্রহী পাঠক বা এমনকি গবেষকও তাঁকে সলিড একখানা স্যাল্যুট না দিলে পাপের ভাগী হবে। হবেই, শিওর।
যা বললাম, তা মহাসিন্ধুর সব কটা পর্বের জন্যই প্রযোজ্য।
কৌশিক ঘোষ (৮ই নভেম্বর, ২০২১; ghosh...@gmail...)
টেক স্যাভি তো মোট্টে নই। তায় আবার আর্টসের ছাত্র। ছেলে বলে দিলো বলে জানলাম এফ্টিপি মানে ফাইল ট্রান্সফার প্রোটোকল।
অন্যত্র একজন একটা লিঙ্ক দিয়েছেন, সে লিঙ্কের সৌজন্যে লেখাটা পড়ার সুযোগ হলো। আমার মতো নেট-আনাড়ির যখন ভালো লেগেছে, তখন এ লেখা অবশ্যই উতরেছে বলা যায়। ইন্টারনেটের প্রস্তর যুগে 'পরবাসী'-রা কেমন করে চাকা আবিষ্কার করলো, আগুন জ্বালাতে শিখলো... রীতিমতো উপভোগ্য।
গোটা ব্যাপারটাই হয়ে যেতে পারতো আইডিজির টেলিস্কোপ, কিছু পাগল স্রেফ প্যাশনের ভরসায় লেন্স বানিয়ে নতুন করে টেলিস্কোপ তৈরি করলো, সে ইতিহাসের বর্ণনা... দাঁড়ান, ভেবে নি, হ্যাঁ, একশোয় একশো পাবার যোগ্য।
কৌশিক ঘোষ (৭ই নভেম্বর, ২০২১; ghosh...@gmail...)
খুব ভালো লাগলো। নয়ের দশকের প্রথম দিকের সব গল্প মনে পড়ে গেল।
সৌম্য দাশগুপ্ত (৭ই নভেম্বর, ২০২১; shou...@gmail...)
বাঃ। পরবাসের ইতিহাস সম্পর্কে এইরকমেরই একটা লেখা চাইছিলাম। আমি সমীরকে (-দা আর যোগ করলাম না, আমার থেকে উনি বয়েসে ছোটই) এ নিয়ে কতবার উত্যক্ত করেছি।
এই সুযোগে লেখক, অন্যান্য উদ্যোক্তারা ও সম্পাদককে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। কী করে প্রবাসে এতো বাধাবিঘ্ন পার হয়ে এই পত্রিকার জন্ম দিয়েছেন এবং গত চব্বিশ বছর ধরে—সমীর, বিশেষ করে — একে একলা হাতে বড়ো করে তুলেছেন, ভেবেই অবাক হতে হয়। পরবাস এখন প্রাপ্তবয়স্ক, পৃথিবীর যে কোন বাংলা সাহিত্য-পত্রিকার (‘দেশ’ ও অন্যান্য) সমকক্ষ। একে আরও বড় করতে এখন চাই নতুন উদ্যোগীদের সাহায্য ও আইডিয়া।
পরবাসের সঙ্গে আমার পরিচয় ২০০৭ সাল থেকে। আমার বেড়াবার গল্প, ছবি, অনুবাদের সুযোগ ও বই প্রকাশনার জন্য আমি পরবাসের কাছে কৃতজ্ঞ। মনে আছে প্রথম লেখাগুলো হাতে কলমে লিখে snail-mail-এ পাঠাতে হত। তারপর বাংলা ফন্ট নিয়ে mac কম্পুটারে কী ভোগান্তি! এখন সবকিছুই আগের থেকে কতো সহজ হয়ে গেছে। আসছে বছর পরবাসের পঁচিশ বছর। রজতজয়ন্তী! এই উপলক্ষে দুটি প্রস্তাব রাখছি — ১) উইকিপেডিয়া-তে এর একটা উল্লেখ দরকার — এই প্রবন্ধ থেকেই একটা সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লিখে দেওয়া যেতে পারে। প্রথম বাংলা ই-পত্রিকা হওয়ার একটা গুরুত্ব আছে তো। ২) এই সিলভার জুবিলি পালন করতে একটা re-union করলে কেমন হয়? নিউ জারসি-তে একটা উইক-এন্ডে কোনো হোটেলে সব পুরোনো উদ্যোক্তারা ও নতুন লেখক-লেখিকারা মুখোমুখি দেখা, পরিচয় ও আড্ডা দিতে পারবেন। বেশ মজা হবে।
পরবাস-কে আমার অনেক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।
ছন্দা বিউট্রা (১৮ই অক্টোবর, ২০২১; bewt...@gmail...)
খুব সুন্দর ও তথ্য সমৃদ্ধ লেখা, ভীষণ ভাল লাগল পড়ে।
সুমন্ত্র চ্যাটার্জী (৩রা নভেম্বর, ২০২১; totai...@gmail...)
সত্যিই অসাধারণ।
দেবাশিস মান্না (২১শে অক্টোবর, ২০২১; manna...@gmail...)
এক কথায় ভিন্ন স্বাদের একটি অসাধারণ গল্প।
অভিজিৎ রায় (১৮ই অক্টোবর, ২০২১; avijit...@gmail...)
খুব সুন্দর হয়েছে...
ডঃ. উজ্জ্বল কান্তি ঘোষ (১৭ই অক্টোবর, ২০২১; drujjalkanti...@gmail...)
শ্রী সুজিত বসুর পদ্ম পাতায় জল কবিতাটা পড়লাম। খুব ভালো লাগলো। প্রবাসী বাঙালি কবির এই লেখাটা পরবাস পত্রিকাতে দেখে মনটা ভরে গেলো। কবি শ্রী সুজিত বসুকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। ওনার লেখা আরও কবিতা এই পত্রিকাতে প্রকাশিত হতে দেখতে চাই।
অমিতাভ ভট্টাচার্য (১৫ই অক্টোবর, ২০২১; bhattu...@gmail...)
খুব অন্যরকম, খুব ভালো লাগলো। প্রচলিত ছক ভাঙার আয়োজন আছে, সুর আছে নিজস্ব। গড়বার মতোই চলন এ-উপন্যাসের। রকমারী চরিত্র আসছে, একে অপরকে ঘিরে প্রকাশ-অপ্রকাশ খেলছে ঐ নাচের মতো। চরিত্রেরা বাইরের বাস্তবতা ছুঁয়ে, ভেঙে বাস্তবতা-জটিল অভিজ্ঞতার অনুভূতি হয়ে যাচ্ছে, জীবনের আপন অসমাপ্ত কোলাজ হয়ে যাচ্ছে; পরিমিত অথচ গভীর গদ্যটান ভেতরে বইছে জলের মতো, স্রোতের মতো...
গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় (৩রা আগস্ট, ২০২১; gautam...@gmail...)
আমি নিজেই এই উদ্যোগের একজন অনুবাদক; কাজেই অধিক বাগবিস্তার অশোভন হবে। কাউকে ছোটো করবার জন্য বলছি না; কিন্তু আমার মনে হয়েছে ফ্রস্টের কবিতার অনুবাদের মধ্যে স্বপন ভট্টাচার্যের অনুবাদটিই অনুকার্য অনুবাদকর্ম হয়েছে। তবে এ-প্রসঙ্গে আরও দু-এক কথা বলতে ভালো লাগবে।
প্রথমত, ইংরেজি মূল কবিতাটি গোড়ায় উপস্থিত করলে পাঠকবর্গের উপভোগ বাড়তো। আর বলা তো যায় না, এতরকম রূপগত বাঁধনে বাঁধা থেকেও যে এত ভালো মূলানুগ অনুবাদ করা সম্ভব, এ-দেখলে হয়তো নিছক পাঠকদের মধ্যেও কেউ কেউ ভবিষ্যতে এ-উদ্যোগটায় সক্রিয় উৎসাহ নিতেন।
সঙ্গীয় টীকায় কবিতাটির রূপগত চরিত্র বলা আছে; যদিও কেবলমাত্র ছান্দসিক পাঠকরাই তার মর্মগ্রহণ করতে পারবেন। কিন্তু “মূল কবিতার ছন্দবিন্যাস চতুষ্পদী টেট্রামিটারধর্মী মাত্রাবৃত্ত” না বলে “আইয়াম্বিক চতুর্মাত্রিক চতুষ্পদী” (Iambic tetrametric quartets) বললে তা সঙ্গততর হতো, কারণ মাত্রাবৃত্ত ইংরেজি ছন্দ নয় । আইয়াম্বিক ছন্দের গতি এইরকম :
~’ ~’ ~’ ~’
এখানে একটি অনাহত (unstressed) দলের (syllable) পরে একটি আহত (stressed) দল আসে : দুয়ে মিলে একটি foot, metre, বা মাত্রা (এক্ষেত্রে ‘পদ’ বা ‘চরণ’ নয়) : and MILES to GO beFORE i SLEEP। চলনটা দুইয়ের ছন্দ। চারটি আঘাতে (বা মাত্রায়) একটি পংক্তি সম্পূর্ণ, তাই চতুর্মাত্রিক। বাংলা অক্ষরবৃত্ত (৪+২) জোড়-সংখ্যাভিত্তিক ছন্দ বলে তারও চলন দুইয়ের ছন্দে বাঁধা বলতে হয়। ইংরেজি আইয়াম্বিক ছন্দ কথ্যছন্দ, বাংলা অক্ষরবৃত্তও তাই। আমি সেইসব যুক্তিতে অনুবাদে অক্ষরবৃত্ত অবলম্বন করেছি; আইয়াম্বিক টেট্রামিটারের মিতভাষণের দিকটা বেশি করে ধরতে চেয়েছি। মূল কবিতাটা anapaest অথবা dactyl ছন্দে হলে বোধহয় মাত্রাবৃত্তই চেষ্টা করতুম, অথবা সাত মাত্রার ছন্দ।
স্বপনবাবু অবলম্বন করেছেন মাত্রাবৃত্ত, যেটা তিনের ছন্দে চলে। সে-ছন্দের বাঁধন তুলনায় ঢিলেঢালা। সেটা অবলম্বন করেও যে তিনি মূলের মেজাজটা অনুবাদে বেশি আনতে পেরেছেন, সে-সিদ্ধিটা আমাকে কবিতার ছন্দ ও কবিতার মেজাজের সহসম্পর্কের বিষয়টা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করছে। আরও মনে পড়ছে, রবার্ট গ্রেভসের Vanity কবিতাটি আমি পূর্বোক্ত যুক্তির বশে অক্ষরবৃত্তে অনুবাদ করে তৃপ্ত হইনি। মাত্রাবৃত্তে নতুন অনুবাদ করতে হয়েছিল।
দত্তাত্রেয় দত্ত (৩১শে জুলাই, ২০২১; dattatre...@gmail...)
কবি সুজিত বসুর কবিতা রূপান্তরে পাঠ করে খুবই ভালো লেগেছে। কবি সুজিত বসুর কবিতা আমার সবসময় ভালো লাগে। কবির ভাবসম্পন্ন কবিতা উপহার দেয়ার জন্য পরবাসকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। পরবাস যেন এইভাবেই কবির সুন্দর সুন্দর কবিতা আমাদের পড়ার সুযোগ করে গেলে আমরা খুবই খুশি হবো।
কিশোর দত্ত (১৮ই জুলাই, ২০২১; kishoredutta...@gmail...)
কবিতার স্বপ্নের আবীরে ভোরের স্বপ্ননীল আবেশ কবিকে আরো গভীরে নিজের বিষন্নতার কথা মনে করিয়ে দেয়। কবিতার ছন্দে আর স্বপ্নবেশে সুন্দর সকালের সৃষ্টি হয়েছে। কবির সুগভীর চিন্তার ছায়া দেখা যায় তাঁর সুন্দর শব্দাবলীর চয়নে।
কবিতাটি তার অন্তর্নিহিত ভাব আর সুচিন্তিত শব্দ চয়নে বেশ শ্রুতিমধুর হয়ে উঠেছে।
সমরেশ চক্রবর্তী (১৭ই জুলাই, ২০২১; samaresh...@gmail...)
চমৎকার লেখা। সুজিত বসুর হাতে ছন্দ কথা বলে। সহজ চলায় গভীর দর্শন মিশে থাকে তাঁর কবিতায়। ভালো লাগলো। নিয়মিত পড়তে চাই।
শুভ্র মুখোপাধ্যায় (১৬ই জুলাই, ২০২১; msub...@yahoo...)
সুজিত বসুর কবিতা পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য পরবাসকে অশেষ ধন্যবাদ। এই প্রবাসী কবির কবিতার এখন দেখা পাওয়াই মুশকিল। অথচ সাতের শেষ-আটের দশকের শুরুতে অবিভক্ত রাশিয়ায় প্রবাসী এই কবির কবিতা পড়ে মুগ্ধ হতাম। দেশ পত্রিকা সহ বিভিন্ন কবিতাপত্রে নিয়মিত সুজিত বসুর কবিতা আমাদের মুগ্ধ করতো। পরে কোথায় হারিয়ে গেলেন!! হঠাৎ হঠাৎ দু-তিন দশক পরে দুটি কাব্যগ্রন্থ হাতে আসায় জেনেছিলাম তিনি আহমেদাবাদে প্রবাসী ও স্পেশ এ্যাপ্লিকেশান সেন্টারে বিজ্ঞানী। খুব আনন্দ হচ্ছে; আবার ওনার কবিতা পড়ার সুযোগ পেলাম। তিনি তাঁর গভীর অনুভবের স্থানটিতে তাঁর চারপাশের প্রকৃতি, আনন্দ, বিষাদ, আবেগ, প্রেম আজও কবিতায় সমান জাগরুক। তাই সেসব অনুভূতির সমন্বয়ী প্রকাশে আজও তাঁর কবিতাগুলি সমান আকর্ষক। আরো লিখুন কবি। শেষে পরবাসকে আবার ধন্যবাদ জানাই।
শুভ্র মুখোপাধ্যায় (১৫ই জুলাই, ২০২১; msubh...@yahoo...)
এ লেখা পড়ে বুঝলাম অনায়াসে পাওয়া মাতৃভাষার মাধুর্য ও বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে খুব কম খেয়াল করেছি।
লেখা খুব সুন্দর। বাঙলা ভাষার বিভিন্ন লেখকের বিভিন্ন ধরনের অভিব্যক্তির মধ্যে এক সুষম বাঙ্গালীয়ানার ছাপ উপলব্ধির সহায়ক।
দেবব্রত ঘোষ (১৬ই জুলাই, ২০২১; ghoshdeb...@gmail...)
অপূর্ব অনুবাদ, খুব শান্তি পেলাম কবিতাগুলো পড়ে। আরো পড়বার আশায় রইলাম।
রাতুল ঘোষ (১৫ই জুলাই, ২০২১; ghosh...@gmail...)
চমৎকার চমৎকার। খুব কঠিন কাজ বেশ মুন্সিয়ানার সঙ্গে করেছেন কবি। মূল লেখার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এমন অসাধারণ শব্দচয়নে বাঙলায় কবিতাগুলি পাঠককে উপহার দেবার জন্য লোরকা-প্রেমী বাঙালি পাঠক নিশ্চয়ই তাঁকে অযুত বাহবা দেবে। পরবাসকে ধন্যবাদ এমন অসাধারণ অনুবাদগুচ্ছে লোরকা আমাদের পৌঁছে দেবার জন্য।
শুভ্র মুখোপাধ্যায় (১৫ই জুলাই, ২০২১; msubh...@yahoo...)
Last line of the poem is a bit confusing. What is the meaning of "moraljibon"?
Siladitya Chaudhuri (15th July, 2021; siladitya...@yahoo...)
খুব ভালো লেগেছে। সুন্দৰ ঝৰঝৰে ভাষা। খুবই স্মাৰ্ট লেখা।
দিব্যজ্যোতি চৌধুরী (২৯শে মে, ২০২১; dibyaj...@gmail...)
আস্সালামু আলাইকুম। ধন্যবাদ, ইরান সম্পর্কে জানার আমার অনেক আগ্রহ ছিল। ভাল কোন উৎস পাচ্ছিলাম না। যাও দু একটা লেখা দেখলাম, পড়তে গিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিলাম। আপনার লেখা অনেক সুন্দর ছিল, সাবলীল উপস্থাপনা যখন পড়ছিলাম মনে হচ্ছিল নিজেই ভ্রমণ করছি।
আরো সুন্দর লেখার অপেক্ষায়। শেষ একটা কথা, “ইনশাল্লাহ্” না লিখে ”ইন-শা-আল্লাহ্” লিখলে যথার্থ হবে বলে আশা করি।
মুহাম্মদ মাহাদী হাসান (২৫শে মে, ২০২১; mahadih...@gmail...)