• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৭০ | মার্চ ২০১৮ | প্রবন্ধ
    Share
  • আবিষ্কৃত হলো ক্যান্সার রোগ সমূলে বিনাশের নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি : নূপুর রায়চৌধুরি


    ক্যান্সার শব্দটি শুনলেই ভয়ে আমাদের গা শিউরে ওঠে, যে রোগ একসময় ছিল মুষ্টিমেয় মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ আজ তা মহামারীর আকার ধারণ করেছে। শিল্প সভ্যতার অপরিহার্য ক্রমোন্নতির সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলেছে এই মারক রোগের সম্প্রসার। ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে এর প্রাদুর্ভাব। কিছু কিছু ক্যান্সার সঠিক সময়ে সনাক্ত হলে নির্মূল করা সম্ভব কিন্তু এই রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি শুধু ব্যয়বহুল নয়, এর কার্যকারিতাও নির্ভর করে রোগের বিস্তার, রোগীর সামগ্রিক শারীরিক শক্তি এবং ক্যান্সারের রকমফেরের উপর। সঠিক সময়ে সনাক্ত হলে কিছু কিছু ধরনের ক্যান্সারের আংশিক নিরাময় সম্ভব কিন্তু তার জন্য এক দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার প্রয়োজন। উন্নত দেশগুলিতে চিকিৎসা বীমার সুযোগ নিয়ে তবু সাধারণ আর্থিক অবস্থার মানুষেরা এই ব্যয়সাপেক্ষ চিকিৎসার সাহায্য পেয়ে থাকেন কিন্তু বিশ্বের উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশের খেটে খাওয়া নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের মানুষদের কাছে এই চিকিৎসা সুদূরপরাহত।

    বহুকাল যাবৎ ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় তিনটি মূল পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়ে এসেছে -রেডিয়েশন থেরাপি, কেমোথেরাপি এবং অস্ত্রোপ্রচারের মাধ্যমে টিউমার দূরীকরণ। বিগত দুই দশকে এর সাথে যুক্ত হয়েছে আরো দুইটি নতুন ধরনের ঔষধ--ইমাটিনিব বা গ্লিভেক এবং ট্রাস্টউজুমেব বা হেরসেপটিন। এই দুটি ঔষধ ক্যান্সার-আক্রান্ত কোষ সমূহের বিশেষ পরিবর্তন সনাক্তকরণ এবং তাদের নিশানাভুক্তকরণে সক্ষম।

    অতি সম্প্রতি ক্যান্সার গবেষণার একটা যুগান্তকারী সম্ভাবনাময় দরজা খুলে গেছে। তার নাম--ইমিউনোথেরাপি। হাজার হাজার রোগীদের চোখে জ্বল জ্বল করছে আশার আলো, যেখানে একজন ক্যান্সার-আক্রান্ত মানুষের নিজের ইমিউন সিস্টেম কেই ব্যবহার করা হচ্ছে ওই মারাত্মক ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য। চলুন, জেনে নেওয়া যাক এই অভূতপূর্ব কর্মকাণ্ডের অভিষেক-স্থানের সম্বন্ধে দুচারটি মূল্যবান তথ্য।

    ঘটনাস্থল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সিটি অফ হোপ, যে গবেষণাগারে এই পদ্ধতির চিকিৎসা নিয়ে ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলেছে প্রবল ধুমধামের সঙ্গে, গবেষক আর চিকিৎসকেরা, হাতে হাত মিলিয়ে জান লড়িয়ে কাজ করে চলেছেন এই নতুন ধরনের ইমিউনোথেরাপিতে, বৈজ্ঞানিক ভাষায় যার নাম--``কাইমেরিক এন্টিজেন রিসেপ্টর (কার) টি সেল থেরাপি``।

    কেমন সে চিকিৎসা পদ্ধতি? এই চিকিৎসায় রোগীর রক্তপ্রবাহ থেকে সংগ্রহ করা হয় বিশেষ ধরনের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাসম্পন্ন দেহকোষ যার নাম ``টি'' সেল। এবার এই টি সেল সম্বন্ধে আসুন কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেওয়া যাক। এরা হলো আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধের লড়াকু সৈনিক। কিন্তু বাইরে থেকে আসা শত্রুর স্বরূপ উদ্ঘাটন করতে পারে না। কিন্তু এই ``টি'' সেলকে গবেষণাগারে বিশেষ প্রকৌশলে এমনভাবে পরিবর্তিত করে শিক্ষিত করা হয় যাতে তারা ক্যান্সারকোষে প্রকাশিত একটা নির্দিষ্ট প্রোটিনকে সনাক্ত করে আক্রমণ করতে পারে এবং সমূলে বিনাশ করতে পারে। বিশেষ প্রক্রিয়ায় এই কোষের সংখ্যা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়ে তারপর এই কোষগুলোকে আবার প্রবেশ করানো হয় রোগীর শরীরে। ব্যাস, কেল্লা ফতে! এই কার টি কোষগুলো ধ্বংস করে ফেলে নিশানা করা ক্যান্সার কোষগুলোকে। আমাদের শরীরে আছে আরেকধরনের টি সেল যারা স্টেম সেল-এর মতো(*) কাজ করে এবং এদের কাজ হলো পূর্বতন ক্যান্সার আক্রমণের স্মৃতিকে ধরে রাখা এবং গবেষকরা আশা করেন যে রোগীর দেহে যদি এই ধরনের টি সেল-গুলোকে বহুমাত্রায় অনুপ্রবেশ করিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে এই কোষগুলো ক্যান্সার সেল বিনাশের একটা গতিময় আধার তৈরী করবে এবং সেভাবেই তারা ভবিষ্যতের ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব সমূলে বিনাশ করতে সক্ষম হবে।

    কথাপ্রসঙ্গে যখন এসেই গেল, তখন স্টেম সেল নিয়ে চলুন, দু চার কথা জেনে নেওয়া যাক। স্টেম সেল হচ্ছে একধরনের জৈবিক কোষ যেগুলো ক্রমাগত বিভাজিত হয় অথচ একে অন্যের থেকে অপৃথক থেকে যায়। শরীরের প্রয়োজনে, সময়কালে পৃথকীকরণের মাধ্যমে এরা আরো বিভিন্ন ধরনের কোষ তৈরী করে। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ক্ষেত্রে দেহে দুই ধরনের স্টেম সেল পাওয়া যায়--এম্ব্রায়োনিক বা ভ্রূণাবস্থিত স্টেম সেল এবং অ্যাডাল্ট বা পরিণত দেহজ স্টেম সেল। এখন এই স্টেম সেলগুলো সর্বদাই বিভাজনের জন্য এক পায়ে খাড়া এবং স্বাভাবিকভাবেই, শরীরের যে কোনো রকম জীর্ণসংস্কারের কাজে এদের ভূমিকা অপরিহার্য। স্টেম সেল বিভাজিত হয়ে পৃথকীকরণের মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের কোষের জন্ম যেমন দেয় তেমনি শরীরের পুনরুজ্জীবক কলাতন্ত্র যথা অস্থিমজ্জা, রক্ত বা চর্মের নিত্য নতুন সরবরাহ অব্যাহত রাখে। স্টেম সেল-এর এই ক্রমবিভাজনের ক্ষমতাটি আজকের আধুনিক চিকিৎসায় বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়; এর একটি বড়ো উদাহরণ হচ্ছে অস্থিমজ্জার প্রতিস্থাপন। স্টেম সেল এখন গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে জন্মানো যায় এবং বিশেষ ধরনের কোষে বিভাজিত করা যায় যেমন ধরুন পেশী বা স্নায়ুততন্ত্রের কোষাবলী। শুধু তাই নয়, দেহজ স্টেম সেল-এর নিউক্লিয়াসের স্থানান্তরণের মাধ্যমে ভ্রূণস্থ স্টেম সেল সৃষ্টি করার দুরূহ প্রকল্পও আজ আমাদের হাতের মুঠোয়। একদল গবেষক মনে করেন যে দেহের স্বাভাবিক স্টেম সেল-এর মতোই টিউমারের মধ্যেও আছে ক্যান্সার স্টেম সেল। এই টিউমরিজেনিক সেলগুলোই ক্যান্সারের পুনরাবর্তন এবং মেটাস্টাসিস এর জন্য দায়ী।

    সিটি অফ হোপ তাদের এই নতুন গবেষণার ফলশ্রুত পদ্ধতি ব্যবহার করছে সলিড টিউমার এবং বেশ কয়েক ধরনের রক্তজাত ক্যান্সারের প্রি-ক্লিনিক্যাল এবং ক্লিনিকাল চিকিৎসা কার্যসূচিতে।

    যে প্রবাদপ্রতিম মানুষটির অভূতপূর্ব সাহসের জন্য এই যুগান্তকারী চিকিৎসার ফলাফল জানা সম্ভব হয়েছে তার নাম ডাক্তার রিচার্ড গ্র্যাডি, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ইউরোলজি বিভাগের খ্যাতিমান শল্য চিকিৎসক। তিনি ও তাঁর স্ত্রী লরা হার্ট ২০১৬ সালে (নোবেল) শান্তি পুরস্কারে যুগ্মভাবে পুরস্কৃত। বারংবার দক্ষ চিকিৎসার মাধ্যমে সমাজকে, পৃথিবীকে তাঁদের দায়বদ্ধতার প্রমাণ দিয়েছেন, অসহায় অভাবী দুঃখী মানুষদের উপহার দিয়েছেন তাঁদের সময়, ভালোবাসা। এসে দাঁড়িয়েছেন ভারতবর্ষ, আলাস্কা, গাজা আর আফ্রিকার অসুস্থ মানুষের মাঝে, তাঁদের মনে আশার আলো জাগিয়েছেন।

    ভাগ্যের কী নিষ্ঠূর পরিহাস! ধরা পড়লো মারাত্মক টিউমার বাসা বেঁধেছে ডক্টর গ্র্যাডির মস্তিষ্কে, সব প্রচলিত ক্যান্সারের চিকিৎসা ব্যর্থ হলো, অকুতোভয় বিজ্ঞান পিপাসু, নিজেই অংশগ্রহণ করলেন গ্লিওব্লাস্টোমার ক্লিনিকাল ট্রায়ালে, কার-টি সেল প্রয়োগ করা হলো ওনার মস্তিষ্কে, ফল পাওয়া গেল অবিলম্বে, নির্মূল হয়েছে টিউমারগুলো, কিন্তু আবার পুনরাবির্ভাব হলো চোরাগোপ্তা নতুন টিউমারের। পারেন নি ডাক্তার গ্র্যাডি তাঁর লড়াইয়ে সফল হতে, ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল তাঁর জীবনের দীপশিখাটি ছিনিয়ে নিয়েছে মারক ক্যান্সার। বীর যোদ্ধার মতো লড়াই করেছেন, পৃথিবীতে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে এই বৈপ্লবিক চিকিৎসায় প্রথম অংশ গ্রহণ করেছেন, এ মরণে গ্লানি নেই, ক্ষোভ নেই, মৃত্যুকে জয় করেছেন, জীবনের আশা ছড়িয়ে দিয়েছেন অজস্র মুমূর্ষু রোগীর বুকের মাঝে নিজের অমূল্য জীবন উৎসর্গ করে। শেষবারের মতো তাঁর মমতাময় হাতটি ছুঁইয়ে দিয়েছেন মুমূর্ষু ক্যান্সার রোগীদের নতুন চিকিৎসার পথপ্রদর্শক হিসাবে।

    কার টি সেল চিকিৎসা শুরু হয় সেই ১৯৯০ সালে যখন প্রখ্যাত গবেষক স্টিফেন ফরম্যান তাঁর অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের যুগান্তকারী গবেষণার কাজ শুরু করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে-কয়টি গবেষণাগারে এই ধরনের তত্ত্বানুসন্ধানের কাজ হয়, ক্যালিফোর্নিয়ার সিটি অফ হোপ তাদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এবং প্রথম সারির মানের কাজ করে চলেছে। অদ্যাবধি ১৪০০০ অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের কাজ হয়েছে এই চিকিৎসালয়ে, আর পর পর তেরোটি বছর ধরে আশাতীত সাফল্য অর্জন করেছে এবং তারই ফলশ্রুতি হিসাবে এই সংস্থাটি অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের চিকিৎসা ও গবেষণার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন একচ্ছত্র আধিপত্যের দাবি রাখে। বর্তমানে সিটি অফ হোপে লিউকেমিয়া এবং লিম্ফোমা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন আর ``কার টি সেল’’ অনুস্থাপন-ক্যান্সার চিকিৎসার পরিষেবায়--এই দুইয়ে মিলে এক চমৎকার সেতুবন্ধনের কাজ এগিয়ে চলেছে। যদিও, এই মুহূর্তে সিটি অফ হোপ এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করছেন সেই সব রোগীদের যাদের ক্যান্সার ফিরে ফিরে আসছে এবং অন্য সব চিকিৎসাই অসফল প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে এই চিকিৎসা চালু হবে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে।

    আরেকজন খ্যাতনামা মানুষের কথা এই প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, তিনি হলেন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। মিস্টার কার্টারের মেলানোমা বা চর্মজ ক্যানসার আবিষ্কৃত হয় লিভারে এবং তা ছড়িয়ে পড়েছিল মস্তিষ্কেও। ২০১৫ সালে, রেডিয়েশন এবং শল্যচিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে পেমব্রোলিজুমাব নামক এক নতুন ইমিউনোথেরাপিক ওষুধের প্রয়োগ করা হয় প্রেসিডেন্ট কার্টারের শরীরে, এই ওষুধ ইমিউন সিস্টেমকে অনেক বেশি শক্তিশালী করে এবং ক্যানসার কোষকে নির্মূল করতে সক্ষম হয়।

    এই প্রসঙ্গে জেনে রাখা ভালো যে আমাদের ইমিউন সিস্টেম স্বাভাবিক অবস্থায় আমাদের শরীরের নিজস্ব সুস্থ কোষের থেকে অসুস্থ বিদেশী ক্যানসার কোষকে সহজেই সনাক্ত করতে পারে এবং আক্রমণও করতে পারে। এই সনাক্তকরণ সম্ভবপর হয় আমাদের শরীরে থাকা কিছু বিশেষ ইমিউন কোষের মধ্যে প্রকাশিত ``চেকপয়েন্ট'' অণু-প্রোটিনের জন্য। টি সেল-এ প্রকাশিত পি ডি-ওয়ান হলো এমনই এক চেকপয়েন্ট প্রোটিন। এই ``চেকপয়েন্ট’’ অণুগুলির সক্রিয়তা বা নিষ্ক্রিয়তার উপর নির্ভর করেই রোগ প্রতিরোধক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ক্যান্সার কোষেরাও মহা ধুরন্ধর, তারা পি ডি এল ওয়ান-এর অনুরূপ আরেকধরনের অণু প্রোটিন ঝটপট তৈরী করে ফেলে সুস্থ কোষের মতোই মুখোশ পরে নেয়। টিউমার কোষে প্রকাশিত পি ডি এল ওয়ান অণু-প্রোটিনটি কোষের পি ডি ওয়ান প্রোটিন অণুর সাথে জোটবদ্ধ হলেই টি সেল হারিয়ে ফেলে তার টিউমার বিধ্বংশী ক্ষমতা এবং এইভাবেই ক্যান্সার কোষেরা বেশ সহজে ``চেকপয়েন্ট’’ গুলোকে এড়িয়ে গিয়ে ইমিউন সিস্টেমের প্রহরীকে বোকা বানানোর চেষ্টা করে। আর সফল হলেই চোরাগোপ্তার মতো ক্যানসার কোষ রাতারাতি বহুগুন বর্ধিত হয়ে দুর্বল করে ফেলে ইমিউন সিস্টেমকে। এই কারণে, ইমিউনোথেরাপির মূল হাতিয়ার হলো সেই সমস্ত মনোক্লোনাল এন্টিবডি যারা এই চেকপয়েন্ট গুলোকে-ই নিশানা করে। পি ডি-ওয়ান আর পি ডি এল ওয়ান-এর জোটবদ্ধতা বন্ধ করে ক্যানসার কোষের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দেয়।

    ইমিউনোথেরাপি অন্যান্য চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত হলে অনেক রোগীরই অনেক উপকার হবার সম্ভাবনা সুনিশ্চিত। ২০১৬ সালের আঠেরোই মে মার্কিন সোসাইটি অফ ক্লিনিকাল অনকোলজি-র বাৎসরিক অধিবেশনে তাবড় তাবড় গবেষক চিকিৎসকদের গবেষণার ফলাফল থেকে একটা কথা সুস্পষ্ট ভাবে বেরিয়ে আসেঃ পেমব্রোলিজুমাব প্রাপ্ত রোগীদের চল্লিশ শতাংশ ওই ওষুধ প্রয়োগের তিন বছর পরও দিব্যি বেঁচে আছেন, যেখানে এই কয়েক বছর আগেও মেটাস্টাটিক মেলানোমা রোগীদের গড়পড়তা আয়ুর মেয়াদ ছিল মাত্র কয়েক মাস। অনস্বীকার্যভাবে, ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে এ এক বিপুল সাড়া জাগানো সম্ভাবনা।

    একটি চিন্তার বিষয় হলো কিছু সুস্থ অঙ্গাবয়বের উপরও এই সব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। কাশি, বমিভাব, ক্ষুধামান্দ্য এবং চর্মরোগ গোছের সমস্যায় বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত, তবে কিছু কিছু বিরল ক্ষেত্রে গুরুতর সমস্যাও অসম্ভব নয়। রোগীর সার্বিক স্বাস্থ্যের উন্নতির সাথে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সময়সাপেক্ষ উপশম সম্ভব।

    অবশ্যই আরো অনেক গবেষণা দরকার, এবং তা হচ্ছেও।





    অলংকরণ (Artwork) : অলংকরণঃ এখান থেকে
  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments