১ চরণদাস
হেলায় হারাইনু বনমালী
শিঙা বাজে, বেণু বাজে, বাজে করতালি
সৈয়দ মর্তুজা কহে ওহে বনমালী,
মথুরা নগরে বাজে আনন্দ ধামালী--
গাইতে গাইতে চরণদাসের গলায় সুর টলে যাচ্ছিল, চোখ ঝাপসা, পা আল থেকে পিছলে পিছলে যাচ্ছে বারবার। তবু সে কোন এক দুর্জয় অভিমানে দুপদাপ পা ফেলে চলেছিল। ভাল করে দেখতেই যদি না দিবি, এমন করে ডাকলি কেনে হে কানাই।
এদিকে আসার সময় হারাণ মাঝি পইপই করে বলে দিয়েছিল, সাবধান বৈরেগি, আশাপুরা ঘাট থেকে রাধাকিশোরবাটি কিন্তু ধানখেতের আইল ধরে সাড়ে তিন-চার মাইল। এ সময়টা মা মনসার চরেদের বড় আনাগোনা! সাবধানে পা ফেলবা। তেনাদের ল্যাজে পা পড়লে অবেলায় বাঁধন দেবার লোক পাবা না।
সে আর জানিনে, বৈরাগি চরণ ভাবে।
আসার সময় তাই বড় সাবধানেই পা ফেলেছিল বৈরাগি চরণদাস। আসলে, দর্শন হবে সেই আশায় টগবগ করছিল মন, বেঁচে থাকলে তবেই না দর্শন। বিশ বচ্ছর ধরে অপেক্ষা করেছে এই দিনের। প্রতিজ্ঞা ছিল, জন্মাষ্টমী-নন্দোৎসব দূরে থাক, এই বিশ বচ্ছর কাকপক্ষীর উৎসবেও মুখ দেখানো চলবে না। নাটমঞ্চে দাঁড়িয়ে তামা-তুলসী-গঙ্গাজল হাতে করা শপথ সে ভাঙেওনি এত বছরে।
কাক-উৎসব আসলে ভাঙা আসর। জন্মাষ্টমী তো বড় উৎসব, উচ্ছলতায় দই-কাদা মাখানোর নন্দোৎসবও কম যায় না। আসলে রাধাকিশোরবাটি গৌড় থেকে পুরুষোত্তম যাবার প্রাচীন পথের উপরেই। কত কাল হল, কত শত আউল-বাউল-ফকির-বোষ্টম এই পথে যাবার কালে দু-দণ্ড জিরিয়ে গেছে। বিশেষ তিথি পর্বে মেতেছে আনন্দে। নন্দোৎসব অবধি অত মানুষের হৈ-হল্লায় পশু-পক্ষীর দল মন্দিরের কাছে ঘেঁষতে ভয় পায়। তাদের অভয় দিতেই হয়ত কাক উৎসবের সূচনা। সেদিন সেবাইত বংশ ছাড়া কারো মন্দির চত্বরে ঘেঁষা মানা, আঙিনায় পাতা পেড়়ে পেড়ে পঞ্চভূতের জন্য ভোজ্য নিবেদন করা হয়, চাউলগুঁড়ির আলপনার উপর। সেও পিঁপড়ের সারের জন্য। কৃপাকণা নিয়ে ফেরে পাখ-পাখালি, কৃষ্ণের জীব।
চরণদাস ভাবে আমি তবে পিপীলিকাটিরও অধম, তাদের যে দিন তোমার ওপর অধিকার সে দিনও আমার নিষেধ! গুরুর কাছে শোনা পদ মনে পড়ে! অনাথ গোঁসাই গেয়েছিলেন, গোপাল হেন পুত্র আমার অক্রুর এসে করলে চুরি...অক্রুর শনি বিষম কাল, প্রাপ্ত কৃষ্ণ হরে নিল, লালন কয় এ দুখ ভারি। কুষ্টিয়ার সাঁইজির পদ।
পরক্ষণে অপরাধবোধে জিভ কাটে সে, শপথ তো তার নিজের করা, এ ছাড়া আর উপায় ছিল কি? এখন আশাপুরা ঘাট থেকে একটা ফিরতি নাও পেলেই হয়। চরণদাস চরণ ফেলে দ্রুত, আলকেউটের তোয়াক্কা না করে। যে বিষে বিষাইলে, মুই হইনু জীয়ন্তে মরা।
২ যশোমতী
এবারে মোচ্ছবের ধরন-ধারণ একটু পাল্টানো হয়েছে, শুধু অষ্টপ্রহর নাম-সঙ্কীর্তন নয়, এবার নেওতা দেওয়া হয়েছিল মোটামুটি আশপাশের কীর্তনিয়া ছাড়াও কিছু নামকরা বাউল ফকির বোষ্টমদের যাদের গানের জন্য যশসিদ্ধি আছে। আইডিয়াটা তার ছেলে, রাজর্ষির। সে-ই বলেছিল, এমনিতেই শরিকি ভাগাভাগিতে মন্দির এস্টেটের থেকে আয় কমে গেছে। একটা গানের আসর জমিয়ে দিতে পারলে একবারের পালা থেকেই যথেষ্ট আয় হবে। আজকাল শহুরে লোকের এসবে শৌখিন ইন্টারেস্ট, সেটা কাজে লাগানো আর কি।
যশোমতী অবাক হয়ে ছেলের মুখের দিকে তাকিয়েছিল। তার রোগাভোগা ছেলেটা কবে এত বড় হয়ে গেল! সবে তো কুড়িতে পা ...যখন কর্তা চলে যান তখন কতই বা বয়স ছিল ছেলেটার...এদিকে শরিকি রেষারেষির শুরুও তখন থেকেই। নানা বাঁকা কথা, আড়চোখের ইশারা...সবই সহ্য করতে হয়েছে তাকে।
যশোমতী শ্বাস ফেলে বলেছিল, যা ভালো বুঝিস কর তবে।
তারপর থেকে সব ঝক্কি রাজর্ষিই সামলিয়েছে। মোচ্ছবের আগের দিন থেকে ফি-সন্ধ্যায় তিন ঘন্টা করে গানের আসর। তাদের মধ্যে পদাবলী, পালাকীর্তন গাওয়া বোষ্টম, কীর্তনিয়া আছে বেশ কয়জন, বাউল এমনকি কুষ্টিয়ার সাঁইজির পরম্পরার এক মুরিদেরও নাকি আসার কথা। তবে এত কিছু করতে গিয়ে ভিড় একটু বেশিই হয়ে গিয়েছে। রাধাকিশোরবাটি ছোট গঞ্জ শহর বই তো নয়!
তা যশোমতী বিয়ে হয়ে এ বাড়িতে আসা ইস্তক দেখে আসছে ভক্তদের আনাগোনা...
বাবামশাই বিপ্রদাস গোস্বামীর আমলে, কর্তা রাজীব গোস্বামীর আমলেও তার পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু গত কদিনের ভিড়টা যেন পাঁচকড়াই...তার মধ্যে ভক্ত আছে আট আনা...মিডিয়া আছে...গবেষক আছে...একেকজনের চোখের ভাষা একেক রকমের। যশোমতীর মনে হয় সবাই যেন চেয়ে আছে মা-ব্যাটার পানে। তার বুক ঢিপঢিপ করে! মনে হয়, এত বড় করে উৎসব না ফাঁদলেই হত।
বাড়ি থেকে নাটমণ্ডপ দেখা যায়, রাজর্ষি পঙ্ক্তি-ভোজনের তদারক করছে...একহারা মাজা শ্যামলা দেহে পাটের ধুতি-চাদর, বাহুতে তাগা...নতুন কিছু নয়, সেবাইত বংশের ছেলেপিলে অতিথসেবা, ভিয়েন দেখবে না তো কে দেখবে! তবু বুক ছ্যাঁতছ্যাত করে যশোমতীর। যেন সারা পৃথিবীর কুনজর থেকে ছেলেটাকে ঢেকে রাখতে পারলে বেঁচে যায় সে।
ছেলেও হয়েছে তেমনি। শান্তশিষ্ট হয়ে বসে থাকার পাত্রই নয় সে...মাথার মধ্যে নতুন নতুন চিন্তা খেলে যায় সবসময়, যশোমতী দ্বিমত করলে এক ফুঁয়ে উড়িয়ে দেয় সব সংশয়। অত চিন্তা কোরো না তো মা-মণি, আমার কিচ্ছু হবেনাকো।
সখি রে, আমি এই ভয়ে মুদিনে আঁখি
নয়ন মুদিলে পাছে কানু-হারা হয়ে থাকি।
যখন থাকি শয়নে, তখনো ভয় মনে,
না হেরে হারাই পাছে, চাহিয়ে ঘুমায়ে থাকি।
বাবামশায়ের মন্তরকন্যে বিশাখা গাইত, সে গান মনে পড়ে। নিজের কন্যেটি তো থাকল না, সদ্যোজাত যোগমায়া যেন, আঁতুড়ে দেখা দিয়ে আঁতুড়েই...সেও ছিল এক জন্মাষ্টমীর রাত।
তারপর কতদিন ধরে বুক টনটন...
তা বিশাখাই থাকলো কি! স্বামী, তিন মাসের ছেলেকে রেখে সেও তো পাড়ি দিল। সেই থেকে যশোমতীর কেবল হারাবার ভয়।
৩ কাঙালিনী ফরিদা
সীমান্ত প্রহরীটি আড়চোখে তাকানোতে ফরিদা তার শাদা থানের আঁচলটি ভাল করে জড়িয়ে নিল। ছইয়ের মধ্যে বিশু ঘুমোচ্ছিল। ফরিদার মত উৎসাহ তার নেই, থাকার কথাও না। সাঁইজির গান শোনাতে যাবে, তাতেও যদি তাদের মত কাঙালের পকেট কেটে দুই-তিনশ টাকা বেরিয়ে যায় তবে চলে কী করে! সীমান্তে তা ছাড়া উপায়ই বা কী!
তার উপর আজকাল বিশুর চোখের জায়গায় দুটি ধূসর শাদা স্ফটিক যেন। সে তার চেনা চৌহুদ্দির বাইরে যেতেই চায় না। কিন্তু ফরিদার উৎসাহ এবার অন্যরকম! সীমান্ত পেরনোর অনিশ্চয়তা তাকে স্পর্শই করছে না। এই নদীপথেই সে একদিন ভেলায় করে ভেসে এসেছিল, যেন বাপের বাড়ি থেকে। নদীর স্রোত তো বর্ডার মানে না, ভেলাও জানে না জীবিত ও মৃতের ফারাক।
জন্ম ইস্তক ক্ষীণদৃষ্টি বিশুর বাপ ফকির কালাচাঁদ নাইতে গিয়ে তাকে আবিষ্কার করে। প্রথমে ভেবেছিল সাপে-কাটার মড়া, কিন্তু নাকে হাত দিয়ে দেখে মৃদু শ্বাস বইছে। কিন্তু যাকে ঘরে নিয়ে গেল, আকস্মিকতায় তার বোধবুদ্ধি, বাকশক্তি লোপ পেয়েছিল। সে কোনও আত্মপরিচয়ই দিতে পারেনি। অবশ্য পারলেই কোন কুড়ি মাইল উজিয়ে তাকে নিয়ে যেত কেউ?
কালাচাঁদ আর তার ফকিরনি সিতারা বিবি মিলে পরামর্শ করে তার নাম রাখল ফরিদা। মেয়ে কথা কয় না, নিরক্ষর কিন্তু ঘরের কাজে দড়।
কালক্রমে সাঁইজির আখড়ায় বিশু ও তার পরনে উঠল জীয়ন্তে মরার শাদা বসন। বিশুর হাতে দোতারা। বিশু গান গায়, ফরিদা তার জন্তর-সাজ ঝেড়ে-পুছে রাখে। আস্তে আস্তে বোবা মেয়ের গলায় স্বর ফুটলো সাঁইজির গান দিয়ে। আখড়ায় লোকে ধন্য ধন্য করল...ফরিদা হয়্ গেল কাঙালিনী ফরিদা। খানিক নাম-যশও হল। কিন্তু স্মৃতি ফিরল না, বাপঘরের কথা জিজ্ঞেস করলে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে।
ততদিনে ফকির কালাচাঁদ দেহ রেখেছেন। সিতারা বিবিও। বিশুর বাইরের চোখে পুরোপুরি অন্ধকার, গান গাওয়া ছাড়া কথা কয় না বেশি। অন্তর্মুখী হয়ে পড়েছে বড়। ফরিদার মনে হয় সে দুই হাতে ঘর ও বাহির ধরে রেখেছে। কোথাও পালিয়ে যেতে পারলে বড় ভাল হয়। হোক নাহয় ক্ষণিকের ছুটি।
তখনই নেওতা এল। নদী বেয়ে কেলি-কদম্বঘাট। সেখান থেকে রাধাকিশোরবাটি। ঘাটের আগে, মাঝপথে সীমান্ত। তা হোক।
৪ রাধাকিশোরবাটি
এসে ইস্তক চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে ফরিদার। বাঁশ আর টিন দিয়ে থাকার বন্দোবস্ত, চালে, মেঝেতে খড় পাতা। তার ওপর সতরঞ্চি। একটা ডুম লাইট। তাদের কুষ্টিয়ার ডেরার তুলনায় এলাহি ব্যবস্থা। সে ডেরায় তো পিদিমের তেলেও অকুলান।
আজ বাদে কাল গান, আজ বিশ্রাম। মন্দিরে অন্নসেবার কুপন দিয়ে গেল ভলানটিয়ার ছেলে। ফকিরনি খুশিতে ভাসে। বিশুকে বলে, দ্যাখসেন কাণ্ডখান!
বিশু হাসে, হ, আমি ত বড় চক্ষুষ্মান, তাই দেহি।
ফরিদা অপ্রতিভ হয় একটু। সামলে নিয়ে বলে, গানের জন্য আবার সাতশ টেয়া দিবে কয়!
--সর্বনাশ। ফকিন্নির আবার গুপ্তধন!
--টেয়া তো লাগে সর্বত্র। ফকিন্নিরও। ফরিদা উদাস স্বরে বলে।
শুধু একটাই খটকা। এই ঠাঁই বড় চিনা-চিনা লাগে। এই কেলি-কদম্বের ঘাট, মন্দিরবাটি, গোস্বামীপ্রভুদের বসতবাটির অন্দরমহল। অন্দরে গান শোনাতে গেছিল, হাতে শুধু করতাল নিয়ে! গিন্নিমা পাটের থান পরা সাঁঝ-তারাটি যেন, দেইখাই মা-মা করে মন।
--হয়ত একদিন আমারও একখান মা আছিল ওইরকম। মনে মনে চায়।
সে গান ধরে,
সখি রে, আমি এই ভয়ে মুদিনে আঁখি
নয়ন মুদিলে পাছে কানু-হারা হয়ে থাকি।
গিন্নিমা সচকিত হয়ে ওঠেন, ও মা, সে কী! ফরিদা কুণ্ঠিত হয়, কোনো ভুল হল?
গিন্নিমা একদৃষ্টে তার মুখ জরীপ করতে থাকেন, তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন,
না না, ও কিছু না, পদ শেষ করো গো মেয়ে...
সখি রে, আমি এই ভয়ে মুদিনে আঁখি
নয়ন মুদিলে পাছে কানু-হারা হয়ে থাকি।
যখন থাকি শয়নে, তখনো ভয় মনে,
না হেরে হারাই পাছে, চাহিয়ে ঘুমায়ে থাকি।
তেল-ক্ষার-মোটা কাপড়ের সিধে নিয়ে তাড়াতাড়ি কুটিয়ায় ফিরল সে। এসে দেখে বিশু বসে আছে একই ভাবে। তাড়াতাড়ি মানুষটাকে ধরে ধরে ঘাটে নিয়ে গেল চান করাতে। বিশুর জোরে জোরে শ্বাস পড়ে, বলে, গান হইলেই যামু, আর একদিনও থাকুমনা'অনে।
৫ আশাপুরাঘাট
কানাই এই ব্রজের দশা দেখে যা রে
তোর মা যশোদে রইল যে জীয়ন্তে মরে
শোকে হায় পিতা নন্দ, কেঁদে কেঁদে হল অন্ধ
গোপিগণ সবে ধন্দ হয়ে রয়েছে।
....
পশু পাখি উচাটন, না শুনি বাঁশি-বাদন
লালন কয় বৃন্দাবন শোকে ডুবে রয়েছে।
চরণদাসের ভাগ্য ভাল বলতে হবে। ঘন্টা দুই অপেক্ষার পর একটা ফিরতি নাও তাকে তুলে নিতে রাজি হল। গয়নার নৌকা নয়, দুই ভাই এমনি হাঁড়ি-কুড়ি বেচে ফিরছিল পালানপুরের হাটের থেকে।
লগি ঠেলতে ঠেলতে বড়ভাই বলল, বিড়ি খাবা নাকি?
কেমন নিজের লোক নিজের লোক মনে হচ্ছিল চরণের। কতদিন এইভাবে কেউ সাধেনি। শুধু কথা দিয়ে চোখ মুছিয়ে দিচ্ছে যেন দু-ভাই। কানাই-বলাই। সত্যি তো সে দর্শন পেয়েছে, রাধাকিশোরবাটিতে একহারা মাজা শ্যামলা গড়ন, কচি মুখখানি, বাহুতে সোনার তাগা। মন না ভরুক, চোখ তো ভরেছে।
বিড়ি ধরিয়ে দুটো টান দিতে দিতে কালকে শোনা গান তার গলায় উঠে এল।
ওপারের সেই ফকিরনির গানও বড় ভাল হয়েছিল।
ফকির সাধন-সঙ্গীত, দেহতত্ত্ব, সাঁইজির গান গাইল, ফকিরনি দিব্যি শ্রোতাদের মন বুঝে মাথুর ধরনের পদ গাইল কিছু, সাঁইজির রচনার সঙ্গে মিলিয়ে মিশিয়ে...হঠাৎ কী যেন মনে পড়ে চমকে ওঠে সে। এক সময় ফকিরনি গাইছিল,
সখি রে, আমি এই ভয়ে মুদিনে আঁখি
নয়ন মুদিলে পাছে কানু-হারা হয়ে থাকি।
ও গান তো সাঁইজির নয়, চরণের গুরু অনাথ গোঁসাইয়ের রচনা। এ মেয়ে সে গান পেল কোথায়? চরণ যাকে শিখিয়েছিল সেই বিশাখা তো কবেই...ছেলেটার সবে তিন মাস তখন। মায়ের দুধ ছাড়া বাঁচানো মুশকিল।
রাজীব ঠাকুর বলেছিলেন, দেখ কী করবি, তোর গিন্নিমা আঁতুড়ে মেয়ে হারিয়ে শয্যা নিয়েছেন, তোরও তো ছেলে পালবার মত অবস্থা নয় এখন!
যদি...অবশ্য তোকে শপথ করতে হবে। বলিস তো সব ব্যবস্থা করে দিই।
সাপে কাটা রোগি। আলকেউটে। কলার মান্দাসে করে ভাসিয়ে দেওয়াই রীতি। তাই হয়েছিল। কেলি-কদম্বর ঘাটে। সে অন্য গাঙ, অন্য দেশে তার গমন।
কানাই-বলাই দু-ভাই অবাক। এই তো দিব্যি গল্প করছিল বৈরাগি। কী মনে পড়ল তার, অমন কাটা ছাগের মত আছাড়ি-পিছাড়ি খেয়ে কাঁদে কেন!