• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৯৮ | এপ্রিল ২০২৫ | গ্রন্থ-সমালোচনা
    Share
  • ছায়াজীবনের নিস্পৃহ কথকতা : মেঘমালা দে মহন্ত

    জীবন ও ছায়া— শ্যামল বৈদ্য ; প্রচ্ছদ- অভীক সরকার; প্রকাশক- ত্রিষ্টুপ, আগরতলা, ৭৯৯২১১ প্রথম প্রকাশ- সেপ্টেম্বর ২০১১; ISBN: 978-81-951450-4-1

    'জীবন ও ছায়া' শ্যামল বৈদ্যর পঞ্চম গল্পগ্রন্থ। যেকোনো সংবেদনশীল লেখকের ভেতর নিজেকে ভাঙা গড়ার এক অনন্ত প্রক্রিয়া প্রতিনিয়ত চলতে থাকে। ক্রমাগত পরিমার্জন পরিশোধনের চর্যায় নিত্যনতুন বিষয়, ভাষা, আঙ্গিক, মোটিফে লেখক তার শব্দ-ছবির ক্যানভাসে আসলে নিজেকেই ভাঙেন আবার গড়েন। এই ক্রমাগত ভাঙা-গড়ার খেলায় পরিতৃপ্তি এক অধরা প্রশান্তি। নিজের সৃষ্টিকে নিয়ে এক অসহ্য অতৃপ্তি বোধ থেকে লেখক অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন এক ফিনিক্স-জীবনে। শ্যামল বৈদ্যের জীবন ও ছায়া সেই ফিনিক্স জীবন প্রসূত ন’টি গল্পের এক অনবদ্য গল্পসংকলন।

    পরাপর (২০১৪) থেকে দলিত-গল্প দলিত-লেখক (২০১৬), এযাবৎ কাল সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিদিনের জীবন ও জীবিকার লড়াই, মধ্যবিত্ত জীবনের এদিক ওদিক দুদিক সামলে চলা জীবনবোধ, উত্তর-পূর্বের নানা লোকাচার মিথ, বিভিন্ন ভাষা সম্প্রদায়ের মানুষের মৈত্রী-মনান্তরে পাশাপাশি সহাবস্থানের টুকরো টুকরো চিত্র – এ সমস্ত নিয়ে তাঁর গল্পধারাটি ছিল মূলত আখ্যানধর্মী। সেই প্রবহমান গল্পধারায় বাক ফেরানোর পালাটির পরিপাটি আয়োজন সার্থক রূপ পেয়েছে তাঁর এই ‘জীবন ও ছায়া’ গল্পগ্রন্থে। এই পর্বে এসে মানুষের কোলাহলমুখর বহুস্বরিক জীবনের চেনা আখ্যানের পরতে পরতে যে এক প্রগাঢ় শূন্যতার আখ্যান প্রবহমান যে শূন্যতার কাছে মানুষ বিপন্ন বিষ্ময়ে নতজানু হয়ে চলে নীরবে শ্যামল বৈদ্য সেই শূন্যতার অন্তহীন খাদের সামনে দাঁড় করিয়ে দেন তাঁর পাঠকদের। বিপন্ন এই পরিবেশ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথটি পাঠক নিজের মতো করে আবিষ্কার করে নেন এই গল্পগুলিতে। অর্থাৎ গল্পের পরিসমাপ্তি আঁকার দায়টি গল্পকার পাঠকের সঙ্গে সমান সক্রিয়তায় ভাগ করে দেন। এই গল্পসংকলনের একটি গল্পও কোনো নির্দিষ্ট প্রোটাগোনিস্ট কিংবা নির্দিষ্ট কোনো স্থানকালের কথা বলে না, রক্তমাংসের জীবনকে ছাড়িয়ে অন্য এক জীবনের রহস্যময়তা আমাদের ঘিরে রাখে সবসময় সেই জীবনকে ছুঁতে চাওয়ার, কাছে পাওয়ার মানুষের যে চিরন্তন আকুতি, সেই আকুতির কথা বলেন শ্যামল। আপাত সুখী জীবনের গভীরে যে অস্থির অসুখের বিরাট আয়োজন তার ইঙ্গিতময়তা ব্যক্ত করেন গল্পকার একাধিক অভিনব গল্প শৈলিতে।

    অসামান্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য লালিত ত্রিপুরাভূমির বুকে অশান্ত, বিক্ষিপ্ত, বহুবধ সমস্যায় জর্জরিত জীবন-যন্ত্রণার কথা সেখানকার বাংলা ছোটোগল্পের এক মুখ্য বিষয়। এবং এই সমস্ত বিষয়গুলির সঙ্গে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে থাকে আমাদের আদিপাপ দেশভাগ। পাহাড় ঝরনা সবুজ বনানী সহজ সরল পাহাড়ি মানুষ, ভাগ্যতাড়িত সমতলের বাঙালি জীবন এসমস্ত কিছুকে নিয়ে সেখানকার যে জীবন সেই জীবনকে তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে কাঁটাতারের সীমানা-চাদর । সুরক্ষারক্ষীদের তীক্ষ্ণ নজরদারিতে থমকে যায় নিজের দেশ বিদেশ হয়ে যাওয়া পথিকের পা, আবেগ, ভাবনা, একবার ছুঁয়ে দেখতে চাওয়ার অদম্য ইচ্ছে। এই অদম্য ইচ্ছের মরমী কথকতা শ্যামল বৈদ্যের ‘কালা কাউয়া’ গল্পটি। মানুষের ভবিষ্যৎ ভাগ্য বলে দেওয়া ভুবন আর তার তোতা ডাকিনি বিদ্যে দিয়ে যা খুশি করতে পারে, শুধু পারে না নিজের ভাগ্য ফেরাতে। ভুবনের বাপও গণক হিসেবে নামী লোক ছিল। দেশে মান সম্মান ধন সম্পদ ছিল। সব ফেলে এখানে এসে হায় হায় করে চলে গেল। পালিয়ে আসার সময় নিজের মেয়েকে সঙ্গে আনতে পারেনি, দাঙ্গাবাজের হাতে পড়ে হারিয়ে গেল। বাকি জীবন শুধু হায় হায় আর দীর্ঘশ্বাস সঙ্গী ছিল । ভুবন সেই দীর্ঘশ্বাসের পরম্পরা ঘোচাতে চায় । এই দেশ তাকে দেয়নি কিছুই। সব হারানোয় তালিকায় সংযোজন শুধুই এন আর সির নামে যেকোনো সময় বিদেশী বলে আবার দেশছাড়া হবার এক আতংকের। একবার ফিরতে চায় সেই দেশে যে দেশে তার শেকড় প্রোথিত আছে। কিন্তু ভুবন জানে না তার দেশের ঠিকানা।

    “দেশ! কী জানি কোনডা আমার দেশ”

    নিজস্ব একটুকরো স্থায়ী মাটির সন্ধানে মরিয়া ভুবন জানে মানুষের পৃথিবীতে কোনো সমাজ, কোনো দেশ তাকে আপন করে বুকে টেনে নেবে না কারণ রিফ্যুইজিদের জন্য দিগন্তের পর দিগন্ত জুড়ে শুধুই কাঁটাতারের বেড়া নির্ধারণ করা থাকে, তাদের কোনো দেশ হয়না। ভুবন তাই পাখি হতে চায়। পাখিদের জন্য কোনো সীমানা ভাগ করা থাকে না। পাখিরা মাটি গাছপালা টিলা সমস্ত চষে খুজে নেয় নিজেদের পছন্দের আস্তানাটি। ভুবনও তাই তোতার সঙ্গী হতে নিজেকে মাছির মতো ক্ষুদ্র অবয়বে মানানসই করে নেয়। আসলে ভুবনের মতো দেশ মাটি হারা অসহায় মানুষেরা যে কোনো পরিস্থিতি পরিসরে নিজেদের মানিয়ে নেবার আপ্রাণ চেষ্টা করে কিন্তু সফল হয়না। দেশ থেকে দেশান্তরে ছুটে বেড়ানোর পরম্পরা তাদের পিছু ছাড়ে না। কখনো অভাব কখনো রাষ্ট্র, কখনও মহাজন তাড়া করে শানিত ঠোঁটে আর ভুবনদের মতো মানুষের অস্তিত্বের পরিসরটুকু ছোটো হতে হতে মাছির মতো তুচ্ছ নগণ্য হয়ে যায়, তবুও ভুবনরা ছোটে শুধুই ছোটে।

    শ্যামল বৈদ্যর গল্পের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ তাঁর সহজ সবল, ধোঁয়াশা বর্জিত টানটান গল্পভাষা। তথ্যের ভারে ভারাক্রান্ত, অযথা চরিত্রের বাহুল্য, তার গল্পকে কখনই মেদবহুল করে তোলার পরিসর পায়নি। ছোট্ট ছোট্ট বাক্যে শ্যামল তৈরি করেন এক অপার রহস্যময় ছায়াপথের হাতছানি। ‘কাউবয় টুপি” গল্পে শ্যামল এক অনন্ত নিঃসঙ্গতার দীর্ঘশ্বাস ছড়িয়ে দিয়েছেন গল্পের পরতে পরতে। সঞ্জয় কাবেরির রুটীন বাঁধা দাম্পত্য জীবনে কাবেরি যে অনেক দিন হেসে কথা বলে না, রাতে শারীরিক চাহিদার তাগিদ ছাড়া সঞ্জয় যে বউয়ের কাছে আসে না অনেকদিন থেকে এই সত্যটুকু যখন সঞ্জয় আবিষ্কার করে ততদিনে কাবেরি একাকীত্বের পথ হাঁটতে হাঁটতে সঞ্জয় থেকে বহুদূর চলে গেছে। এক ছাদের নীচে থেকে সময় মতো সঞ্জয়ের ওষুধ, জল খাবার সব এগিয়ে দিয়েও কাবেরি তখন অন্য জগতের বাসিন্দা। মানুষের সঙ্গবর্জিত অভ্যস্ত জীবনে কাবেরি রপ্ত করে নেয় অপার্থিব জগতের নৈশব্দের ভাষা। বোবা প্রকৃতির সঙ্গে নিজেকে এক করে নেবার সংযোগ সেতুটি তৈরি হয় নির্জন একাকীত্বের সংবেদনশীলতায়। নিজের অস্তিত্বটুকু যখন একান্ত কাছের মানুষটির সংবেদনশীলতায় অনুভূতিতে সামান্যতমও পাশে থাকার ভরসার উত্তাপ জোগাতে ব্যর্থ হয় তখন আসলে সেই লোকটিতে আর মৃত ব্যক্তিতে কোনো অফাত থাকে না। সমাজ সংসারের চোখে পাগল এক সাহেবের মৃত্যুর পর কাবেরি সেই সাহেবের টুপি আর কোটটা ঘরে এনে রেখে তার নিজের চারপাশে সাহেবের উপস্থিতি প্রবলভাবে অনুভব করে। সাহেব তার পাশে আছে। সাহেবের নিঃস্বার্থ সাহচর্যের অনুভব কাবেরিকে শেখায় বেঁচে থাকা মানেই শুধু বুক ভরে নিশ্বাস নিতে পারা কিংবা হেঁটে চলে বেড়ানো না। চারপাশে অকারণ কিছু হাসি ছড়িয়ে দিয়ে, চাঁদের আলো গায়ে মেখে পরস্পরের আবেগ অনুভূতিকে ছুঁয়ে থাকার নামই জীবন। জীবনের এইসব উপাদান হারিয়ে গেলে মানুষ শ্বাসে প্রশ্বাসে বেঁচে থাকলেও আসলে মরে যায়। আর তাই সঞ্জয় কাবেরির কাছে আসলে প্রবল ভাবে মৃত, তার অস্তিত্ব জিরো। সঞ্জয়ের অস্তিত্ব সে ফিল করতে পারে মা । মৃত সাহেবকে ঘিরে সে তার নিজস্ব ভালো থাকার জগতটি তৈরি করে ভালো থাকে। জীবন মৃত্যু, জীবিত মৃতের মধ্যে এক অদ্ভুত কাটাকুটি খেলা শ্যামল বৈদ্যের এই গল্পটি।

    শ্যামল বৈদ্যের গল্পের বেশিরভাগ নারীরা নিজেদের চাওয়া পাওয়া চাহিদা সম্পর্কে স্পষ্ট উচ্চারণে অভ্যস্ত। শ্যামল তাঁর গল্প-শরীরের ভাঁজে ভাঁজে একাধিক সম্ভাবনার বীজ বপন করে রাখেন এক মিহিন শৈল্পিকতায়। পাঠক সেইসব সম্ভাবনার সূত্র ধরে ধরে নিজের অজান্তেই গল্পের চেনা চরিত্রদের আবিষ্কার করেন এক অচেনা পরিসরে। বিশেষ করে তাঁর গল্পের বেশিরভাগ আটপৌরে সংসার পরিজন সর্বস্ব চেনা নারীরা যখন নানা অর্থহীন সামাজিক, পরিবারিক অনুশাসনের চাপে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন তখন সম্পর্কের গণ্ডী ভেঙে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন না সত্যি কিন্তু প্রবল মানসিক দৃঢ়তায় একান্ত নিজস্ব একটা পরিসর তৈরি করে নেন। নিজের ভালো লাগা মন্দ লাগাকে প্রতিষ্টিত করেন সেই প্রতিকূল পরিবেশে। নিজের শরীর, মন জীবনের অধিকারটি একান্তই নিজের, শ্যামল বৈদ্যের গল্পের নারীরা এই সত্য প্রবল্ভাবে বিশ্বাস করেন এবং অনুসরণ করেন। একজন প্রৌঢ় পুরুষের সঙ্গে এক অনাত্মীয়া যুবতী নারীর সামাজিক সম্পর্কের নানা বেড়াজাল, ট্যাবু, বিধি নিষেধের শেষে নারী পুরুষের আদিম সম্পর্কই যে অবদমিত থাকে “বৃক্ষ ও অঙ্কুর” গল্পে শ্যামল সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত করেছেন দারুণ সাহসী মুন্সিয়ানায়। এই গল্পের নারী চরিত্রটির কোনো নামকরণ শ্যামল করেননি। পরমা সুন্দরী কন্যা, বউমা, বউ, বধূ, পাগলপ্রায় নারী, মেয়েটা … এরকম নানা বিশেষণ প্রয়োগ করে গল্পকার হয়তো এই বার্তাই পৌঁছাতে চেয়েছেন পাঠকের কাছে এই গল্প কোনো বিশেষ নারীর গল্প নয়। স্বামীর সন্তান উৎপাদনের অক্ষমতা যখন সংসার তার উপর চাপিয়ে দিতে চায় তখন নিজের মাতৃত্বে সক্ষমতাকে প্রমাণ করতে নারীর চাই একটি পুরুষ, সন্তান উৎপাদনে সক্ষম পুরুষ। সেখানে বয়স, সামাজিক বিধিনিষেধ কিছু অর্থহীন ট্যাবু মাত্র। এই গল্পের প্রমোদবাবুর বউমা শ্বশুরের বন্ধুকে শারীরীক মিলনের জন্য আহ্বান জানায়। প্রথমে হতবাক নিরঞ্জনবাবুর মনে আজন্ম লালিত পাপ পুণ্যের সংস্কার বাধা হয়ে দাড়ালেও শেষ পর্যন্ত তার শরীরের কাছে মন হার মানতে বাধ্য হয়। শ্বশুরতুল্য নিরঞ্জনবাবু নিজেকে সমর্পণ করেন বন্ধুর পুত্রবধূর সন্তান কামনার তীব্র শারীরিক আহ্বানের কাছে। মাতৃত্বে সক্ষম এক অসহায় নারীর মা হওয়ার এই পন্থা, বিশেষ করে পুরুষটি নির্বাচনের সিদ্ধান্তে পাঠককে একই সঙ্গে চমকিত এবং চমৎকৃত করেন শ্যামল এক নিস্পৃহ কথকতায়।

    সাপে কাটা মানুষকে জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয় যদি কোনো ওঝা সেই মৃতদেহে প্রাণ সঞ্চার করতে পারে এই আশায়। গ্রাম বাংলার বহু প্রাচীন এই মিথটি বহু গল্প উপন্যাসে বহু ব্যবহৃত। শ্যামল বৈদ্যের সর্পিলাকার গল্পটিতেও এই মিথের দেখা মেলে। কিন্তু এই বহু প্রাচীন, বহু ব্যবহৃত মিথ সম্বলিত গল্পটি অভিনব হয়ে ওঠে এখানেই যখন দেখা যায় মরণ সাধু নামের চরিত্রটি এই লোকাচারে এতটাই সম্পৃক্ত হয়ে যায় যে সে নিজেই একটা মিথে পর্যবসিত মানুষ হয়ে ওঠে। ভ্যানাম, এন্টিভ্যানামের বিন্দু বিসর্গ না জানা মরণসাধুকে সাপেরা ভয় পায়। সাপের ছোবলে যার নেশা গাঢ় হয়, যার গন্ধ পেলে সাপেরা সেই এলাকা ছেড়ে পালায় সেই মরণ সাধু বিশ্বাস রাখে হিড়িং কিড়িং মন্ত্রে। মন্ত্রগুণের ব্যর্থতায় আহত হয় সাধুর অহং, ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। নিস্তার পায় না অসহায় মৃতদেহও। নদীতে ভেসে আসা সাপেকাটা যুবতীর মৃতদেহ ক্ষত বিক্ষত করে নিজের অক্ষমতার আক্রোশে তারপর আবার জলে ভাসিয়ে দেয় শেখাওত ওঝার উদ্দেশ্যে। মরণসাধু থেকে শেখাওত ওঝা, তারপর শেখাওত থেকে হয়তো অন্য আরও কোনো কেউ… মিথেরা এভাবেই ক্রমাগত চর্যায় বেঁচে থাকে আর এই বাঁচার পথে জন্ম দিয়ে যায় মরণসাধুর মতো নতুন নতুন মিথের।

  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments