• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৯৬ | অক্টোবর ২০২৪ | কবিতা
    Share
  • গুচ্ছকবিতা : শাম্ভবী ঘোষ

    অন্তিম চক্র
    তারুণ্য আমাকে ছোঁয়নি কখনো,
    ছোঁয়নি রিরংসা।
    অদর্শন ঋতু, তুমি চলে গিয়ে
    মুক্ত করে গেছ।
    এটুকুই প্রাপ্য আমার, ধরিত্রীর—
    রক্ত নয়, ফুল।
    এখন শুধু তীব্র বর্ষণের শেষে
    দীর্ঘঃশ্বাস, ঘুম।


    গভীরে যাব না
    বরং বলা ভাল, “দীঘি কই,” জানতে চাইলে
    আঙুল তুলে বলব, “ওই যে, আরও দক্ষিণে।”

    তুমি মাইলের পর মাইল হেঁটে প্রথমে
    অবাক হবে, তারপর আসবে রাগ, বিরক্তি, ব্যঙ্গ,
    অবশেষে হতাশা নামবে মাঘ মাসের সন্ধ্যের মতো।
    দীঘি কই, এই হাড়-খট্‌খটে মরুভূমির ভিতর!

    আমি জানি, উত্তর দিকে অনন্ত জল।
    আমি ছাড়া কেউ যাবে না সেখানে।


    পিছুটান
    আমার ঈশ্বরকে সহচর
    বেড়ালের রূপ ধরে
    অগ্রহায়ণের রোদে ঘুমের
    গভীরে দেখে মনে হয়,

    নিবিড় মায়ার এই
    খেলাঘর দূরে ঠেলে
    বারবার কেন শুধু
    অগস্ত্যযাত্রার প্রয়াস?

    বরং, হে মহাজগৎ,
    তোমার উপর এই
    উষ্ণ কুহকজাল টেনে
    দেব, যবনিকাসম।


    মোক্ষ
    মানুষ বৃক্ষ নয়,
    বৃক্ষ হতে পারেনি এখনও।

    বৃক্ষেরা ঈশ্বরের কাছে
    জেনেছে, সংকীর্ণ
    পরিধির ওপারে
    দূর, অস্পষ্ট অতীতে

    তাদের জটিল শিকড়
    আদিম সময়ের পাথুরে
    শরীর চৌচির করে
    পৃথিবীর হৃদয়ের গভীরে

    পৌঁছেছিল—তারা
    স্বপ্নের সুদূর-বিস্তৃত
    ক্যানভাসে একলা
    মোনোক্রোম।

    মানুষ একলা নয়,
    একলা হতে পারেনি এখনও।


    অন্তরায়
    কবিতা বোঝোনি তুমি,
    আমার ভাষার অক্ষরটান
    গূঢ় স্রোতস্বিনী—নিবিড়
    যে সাগরে তার অবসান,
    সে ঢেউয়ের মূর্ছনা তোমার কালস্বপ্নে অশ্রুত।

    কী সংকেতে
    শব্দ পৌঁছাবে, কোন
    তরঙ্গে পাঠাব প্রার্থনা?
    এ ভাষার গহন যাত্রাপথ
    শুধু যে চিরনৈঃশব্দের অন্তরায় হয়ে আছে।



    অলংকরণ (Artwork) : অনন্যা দাশ
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments