১৯৪৭-এর আগস্টে যেদিন ভারত স্বাধীন ঘোষণা হল ও একই সঙ্গে পার্টিশনও ঘোষণা হল, সেই সময়ে আমার দাদু (উনি লাহোর ইউনিভার্সিটির লেকচারার ছিলেন) সিমলাতে তাঁর পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে ছুটি কাটাচ্ছিলেন। সুতরাং আমাদের পরিবারে সেই মরা মানুষের স্তূপ-ভর্তি ট্রেনে করে পালিয়ে আসার মত কোনও লোমহর্ষক গল্প নেই- দাদুরা হঠাৎই একদিন আবিষ্কার করলেন যে নিজেদের বাড়িতে আর তাঁরা ফিরে যেতে পারবেন না। কয়েক মাস পরে জানা গেল যে দাদুর এক ভাগনে যিনি RSS-এর সদস্য ছিলেন তিনি লাহোর জেলে আটক আছেন। দাদু স্থির করলেন লাহোরে ফিরে গিয়ে ছেলেটিকে বার করে আনবেন। দাদুর কাছ থেকে পরে শুনেছিলাম যে বিশেষ কোন ঝামেলা হয়নি। তিনি দিব্যি টিকিট কেটে, ট্রেনে চেপে লাহোরে চলে গিয়েছিলেন।
দাদু ওখানকার সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন, অনেক বন্ধুবান্ধবও ছিল শহরে, কাজেই ভাগনেকে জেল থেকে বের করে ভারতে নিয়ে আসতে তাঁর কোনও সমস্যা হয়নি। কেউ তাঁকে বিরক্ত করেনি বা ভয়ও দেখায়নি।
পরে দাদু ভারতের অনেক জায়গাতেই ঘুরেছিলেন- শেষের দিকে যুক্তপ্রদেশের দেরাদুন-এ, ও বিহারের রাঁচী শহরেও বেশ কিছুকাল ছিলেন। অবিভক্ত পাঞ্জাবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শহর ছিল লাহোর, সেরকম কিন্তু আর কোনটাকেই মনে হয়নি।
আমার বাবার প্রজন্মের লোকেরাও বংশানুক্রমিকভাবে এই অভাববোধটা অনুভব করতেন যদিও ‘লাহোর’ কী তা তাঁরা তেমনভাবে জানতেনই না। তাঁরা মাঝে মাঝেই আবার ফিরে যাবার কথা বলেন কিন্তু পাকিস্তান ও ভারতের সম্পর্ক এতোই কঠিন হয়েছে যে তা কাজে পরিণত করা অসম্ভবের পর্যায়ে। বাবা একসময়ে পাকিস্তানে যাবার ভিসা চেয়েছিলেন কিন্তু পাননি তাঁর এক ভাই ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করেন বলে।
আমার বাবা এক মজার গল্প বলেন: ওঁর এক পাকিস্তানী বন্ধুর ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো ব্যাপার হয়েছিল। উনি ভারতে আসতে চেয়ে ভিসা পাননি, কারণ তিনি এক সময়ে সেনাবাহিনীতে কাজ করেছিলেন। তিনি ভারতীয় দূতাবাসে প্রতিবাদ করেছিলেন এই বলে যে তিনি কাজ করেছিলেন ’৪৭-এর আগে; সুতরাং তিনি ভারতীয় সেনাবিভাগে ছিলেন, পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনীতে নয়। কিন্তু তাও উনি ভিসা পাননি। বৈরীভাবাপন্ন সরকারি আইনগুলোর এই হল কিম্ভূত ব্যাপারস্যাপার। নেহরু বা লিয়াকত আলিও এইসব দেখলে ভয় পেয়ে যেতেন।
সম্প্রতি আমেরিকা থেকে দরখাস্ত করে এবং কিছু প্রতিষ্ঠিত বন্ধু আমাকে সাহায্য করায় আমি লাহোর যাবার একটি ট্যুরিস্ট ভিসা যোগাড় করি। লাহোর এর আগে আমি কখনও দেখিনি।
নতুন দিল্লী থেকে একটি PIA-এর বিমানে আমি লাহোর যাচ্ছিলাম। বিমানে আমার পাশের আসনে একজন শিখ ভদ্রলোক ছিলেন। জিজ্ঞেস করলাম উনি তীর্থ দর্শনে যাচ্ছেন কি না।
“তীর্থদর্শন তো করবোই, তবে আমি বযবসার কাজে একটা দলের সঙ্গে যাচ্ছি।”
উনি আমাকে তাঁর ভিসা-টি দেখালে লক্ষ্য করলাম যে উনি অনেকগুলি শহরে যাবার ছাড়পত্র পেয়েছেন, যথা ইসলামাবাদ, নামখানা সাহিব এবং আরো কিছু শিখদের পবিত্র তীর্থ শহর। আমার মত শুধু ‘লাহোর ওন্লি’ লেখা ভিসা নয়। ওঁর ভিসায় এটাও লেখা আছে দেখলাম যে ওনাকে পাকিস্তানে নেমে কোনও পুলিশ রিপোর্ট করতে হবে না।
এটা খুবই নজর কাড়ার মত: এতে বোঝা গেল যে ওঁর ভিসাটি পাক সরকারের সর্বোচ্চ স্তর থেকে অনুমোদিত হয়ে এসেছে। পরে ‘জং’ নামের উর্দু সংবাদপত্রটি চেয়ে নিয়ে পড়তে শুরু করি আমার উর্দুর অভ্যাসটি ঝালাতে। সেখানে প্রথম পাতাতেই দেখি যে ওঁদের দলের এই ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণের খবরটি রয়েছে।
আমাকে বলেছিলেন ওনার ও অন্যান্য ব্যবসায়ী বন্ধুদের এই সীমান্ত পারাপার করে ব্যবসা করার অসুবিধের কথা। বললেন যে মাল চলাচল করতে পারে একমাত্র মধ্যপ্রাচ্যের ভিতর দিয়ে। ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক নিয়ে ওঁকে খুবই বিব্রত মনে হচ্ছিল। বললেন, “আমরা সকলেই ভুগছি কাশ্মীরের জন্য।”
আমাদের লাহোরে আসাটা খুবই নির্ঝঞ্ঝাট হয়েছিল। লাহোর কাস্টমস-এর কর্মীরা নয়াদিল্লীর কাস্টমস কর্মীদের তুলনায় আমার ভারতীয় পাসপোর্ট ইত্যাদি খুব তাড়াতাড়িই দেখে দিলেন। বেশ হাসিমুখে আমাদের অভ্যর্থনা করলেন, এমনকি একজন সুন্দরী মহিলা কর্মী আমার জুতোর ফিতে যে খুলে গেছে সেটা মনে করিয়ে দিলেন।
বুঝতে পারিনি যে আমি পাকিস্তানে ঢুকেই একটা আইন ভঙ্গ করেছি। কারণ আমার ভিসায় ছাপা হল ক্যান্টনমেন্ট অঞ্চলে যাওয়া বারণ। ভারত-পাকিস্তান একে অন্যত্র শত্রু ভাবে, যার জন্য এই নিয়মটা দু-দেশেই স্ট্যান্ডার্ড। মুশকিল এই যে ভারত ও পাকিস্তান, দু-দেশেই চারদিকে প্রচুর ক্যান্টনমেন্ট অঞ্চল আছে যার ভিতর ইদানীং বহু সাধারণ লোকবসতিও গড়ে উঠেছে। এমনকি লাহোর বিমানবন্দরটিই লাহোর ক্যান্টনমেন্টের ভিতর। কাজেই সেখানে উড়ে এসেই আমি আইন ভঙ্গ করেছি, ফিরে যাবার সময়ও করব আরও একবার।
আমি যে শুক্রবারে এসে লাহোরে পৌঁছলাম সেটা ‘বসন্ত’ উৎসবের ঠিক আগের সপ্তাহে। বসন্ত হল একটা বড় ধর্মনিরপেক্ষ উৎসব। দাদু পরে বলেছিলেন যে আগে লাহোরের হিন্দুরা এই উৎসবের দিন সকালে হলুদ রঙের পোষাক পরতেন।
আজকাল, লাহোরের সব হিন্দুরা চলে যাবার পর, এই উৎসবটি হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী বসন্ত পঞ্চমীর দিন না হয়ে মার্চ বা ফেব্রুয়ারির কোন এক রবিবারে হয়। (পাকিস্তানে সাপ্তাহিক ছুটির দিনটি শুক্রবার থেকে পালটে এখন রবিবার হয়েছে।) বিশেষ উইকএন্ডটা ‘পাকিস্তানী ঘুড়ি ওড়ান সংস্থা’ (Pakistani Kite Flyers Association) আবহাওয়ার পূর্বাভাষ লক্ষ্য করে ঠিক করেন। কোনও বসন্তে বৃষ্টি পড়লেই কেলেংকারি কারণ এই দিনটিতে ঘুড়ি ওড়ান এখন একটা প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লাহোরে একটা কথা আছে, ‘বসন্ত্, পালা ওরানৎ’। মানে হল ‘বসন্তের সাথে ঠান্ডার শেষ হয়।’ দিল্লীতে দোলের মত এটা একটা বসন্তকালীন উৎসব।
শেষ দশক থেকে একটা নতুন প্রথা এসেছে যার নাম ‘রাতি বসন্ত্’। লাহোরীরা সব পাঁচিল-ঘেরা পুরনো শহরে গিয়ে সন্ধ্যা নাগাদ জড়ো হয়, তারপর খাওয়াদাওয়া করে ছাদে ঘুড়ি ওড়াতে যায়; ফ্লাডলাইটের আলোর বন্যায় সারা আকাশ ভেসে যায় আর সেখানে ঘুড়ি উড়তে থাকে। সেই রাতে যে দুটি খাবার আমাকে দেওয়া হয়েছিল ‘রাতিবসন্ত্’-এর প্রথাসম্মত ভাবে, তা হল ‘হারিশা’ (কাশ্মীরি ‘হালিম’-এর এক সংস্করণ, নান রুটি দিয়ে খেতে হয়), আর চাইনীজ এগ- ড্রপ স্যুপ।
সেই রাতে আকাশে উড়ে যাওয়া হাজারে হাজারে আলো-জ্বলা সাদা ঘুড়িই একমাত্র মজা ছিল না, মাঝে মাঝে কালাশ্নিকভ বন্দুক থেকে মজা করে ট্রেসার ছোঁড়া হচ্ছিল। আকাশ লাল হয়ে যাচ্ছিল। একজন বন্দুকবাজ আমাদের খুব কাছেই ছিল, আমরা যেই বন্দুকের র্যাট-অ্যা-ট্যাট-ট্যাট আওয়াজ শুনছিলাম, অমনি কার্নিশের আড়ালে লুকিয়ে পড়ছিলাম।
সবচেয়ে বিরক্তিকর ব্যাপার হল বিদ্যুৎ বিপর্যয়, প্রায়ই উৎসবের সময়ে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ চলে গিয়ে শহরে হঠাৎ অন্ধকার নেমে আসে, আশপাশের গানটানও বন্ধ হয়ে যায়। এর কারণ হিসেবে জেনেছিলাম যে ঘুড়িতে তামার তার ব্যবহার করা হয়, যাতে ওটা প্যাঁচে কেউ কাটতে না পারে। ঘুড়ি ওড়ানোর ব্যাপারটাই হল অন্যের ঘুড়ি কাটা আর তারপর কাটা ঘুড়িটাকে সুতোর মধ্যে পেঁচিয়ে ফেলে সংগ্রহ করা। কিন্তু এটা করতে গিয়ে ঘুড়ির তারে আর ইলেকট্রিক তারে জড়াজড়ি হয়ে ব্যাপক ও বিপজ্জনক রকমের শর্ট সার্কিট!
বসন্ত উৎসবের পরের সোমবার আমি পুলিশ ফাঁড়িতে রেজিস্ট্রী হতে গেলাম। (ভিসাতে ‘Exempt From Police Reporting’ লেখা না থাকলে সব ভারতীয়কেই এটা করতে হয়।)
পুলিশরা দেখলাম সবাই বেশ নম্র। আমাদের চা-টা খাওয়ালেন, এবং বেশ অতিথির মত ব্যবহার করলেন। দুঃখের কথা হল কেউ রেজিস্ট্রী হয়ে গেলেই গুপ্ত-পুলিশ (অথচ খুব একটা গোপন থাকেন না) তাঁকে অনুসরণ করতে থাকে, বোধহয় ফাইলে কিছু নোট রাখবার জন্য)।
এর ফলে পরের দিন থেকে আমি কোথাও গেলেই ইনস্পেক্টর আল্লা বখ্শের ফোন আসতো আর উনি যে বন্ধুটির কাছে আমি গিয়েছিলাম তাঁর সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলতেন। বোঝাই যেত ওঁরা অনুসরণ করছেন কিন্তু আমি যেটা বুঝতাম না তা হল আমি কোথাও গিয়ে পৌঁছবার পরেই কেন ওঁরা ফোন করতেন, বেরিয়ে যাবার পরে না করে। আমি বন্ধুদের বললাম আমিও তো একবার ইন্সপেক্টর আল্লা বখ্শের সাথে কথা বলতে পারি, সারা দিনের শেষে ওঁকে বেশ পুরনো বন্ধুর মত মনে হচ্ছে, তো ওরা হেসে উড়িয়ে দিল।
ভারতীয়রা এটা জানার সুযোগ পান না, কিন্তু ভারতও পাকিস্তানী পর্যটকদের সঙ্গে একইরকম ব্যবহার করে- তাঁদেরও পুলিশে রিপোর্ট করতে হয়, কখনও কখনও রোজ, তাঁদেরও প্রায় সর্বত্র অনুসরণ করে সাদা পোষাকের পুলিশেরা, যাঁদের চেহারা লিকলিকে হলেও গোঁফ বেশ ঝোপালো।
লাহোরে আছে শাহী কিল্লা বা লাহোর ফোর্ট যার অন্যদিকে শাহী মসজিদ। কাছেই মহারাজা রঞ্জিত সিং-এর সমাধি, লাহোরেই ছিল তাঁর দরবার। ওই সমাধিতে ঢুকতে চাইলে প্রবেশদ্বারে শিখ লোকটি আমাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন যে তার অনুমতি নেই।
শাহী মসজিদে লম্বা দাড়িওয়ালা এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক আমাদের প্রদর্শক হতে চাইলেন। তাঁর মুখে শিক্ষিত উচ্চারণের ইংরেজি শুনে মনে হল তিনি কোন সাধারণ ট্যুর-গাইড নন। তিনি ছিলেন ব্যুরোক্র্যাটদের একজন যাঁরা পাকিস্তানকে, তাঁর ভাষায় “তৈরি করেছেন”।
তিনি জানালেন যে ভুট্টো তাঁকে একসময় চাকরি দেন, আবার তা কেড়েও নেন। জিয়া ওঁকে সেই চাকরিতে ফিরিয়ে আনলেও শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের সরকারি চাকরির অনিশ্চিত পৃথিবীতে তাঁর স্থান হয় না, তিনি পেনশন ছাড়াই অবসর নেন। বর্তমানে তাঁকে কেউ দেখে না; ছেলেটি আমেরিকায় পড়তে গিয়ে ওঁকে ভুলেই গেছে। শেষজীবনে তাই তিনি পর্যটকদের কাছে লাহোরের স্মৃতিসৌধগুলোর এবং পাকিস্তানের ইতিহাস বলে বলে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
লাহোরের এখানে-ওখানে ৪৭-এর পূর্বেকার সময়ের টুকরো টুকরো অস্বস্তিকর স্মৃতিচিহ্ন ছড়িয়ে রয়েছে। শহরের ম্যাপে আজও পুরনো হিন্দু পাড়াগুলোর নাম আগের মতই আছে, যেমন রামনগর, শ্যামনগর ইত্যাদি। ‘ম্যল’-এর কাছে একটা খুব কারুকার্য করা বাড়ি, তার ভিতরে এখন কিছু ব্যবসায়ী সংস্থা হয়েছে। বাড়িটার নাম দেখলাম ‘বাবা ধিঙ্গা সিং বিল্ডিং’- বোধহয় যে হিন্দু লোকটি এটা করেছিলেন তাঁর নামে। দেবনাগরী অক্ষরে লেখা একমাত্র নিদর্শন আমি যা দেখলাম তা হল দয়ানন্দ অ্যাংলো বৈদিক কলেজের নামে লেখা ফলকটি। কলেজের নাম যদিও পালটে গেছে তবুও প্রবেশদ্বারের কাছে পুরনো নামটা আজও কষ্ট করলে পড়া যায়।
চলে যাওয়া হিন্দুদের স্মৃতিও কিছু থেকে গেছে। অনেক দোকানী যাঁদের দোকানে আমি গিয়েছিলাম আমাকে দাঁড় করিয়ে রেখে অনেক গল্প করছেন। আমি ভারত থেকে আসছি শুনে একজন বললেন ওঁরা আগে হিন্দু ছিলেন। আর একজন বললেন যে আমার পারিবারিক নাম ‘ওবেরয়’ পদবীওয়ালা লোক এখনও কিছু আছেন লাহোরে যদিও তারা মুসলমান।
লাহোরে আমার সঙ্গে একজন মানুষেরও দেখা হয়নি যিনি শত্রুভাবাপন্ন। দিল্লীতে ফিরে আসার পর এই ভেবে আশ্চর্য লাগছিল যে লাহোরের সত্যিকারের দূরত্ব কত কম, অথচ সে যেন ধরা ছোঁওয়ার বাইরে। লাহোর আর অমৃতসর এত কাছাকাছি যে সীমান্তটি না থাকলে এরা যমজ শহর হতে পারতো- তবু একজন সাধারণ লোকের পক্ষে ভিসা নিয়ে এই ছোট্ট জমিটুকু পার হওয়া এতই শক্ত যে আন্তর্সীমান্ত মেলামেশা নেই বললেই হয়।
এখন পাঞ্জাবের এক প্রধান রাজনৈতিক বিতর্কের বিষয় হল আন্তর্সীমান্ত যাতায়াতের ব্যবস্থা, যাতে দু-পক্ষই নিজেদের আরো ভালোভাবে চিনতে পারে। ব্রিটিশ-রাজত্বে একজন ছাত্র মাত্র কয়েকটাকার একটা টিকিট কেটে লাহোরে চলে যেতে পারতো- আর আজ! যেতে গেলে যদি কেউ বহু কাঠখড় পুড়িয়ে একটা ভিসা সংগ্রহ করতে পারেনও, তারপরেও তাঁকে হয় বিমানে উড়ে যেতে হবে, নয়তো আগে দিল্লী গিয়ে সেখান থেকে ট্রেনে করে, পাঞ্জাবের ভিতরে না থেমে, তবে যেতে হবে।
এটা কী ধরনের প্রগতি? এই যদি স্বাধীনতা হয় তবে তার সঙ্গে বন্দীত্বের তফাৎ কোথায়?