• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৯৪ | এপ্রিল ২০২৪ | ভ্রমণকাহিনি, প্রকৃতি, বাকিসব
    Share
  • পশ্চিমবঙ্গের চূড়ায় পাঁচজন : রাহুল মজুমদার
    পর্ব ১ | পর্ব ২



    ১ মার্চ ২০২৩
    রাত ৯.৩০

    বুড়োবুড়ি এবার তিন ছোঁড়াকে ল্যাজে বেঁধে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের সবথেকে উঁচু জায়গায় — সন্দক- ফুতে। তিনজনেরই (সৌরদীপ, অয়ন আর সৌম্যকান্তি) এই প্রথম সন্দক- ফু যাওয়া। বুড়োবুড়ি সৌরদীপের মা- বাবার ঘাড়ে চেপে শিয়ালদহে পৌঁছে গেল। বাকি দু জনও চলে এলো সময় থাকতেই।

    দার্জিলিং মেল ১০.০৫ এ শিয়ালদহের মায়া কাটাল। তিন তরুণ নতুন ধরনের অ্যাডভেঞ্চারের উত্তেজনায় টগবগে। ওরা ঘুমানোর অনেক আগেই বুড়োবুড়ি ঘুম-সাগরে ডুব সাঁতার কাটতে লেগে গেল।

    ২ মার্চ
    সকাল ৮.০৫

    নিউ জলপাইগুড়ির প্ল্যাটফর্মে নেমে তরুণদের তারুণ্য আরও জোরদার হয়ে উঠল। বুড়োবুড়ির মালপত্রও ওরাই স্টেশনের বাইরে নিয়ে এলো। সেখানে বিজয় তামাং তার WB 71 3627 নিয়ে অপেক্ষায়। মালপত্র আর পাঁচ সওয়ার উঠতেই ৮.৩২-এ গাড়ি নিউ জলপাইগুড়ি ছেড়ে মানেভঞ্জ্যাং-এর দিকে দৌড় লাগাল।

    এক জায়গায় পেট ভরে 'উপবাসভঙ্গ' করে ভর দুপুরের আগেই বিজয় পাঁচজনকে মানেভঞ্জ্যাং-এ নামিয়ে দিল। 'সিঙ্গালিলা ল্যান্ডরোভার অ্যাসোসিয়েশন'- এর কাউন্টার থেকে বরাদ্দ হলো WB 73 2376 ল্যান্ডরোভার ১৫০০০ টাকার কড়ারে। আর দিতে হলো বনবিভাগের ট্যাক্স ১০০০ টাকা।

    ঠিক পৌনে দুটোয় চড়াই পথে চাকা চড়ল গাড়ির। পিচঢালা পথ ধরে গাড়ি যত চড়তে লাগল, তিন তরুণ তুর্কির উৎসাহ উপচে উঠতে লাগল। চিত্রে পেরোতে কুড়ি মিনিটও লাগল না। আপার চিত্রেয় চেকপোস্টে পারমিটাদি দেখিয়ে আরও বেশ খানিকটা এগোতে এসে পড়ল লামেধুরা। সামনে চায়ের দোকান, আর বাঙালি চা চাখবে না— হয় নাকি! মিনিট ১৩ বরাদ্দ হলো লামেধুরার। চাপ্যায়িত হয়ে আবার ঊর্ধ্বারোহণ। ২.২১-এ মেঘমাখা মেঘমায় আরেক দফা পারমিট চেক। এবার বাঁদিকের নেপালের পথ না ধরে সরাসরি রামচড়াই ধরে গোঁ গোঁ করে উঠতে লাগল ল্যান্ডরোভার।

    ৩.১০ গাড়ি এসে থামল টংলুর টঙয়ে রাজু হোম স্টে-র আঙিনায়। মেঘেরা চেপে ধরে টের পাইয়ে দিল ঠান্ডা কাকে বলে।

    ঝটপট মোটা গরম জামাগুলো সবার গায়ে উঠে পড়ল। তিন তরুণের মেজাজ ঠিক শরীফ বলা যাবে না— নেট গরহাজির টংলুতে। জবরদস্ত ঠান্ডাটাও পুরোপুরি হজম হচ্ছে না তাদের। কিছুক্ষণের মধ্যেই গুঁড়ি গুড়ি বরফ পড়তে আরম্ভ করতে সমস্ত 'গিলা শিকওয়া'কে গুলি মেরে তিন তুর্কি প্রায় তুর্কিনাচন নেচে ওঠে আর কী। ৪ ডিগ্রির তাপমাত্রার সঙ্গে তুষারপাতের মেলবন্ধন সবাইকে বারান্দাতেই আটকে রাখল।

    রাত আটটাতেই 'ডিনার' শেষ। জোড়া লেপের আকর্ষণ এড়ানো অসম্ভব হয়ে পড়ল।



    অলংকরণ (Artwork) : স্কেচঃ লেখক
  • পর্ব ১ | পর্ব ২
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments