• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৯০ | এপ্রিল ২০২৩ | ছোটদের পরবাস | গল্প
    Share
  • কালাচাঁদের বিপদ : ইন্দ্রাণী গোস্বামী



    ভারী বিপদে পড়েছে কালাচাঁদ। সারা প্রাইমারি স্কুল তাণ্ডব করে কাটিয়ে এসেছে। একজন মাত্র দিদিমণি ছিল তাও মিড ডে মিল, ভোটের কাজ, আরও কিসব করতে ব্যস্ত থাকত। কিন্তু তা বলে কালাচাঁদ কিছুই জানে না তা নয়। ওর মধ্যেও দিদিমণি সব ছাত্রদের দুভাগে ভাগ করে পড়িয়ে নিত। মা তাই পেরাইভেট দিয়ে দিয়েছিল।

    সে সব চলছিল একরকম। কিন্তু গোল বাধল এই বড় ইস্কুলটায় এসে। বিস্তর দিদিমণি, মাষ্টারমশাই। ক্লাসে পড়া না করে এলে দিব্যি শাস্তি দেওয়া হয়। সবথেকে গোলমেলে হেডমাষ্টারমশাইটা। আচ্ছা কে কবে শুনেছ হেডমাষ্টার ক্লাস ফাইভে পড়ায়! পরিবেশ ক্লাস নেয়! ‘পরিবেশ পরিচয়’-এ সব আছে -- ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান, সবকিছু। যত না বইতে থাকে তার থেকে আরও বেশি বেশি পড়ায়। তাই তাকে দু চক্ষে দেখতে পারে না কালাচাঁদ। ক্লাসটা থাকে টিফিন পিরিয়ডের ঠিক পরেই। দুপুরের ভাতটা খেয়ে এমনিতেই আলসেমি আসে, তায় আবার ক্লাসের পাশেই মস্ত মস্ত গাছ। আর তাতে নানা ধরনের পাখি। কালাচাঁদ ঐসব শুনবে, না পাখিদের দিকে মন দেবে। ক’টা দুর্গাটুনটুনি দিব্যি ঘর বেঁধেছে আর তাদের ছোট ছোট বাচ্চা । কালাচাঁদ মাঝে মাঝেই নিজের জায়গা ছেড়ে পাখি দেখতে যায় অথবা রাস্তার ফেরিওয়ালাদের দেখে। আর জন্মশত্তুর মাষ্টারমশাইরা ওকে বার করে দেয় ক্লাস থেকে। সে একপক্ষে ভালই হয়। ওদিকে খেলার মাঠ, কোন-না-কোন ক্লাস খেলছেই। মৌজ করে সেটাই দেখে সে। কালাচাঁদ অবশ্য একাই এত গুণধর নয়। পবন, রুদ্র, বিজয়-- কাকে বাদ দেবে?

    কিন্তু আজকের বিষয়টা একটু গুরুতর। আগষ্ট মাসের প্রায় শেষ। সামনের মাঠে দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল হচ্ছে। অঙ্ক ক্লাসে কাটাকুটি খেলতে গিয়ে বিপদতারণ-স্যারের হাতে দু ঘা খেয়েছে এবং ক্লাসের বাইরে যেতে হয়েছে। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল, কারণ বাইরে থেকে প্যান্ডেল বানানোটা আরও পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। দুটো লোক বাঁশ বেঁধে বেঁধে এত উঁচুতে উঠেছে যে তাদের পুতুলের মত লাগছে। কালাচাঁদের শুধু মনে হচ্ছিল ওরা যেন আকাশের কাছাকাছি হয়ে গেছে, আর চাঁদ-তারা, এমনকি মেঘেদের আনাগোনার পথটাও দেখতে পাচ্ছে। অধীর আগ্রহে সে অপেক্ষা করছে কখন টিফিন হবে। ও একবার উঠে দেখবে, দেখবেই।

    তা বলে এতবড় কাজ জানান না দিয়ে করলে চলবে কি করে? তাই প্রবীর, সাগর আর রুদ্রকে ডেকে নিতে হল। তাড়াতাড়ি করে দৌড়ে প্যান্ডেলের কাছে গিয়ে কালাচাঁদ তড়বড় করে বাঁশের প্রথম মাচাটায় পা রাখল। বাঁশটা মচমচ করে উঠল, একটু দুলে উঠল কি? বুকটা ঢিপ ঢিপ করে উঠল কালাচাঁদের। কিন্তু এখন আর পেছনোর উপায় নেই। বন্ধুদের কাছে প্রেস্টিজ থাকবে না। তাছাড়া ওই ওপরে গিয়ে দেখলে আকাশের অনেক কিছু ও দেখে নিতে পারবে। মেঘেদের আনাগোনার পথটাও দেখা হয়ে যাবে। বাঁশের খাঁচায় সাবধানে পা রেখে উঠে চলেছে কালাচাঁদ। নীচে প্রাণের বন্ধুরা দাঁড়িয়ে, তাদের মধ্যে তখন তুমুল উত্তেজনা। দেখতে দেখতে অনেকেই এসে ভিড় করেছে। সবাই মাথা উঁচিয়ে দেখছে আর উত্তেজিত আলোচনা চলছে। প্রবীর আর পারল না, সেও উঠতে শুরু করল। কালাচাঁদ পারলে সে পারবে না কেন? ছেলেদের হইচই স্যারেদের কানে গেছিল বোধহয়। দেখা গেল স্যারেরা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসছেন। কালাচাঁদ উঠেই চলেছে আর তিনটে ধাপ হলেই মাথায় উঠবে। আকাশ ছোঁবে ও। কিভাবে যেন হঠাৎ নিচের দিকে চোখ চলে গেল। সর্বনাশ! হেডস্যার দেবীপ্রসাদবাবু। প্রবীরও খানিকটা উঠে পড়েছে। নিজের অজান্তে কালাচাঁদ চেঁচিয়ে উঠল, “প্রবীর, হেডস্যার।” নিচের দিকে তাকাতে গিয়ে প্রবীরের হাত গেল পিছলে। একেবারে মাটিতে। থরথর করে কাঁপছে কালাচাঁদ, কিন্তু বেসামাল হয়নি। দাঁড়িয়ে গেছে। প্রবীর মনে হচ্ছে জ্ঞান হারিয়েছে, পড়ে গিয়ে না হেডস্যারের ভয়ে তা কালাচাঁদ জানে না। আকাশ, মেঘ, চাঁদ, তারা সব তালগোল পাকিয়ে এক্কেবারে বাস্তবের পাথুরে মাটিতে। নামবে কি নামবে না ভাবতে ভাবতে নামতেই হল। নেমে পর পর তিনটে ঘটনা ঘটতে দেখল ও। প্রবীরের জ্ঞান এসেছে, ফিফথ আর সিক্সথ পিরিয়ড ভণ্ডুল, আর ওর মাকে ডাকিয়ে এনে ওকে দু মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছেন হেডস্যার।

    দিন সাতেক পার হয়ে গেছে। কালাচাঁদের দিব্যি কাটছে দিনগুলো। না স্কুল যাবার তাড়া আছে, না নিয়ম করে পড়তে বসা আছে, না ইউনিট টেস্টের জ্বালা আছে। প্রথম দুদিন মারধর, গঞ্জনা সইতে হয়েছে বৈকি। বাবা মারা গেছে কবে কালাচাঁদের মনেও পড়ে না। মা এর ওর বাড়িতে কাজ করে। কাকার বাড়ির পেছনের দিকে দেড়খানা ঘরে থাকা ওদের। মা সকাল বেলা চা-মুড়ি খাইয়ে কাজে যায় আর সাড়ে তিনটে-চারটে করে ঘরে ফেরে। দুপুরের খাওয়া তার কাজের বাড়িতে। কালাচাঁদ তো স্কুলে খেত। রাতে মা রাঁধত। রবিবারটা হয় আগের রাতের রান্না, নাহয় কাজের বাড়ি থেকে মা আনে। মাঝে মাঝে চাঁদও যায় মায়ের সাথে, ওদের কারুর বাগান সাফ করে দেয় অথবা কাঠের আসবাব মুছে দেয়, খেয়েও আসে। এখন এই অবস্থায় দুরন্ত চাঁদকে নিয়ে তার মা মুস্কিলে পড়ে যায়। দু মাস এ ভাবে চালানো যাবে কি করে? কালাচাঁদের কিন্তু ভ্রুক্ষেপ নেই। বিশেষ করে সেকেন্ড ইউনিট টেস্টের হাত থেকে বাঁচা গেছে। মায়ের ভয়ে পেরাইভেটে যেতেই হয়। তবে সেখেনে তো আর পড়ছে কি না কেউ দেখে না, তাই ভারি আনন্দে আছে চাঁদ। এগারটা করে একবার চক্কোত্তি দিদার বাড়ি যায়, বাগানে জল দিয়ে দেয়, ফুটফরমাশ খাটে আর দুমুঠো খেয়ে নেয়। কোনদিন না গেলে অন্য উপায় হয়। বাকি সময়টা সে স্বাধীন। সত্যি বলতে কি চাঁদ বিন্দাস আছে।

    লক্ষ্মী খুব আতঙ্কে থাকে আজকাল। চাঁদ বড্ড দুরন্ত। একা ঘরে কি করে, সারাদিন ধরে টো-টো করে ঘুরে বেড়ায়। কাল নাকি ঘুরতে ঘুরতে রণডিহা চলে গেছিল। সেখানে নদীর চরে জেলেদের মাছধরা দেখছিল। সারাদিন কাজ না করলে চলে না লক্ষ্মীর। স্কুল থাকলে এত ভাবতে হয় না। তা সেই স্কুল থেকেই কি কম বার ডাক এসেছে তার? এই চাঁদ একে মেরেছে, ঐ পেছনের গাছের পেয়ারা পেড়ে খেয়েছে। কোন মেয়ের গায়ে জল ঢেলে দিয়েছে। প্রতিবারই হাতে পায়ে ধরে ছেলের স্কুল বজায় রেখেছিল লক্ষ্মী। কিন্তু এবারে সাসপেন্ড হওয়া আর আটকাতে পারেনি। তবু সবরকম ঠাকুরের কাছে মানত আছে লক্ষ্মীর। বড়স্কুলের পাশটা করলে পুজো দেবে।

    নাঃ, আজ বড্ড দেরি করে ফেলেছে। আসলে টিউশন গিয়ে প্রবীরের কাছে শুনল পরশুর পরদিন থেকে স্কুলে ক্রিকেট লীগ। সব ক্লাসের ছেলেদের সিলেকশন চলছে। সাগর এমন করে গল্পগুলো বলছিল কালাচাঁদ আর থাকতে পারেনি। চুপি চুপি সৈকত স্যারের বাড়ি গেছিল। ও স্কুল যেতে পারে কিনা জানতে। কিন্তু স্যার বললেন শম্ভুদাকে নাকি বলা আছে তাকে যেন ঢুকতে না দেওয়া হয়। খুবই কষ্ট হচ্ছে ওর। দু্র্গাপুজোর আর দিন পনের বাকি। ইউনিট টেস্ট শেষ। স্কুলে এখন শুধুই মজা। এসব ভাবতে ভাবতে বাড়ির সামনে এসে দেখে মা অন্ধকারে উঠোনে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। “এত দেরি করলি? তোর জন্য ভাবতে ভাবতেই মরে যাব আমি।” মায়ের ধরা ধরা গলা শুনে গা ছম ছম করে উঠল। এই নিঝুম রাতে মা নেই, শুধু ও ভাবতেই গাটা সিরসির করে উঠল।

    আশ্বিনের দুপুর। ঘরে শুয়ে আছে চাঁদ। গা হাত পা ব্যথা। জ্বর এসেছে। কিছুতে উঠতে পারছে না। বড্ড ইচ্ছে ছিল ইস্কুলের পেছনদিকের আমগাছটার উপর উঠে দেখে কিভাবে সবার ট্রায়াল নিচ্ছেন স্যার। খুব খিদে পাচ্ছে, রান্নাঘরে গিয়ে দেখে দুটো রুটি আর আলুর ঝোল ঢাকা দেওয়া রয়েছে। ঠান্ডা রুটি চিবোতে চিবোতে স্কুলের ভাত আর সয়াবিনের তরকারির জন্য মনখারাপ লাগল। আবার শুয়ে পড়ল। মা ফিরতে দেরি আছে। বিকেল মরে আসছে। বাঁদিকের জানলা দিয়ে দেখে সজনে গাছটার ডালে দুটো দুর্গাটুনটুনি।ওদের ক্লাসের সামনের দেবদারু গাছগুলোতেও আছে কটা। ঘুরেফিরে কেন যে স্কুলের কথাই মনে আসছে কাল থেকে!

    গত পরশু চক্কোত্তি দিদা ওকে ডেকেছিল, ওদের বইঘরের বইগুলোর ধুলো ঝেড়ে দেবার জন্য। বইগুলো ঝাড়তে ঝাড়তে একটা খুব লম্বা লাল চামড়ায় বাঁধানো বই দেখে ওর অবাক লেগেছিল। কৌতূহলী হয়ে খুলে দেখেছিল সব পাতায় ম্যাপের ছবি। সুন্দর চকচকে পাতায় রংবেরঙের ম্যাপ, তাতে ইংরাজিতে সব লেখা। হঠাৎই ওর খুব জানতে ইচ্ছে করছিল ওগুলো কি লেখা আছে আর দিদা ওগুলো দিয়ে কি করে? কি করে বোঝা যায় ম্যাপগুলো? ফাইভে পড়ে চাঁদ, ম্যাপবইও দেখেছে। কিন্তু এরকম নয় সেগুলো।

    “কি করছিস তুই? কে তোকে এই বইতে হাত দিতে বলেছে?”— দিদার ছোট ছেলে, কোথা থেকে হঠাৎ উদয় হয়েছে। “মায়ের যত কাণ্ড! এইসব মূর্খ, পাজি ছেলে দিয়ে বই গোছানো হয়? এ্যাই, এই বইতে হাত দিবি না। তোকে বেচে দিলেও এর সমান দাম পাওয়া যাবে না।”

    গালাগালি খাওয়া আর দেওয়া চাঁদের কাছে জলভাত। কিন্তু ভয়ঙ্কর অপমান লেগেছিল ওর। আর ও কারোর বাড়ি যাবে না। এখন এই ফাঁকা ঘরে শুয়ে, আলো কমে আসা বিকেলে, অসুস্থ শরীরে চাঁদের চোখ ছলছল করে উঠল। স্কুলে ওদের লাইব্রেরিতেও অনেক অনেক বই। একটু পড়তে চাইলে স্যারেরা কত খুশি হন। সেখানে ও কক্ষনও যায় না, বিরক্ত লাগে। আর আজ বইয়ে হাত দেবার জন্য যখন ওকে মূর্খ, হাড়হাভাতে এইসব শুনতে হল কেন কে জানে। এত কষ্ট হল! মাথাটা ভার। চাঁদ চোখ বন্ধ করল।

    কুসুম কুসুম ভোর। হলদে আভায় আকাশ মায়াবী। পাশ ফিরে দেখল মা ঘুমোচ্ছে। ও উঠে প্ড়ল। শরীরটা হাল্কা লাগছে – মনটাও। লক্ষ্মী উঠে দেখে কালাচাঁদ বইপত্র ঝাড়াঝাড়ি করছে। আজ একটু সুজি করে দেবে ছেলেটাকে। গতরাত থেকে কিছু মুখে দেয়নি।

    মা বেরিয়ে যেতেই চাঁদ তাড়াতাড়ি তৈরি হল। ঘড়িতে মাত্র ন’টা, সময় আর যেন এগোচ্ছে না। বইপত্র ব্যাগে ফেলে বেরিয়ে পড়ল। খুব আগে হয়ে যাচ্ছে না? দশটার আগে তো গেট খোলে না। সে নাহয় ও একটু অপেক্ষাই করবে। কপালটা ভালোই বলতে হবে। স্বচ্ছ ভারতের ইন্সপেকশন আছে বলে গেট খোলা আর হেডস্যার এসে গেছেন। ভয়ে ভয়ে হেডস্যারের রুমের সামনে দাঁড়াল। পা কাঁপছে। বুক দুরুদুরু। গলা শুকনো। দরজার সামনে দাঁড়াতেই সেই বজ্রগম্ভীর আওয়াজ, “কে ওখানে?”

    ভয়ে হাঁটুতে হাঁটুতে ঠোকাঠুকি। কিন্তু কালাচাঁদ আজ মরিয়া।

    “আমি স্যার। ফাইভের কালাচাঁদ।”

    “ভেতরে আয়। তোকে সাসপেন্ড করা হয়েছে না?”

    “স্যার, আমি স্কুলে আসতে চাই, পড়তে চাই। স্কুল ছাড়া আমার ভালো লাগছে না,” বলতে বলতে কেন জানি না, ভয়েই হবে কিম্বা বিশ্বাস করার মত জায়গা বলেই, ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল কালাচাঁদ। ফোঁপাতে ফোঁপাতে বার করে দিতে লাগল গত কয়েকদিনের অপমান, অসম্মান, একাকীত্ব আর উদ্দেশ্যহীনতা। চোখ না তুলেই ও বুঝতে পারল ও সঠিক আশ্রয়ে। “তাহলে আর কি? গোল তো মিটেই গেল। আজ এসেছিস ভালই করেছিস। ইন্সপেকশন আছে, স্কুল পরিষ্কার করতে হবে সবাই মিলে। আর হ্যাঁ, আজ কিন্তু মাংস।”

    লাফাতে লাফাতে ক্লাসে গেল কালাচাঁদ। ব্যাগটা বেঞ্চে রেখে বুক ভরে নিশ্বাস নিল। ভয়ংকর আনন্দ হচ্ছে। মাংস খাবার আনন্দ নয় কিন্তু, ও তো ফি-মাসেই খায়। এই ক্লাস, ভাঙা বেঞ্চ, কোনাভাঙা ব্ল্যাকবোর্ড, জানলার পাশে ঝাঁকড়া মাথা গাছ, এগুলোই তো ও, কালাচাঁদ। বুঝে বা না বুঝে এক অনাবিল আনন্দ কিশোরটির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল।



    অলংকরণ (Artwork) : রাহুল মজুমদার
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments