• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৩৭ | মার্চ ২০০৬ | রম্যরচনা
    Share
  • ॥ বসন্তের এই মাতাল সমীরণে, আজ ॥ : নন্দন দত্ত

    আড্ডা তখন জমেছে বেশ । বলেছিলি, একটা গান হলে হয় । গেয়েছিলাম, আজ জ্যোত্স্নারাতে সবাই গেছে বনে । জানি না কেন হঠাৎ এই গানটা । যাইহোক, সুর শেষের পরেও রেশ ছিল খানিক্ষণ । তারপর বললি, আমাকে, তোর জ্যোত্স্না উচ্চারণ কিন্তু ঠিক হল না । তখনও আলাপ গাঢ় নয়, একটু হোঁচট খেয়েছিলাম, বলেছিলাম ব্যঙ্গে, কেন, জোছ্না হয়ে গেল নাকি । না:, অতটা নয়, তবে জ্যোত্স্নার ভিতর যে স্নানের ব্যাপারটা, সেটা কিন্তু আনা শক্ত । বলে তুই, বলে দেখালি । এখন মনে পড়ে, বেশ অবাকই হয়েছিলাম, উচ্চারণ নিয়ে কি অকুল বীক্ষা । মার্কিন-মুলুকে-মাসকয়েক পড়ে তারপর, (পড়েছিলি তুই সবটাই, ঘন্টায় ত্রিশ টাকা সাইবার কাফের উজান ঠেলে) বললি, ভাল, তবে বড্ড উপুড় করা । আমি উত্কর্ণ, মানে । মানে, সব আইডিয়াই যেন ঢেলে দিয়েছিস, পরের জন্য রাখলি কি । দিইনি উত্তর । ভেবেছিলাম দেব । পরে । কথায় নয়, কলমে । যাদবপুরের মাঠে, ঘাসের রঙে কত বিপ্লব, কত, রস-রসায়ন-রসিকতা । ঢাকুরিয়া ব্রীজের ঢালে আটানব্বইয়ের বর্ষা যেন নি:শ্বাস নিংড়ে নেয় । তুই নিকটে, নি:শব্দে, নি:শেষে । পা তাই হয়ত থামেনি । কোলকাতা ছেড়ে এসে যোগ ছিল চিঠিতে, ফোনে, আরও আধুনিক এস'এম'এস'এ । দেখাও হত বছর বছর । মাঝের ফাঁক উধাও । প্রবাসের চিঠি চেয়েছিলি, দিয়েওছিলাম । পেয়েওছিলি, দুয়েকটা । এবারেরটা না । দূরে হয়েছিলাম, দূর হইনি । মনে হলেই মনে হত, কাছেই আছিস । একেবারেই কাছে । সুযের্র মতন ; বা চাঁদের । খবর পেতাম তোর, নানা রাত্রি পেরিয়েও মোমবাতির ওম । অবিচল । আরো কত পরিকল্পনা, পরিচালনা । তারপর ঘন হেমন্তের
    প্রত্যূষের
    ইমেলে বিদীর্ণ বিদ্যুৎ । পরের কদিন, আকুল ইমেল, ফোনও । নিদাঘ নিদ্রার জানকারি ।
    চোখের তারার আলো, ঠিকরে উঠেছিল মাঝে মাঝে । আমরা
    আলোই ভেবেছিলাম, সত্যি করেই । আলো ছাড়া আর কি কিই বা হতে পারে,
    আঠাশ বসন্তের প্রৈতীতে ।
    তারপর আবার ইমেল, এবারও সকালে
    আমার এখানের ।
    সেদিনের গানটা ছিল,
    জ্যোত্স্নারাতে সবাই গেছে বনে,
    আজ । সেই সেদিনের ।
    জানি না কেন হঠাৎ ঐ গানটা ...


    (পরবাস, মার্চ, ২০০৬)

  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)