আমি দেশে গিয়েছিলাম '০৪ এর ডিসেম্বরে । তখন ঢাকার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ৩৩ । সেদিন আমার এক বন্ধু ফিরে এসে খবর দিল যে সংখ্যাটি এখন ৪৯তে দাঁড়িয়েছে । আমি খুব একটা ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি নই, তবুও আমার মুখ থেকে বেরিয়ে এল, আলহামদুলিল্লাহ । অর্থাৎ সকল প্রশংসাই আল্লার জন্য । ভেবে দেখুন কি হারে ঘটছে দেশের উন্নতি । চৌদ্দ মাসের মধ্যে ৩৩ থেকে সাঁই করে ৪৯ ! অর্থনীতির ভাষায় প্রায় ৫০% বৃদ্ধি । এটাকে ত্রক্রমোন্নতি বলবেন না, বলবেন তাকলাগানো উন্নতি । উন্নত বিশ্বের কোন্ জায়গায় আছে এত উন্নতি ? আগে ঢাকার রাস্তার মোড়ে মোড়ে থাকত পানবিড়ির দোকান । এখন হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় । সম্ভবত পানবিড়ির দোকানগুলোকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করেছে তারা !
আপনি অক্সফোর্ড, কেম্ব্রিজ ইত্যাদি বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই । অনেকেরই সখ জায়গাগুলো স্বচক্ষে দেখার । মক্কা-মদিনার পবিত্র হজের পরই অক্সফোর্ড-কেম্ব্রিজের স্থান । আজকাল মক্কা-মদিনায় যাওয়ার ভাগ্য অনেকেরই হয়, ফ্রি মার্কেটের কল্যাণে ফ্রি মানির তো অভাব নেই কারো পকেটে, তবে অক্সফোর্ড বা কেম্ব্রিজে যাওয়ার সুযোগ হয় ক'জনের । ঢাকার সূক্ষ্মবুদ্ধি শিক্ষাব্যবসায়ীদের বদৌলতে সে-অভাবটা এবার মোচন হয়ে গেল । ঢাকায় এখন অক্সফোর্ড ও কেম্ব্রিজ দু'টোই আছে -- একই অট্টালিকাতে, যার নাম দেওয়া হয়েছে অক্সব্রিজ ইউনিভার্সিটি । টু-ইন-ওয়ান । এক ঢিলে দুই পাখি । একটির পয়সা দিলে দ্বিতীয়টি ফ্রি । আচ্ছা বলুন তো স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়টা কোথায় ? আপনি ষোলআনা ভুল করবেন যদি বলেন ক্যালিফোর্নিয়ায় । তার জন্যে আপনাকে ষোলআনা দোষ দেওয়া যাবে না কারণ ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি একটি সত্যিকার বিশ্বমানের বিদ্যানিকেতন । ভুলটা হয়েছে আপনার `ন' আর `ম' তে গুলিয়ে ফেলা । আপনি জ্ঞানীগুনী মানুষ হলে বলবেন, ও হ্যাঁ, স্ট্যামফোর্ড, সেটা হল কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যের স্ট্যামফোর্ড শহরে । সেটা সত্য, তবে অর্ধসত্য । বাকি সত্যটা হল যে ঢাকাতেও একটা স্ট্যামফোর্ড আছে । দস্তুরমত একটা ক্যাম্পাসও আছে তাদের, শুনেছি । তবে লাইব্রেরী আছে কিনা তার খবর পাইনি । ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আজকাল লাইব্রেরী একটা রিকয়ারমেন্ট নয় । না হলেও বেশ দিন চলে যায় । কোন এক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিভাগীয় অধ্যক্ষ আমাকে আক্ষেপ করে বলেছিলেন যে, বোর্ড অব গভর্নরের মাননীয় সদস্যগণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উদ্ভিদরোপণের জন্য বরাদ্দ করেছিলেন আড়াই লক্ষ টাকা, আর বিদেশী জার্নালের জন্য করেছিলেন ২৪০ টাকা !
'৯৯ সালে ঢাকার এক গণ্যমান্য শিক্ষাবিদ এসেছিলেন ক্যানাডায় । আমাদের দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সাধারণত গণ্যমান্য মহলেই ঘোরাফেরা করেন । অতএব আমার সঙ্গে তাঁর দেখা করতে চাওয়ার কোন সহজবোধ্য কারণ নেই । তবুও একদিন তিনি আমার অফিসে এসে উপস্থিত । আমি যে কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করি সেটা তাঁর জানা ছিল । বললেন, একটা উপকার করতে হবে । সবিনয়ে জবাব দিলাম, আদেশ করুন । একটি মহত্পুরুষসুলভ উদার হাসি দিয়ে বললেন, আপনাদের গ্র্যাজুয়েট ফ্যাকাল্টির ডীনের সঙ্গে দেখা করাতে হবে । কাঁচুমাচু হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি যদি জানতে চান কেন তাহলে কি বলব ? তখন তিনি খুলে বললেন ব্যাপারটা । জীবনে তিনি অনেক সাফল্য অর্জন করেছেন, অনেক পদকপদবী পেয়েছেন, কিন্তু একটা সাধ তাঁর অপূর্ণ রয়ে গেছে । কি সেই সাধ ? একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইসচ্যান্সেলার হওয়া । মহৎ সাধ সন্দেহ নেই । সাধারণ লোকেদের উচ্চাকাঙ্খা থাকে কোটিপতি হবার, কোম্পানির মালিক হবার, মন্ত্রী হবার, বা কোন বিশ্বসুন্দরীকে শাদী করবার ।
ভাইসচ্যান্সেলার হবার আকাঙ্খা থাকে কেবল অসাধারণ ব্যক্তিদেরই । আমি তাঁকে নিয়ে ডীনের অফিসে গেলাম । মহৎ ব্যক্তি তাঁর ব্রিফকেস থেকে অনেক কাগজপত্র বের করলেন । তারপর ডীনের কাছে তাঁর প্ল্যানপরিকল্পনার একটা সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিলেন । তাঁর ইংরেজি উচ্চারণ ডীনসাহেব কতটা বুঝলেন জানি না । আমি নিজে খুব একটা বুঝিনি । যতটুকু বুঝলাম ততটুকুই তাঁকে দ্বিতীয়বার ব্যাখ্যা করে দিলাম আমার ত্রুটিবহুল ইংরেজিতে । ব্যাপারটা এরকম । কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটা একাডেমিক বন্ধন স্থাপন করার ইচ্ছা । পশ্চিমের কোন ইউনিভার্সিটির সঙ্গে একটা ভাইভাই সম্পর্ক গড়ে উঠেছে সেটা প্রমাণ করতে পারলে দরখাস্তটা তত্ক্ষণাৎ জাতে উঠে যায় । সরকার তখন নির্দ্বিধায় অনুমোদনের ছাপ মেরে দেয় (কয়েক কোটি টাকা ফি জমা দেওয়ার পর অবশ্য । সংশ্লিষ্ট আমলা ও মন্ত্রী-উপমন্ত্রীদের জলখাবার ও পানতামাকের জন্যও কয়েক লাখ খসাতে হয়)। ডীনসাহেবের কাছে সেটাই তাঁর আবেদন । দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করে দিতে হবে । এখান থেকে ছাত্র ও শিক্ষক যাবে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে, সেখান থেকে ছাত্র-শিক্ষক আসবে কার্লটনে । একটি বৈবাহিক সম্পর্কের মত । তবে বিবাহটা কন্জুমেটেড হতেই হবে তার কোন অর্থ নেই, কাগজে-কলমে হলেও চলবে আপাতত । এখনকার মত প্রয়োজন হল সম্মতি । দুপক্ষই যদি বলে `রাজী' তাহলে কাজীর তো বিয়ে বন্ধ করার উপায় থাকে না । দু:খের বিষয় যে এ-পক্ষের সম্মতি পাওয়া যায়নি । তাই প্রস্তাবটা কার্যকরী হয়নি । আমরা দুজনই মন খারাপ করে ফিরে এলাম ডীনের অফিস থেকে । যতদূর জানি ভদ্রলোক এখনও ভাইসচ্যান্সেলার হতে পারেননি । তবে অন্য কিছু হয়েছেন, ভাইসচ্যান্সেলারের চেয়েও অনেক বড় কিছু । সেটা কি তা না হয় চেপেই গেলাম । সবকিছু উচ্চারণ করা যায় না আজকাল, বিপদ হতে পারে ।
বাংলাদেশের এক প্রথিতযশা পুরুষের কাহিনী বলি । এতই বিখ্যাত তিনি যে তাঁর নাম উল্লেখ করা মাত্র দেশের ১৫ কোটি মানুষ সবাই চিনে ফেলবে । সুতরাং উল্লেখ না করাই ভাল । তাঁর বিশাল বাড়িতে একটা ঘর আছে যেটা দেখতে মিউজিয়ামের মত । তিনি পরলোকে চলে যাবার পর ঘরখানা সত্যি সত্যি একটা জাতীয় জাদুঘরে পরিণত হবে সেবিষয়ে কোন সন্দেহ নেই । কক্ষটিতে রয়েছে তাঁর শত শত মানপত্র, সম্মানফলক, রৌপ্য ও স্বর্ণপদক, দেশ-বিদেশের মহামান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে তোলা আলোকচিত্র, নানাজায়গা থেকে উপহারপ্রাপ্ত মূল্যবান পণ্যসামগ্রী । তিনি ব্যক্তির সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে প্রতিষ্ঠানের উচ্চস্তরে উন্নীত হয়েছেন । সাথে সাথে একটি বিশ্ববিদ্যালয়েরও প্রতিষ্ঠাতা-উপাচার্য তিনি । দেশের আরো অনেক প্রাক্তন শিক্ষাবিদের মত তাঁরও স্বপ্ন ছিল ভাইসচ্যান্সেলার হওয়া । যাকে বলে জীবনের শেষ আকাঙ্খা । আগেকার দিনে মানুষের শেষ বাসনা হত তীর্থে যাওয়া -- কেউ যেত মক্কায় কেউ বা কাশীতে । আধুনিক যুগের উচ্চাকাঙ্খা হল ভাইসচ্যান্সেলার হওয়া । আমাদের এই ভদ্রলোকটিও সেই দুর্বলতা থেকে মুক্ত করতে পারেননি নিজেকে । শুনেছি তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর ছাত্র । তাদের বার্ষিক বেতন কত জানি না, তবে ঢাকার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দাতব্য প্রতিষ্ঠান নয় সেটা জানি । বড়লোকের ছাওয়াল ছাড়া কারো উপায় নেই সেখানে ভর্তি হওয়া -- কম করেও লাখ দু'লাখ লেগে যায় বছরে । পরীক্ষার পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যথারীতি সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয় । সেসব অনুষ্ঠানে বিদ্যাসংক্রান্ত সূচী কিছু থাকে কিনা জানিনা তবে উত্সবের আয়োজন থাকে প্রচুর । আমাদের এই আলোচ্য বিশ্ববিদ্যালয়টির সমাবর্তন উপলক্ষ্যে গুটিকয়েক গরু জবাই করা হয়, পীরদরবেশদের পবিত্র দরগাশরিফে যেমনটি হয় সচরাচর । গোমাংসের প্রতি বাংলাদেশের ধনী, বিদ্যানুরাগী অভিভাবকদের খানিক দুর্বলতা আছে সেটা সর্বজনবিদিত । অভিভাবকরাই হলেন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের যথার্থ পৃষ্ঠপোষক । সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গরুর গলাকাটা হবে না তো কি হবে ।
বিশ্ববিদ্যালয়টির জনপ্রিয়তা ও কলেবর এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে সম্প্রতি তার একটি শাখা খোলা হয়েছে ঢাকায় । শাখাটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে । আপাতত এটির অবস্থান তাঁর বাসগৃহের নিচের তলায় । কেউ কেউ বলে, বিশবিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ভাড়ার টাকাটি তিনি নিজেই পকেটস্থ করেন, কারণ বাড়িটা তো তাঁরই । অধ্যাপকমণ্ডলীর সংখ্যা এখনো উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠতে পারেনি । সত্যি কথা বলতে কি, মণ্ডলী বলে কিছু নেই, অধ্যাপক বলতে সবেধন নীলমনি একজনই -- তাঁরই ঔরসজাত কন্যা । যে সে কন্যা নয়, রীতিমত ডিগ্রীপ্রাপ্ত কন্যা । একটা গাড়িও দেওয়া হয়েছে তাকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে অবিশ্যি । ছাত্রসংখ্যাও তেমন আহামরি নয় । তবে ভবিষ্যতে শতগুণে বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা আছে । যদিও এমুহূর্তে, একটু লজ্জার সঙ্গেই বলতে হচ্ছে, মাত্র একজন । এবং সেই একটি ছাত্র অধ্যাপিকার শ্বশুরালয়ের সম্পর্কে দেবর । বিশ্ববিদ্যালয়টির নামঠিকানা আমার জানা নেই । ইন্টারনেট খুঁজে লাভ হবে কিনা সন্দেহ । গুগ্ল্ মশাইয়ের হাত অতদূর পৌঁছায়নি বলেই আমার ধারণা ।
আমার পাঠকদের মধ্যে কারো কারো হয়ত গোপন আকাঙ্খা আছে ভাইসচ্যান্সেলার হওয়ার । থাকাটা অস্বাভাবিক নয়, নিন্দনীয় তো একেবারেই নয় । উচ্চাকাঙ্খা ভাল জিনিস । তবে আগেকার যুগে ভাইসচ্যান্সেলার হওয়ার সুযোগ হত না সবার ভাগ্যে । ভাইসচ্যান্সেলার শব্দটাই ছিল একটা ভীতিকর শব্দ সেযুগে -- শুনলেই পা কাঁপত আমাদের ছাত্রজীবনে । আজকের মুক্তবাজারের কল্যাণে এখন কোন শব্দই কম্পন সৃষ্টি করে না কারো শরীরে । বিশ্ববিদ্যালয় এখন একটা ব্যবসার নাম । এর সঙ্গে বিশ্বের একটা পরোক্ষ সম্পর্ক থাকলেও বিদ্যার কোন সম্পর্কই নেই । সুতরাং পয়সা আর মামার জোর থাকলে ভাইসচ্যান্সেলার হতে বাধা কোথায় । অনেকের পয়সা আছে, মামা নেই । সৌভাগ্যবশত আজকাল মামাও কিনতে পাওয়া যায় পয়সা দিয়ে । পয়সার নাম বাবা, ঠাকুর । তবে পয়সা থাকলেও সবদেশে সমান সুযোগ নেই উপাচার্য হওয়ার । আজকাল সবচেয়ে বেশি সুযোগের দেশ বোধ হয় আমারই আপন জন্মভূমি -- সকল দেশের চেয়ে সেরা যে- দেশটির নাম বাংলাদেশ । একটা ব্রিফকেসে ৩/৪ কোটি বাংলাদেশী টাকা জমা করুন -- বর্তমান হারে যা মাত্র ৭/৮ লক্ষ ডলারের ব্যাপার । আজকাল অনেকের কাছে সেটা কোন সমস্যাই নয় । কিছু কাগজপত্রও যোগাড় করতে হবে । ঐ যে বললাম, বিদেশী ছাপ । জাতে উঠতে হবে তো । ওটা এমন কোন শক্ত কাজ নয় । এদেশে তো নোনেম ব্র্যাণ্ডের ইউনিভার্সিটির অভাব নেই । আপনি যেমন জাতে উঠতে চান বিদেশের ছাপ নিয়ে, তারাও তেমনি জাতে উঠতে চায় বিদেশের ছাপ নিয়ে । আমাদের জন্যে এরা বিদেশ, ওদের জন্যে আমরা বিদেশ । পার্ফেক্ট সিমেট্রি । ইন্টারনেশনাল শব্দটা জাদুকর শব্দ । তারপর ব্রিফকেসটা নিয়ে আপনি ঢাকার বিমানবন্দরে নামুন । দেখবেন আপনার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কেমন ভিড় হয় ।
শুনেছি ওপার বাংলার ভাইবোনেরাও আজকাল একই স্বপ্নের সাধনায় নেমেছেন । অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসাটি তাঁরাও ধরে ফেলেছেন । এতে অবাক হবার কিছু নেই । রক্তের সম্পর্কে না থাক কৃষ্টির সম্পর্ক তো আছে । মুক্তিযুদ্ধে তাঁরা হাত মিলিয়েছিলেন আমাদের সঙ্গে, মুক্তবাজারে মেলাবেন না কেন । এরই নাম বঙ্গসংস্কৃতি । ভূখণ্ডকে ভাগ করা যায়, অন্তরকে করা যায় না খণ্ডিত । মানের দিক থেকে কোন্ দিককার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কত ওপরে বা কত নিচে তা জানি না । তার বিচারই বা করবে কে । বিচারের প্রয়োজনই বা হবে কেন । ব্যবসার ভালমন্দের মানদণ্ড তো একটিই -- মুনাফা । সেদিক থেকে হয়ত বলা যায় কেউ কারো চেয়ে কম নয় । সুতরাং কোনরকম প্রতিযোগিতায় না গিয়ে সহযোগিতার কথা ভাবা উচিত তাদের । দুদেশের মধ্যে একটা চুক্তি হতে পারে । একদেশের গ্র্যাজুয়েট আরেকদেশে যাবে উচ্চশিক্ষার জন্যে । তাতে দুদেশেরই উপকার । ঢাকার হার্ভার্ড আর কোলকাতার হার্ভার্ড মিলে তখন সৃষ্টি হবে এক মহাবিদ্যালয়, যার পার্শ্ববর্তী ক্ষুদ্র ডোবাটি বৃহৎ হতে হতে একসময় মহাডোবাতে পরিণত হবে ।
(অটোয়া, ১২ই মার্চ, ২০০৬;
মুক্তিসন ৩৪
পরবাস, মার্চ, ২০০৬)