![]() |
টি-শার্টে সগর্ব ঘোষণা |
![]() |
|
![]() |
|
![]() |
ডারউইন রিসার্চ স্টেশন |
ইকোয়েদরে থাকা-খাওয়া শস্তা হলেও গ্যালাপাগোস বেড়ানোর খরচ বেশ । তার কারণ হলো পার্কে থাকার কোনো জায়গা নেই । থাকা-খাওয়া সব নৌকাতে করতে হয় । পার্ক শুধু বেড়াবার জন্য । গ্যালাপাগোসে ডজন-খানেক দ্বীপের মধ্যে শুধু বড়ো তিনটি দ্বীপে ছোট্ট বন্দর ও এয়ারপোর্ট আছে । সেখানেই শুধু মানুষের বসতি । বাকিসব বন্যপ্রাণীদের জন্য । স্থানীয় অধিবাসীরা বন্দরের আশেপাশে ট্যুরিস্টদের জন্য দোকান ইত্যাদি করেন । বেশিরভাগ ট্যুরিস্ট থাকেন নানা আয়তনের পাল-তোলা বা মোটর নৌকায় । দিনের বেলায় নানা দ্বীপে ঘুরে বেড়ানো, সমদ্রস্নান -- আর রাত্তিরে নৌকাতেই খাওয়া-শোওয়া । দরদাম অনুযায়ী ছোটো-বড়ো যে-কোনো নৌকা ভাড়া করা যায় । তাতে দু'তিনজন থেকে শুরু করে বিশ-ত্রিশজন থাকতে পারে । দু'দিন থেকে দু'সপ্তাহ পর্যন্ত কাটানো যায় । তবে মনে হলো বেশিরভাগ পর্যটক মাঝারি সাইজের নৌকায় এক-সপ্তাহ কাটিয়ে আসেন । নৌকায় খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা প্রচুর । সঙ্গে ইংরেজিভাষী গাইড দেওয়া হয় । আমাদের নৌকাটি ভাড়া হয়েছে সাতদিনের জন্যে । চৌদ্দজন ট্যুরিস্ট, আর গাইড, ক্যাপ্টেন, সব মিলিয়ে মোট কুড়িজন । স্নর্কেলিং-এর ব্যবস্থা আছে । ডাইনিং রুম, লাউঞ্জ ছাড়া আছে বার, লাইব্রেরি (সেখানে গ্যালাপাগোস সম্বন্ধে নানা বই), এমনকী একটি ছোট্ট টিভি পর্যন্ত ! অবশ্য ওয়ার্লড্কাপ ফুটবল ছাড়া টিভিটা কোনো কাজে লাগেনি ।
দৈনিক কার্যক্রম হলো সকালে প্রাতরাশ সেরে কোনো একটা দ্বীপে পর্যটন । দুপুরের খাওয়ার পরে ঘন্টাদুয়েক সমুদ্রে ডাইভিং, সাঁতার, স্নরকেল । বিকেলে দু'তিন ঘন্টা দ্বীপে নানা পশুপাখি দেখা, ছবি তোলা ইত্যাদি । রাত্রে খাওয়াদাওয়ার পরে ঘুম । সেই সময়ে নোঙর তুলে নৌকা পাড়ি দেয় অন্য দ্বীপে ।
![]() |
|
![]() |
|
![]() |
|
একধরনের দুর্লভ পানকৌড়ি দেখা যায় তাদের আবার ওড়বার দরকার নেই । তাই ডানাগুলি খুব ছোটো । শুধু ডুব দিয়ে মাছ ধরে । আরো কয়েকশ' বছর পর ডানাদুটো একেবারেই মিলিয়ে যাবে, বৈজ্ঞানিকদের তাই ধারণা । হয়তো পানকৌড়ি বলে চেনাই যাবে না । ডারউইনের নিয়ম অনুযায়ী তৈরি হবে সম্পূর্ণ এক নতুন জাতির পাখি ।
![]() |
কতো-রকমের `ডারউইন ফিন্চ'! |
![]() |
|
![]() |
|
![]() |
|
![]() |
মাত্র ৬-দিন থেকে ৬-বছরের মধ্যে ডাক পৌঁছে যাবে ! |
গ্যালাপাগোসই হয়তো পৃথিবীর শেষ নন্দনকানন । একমাত্র এখানেই বন্যপ্রাণীরা মানুষের ভয়ে ভীত নয় । একমাত্র এখানেই আপনি নির্ভয়ে হাঙর ও সী-লায়নের সঙ্গে সমুদ্রে নামতে পারেন । হয়তো সুদূর অতীতে সমস্ত অতীত এইরকম ছিলো । আমরা মানুষরা সব তছনছ করে ফেলেছি-- আশা করি গ্যালাপাগোস চিরদিনই এমনিই থাকবে-- নিষ্পাপ, ভয় ও হিংসাশূন্য । আগামী প্রজন্মের জন্য একটুকরো স্বর্গোদ্যান ।
(পরবাস ৩৯, জুন, ২০০৭)