ম্যাডাগাস্কার সম্বন্ধে কয়েক বছর আগেও আমার কোনো ধারণা ছিল না । শুধু জানতাম যে বিশাল আফ্রিকা মহাদেশের পায়ের কাছে একটা ছোট্ট ফুটকির মতো দেশটি । তাই সেখানে ভলান্টিয়ার ডাক্তারির কাজের সুযোগ পেতে লোভ সামলাতে পারলাম না । শুভার্থীরা সাবধান করলেন -- খুব গরিব দেশ, অসুখবিসুখ করলেই মুশকিল । আমি আগে অজ পাড়াগাঁয়ে ডাক্তারি করেছি । তাই ভাবলাম আর কতই বা অসুবিধা হবে ।
আমাদের সংস্থার অফিস থেকে এবং ইন্টারনেট থেকে কিছু তথ্য জোগাড় করলাম । সেখানে প্যাথলজির প্র্যাকটিস একেবারেই নেই, সেই জন্যই আমাদের যাওয়া - সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যাথলজি ল্যাবরেটরী ও শিক্ষণের ব্যবস্থা করতেই আমাদের যাওয়া । আরও জানলাম যে সেখানকার আমেরিকান এম্ব্যাসী আফ্রিকার সন্ত্রাসবাদীদের ভয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ - ভাল খবর মোটেই নয় । আরও মুশকিল যে সেখানে তখন কলেরার মহামারী চলছে । গুরুজনেরা মাথা নেড়ে বললেন `মত বদলাও, এখনো সময় আছে ।' এমনকী সাকুল্যে একমাত্র গাইড বইয়েও সাবধান বাণী - `ম্যাডাগাস্কারে থাকাকালীন কোনো অসুখবিসুখ বাঁধাবেন না' । কিন্তু আমি নিজে ডাক্তার, তাই অবশ্যই কারুর কথা শুনলাম না ।
দেশটি দক্ষিণ গোলার্ধে, ভারত মহাসমুদ্রের একেবারে পশ্চিমপ্রান্তে, আফ্রিকার দক্ষিণ পূর্বতট থেকে প্রায় শ'দুয়েক মাত্র মাইল দূরে । আমেরিকা থেকে যাওয়াটাই বেশ মুশকিল--ইওরোপ হয়ে সোজা দক্ষিণে - আফ্রিকার এক প্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে । লম্বা পাড়ি । যাত্রা যেন শেষই হয় না । তারপর নাইরোবি বা জোহানেসবার্গে একরাত কাটিয়ে ম্যাডাগাস্কার এয়ার লাইন (ম্যাড এয়ার !) ধরে লালমাটির দেশ ম্যাডাগাস্কারের রাজধানী আনতানানায়িভো । গালভরা নামটা ছোট্ট করে সবাই বলে তানা (পুরনো নাম ছিল টানানারিফ)।
দেশটি বেশ বড় দ্বীপ - প্রায় ইংল্যাণ্ডের সমান । আছে রেনফরেস্ট, মরুভূমি এবং পর্বতমালা ! ১৮৮৩ সাল থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত ফরাসীদের দখলে ছিল বলে এখনও ভাষা, খাবার এবং সরকারি মহলে ফরাসী ছাপ রয়ে গেছে । অনেকটা ভারতে ব্রিটিশ প্রভাবের মতোই । আস্তে আস্তে জাতীয় ভাষা মালাগাসটর ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে । আমি ফরাসী ভাষায় দু একটি কথাই বলতে পারি কিন্তু যখনই মালাগাসট বলার চেষ্টা করি, সবার কাছ থেকে গালভরা হাসি ও প্রচুর প্রশংসা পেয়েছি যা কখনো ফরাসী বলে পাইনি । রেডিও, টেলিভিশনে ফরাসীই চলে । জনপ্রিয় আমেরিকান সিনেমায় গুণ্ডাদের মুখে চোস্ত ফরাসী শুনতে খুব মজা লাগে । আরও বিস্ময়কর হল রাস্তায় ভিখারির মুখে সুন্দর ফরাসী । আমি কখনো এটা কল্পনাও করিনি ।
তানা দেশের ঠিক মাঝখানে, পাহাড়ের গায়ে তৈরি । ওপরের দিকের বাড়িগুলি ধনীদের । নীচের দিকে সব বস্তি । গরম এবং মশামাছির উপদ্রবও বেশি । আরেকটি জিনিস আমায় অবাক করেছিল যে মালাগাসী লোকেরা দেখতে আফ্রিকানদের মতো নয় একটুও । বরং মুখের আদল পলিনেশিয়ানদের মতো । এদের ভাষা ও খাবারদাবারেও সুদূর প্রাচ্যের প্রভাব । তার কারণ হল প্রথম আদিবাসীরা নৌকা বেয়ে এশিয়া থেকে এসে বসতি করেছিল । আফ্রিকা এত কাছে হওয়া সত্ত্বেও আফ্রিকার আদিবাসীদের মধ্যে নৌকা চালানো বা সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার চলন ছিল না বলেই তারা কখনোই ঐ দুশ-মাইল সমুদ্র পার করার চেষ্টা করেনি ।
মালাগাসী খাবার অনেকটা ভারতীয় । ভাত, ডাল, মাছ, তরকারি, নারকোলের ব্যবহার খুব । তবে গত দুশ বছরের ফরাসী প্রভাবে অনেক ফরাসী রেস্তরাঁও রয়েছে, যেখানে আমরা বেশ সস্তায় ভালো খাবার পেতাম কিন্তু ওদেশের সাধারণ লোকেদের ধরাছোঁয়ার বাইরে ।
![]() |
আমার কর্মস্থান ছিল তানার একমাত্র ইউনিভার্সিটি মেডিকেল কলেজ পরিচালিত ল্যাবরেটরী । ওদেশে কোনো প্যাথলজিস্ট নেই । কোনো রকম প্যাথলজি বায়পসি পরীক্ষা করাবার ব্যবস্থাও নেই । আমি ও আমার সহকর্মীরাই ওখানে প্রথম প্যাথলজি ট্রেনিং শুরু করি । সেটা ২০০০ সালের কথা । সেই প্রথম ট্রেনিং প্রাপ্ত মালাগাসী ডাক্তাররা এখন ল্যাবরেটরী চালাচ্ছেন ও অন্যদের ট্রেনিং দিচ্ছেন ।
জনস্বাস্থ্য ও চিকিত্সার অবস্থা ম্যাডাগাস্কারে খুবই খারাপ । অন্যান্য গরিব আফ্রিকান দেশের মতোই এদেশেও তিন শ্রেণীর চিকিত্সা ব্যবস্থা । প্রথম শ্রেণীতে প্রবাসী বিদেশী ও ধনী দেশীয় লোকেরা নিজেদের পয়সা দিয়ে ফরাসী হাসপাতালে সব রকম সুযোগ সুবিধা পেতে পারেন । এই ক্লিনিকগুলি প্রধানত ফরাসী পরিচালিত এবং পৃথিবীর যে কোনো ধনী দেশের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে । কিন্তু এদের সংখ্যা মুষ্টিমেয় । দ্বিতীয় শ্রেণীটি হলো আর্ন্তজাতিক স্বেচ্ছাসমিতি চালিত । আমাদের মতো ভলান্টিয়াররা সুযোগ মতো কাজ করেন । চিকিত্সা মোটামুটি ভালই কিন্তু বিশৃঙ্খল, এ-বছর আছে, আসছে বছর নেই এরকম অবস্থা । তৃতীয় শ্রেণীটি আমজনতার জন্য রাখা । এখানেই দেশের নব্বুই শতাংশ লোক চিকিত্সার জন্য ধর্ণা দেন । দেশীয় সরকার চালিত । এবং সরকারি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল বলে মানও খুব নীচু । নগদ পয়সা দিয়ে যেটুকু পাওয়া যায় তাই ভরসা । এর নীচেও একটি চতুর্থ শ্রেণী আছে - সেটা অজ পাড়া-গাঁয়ে ঝাড়ফুঁক, শেকড় বাকড় দিয়ে চিকিত্সা । পয়সার অভাবে অনেকে তাই দিয়েই কাজ চালান ।
আমি যে বছর গেছিলাম, মালাগাসী ফ্রাঁ আবার ডিভ্যালুড হয়েছে । ফ্রাঁর দর হলো এক ডলারে ৬০০০ । এক রাত্রের মধ্যে শহরের হাসপাতালের বেডগুলি খালি হয়ে গেল । রোগীদের চিকিত্সার পয়সা নেই । এখানে যতক্ষণ পয়সা, ততক্ষণই চিকিত্সা । ইনসিওরেন্স বা সরকারি সাহায্য নেই । তাই বেশিরভাগ লোকেরাই বাড়িতে যত দূর সম্ভব চিকিত্সা করান । খুব শক্ত রোগ না হলে হাসপাতালে কেউ ভর্তি হন না, তাই ক্যানসার, টি. বি. ইত্যাদি একেবারে শেষ অবস্থায় দেখা যায় । এরকম আমেরিকায় আমি কখনই দেখিনি ।
![]() করার চেষ্টা |
মেয়েদের মধ্যে জরায়ুর ক্যানসার সব থেকে বেশি । সবথেকে দরকারি প্রাথমিক প্যাপ টেস্টের চল একেবারেই নেই । আমাদের দলটি দেশীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে প্যাপ টেস্ট সারা দেশে চালু করার একটা প্ল্যান তৈরি করলাম । আমার হঠাৎ মনে হল কী বিরাট কাজটি । আমেরিকা বা ভারতে এই রকম কিছু করার সৌভাগ্য হয়তো কখনই হবে না ।
এতসব বিশৃঙ্খলতার মধ্যেও আছে একটি সংস্থান যা এদেশের হার্ভাড বা সিড়ি.সি.-কেও হার মানায় । এটি হলো জগত্বিখ্যাত পাস্তুর ইনস্টিটিউট । গরিব শহর তানার ঠিক মাঝখানে, উঁচু পাঁচিল ঘেরা বিস্তীর্ণ ঘন সবুজ লনে মোড়া সুন্দর বাড়িটি যেন এক প্রাসাদ । এখানে হয় খুব উঁচুদরের গবেষণা - ম্যালেরিয়া, টি. বি. ও অন্যান্য রোগ নিয়ে । ফলাফল বের হয় ইওরোপ ও আমেরিকার বড় বড় জার্নালে । এ দেশের লোকেরা কিন্তু ছিটেফোঁটা উপকারও পান না । ইনস্টিটুটের ডাক্তাররা সবাই ফরাসী, তাঁরা নিজেদের ল্যাবরেটরী, যন্ত্রপাতি বা অভিজ্ঞতার কোনো ভাগই অন্যদের দিতে রাজি নন । তাঁরা স্থানীয় ডাক্তারদের সঙ্গে মেশেন না, কোনোরকম যুক্ত ট্রেনিং বা লেকচার দিতেও নারাজ । এঁদের ইচ্ছা যতদূর সম্ভব তানার হাঙ্গামা থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখা এবং একমনে নিজেদের গবেষণা চালিয়ে যাওয়া । হয়ত তাঁদের মতই ঠিক কিন্তু আমরা খুবই নিরাশ হলাম ।
আমাদের সংস্থায় স্বেচ্ছাসেবী ডাক্তাররা তিনজন মালাগাসী ডাক্তারকে প্যাথলজি ট্রেনিং দিচ্ছিলাম । ম্যাডাগাস্কারে কাজের খুব তাড়া নেই । সবাই আরামসে সকাল ৯-১০টায় কাজে যোগ দেয় । দুপুরে দু'ঘন্টা কমসে কম লাঞ্চের জন্য বরাদ্দ । তখন কোনোরকম কাজই করা চলবে না । আমরা যারা আমেরিকায় দশ-বারো ঘন্টা কাজে অভ্যস্ত, যারা লাঞ্চের সময়ও লেকচার ইত্যাদিতে ব্যস্ত থাকে তাদের পক্ষে এরকম ব্যবস্থায় মানিয়ে নিতে একটু সময় লেগেছিল । সব কিছুই ধীরেসুস্থে চলে । আমেরিকার মতো তাড়াহুড়ো নেই ।
![]() |
আমাদের থাকার সময়ে খুব কলেরার প্রকোপ চলছিল । বেশিরভাগই তানার বাইরে । তবু সুস্থ থাকার জন্য আমাদের খাবারের ব্যাপারে খুব সাবধানে থাকতে হত । খাবার জল তো ফুটিয়ে নিতাম, এমনকি দাঁত মাজার জল পর্যন্ত ফোটানো ছিল । কাঁচা সবজি, তরকারি সব রান্নার আগে ক্লোরোক্স ব্লীচ দিয়ে ধুয়ে নিতাম । স্বাদটা একটু অন্যরকম হত ঠিকই কিন্তু আমাদের কারুরই পেট খারাপ পর্যন্ত হয়নি । রাজধানী তানাকে কলেরামুক্ত রাখতে শহরের বাইরে যাতায়াতের রাস্তায় মিলিটারি পাহারা ছিল । প্রত্যেক যাত্রীকে দুটো টেট্রাসাইক্লিনের ট্যাবলেট খেতে হত । এটা কোনোমতেই বিজ্ঞানসম্মত নয় । তাই আমরা সবাই খাবার ভান করে ফেলে দিতাম ।
![]() |
ম্যাডাগাস্কারে এখনও অনেক আদিবাসী আছেন যাঁদের ভাষা, খাওয়াদাওয়া রীতিনীতি অন্যদের থেকে আলাদা । এঁদের অনেকরকম ট্যাবু (মানা) আছে যাকে বলে "ফাদি" । যদিও ফরাসী প্রভাবে অনেক ফাদিই মুছে গেছে, তবু পাড়াগাঁয়ে এখনও অনেক টিকে আছে । এর অনেকগুলোই আধুনিক সভ্যতার সঙ্গে খাপ খায় না । দুটি উদাহরণ দিই । একটি ফাদি আছে যার মতে সপ্তাহে দুদিন খেতে কাজ করা মানা । স্বভাবতই ফসল বোনবার বা কাটবার সময় এনিয়ে মুশকিলে পড়তে হয় । আরেকটা ফাদি অনুযায়ী কোনো কোনো আদিবাসীদের মধ্যে একই জায়গায় বারবার মলমূত্র ত্যাগ মানা । এই ফাদি অনুযায়ী কোনোরকম পাকা পায়খানা তৈরি করা অসম্ভব । এরা মাঠে-ঘাটে, বীচেই এসব কাজ সারতে যান । এই জন্যই আমাশা, কলেরা ইত্যাদির প্রকোপ এত বেশি । সরকারি উদ্যোগ অবশ্যই আছে এরকম ক্ষতিজনক ফাদির বিরুদ্ধে শিক্ষা দেবার জন্য । কিন্তু পুরনো অভ্যাস এত তাড়াতাড়ি বদলায় না ।
![]() |
ম্যাডাগাস্কার দক্ষিণ গোলার্ধে পড়ে বলে এদেশে গরমকাল আমাদের শীতের সময় । গরম ও বর্ষার সময় কাজকর্ম করা দু:সাধ্য । শীতের সময়ই খুব মনোরম । তবুও ফরাসীরা নিজেদের সুবিধার জন্য এদেশে শীতের সময়ে "সামার ভেকেশন"-র নিয়ম করে গেছেন । সব স্কুল কলেজ তখন বন্ধ থাকে । আশ্চর্যের ব্যাপার হল ফরাসীরা দেশ ছেড়ে গেছে প্রায় পঞ্চাশ বছর হল তবু এখনও এই নিয়মই চলে আসছে ।
ম্যাডাগাস্কারে ভারতীয় বিশেষ নেই - যদিও খুব কাছেই মরিশাস দ্বীপে অনেক ভারতীয় পরবাসী । তানা ও অন্যান্য বড় শহরে কয়েকজন ভারতীয় আছেন । বেশিরভাগই গয়নার দোকানের ব্যবসা । সারা রাজধানীতে একটি মাত্র ভারতীয় রেস্তরাঁ । দেশী লোকেদের সঙ্গে কথা বলে মনে হল এঁরা ভারতীয়দের খুব একটা পছন্দ করেন না । মনে করেন ভারতীয়রা একটু নাক উঁচু এবং বেশি মেলামেশা করতে পছন্দ করেন না - স্বাভাবিক ভাবেই আমার মনে পড়লো ষাটের দশকে কেনিয়া, উগাণ্ডায় ভারতীয়দের দুর্দশা । আশা করি এখানেও সেরকম কিছু হবে না । ব্যক্তিগতভাবে ভারতীয় বলে আমি কোনও অসুবিধায় পড়িনি অবশ্য ।
ভলান্টিয়ারি করা ছাড়াও আমার আরেকটি ছবি হল দেশ বিদেশের পাখি দেখা । আমি স্বভাবতই আশা করেছিলাম ম্যাডাগাস্কারে গিয়েই অপূর্ব সব পাখির দেখা পাবো । কিন্তু তানায় দু'মাসের মধ্যে আমি একটিও পাখি দেখিনি ! কাক, চিল, শকুন নেই আকাশে । এমনকি পায়রা, শালিক বা একটি চড়ুই পাখিরও দেখা পাইনি । এটা আমার অভিজ্ঞতায় এই প্রথম । কিন্তু এ নিয়ে আর কারুরই বিশেষ মাথাব্যাথা নেই । জিজ্ঞেস করলে হাসে "পাখি তো বনেজঙ্গলে থাকবে, শহরে কেন থাকতে যাবে ?" আমি যতই বলি পৃথিবীর সব শহরে কত পাখি আছে, এরা আরও হাসে, ভাবে আমি ঠাট্টা করছি । শহরে আছে প্রচুর গাছপালা, ফুল, ফল, আস্তাকুঁড়, পোকামাকড় কিন্তু একটিও পাখি নেই । এটা সত্যিই আশ্চর্য ।
![]() |
![]() ![]() |
ম্যাডাগাস্কার গরিব হলেও একটি অপূর্ব দেশ । আমার দুমাসের প্রতিদিন কেটেছিল নিত্য নতুন অভিজ্ঞতার আনন্দে । আমি ওঁদের কতটা ডাক্তারি শিখিয়েছি জানি না কিন্তু আমি ওঁদের কাছ থেকে প্রতিদান পেয়েছি অনেক বেশি । পেয়েছি মালাগাসীদের অকুন্ঠ ভালবাসা ও সাহায্য । দেশটি খুবই শান্তিপূর্ণ । খুনখারাপির খবর বিশেষ শোনাই যায় না । রাত্তিরবেলায় একলা যাতায়াতে আমার কোনোও অস্বস্তি হয়নি । ভিখারিরা পর্যন্ত অতি ভদ্র । একবার `না' বললেই সরে যায় । আমরা থাকার সময় এদেশে `স্বাধীনতা দিবস' পালন করা হল । আমি ও আমার সহকর্মী একজন অস্ট্রেলিয়ান ডাক্তার মিলে ঝাণ্ডা হাতে ওদের প্যারেডে যোগ দিলাম । ইউনিভার্সিটির ডাক্তার থেকে মুদির দোকানদার, ট্যাক্সিড্রাইভার, পাখির গাইড এমনকী সামনের চৌকির পুলিশ অফিসার পর্যন্ত আমাদের সবাইকে বন্ধুর মতো আপন করে নিয়েছিলেন । এর জন্য এঁদের সবাইয়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ থাকব ।
![]() |
(পরবাস-৪১, মে, ২০০৮)