• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৪৮ | মে ২০১১ | কবিতা
    Share
  • দু'টি কবিতা : নিরুপম চক্রবর্তী


    হেলসিঙ্কি


    রূপসী ট্রামের সারি ভেসে যায় সারসের মতো।
    সমুদ্রের ঢেউ জমে, ফেনা জমে যায়, শীতের প্রতীক হ’য়ে
    প্রস্তরপ্রতিম।
    এসেছি দস্তানা ভুলে, আমার আঙুলে কাঁপে মাইনাস পঁচিশ
    তাপমাত্রা, শীতবার্তা : সমস্ত শহরে আজ দুরন্ত ম্যাজিক!

    এসেছে ভিখিরী এক নাতিদূর এস্টোনিয়া থেকে
    টুপিপরা স্মার্ট লোক, একটু সংগীত হোক ব’লে
    সে যে কি গাইলো মামা, নিদারুণ সারেগামা
    টুপি খুলে সিধে তোলা তোলে!

    সেও যাবে দিগন্তের দিকে
    কাঙ্ক্ষিত গীটারখানি চেয়ে নিতে ঈশ্বরের কাছে।
    পাথুরে গীর্জাটি যদি ভুল ক’রে পিছুপিছু যায়
    এই ভয়ে তাকে আজ ঘিরে রাখে, একগুচ্ছ জাপানী ট্যুরিস্ট
    ক্যামেরার ক্লিকে ক্লিকে।
    আমি
    দাঁড়িয়ে থেকেছি তবু দূরে।
    অন্যকোনো প্রতিশ্রুতি পেতে
    অন্যকোনো সম্মোহনে মেতে
    নিজেকে ঈশ্বর ভেবে নিতে
    পারিনি তো!

    ম্যাজিকে ম্যাজিকে তবু এলোমেলো স্বপ্ন ভ’রে যায়
    আমি শুধু মুগ্ধ হ’য়ে দেখি
    বাতিদানে, মায়াবী মোমের শিখা
    অন্ধকার গীর্জাঘরে
    কতটুকু আনন্দ ছড়ায়।


    লাপ্পেনরান্‌তা: ফিনল্যাণ্ড


    এ শহরে এসেছিলো বিদেশী চারণ এক
    উদাসীন চাহনিতে তার
    কিছু ছবি আঁকা ছিলো, পায়ে পায়ে অবহেলাভরে
    সেসব কবিতাগুলো ফেলে গেছে কার কাছে
    জলের গভীরে।
    হ্রদের জলেতে ভাসে রূপোলী কায়াক এক
    এস্কিমো লুপে
    জলের গভীরে ডুবে দেখেছে কিশোর এক
    সবটুকু অহমিকা ম্লান:
    দেখেছে মাছের সারি মৃত কবিতার মতো ভাসে
    সারা হ্রদ জুড়ে
    ফেলে যাওয়া কবিতার পদগুলো ভেসে থাকে উদাসীন স্মৃতির শরীরে।।

    সাইমা হ্রদের ধারে লাপ্পেনরান্‌তা বলে স্নিগ্ধ জনপদে
    একটি অস্ফুট স্বর একদিন জেগে উঠে ঝরে গেছে কবে,
    একটি আকুল হাত হ্রদের ওপরে উঠে ফের ডুবে যায়
    আলো বা আঁধারে,
    আধোচেনা জ্যোৎস্নায় হেসেছে শহর বুঝি,
    উদাসীন চাহনিতে তাকে
    শেষবার দেখেছিলো বিদেশী চারণ এক
    অবিরত পিছুটানে, রাতের ম্যাজিকে।।


    অলংকরণ (Artwork) : অলংকরণঃ অনন্যা দাশ
  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments