• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৫৩ | ফেব্রুয়ারি ২০১৩ | গল্প
    Share
  • আশ্চর্য রোদ : দেবর্ষি সারগী


    সেদিন ভোরে মালবিকার ঘুম ভাঙল মেঘের ডাকে। বিছানা থেকে নেমে সে জানলার কাছে গেল। চারপাশে ঘোর অন্ধকার। আশ্বিন মাসের আকাশে এরকম মেঘ সচরাচর দেখা যায় না।

    'তুই বাথরুম যাবি? না গেলে আমি যাচ্ছি' মা মালবিকাকে বলল।

    মালবিকা কোনো জবাব দিল না। জানলার শিকে হাত দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকল। রাস্তায় বিশেষ লোকজন নেই। ওপাশের চায়ের দোকান থেকে উনুনের ধোঁয়া ভেসে আসছে। আকাশে আবার ভয়ঙ্কর গর্জন। সামনের পুরোনো ভাঙা বাড়ির কার্নিশে পায়রারা বসে থাকে। মেঘের ডাক শুনে একটা পায়রা আর একটা পায়রার আরো কাছে সরে এল। অন্য পায়রাটা লাল ঠোঁট ঘষে দিল আদুরে ভীতু সঙ্গীটির বুকে।

    মালবিকার হঠাৎ কান্না পেল।

    একে একে সবাই ঘুম থেকে উঠে পড়েছে। ছোট ভাই সুজয়ও ঘুম মাখা চোখে জানলায় গিয়ে দাঁড়াল।

    'আজ কলকাতা ভেসে যাবে রে দিদি!' বলে সে রান্নাঘরে ঢুকল। ইঁদুর ধরা খাঁচাটা হাতে তুলে দেখে ভেতরে ইঁদুর।

    'মা দেখো কত বড় ইঁদুর ধরা পড়েছে।' শেষ ইঁদুরটা ধরা পড়েছিল গত সপ্তাহে। আজকাল দু'একটা ধরা পড়ে। ফলে ওটা নিয়ে কারো উৎসাহ নেই। বাবার ঘরে ঠাকুমা চুপচাপ বসেছিল। বাইরে বেরিয়ে এসে সুজয়কে বলল, 'ইঁদুরটাকে আজ মারিস না বাবা। ছেড়ে দিবি। দেখছিস না আকাশটা কেমন অন্ধকার? ভগবানের হঠাৎ তন্দ্রা এলেই আকাশ এরকম কালো হয়ে যায়। এখন কোনো জীবকে মারতে নেই।'

    এরকম আকাশ মানুষকে কল্পনাতুর করে তোলে। সুজয় কল্পনায় দেখল ভগবানের আশ্চর্য সুন্দর চোখদুটো ঘুমে কেমন বুজে আসছে। যে ইঁদুরটাকে না মেরে রাস্তায় ছেড়ে দিল। খাঁচার দরজা থেকে বেরিয়ে ওটা দৌড়ে গেল ফুটপাতের দিকে। তারপর ফুটপাতের গা ঘেঁষে ঘুরে বেড়াতে লাগল। অন্যদিন হলে কাকেরা খুঁচিয়ে মারত। কিন্তু আজ চারপাশের অন্ধকারে ইঁদুরের কালো শরীরটা এমন মিশে গিয়েছিল যে কাকেরাও যেন ওকে দেখতে পায়নি।

    মালবিকা তখনও জানলায় দাঁড়িয়ে। ওর খুব কান্না পাচ্ছিল। এমনিতে ঘুম থেকে উঠেই মন খারাপ করে, এরকম ওর হচ্ছে গত পাঁচ মাস থেকেই। ঘুম থেকে উঠলেই বিক্রমের কথা মনে পড়ে। বিক্রম ওকে শেষবারের মতো নির্দয় অপমান করেছিল পাঁচ মাস হয়ে গেল। তারপর থেকে দু'জনের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই। এরপর রাস্তাঘাটেও সে বিক্রমকে দেখতে পায়নি। এখন মালবিকার দিন কাটে বিক্রমের স্মৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে। সব থেকে বেশি যুদ্ধ করতে হয় ঘুম থেকে ওঠার পর। ঘুম ভাঙলেই বিক্রমের স্মৃতি। সারারাত যেন কোনো সাপের মতো ওর মাথার ভেতর কুণ্ডলী মেরে লুকিয়ে থাকে বিক্রম। মালবিকা জাগার সঙ্গে সঙ্গে দিনের প্রথম ছোবলটা দেয়। আজও দিল। কিন্তু আজ যেন বিষাক্ত স্মৃতিগুলোর সঙ্গে যুদ্ধ করার কোনো শক্তিই ওর নেই। আকাশের এরকম ঘোর কালো রূপটা মেয়েটাকে একেবারে অসহায় করে দিয়েছে। এই মুহূর্তে ওর খুব বিক্রমের কথা মনে পড়ছে। বিক্রমের ভালোবাসার কথা মনে পড়ছে। ওর সঙ্গে স্বল্পস্থায়ী প্রেমের দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে। শেষ পর্যন্ত ওকে নির্দয় অপমান ও প্রত্যাখ্যান করার কথা মনে পড়ছে। একবার এরকমই কালো আকাশ ও তুমুল বৃষ্টির দিনে বিক্রম ওকে হঠাৎ ফোন করে বলেছিল, 'চলে এসো আমার মেসে।'

    'কী বলছ? এত বৃষ্টি! মা বকবে না?'

    'চলে এসো। প্লিজ।'

    মালবিকার বাড়ি থেকে বিক্রমের মেস খুব বেশি দূরে নয়। রাস্তার জল ঠেলে, আপাদমস্তক ভিজে মালবিকা গিয়েছিল বিক্রমের কাছে।

    মালবিকার খুব কান্না পাচ্ছিল।

    'কী রে? বাথরুম খালি। যাবি না?' বাথরুম থেকে বেরিয়ে মা বলল।

    জানলা থেকে মালবিকা সরে এল। বাথরুম যাওয়াই ভালো। দরজা বন্ধ করে কিছুক্ষণ কাঁদা যাবে।

    আকাশ অনেকক্ষণ ওরকম কালো হয়ে থাকল। বৃষ্টি পড়ছে না। শুধু মাঝে মাঝে মেঘের ভয়ঙ্কর গর্জন। বাড়ি জুড়ে অন্ধকার অন্ধকার। আলো জ্বালালেও রহস্যময় অন্ধকারটাই যেন বেশি চোখে পড়ে। বাবা বলল আজ অফিস যাবে না। সুজয়ও স্কুল যাবার জন্য তৈরি হল না। বাবার হঠাৎ সুজয়ের সঙ্গে ক্যারাম খেলতে ইচ্ছে করল। ওরা দু'জনে ক্যারাম খেলতে লাগল। মা দারুণ কিছু রাঁধতে ব্যস্ত। শরীর খারাপের অজুহাতে মালবিকা চলে এল কোণের ফাঁকা ঘরটায়। তারপর দরজা বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে নিঃশব্দে ফোঁপাল।

    'দরজা খোল। এই মালা, জ্বর এসেছে নাকি? ললিতার সঙ্গে আজ বাজার করতে যাবি না?'

    মালবিকা দরজা খুলল না। শুধু জানাল যে যাবে। ওর মনে পড়ল আজ বারোটায় ললিতার আসার কথা। দু'জনে পুজোর শাড়িটাড়ি কিনবে। ললিতা ওর খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু।

    বৃষ্টি যখন শুরু হয় তখন প্রায় ন'টা। হঠাৎ আকাশ ভেঙে অঝোর বৃষ্টি। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে। বৃষ্টির জোরালো চাপে আস্তে আস্তে আকাশের কালো পর্দাটা ফুটো হতে লাগল। ছেঁড়া জায়গার ভেতর দিয়ে প্রথমে উঁকি মারল নীল আকাশ। তারপর আলো। আশ্বিনের নরম, সোনামাখা, আশ্চর্য আলো।

    মালবিকা আবার জানলার সামনে এসে দাঁড়াল। জগৎটা এখন আলোয় ভাসছে। পায়রারা আর কার্নিশে নেই। একটা পায়রা হঠাৎ উড়ে এসে বসল। তারপর ভারী ভারী পায়ে বাঁদিক থেকে ডানদিকে একটু হেঁটে আবার উড়ে গেল। বৃষ্টি একদম নেই। তবে ছাদ বেয়ে, সামনের গাছটার পাতা বেয়ে হীরের দানার মতো জলের ফোঁটা মাটিতে পড়ছে। কাছাকছি কারো সিডি-তে আছড়ে চলেছে সেতারের ধ্বনি। বাড়ির ভেতরটা এখন ফাঁকা। কারণ ধড়িবাজ মেঘকে গালাগাল দিতে দিতে বাবা অফিসে গেল। সুজয়কেও মা জোর করে স্কুলে পাঠাল।

    সেতার বেজে চলেছে অলৌকিক তরঙ্গে। রাস্তায় মানুষজনের ভিড়। সবাই কেমন উচ্ছল, হাসিখুশি। একটা বাচ্চা ছেলে পুজোর আগেই যেন নিজের নতুন জামাটা পরে ফেলেছে। চারপাশ আলোয় ভাসছে। বৃষ্টিতে ভেজা আলো। শরতের আশ্চর্য আলো।

    মালবিকা হঠাৎ সরে এল জানলা থেকে, তারপর দৌড়ে গেল কোণের ঘরটায়।

    এও সম্ভব? সত্যি সম্ভব? উত্তেজনায় হাঁপাতে হাঁপাতে সে ভাবছিল। একবার দেখা করে আসবে বিক্রমের সঙ্গে? উত্তেজনায় মালবিকার মুখটা এমন দীপ্ত দেখাচ্ছিল যেন সে আলোর তৈরি এক গেলাস মদ পান করেছে।

    প্রচুর ভাবাভাবি করে শেষ পর্যন্ত সে গেল বিক্রমের মেসে। ওদের বাড়ি থেকে বিক্রমের মেস খুব বেশি দূরে নয়। রঙ ও পলেস্তরা উঠে যাওয়া তামাটে বাড়িটা একটু আগের বৃষ্টিতে ভিজে বড় স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে। গেটের মুখে কিছু টব ও লতানো গাছ, ওদের সবুজ রঙে কাঁপছে অপরিসীম রোদ। এর আগেও, বিক্রম যখন ওকে প্রত্যাখ্যান করেনি, মালবিকা বেশ কয়েকবার মেসটায় এসেছে। গেট দিয়ে ঢোকার পর মালবিকাকে দেখে বুড়ো দারোয়ান ও রাঁধুনেটা হাসল। মেসটা এখন ফাঁকা। পুজোর ছুটির জন্য বেশির ভাগ ছেলেই বাড়ি গিয়েছে। মালবিকার হঠাৎ ভয় হল বিক্রমও ওর দুর্গাপুরের বাড়ি চলে যায়নি তো।

    'ঘরে আছে?' বুড়ো দারোয়ানকে সে জিজ্ঞেস করল। দারোয়ান ঘাড় নেড়ে জানাল যে আছে, তারপর জানতে চাইল মেমসাহেবকে অনেকদিন দেখা যায়নি কেন।

    দোতলায় উঠে বিক্রমের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে মালবিকা দেখে দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ।

    বুকের ভেতর ধক ধক করছিল ওর। ওর মনে পড়ল দরজার গায়ে নখ দিয়ে ঘষে একদিন একটা পালতোলা নৌকোর ছবি সে এঁকেছিল। আগের চেয়ে অস্পষ্ট হয়ে গেলেও ছবিটা আছে।

    মালবিকা কড়া নাড়ল।

    বিক্রম বিছানায় শুয়ে ছিল। পুজোর পরই ওর সি-এ ফাইনাল পরীক্ষা, তাই বাড়ি যায়নি, গতকাল অনেক রাত পর্যন্ত পড়েছে। সকালে উঠে আকাশে ওরকম কালো মেঘ দেখে আবার গড়িয়ে পড়েছে বিছানায়। একটু আগে সে মনে মনে গত সপ্তাহে ফিল্মে দেখা এক নায়িকার অন্তর্বাস খোলার চেষ্টা করছিল। আধো আধো তন্দ্রায় একবার খুলেও ফেলেছিল অন্তর্বাসটা, কিন্তু নায়িকার বুক কিছুতেই কল্পনায় আনতে পারছিল না।

    মালবিকা আবার কড়া নাড়ল।

    দরজা খুলে মালবিকাকে দেখে বিক্রম অবাক, মুখে স্পষ্ট বিরক্তি।

    'এমনি। একটু দেখতে এলাম।' অপরাধীর মতো হেসে কাঁপা গলায় মালবিকা বলল। বিক্রমকে দেখে ওর মনে হল এই পাঁচ মাসে সে একটু মোটা হয়েছে। পাজামা ও গেঞ্জি ভেদ করে থিক থিক করছে চর্বি। বুকে গেঞ্জি উপচে উঁকি মারছে লোমের জঙ্গল।

    'কেমন আছ?' মালবিকা জিজ্ঞেস করল।

    'ভালো। সামনেই আমার পরীক্ষা।' বিক্রম ইচ্ছে করেই বলল কথাটা, যাতে মালবিকা আবার বিরক্ত করতে না আসে। দুর্গাপুরের একটা মেয়ের সঙ্গে ওর বিয়ে প্রায় ঠিক হয়ে গিয়েছে। মালবিকার সঙ্গে আর কোনো সম্পর্কই সে রাখতে চায় না।

    দু'জনেই চুপ। মালবিকারও যেন কথা ফুরিয়ে গিয়েছে। সে লম্বা বারান্দাটার রেলিঙে একটা হাত রেখে চুপচাপ দাঁড়িয়ে, ওর চোখ ছলছল করছিল। শান্ত, নির্জন মেস। রেলিঙে ঝুঁকে বিক্রম পরপর সিগারেট খেয়ে যাচ্ছে। শেষের দিকে মালবিকার চেহারা, ঠোঁট, নাক, গলার স্বর বিক্রমের কিছুই ভালো লাগত না। আজ কয়েক পলক চোরা দৃষ্টি ফেলে বিক্রমের হঠাৎ মনে হল মেয়েটা তো নেহাৎ খারাপ নয়, মালবিকা তো নেহাৎ খারাপ নয়! ওর সবচেয়ে ভালো লাগছিল মালবিকার গা থেকে বেরনো কেমন একটা গন্ধ। আগে তো বেরোত না। ও কি কোনো সেন্ট মেখেছে?

    'চলো। ভেতরে বসবে।'

    মালবিকা ভেবেছিল বিক্রম আজ বসতে পর্যন্ত বলবে না। হঠাৎ আমন্ত্রণটা পেয়ে সে দিশেহারা। ঘরের ভেতর ঢোকার পর ওর চোখ দিয়ে টপটপ করে জল গড়াল। বিক্রম দরজায় ছিটকিনি তুলে দিল।

    আধ ঘন্টা পর যখন দরজা খুলল বিক্রম, মনটা একেবারে খিঁচড়ে গিয়েছে, খুব নার্ভাস লাগছিল ওর। যদি কোনো অঘটন ঘটে? মাগীটা যে কেন মরতে এল হঠাৎ? অবিন্যস্ত চুল, ভাঁজ পড়া শাড়ি ঠিক করে মালবিকা বেরিয়ে এল স্নিগ্ধ পাথরপ্রতিমার মতো। মেসের সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় ওর মাথাটা একটু ঘুরে গেল।

    বাড়ি ফিরে দেখে ঘরে ললিতা বসে।

    'কোথায় গিয়েছিলি? সেই কখন থেকে বসে আছি।'

    মালবিকা চুপ। উদ্বেগে ওর প্রাণটা শুকিয়ে যাচ্ছিল। ললিতার পাশে বসে সে অদ্ভুত দৃষ্টিতে জানলার বাইরে তাকিয়ে থাকল। এই মুহূর্তে ওর ঠিক কান্না পাচ্ছিল না। ওর শুধু মনে হচ্ছিল ললিতার বুকে সজোরে একটু মুখ লুকোতে পারলে হয়তো বুকের ত্রাসটা একটু কমত।

    'কী রে! কী হয়েছে তোর? এই মালা, কী হয়েছে?'

    ললিতা মালবিকার সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে চলল। মেয়েটি ওর খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বিক্রমের সঙ্গে ওর সম্পর্কের সমস্ত ইতিহাস সে জানে। মালবিকা ললিতাকে আজকের গোটা ঘটনাটা খুলে বলল। কিছুক্ষণের জন্য ওর বুকটা একটু ত্রাসমুক্ত হল যেন, কিন্তু একটু পরেই সে জিজ্ঞেস করল, 'কিছু যদি হয়ে যায়? কী করব তখন?'

    ঘরটায় দু'জনেই চুপ। ললিতা বুঝে উঠতে পারছিল না কার দোষটা বেশি। বিক্রম কি ওকে জোর করে ধর্ষণ করেছে, নাকি মালবিকারই নীরব সম্মতি বেশি ছিল।

    'বল্‌ আমাকে। ও কি তোর সঙ্গে জোর করেছিল? চুপ করে থাকিস না। বল্‌ আমাকে!'

    মালবিকা চুপ।

    'আমাকে বল্‌। কার দোষটা বেশি? তোর না ওর?'

    মালবিকা চুপ। ঘরে সোঁ সোঁ করে পাখা ঘুরছে। দূরে একটা শালিখ ডেকে উঠল। ললিতা আরও কয়েকবার প্রশ্নটা করার পর মালবিকা হঠাৎ হাসল। পাথরের প্রতিমা যেমন ম্লান হাসে। তারপর বলল, 'আজ সকালে বৃষ্টি হবার পর চারপাশে কেমন আশ্চর্য রোদ উঠেছিল দেখেছিলি? ওই রোদটার দোষই বেশি।'



    অলংকরণ (Artwork) : অলংকরণঃ অনন্যা দাশ
  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments