বাংলা নতুন বছরের প্রাক্কালে আপনাদের হাতে বেশ বড়ো আকারের পরবাস-৬২ তুলে দিতে পেরে খুশি আমরা। এই সংখ্যায় আছে প্রায় ৩৫টি কবিতা, এবং ১৭টি গল্প। আন্তর্জালের সাধারণ গতির বিপরীতেই কিছুটা হবে হয়তো--পরবাসের সমালোচনাগুলি আমরা সাধারণত চাই বিশদ হোক্। সমালোচনা, প্রধানত বই-এর, পরবাসের সূচির ক্রমশই সিংহভাগ অধিকার করছে এবং সেটা খুবই ভালো কথা। এবারেও ৯-টি বইয়ের আলোচনা আছে।
একটা ব্যাপারে আক্ষেপ কিন্তু রয়েছে এখনো। পরবাসের শুরু থেকেই মনে বিরাট আশা ছিল যে অন্য যে-কোনো বিভাগের চেয়ে প্রবন্ধবিভাগ হবে সবচেয়ে সমৃদ্ধ, বিষয়ের বৈচিত্রে এবং লেখার সংখ্যায়। বেশিরভাগ বাংলা পত্রিকার মতো পরবাস-কেও অনেকে হয়তো ধরে নেন যে এটাও নিছক সাহিত্য পত্রিকা। এ-প্রসঙ্গে বলা যায় যে পরবাসে প্রায় সবকিছু নিয়েই লেখা যায় (মনে পড়ছে প্রথম পরবাস বেরোনোর সময়ে এই নিয়ে 'পরবাসী'দের মধ্যে তুমুল 'আলোচনা'--একটা বিষয়ই তখন বাদ পড়েছিল!), কারিগরি প্রযুক্তি থেকে শুরু করে প্রেমের কবিতা। যাঁরা বিজ্ঞান-ইত্যাদি নিয়ে মৌলিক গবেষণা করছেন তাঁদের আহ্বান করছি সেই বিষয় নিয়ে বাংলাতে পাঠকের বোধগম্য হতে পারে এরকম লেখা পাঠাতে। সবরকমের লেখা কিছু কিছু পেলে পরবাস আরো তাড়াতাড়ি প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
কিছুদিন ধরে অনুযোগ পাচ্ছিলাম যে সোশ্যাল নেট্ওয়ার্কিং-এ পরবাস অনুপস্থিত, এর একটা বিহিত করা দরকার। মনে করা যাক্ যে পরবাসের জন্মই হয়েছে সোশ্যাল নেট্ওয়ার্কিং থেকে (দ্রঃ প্রথম সম্পাদকীয়), এবং আন্তর্জাল আড্ডার পরিকাঠামো থেকে আলাদা অস্তিত্ব পত্রিকার একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু এটা মানতে হয় যে পরবাসের প্রচার বেশি হলে ভালোই, আর তার জন্য প্রয়োজন আধুনিক মাধ্যমগুলির উপযুক্ত ব্যবহার। সেই কথা মনে রেখে পরবাস এখন 'ফেসবুক'-এ উপস্থিত, এবং আপনাদের অনুরোধ করছি আপনারা পরবাস-পাতায় যোগ দিন। আপনার বন্ধুদেরও জানাবেন এই খবর। আমরা এখানে পরবাসের ঘোষণাগুলি প্রকাশ করব, কাজেই পরবাসে নতুন কী যোগ হল, বা হয়তো আগামী সংখ্যার জন্য কোনো বিশেষ পরিকল্পনা আপনাদের জানাতে চাই, সেখবর ইচ্ছা করলে আপনি এখান থেকে পেতে পারবেন আপনার ইচ্ছা এবং সুবিধে মতো। কিন্তু এটা পরবাসের বিকল্প নয়--আপনার মতামত, লেখা ইত্যাদি পরবাস-এই পাঠাবেন, ফেস্বুকের পাতায় কিছু প্রকাশ করা যাবে না। পরবাস ওয়েবজিনে আপনার মতামত, বিতর্ক থাকলে পাঠকরা সেটা ভালোভাবে সম্পূর্ণ প্রাসঙ্গিকতা (কন্টেক্সট্) সমেত পড়ার সুযোগ পাবেন সব সময়ে। এই সূত্রে এটাও জানাই যে সম্প্রতি কয়েকজন পরবাস-অনুরাগী ফেসবুকে একটি পরবাস-ফ্যান-ক্লাব খুলেছেন। সে ব্যাপারে পরবাস-এর কিছু বলার নেই। আশা করি পরবাস-এর এতে ভালোই হবে, কিন্তু তা ফলেন পরিচীয়তে। পাঠকরা খেয়াল করবেন যে এই সংখ্যার লেখক তালিকায় এককালের প্রিয় লেখকের সঙ্গে আছেন অনেক আনকোরা নতুন নামও। এর পিছনে হয়তো সোশ্যাল নেট্ওয়ার্কিং-এর কোনো যোগাযোগ আছে।
আসন্ন বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে আপনাদের সবাইকে আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।