ব্যাংকক শহর, সারাদিন ব্যস্ততার ব্রীফকেস দৌড়
আকাশ রেলের গর্ত না বোজানো, গাড়ীর ভীড় ধুলো ওড়াউড়ি
সকালে দুপুরে মুখে মাস্ক পরে থাকে
আছে একটু হাঁপানির টান।
সময় পেলেই ছুটে আসে ছায়াপ্রিয়া নদীটির কাছে
কি আহ্লাদে স্রোতে ভাসা রূপসী এ নদী
ঢেউয়ের আয়নায় মুখ দেখে নিজেকে সাজায়
জলের সুগন্ধি ঢালে শহরের বুকে
নদী নয় নারী।
কোয়াই নদীর কাছে এসে দাঁড়ালাম নৈঃশব্দের ঠিক কিনারায়
নদীটি মেয়ে না নারী প্রশ্ন করি না।
এখানে জলের রং নীল, ওপরের সেতুটিও সযত্নে সাজানো
কোনদিন ভেঙে পড়েছিল মনেও হয় না
পাখিদের ওড়াউড়ি প্রজাপতি হলুদে হলুদ
বাতাস উড়ছে যেন ঘুড়ির মতন হাওয়া খেয়ে নিয়েছে অনেক।
দুধারে জঙ্গল প্রান্তিকে পাহাড়।
সাবুখেত সবুজ গালচে হয়ে আছে
সব ঠিকঠাক যখন যেমন হবে তখন তেমনই।
হঠাৎ অশ্রুতকে শুনতে গিয়ে কানে এল বোমার গর্জন, বাতাসে বারুদ
নীলজল তক্ষুনি লাল হয়ে রক্তগঙ্গা
এই ব্রীজে রক্ত ঝরেছিল!
ব্রীজ অন দ্য রিভার কোয়াই এ!!
কোয়াই স্মৃতির নদী সেতুটির মুখে দুঃখ লেগে আছে
অদৃশ্যকে দেখতে গিয়ে চোখে পড়ে অসুস্থ দুপুর
তীব্র জ্বরে বিষণ্ণ বিকেল।
নীল সারংয়ের রঙে বইছে কোয়াই
গাছের সবুজ পাড়, প্রজাপতি হলুদ নক্সায় বুনে তোলে চাঁপা, অর্কিড
বারুদের গন্ধমাখা দিন ব্রীজটি লুকিয়ে রাখে বুকে
কখনো দেখতে পাই ঐ মেয়েটির মুখে
যার হাতে ছবির পসরা, কোয়াই সেতুর মত দুঃখের লাবণ্য ভরা মুখ
একটি ট্যুরিস্টও কিনবে না কার্ড শুধু দামদর!!
সব নদী মেয়ে নয় কোন কোন সেতুও মেয়ে হতে পারে
কাঞ্চনবুড়ী এক সোনার শহর
সেইখানে কোয়াই সেতু দ্রৌপদীর মতো চুলে রক্তমাখা এক নারী।
(দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পটভূমিকায় তোলা একটি বিখ্যাত ছবির পরিপ্রেক্ষিতে লেখা কবিতাটি। ব্যাংককে বেড়াতে গিয়ে কোয়াই নদীর ওপর নৌকাবিহার ব্রীজটির কাছে পৌঁছে দেয়। বোমাবিদ্ধস্ত সেতুটি এখন ঝকঝকে নতুন।)