বৃষ্টি
ঝোড়ো হাওয়া আসে, ছোট্ট ডিঙিটি তুফান বুঝছে
আকাশের রোদ জ্বলে জ্বলে আজ বৃষ্টি খুঁজছে
সন্ধ্যার মেঘ, বিজুরি চমকে সেই ছোঁয়া চায়
ব্যাকুল আসুক ঘনবরিষণ অঝোর ধারায়
ভেসে যাবে পথ, বাস-অটো-ওলা-মগ্ন শহর
মেট্রোর ছাত, শপিং মলের খোলা চত্বর
আদিম প্রেমিক ভিজে গেলি আজ অকাল বাদলে
ট্রাফিক জ্যামের সিক্ত বাতাস তোর কথা বলে,
তোর কথা বলে...
চুপিচুপি ভেজে ধোঁয়া ধুলো মাখা কচি কিশলয়
এলোচুলে মাটি সোঁদাল গন্ধে আলুথালু হয়
জড়াজড়ি হাত, কাঁধে মাথা রেখে কান্না যুঝছে,
আমার শহর
শুধু তোর বুকে
বৃষ্টি খুঁজছে।
আরেকবার
তোমায় আরেকবার ছোঁবো বলে
শরীরে উথালপাথাল নৈঃশব্দ্য;
দূরাগত ঘন্টা শাঁখ আজানের গান
এক ঝটকায়
থেমে যায় সে স্তব্ধতার স্রোতে।
তোমাকে আরেকবার। আরেকবার ছোঁবো বলে
সর্বাঙ্গে বাঁধ ভাঙা বন্যাজল,
ঘোলা। ডুবুডুবু ইচ্ছে, চিন্তা, ভ্রম।
তোমায় আরেকবার ছোঁবো বলে
নিঃশ্বাস বন্ধ, তবু,
ঘূর্ণাবর্ত থেকে অবাধ্য হাত তুলে আছি,
এসো, ধরো,
তবে যে বলেছিলে, তুমি আছো, তুমি থাকবে?
নদী
নদী, তুই আবার আসিস,
বসিস এসে উঠোন ঘেঁষে
আমাদের অনেক বাকি দুপুরবেলা
কাঁকড় পাথর নুড়ির সাথে
এক্কা দোক্কা ছোট্ট খেলা
এপারে ঢেউয়েরা যায়
মাঠ পেরিয়ে অনেক দূরে, বনপাহাড়ে,
ওপারে ঝুমকো লতা,
সুয্যির মিঠে পরশ ঝোপেঝাড়ে
ও নদী তুই আবার আসিস,
পথটা ভুলেই এবার নাহয়, বাড়ির গেটে,
একটু হাসি একটু বিরাগ সঙ্গে নিয়ে
থমকে থেমে দাঁড়িয়ে পড়িস
লিফটে করে উঠতে গিয়ে
না। নদী তুই আসিস না আর।
আর হবে না হাল্কা হাওয়ার গন্ধ মাখা
চিকন জলে। আর হবে না
পানকৌড়ির শঙ্কাবিহীন সবল পাখা -
নদী তুই আসিস না আর। এই দরজায়।
তোর জলে বড্ড জ্বালা। বড্ড আগুন। বড্ড পোড়ায়।