পত্রিকায় বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখি করতাম। এর সুবাদে কিছু পাঠক পেয়ে যাই, যেটাকে বলে একরকম জনপ্রিয়তা, এবং এরই ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞান বিষয়ক কয়েকটি বই আমার প্রকাশিত হয়। বইয়ের জনরা হিসেবে ধরলে এগুলি পপ সায়েন্সের বই। বিজ্ঞান নিয়ে আমার আগ্রহ অনেক, সেই আগ্রহ থেকেই এ বিষয়ে লেখালেখির শুরু।
হঠাৎ করেই একবার সমাজে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা যেগুলির ব্যাখ্যা হয়ত পাওয়া যাচ্ছে না, এসবের বিজ্ঞান ভিত্তিক ব্যাখ্যা দিয়ে গল্প লেখার চেষ্টা করি। সে চেষ্টাতেও সফল হই। প্রিয় পাঠকেরা আমার গল্পগুলিকে ভালোভাবেই গ্রহণ করেছেন। সমালোচকেরাও ভালো ভাবে নিয়েছেন।
খ্যাতির এক ধরনের বিড়ম্বনা থাকে। গল্পের বইটি লেখার পর আমি এর সম্মুখীন হলাম। ইমেইলে, ফোনে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে তাদের জীবনে ঘটে যাওয়া নানা অদ্ভুত ঘটনা আমার সামনে তুলে ধরতেন। তারা এর ব্যাখ্যা চাইতেন।
এর কিছু ঘটনা আসলেই কৌতূহল উদ্রেককর। কিন্তু বেশিরভাগই সাধারণ হ্যালোসিনেশন বা স্কিজোফ্রেনিয়া বলে আমার মনে হতো। তাই এক পর্যায়ে এসব এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করি। কিন্তু আজকে যিনি এসেছেন আমার সাথে দেখা করতে তিনি একজন বয়োবৃদ্ধ অধ্যাপিকা। (আসল নাম গোপন রাখছি, বর্ণনার সুবিধার্থে ছদ্মনাম দিচ্ছি এখানে।) সুলতানা নাসরিন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে কর্মজীবন শেষ করেছেন দেশের একটি বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এমন একজন লোককে না করা যায় না। আবার আমার এটাও মনে হচ্ছে ইনি কোন সাধারণ ঘটনা নিয়ে আসার লোক নন।
আমার লেখার রুমের পাশেই দর্শনার্থীদের সাথে দেখা করার রুম। এখানে আমার প্রকাশক, বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক এবং সাহিত্য করা বন্ধুরা আসলে বসে কথাবার্তা বলি। পাঠকদের কেউ আসলেও এখানেই বসি।
ভদ্রমহিলা চেয়ারে বসেছিলেন আমার সামনে। তার চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, চুলগুলি শাদা হয়ে আছে। উনার বয়েস অনেক হবে, সত্তরের কাছাকাছি বা তার চেয়ে একটু বেশি হবে বলেই আমার মনে হল।
তিনি আমাকে বললেন, আপনার লেখালেখির সাথে আমি খুব পরিচিত। আপনার সবগুলি বইই আমি পড়েছি। বিশেষত বিভিন্ন অদ্ভুত ঘটনার বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা নিয়ে যে বইটি লিখেছেন, তা বাংলাসাহিত্যে অভিনব। এটি পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছে।
নিজের লেখার প্রশংসা শুনতে খুব ভালো লাগে, একথা এক্ষণে আমি অবলীলায় স্বীকার করে যাই আপনাদের সামনে। ভদ্রমহিলার প্রশংসা আমার অনেক ভালো লাগল। মুখে হাসি ফুটে উঠল আর সে হাসির আভাস ছড়িয়ে গেলো চোখেও। আমি তাকে বললাম, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনাদের মত বড় মানুষেরা আমার লেখা পড়েন এটা ভাবলেই লেখার উৎসাহ পাই অনেক। আপনি ফোনে বলেছিলেন একটা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবেন। কী সমস্যা আমাকে বলুন। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করব।
আপনার কি কোন তাড়া আছে? ভদ্রমহিলা প্রশ্ন করলেন।
না, কোন তাড়া নেই। আপনি সময় নিয়েই বলুন।
ভদ্রমহিলার মুখের অবিভ্যক্তি কেমন যেন বদলে গেল আমি লক্ষ করলাম। একজন লেখক হতে গেলে সূক্ষ্ম বিষয়াদি দেখতে হয়। এই অভ্যাস আমার শুরু থেকেই আছে। তাই আমি উনার মুখের ভাবভঙ্গি দেখে বুঝলাম তিনি কথাটি কীভাবে বলবেন ভেবে পাচ্ছেন না।
আমি বললাম, ম্যাডাম, আপনি কি কফি খাবেন?
তিনি না করলেন না। আমি কফি বানাতে গেলাম রান্নাঘরে। এটি আমি করেছিলাম উনাকে একটু সময় দেবার জন্য, যাতে তিনি কথা গুছিয়ে নিতে পারেন।
কফির মগ নিয়ে ঢুকলাম একটু পরে। উনি যখন কফির মগে চুমুক দিলেন, তখন তার মুখভঙ্গি দেখে মনে হলো তিনি অনেকটা গুছিয়ে এনেছেন কী বলবেন।
তিনি বললেন, যে-কথাটি আমি আপনাকে আজ বলব এই কথা আমি আর কাউকে বলি নি। মানুষ কী ভাববে এই একটা ভয় ছিল আমার। কিন্তু সারাক্ষণ ঘটনাটি আমার ভেতরে ছিল। আমি আমার এই জীবনে কখনো ঘটনাটিকে ভুলতে পারি নি। এর কোন ব্যাখ্যাও আমি পাই নি। অনেক পড়াশুনা করেছি এসব নিয়ে। কিন্তু কোন বিশ্বাসযোগ্য ব্যাখ্যা আমার সামনে আসে নি। আপনার লেখা পড়ে মনে হলো আমার আপনাকে বলা যায়। তবে একথা ভাববেন না আপনাকে এর ব্যাখ্যা দিতেই হবে। আমি জানি এই দুনিয়ায় অনেক কিছুই আছে যাদের ব্যাখ্যা নেই। আপনি আপনাকে আজ বলতে এসেছি কারণ ঘটনাটি কাউকে না বলে যেতে পারলে মনে হচ্ছে আমি গোপন এক অশান্তি নিয়েই মারা যাব। এটা আমি চাই না। তাই...
আচ্ছা, আপনি নির্দ্বিধায় বলে যান ঘটনাটি। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করব।
সেটি অনেক আগের ঘটনা। আমায় বয়েস তখন বারো বছর। আমার বাবা রেলওয়েতে ছোট একটা চাকরি করতেন। চাকরিজীবীরা সবাই একটা কলোনিতে থাকতেন পরিবার নিয়ে, যেমন এখনো থাকেন। আমাদের পরিবারও এরকম কলোনিতে ছিল। সুন্দর, ছিমছাম এলাকা। বছরের শেষদিকে যখন অফিস ছুটি থাকত কিছুদিনের জন্য তখন সবাই মিলে পিকনিকে যেত। এরকমই একটা পিকনিকে ঘটেছিল ঘটনাটি।
আচ্ছা।
আমাদের পরিবারে ছিলেন আমার বাবা মা, ও আমরা তিন ভাই বোন। আমি সবার বড়। এরপরে আমার ভাই। ওর বয়স ছিল তখন ছয় বছর। আমার বোনটির বয়স তখন ছিল চার।
পিকনিকে যাবার সময় অনেক হই হল্লা হয় আপনি নিশ্চয়ই জানেন। ঐদিনও হচ্ছিল। কয়েকটি মাইক্রোবাস ভাড়া করা হয়েছিল। আমরা যাচ্ছিলাম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। সবাই যখন গাড়িতে উঠছেন, আমার বাবা মা ভাই বোন সবাই উঠে গেছেন তখন আমি ছিলাম গাড়ির কাছেই। গাড়িতে উঠার আগে আমার এক অদ্ভুত অনুভূতি হলো। আমার মনে হলো আমি কিছু একটা জিনিস ফেলে এসেছি। এই অনুভূতির তীব্রতা এত বেশি ছিল যে আমি আর কিছুই ভাবলাম না। এক দৌড়ে আমাদের বাসার সামনে চলে এলাম। সদর দরজা খোলা ছিল, আমি দৌড়ে ভেতরে প্রবেশ করলাম। আচ্ছা, আপনার মনে কি এখন প্রশ্ন জাগছে যেহেতু আমার বাবা মা গাড়িতে উঠে গেছেন তাহলে বাসার দরজা কেন খোলা ছিল?
ঘরে কি আপনাদের আত্মীয় কেউ ছিলেন?
না, কেউ ছিলেন না। আমরাই থাকতাম শুধু।
তাহলে কেন খোলা ছিল?
আমার মাথায় তখন প্রশ্নটি একবারের জন্যও আসে নি। আমি ভেতরে প্রবেশ করলাম এবং দৌড়ে চলে গেলাম আমার ঘরে। আমার ঘরের চেহারা পুরো বদলে গেছে আমি দেখলাম। আমার ঘরের জায়গায় সম্পূর্ণ ভিন্ন এক সাজানো গোছানো ঘর। বিছানার উপরে বসে আছেন একজন বুড়ো মহিলা। তিনি আমার দিকে তাকালেন।
আমি ভয় পেয়ে গেলাম। ভদ্রমহিলা আমার সাথে কোন কথা বললেন না। বাসার এটাচড বাথরুম থেকে একটা বুড়ো লোককে বেরিয়ে আসতে দেখলাম। তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে তিনি বেরিয়ে এসেছিলেন। আমাকে দেখে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ কে?
ভদ্রলোক যখন মাথা মুছছিলেন তখন তার ডান হাতের নিচের অংশের কালো পোড়া দাগ আমার নজরে পড়ল।
এই ভদ্রলোক সম্ভবত বুড়ো মহিলাটির স্বামী বলেই আমার মনে হলো। ভদ্রলোকের প্রশ্নের পরে বুড়ো মহিলাটি আমার দিকে তাকালেন। তার নীল চোখ আমি দেখতে পেলাম। তিনি শান্ত এবং গভীর স্বরে বললেন, এই মেয়ে, এখানে এসেছ কেন? তোমার বাবা মা তোমাকে খুঁজছেন। গাড়ি ছেড়ে দিবে। গাড়িতে যাও।
তার বলার মধ্যে এমন একটা আদেশের শক্তি ছিল যে আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না। দৌড়ে ঘর থেকে বের হলাম। ভয়ে আমার হাত পা কাঁপছিল। গাড়ির কাছে গিয়ে দেখলাম সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
আমার বাবা বললেন, তুমি গিয়েছিলে কোথায়? আমরা এদিকে তোমাকে খুঁজে পাই না।
আমি বললাম, বাসায় গিয়েছিলাম।
বাবা বললেন, বাসায় গিয়েছিলে আমাদের নিয়ে যাবে না? আর ওখানে গিয়েছিলে কি আনতে, চাবি তো তোমার মায়ের কাছে।
আমি আর কোন কথা বললাম না। অন্যরাও আমাকে আর বেশি প্রশ্ন করল না। কারণ তাড়া ছিল গাড়ি ছাড়ার।
সুলতানা নাসরীন কিছুক্ষণ চুপ থেকে সামনের দিকে ঝুঁকে এসে বললেন, এই ঘটনাকে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
আমি দেখলাম ভদ্রমহিলার চোখ জ্বলজ্বল করছে, নীল চোখ।
বললাম, এটি কি এমন হতে পারে, আপনি অন্য কোন বাসায় ঢুকে পড়েছিলেন?
কলোনির সব বাসায় আমার যাতায়াত ছিল। সব বাসা ও মানুষ পরিচিত ছিল। অনেক কাল আগের কথা তো, তখনকার সময় প্রতিবেশীদের সামাজিক বন্ধন গাঢ় থাকত। ফলে, এই দুজন বুড়ো বুড়ির মত কেউ আমাদের এলাকায় থাকলে আমি জানতাম। আর তাছাড়া সেদিন সব পরিবার তো গাড়িতে ছিল।
তাহলে এরা কারা ছিল?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই তো আপনার কাছে আসা। এরা কারা ছিল?
আপনি কি বিয়ে করেছেন?
না, আমি বিয়ে করি নি।
আমি আসলে বুঝতে পারছি না এর ব্যাখ্যা কী হবে। মনে হয় আপনার হ্যালোসিনেশন হয়ে ছিল।
এটা তো খুব সরল ব্যাখ্যা হয়ে গেল লেখক। এটা সবাই বলবে। আমি আপনার কাছে আরও যৌক্তিক ব্যাখ্যার জন্য এসেছিলাম।
এই কথা বলে ভদ্রমহিলা হাসলেন। কথাটি আমার গায়ে লাগল।
কী বলব বুঝতে পারছিলাম না।
পরিস্থিতি হালকা করতে ভদ্রমহিলা বললেন, আচ্ছা, তাহলে একটা মজার কাহিনী বলে আমার কথা শেষ করি। ঐ পিকনিকেই ঘটনাটি হয়েছিল। আমার জীবনের সেরা একটি ঘটনা। বয়স তখন তো খুব অল্প, কয়েকজন বান্ধবী আমরা একসাথে থাকতাম। যে হোটেলে উঠেছিলাম ওই হোটেলেই কয়েকটা ছেলে উঠেছিল, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, এসেছিল তারাও পিকনিক করতে। এই ছেলেগুলির সাথে আমাদের প্রায়ই চোখাচোখি হতো। এর মধ্যে একটা ছেলে, আমি দেখতাম সব সময় আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। বয়স তখন অল্প, প্রেম কী বুঝি না। কিন্তু একটা অনুভূতি হতো। জানেন আমি আমার জীবনের প্রথম প্রেমপত্র পাই ওই পিকনিকেই?
ভদ্রমহিলা বলতে বলতে কমবয়েসী মেয়েদের মত উচ্ছল হয়ে উঠলেন। আমার ভালো লাগল। হাসিমুখে জিজ্ঞেস করলাম, সেটা কেমন?
ঐ ছেলেটাই। আমরা যেদিন ফিরব ঠিক করেছিলাম তার কয়েকদিন আগেই আমাদের ফিরতে হয়েছিল। অকস্মাৎ এক নোটিসে সবাই গাড়িতে উঠছি, আমার মনে তখন প্রগাঢ় দুঃখ। কারণ ছেলেটির সাথে দেখা আর হবে না। তারা তো জানত না আমরা আজ চলে যাব, তাই হয়ত গেছে সৈকতের দিকে। গাড়িতে বসে যখন আমার না হওয়া প্রেমটার বেদনায় আমি কাতর, তখন দেখলাম দূর থেকে কেউ একজন দৌড়ে আসছে। আমার বুকে কাঁপন শুরু হলো। সময়ের সাথে সাথে ছেলেটির মুখ স্পষ্ট হলো। সেই ছেলেটিই। এদিকে গাড়ি ছেড়ে দিচ্ছে। ছেলেটি এসে উদ্ভ্রান্তের মতো গাড়িতে গাড়িতে কাকে যেন খুঁজছিল। আমি তো জানতাম আমাকেই। গাড়ি যখন স্টার্ট নিল তখন ছেলেটির সাথে আমার চোখাচোখি হলো, সে দৌড়ে এসে জানালা দিয়ে আমাকে উদ্দেশ্য করে একটি চিরকুট ফেলে দিল। ওখানে তার নাম, ঠিকানা ও হলের রুম নাম্বার ছিল। বেচারা!
গল্পটি বলে ভদ্রমহিলা উঠলেন।
তিনি চলে যাবেন।
আমি বসে রইলাম। আমার মাথায় তখন অন্য ভাবনা খেলে যাচ্ছে।
আমি বসে থেকেই উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, ছেলেটির হাত লক্ষ করেছিলেন? ওর হাতের নিচে নিশ্চয়ই কালো দাগটা ছিল?
ভদ্রমহিলা থমকে দাঁড়ালেন। আমার দিকে নির্বাক ভঙ্গিতে তাকিয়ে কী যেন মনে করার চেষ্টা করলেন। তারপর বললেন, হ্যাঁ, ছিল মনে হচ্ছে। ওটা নিয়ে তো ভাবি নি।
আমি বললাম, তাহলে বসে আমার ব্যাখ্যা শুনে যান।
ভদ্রমহিলা বসলেন।
আমি বলতে শুরু করলাম, ঐদিন আপনার ঘরে গিয়ে আপনি যাকে দেখেছিলেন উনি আসলে আপনি, এবং ঐ লোকটির আপনার স্বামী। অন্য একটি প্যারালাল বাস্তবতায় আপনারা ঘর করছেন। সেদিন কোন একটি কারণে, ওই দুনিয়া এবং ঐ সময়ের সাথে আপনার দেখা হয়ে যায়। আমার মনে হয়, যে ছেলেটির সাথে আপনার ঐ ট্যুরে দেখা হয়েছিল অন্য প্যারালাল বাস্তবতায় তার সাথেই আপনার বিয়ে হয়েছে।
গম্ভীরভাগে ভদ্রমহিলা জিজ্ঞেস করলেন, এমন কী হয়?
আমি বললাম, এমন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। আমাদের ইউনিভার্স একটি সিমুলেটেড বাস্তবতা, সিমুলেশন হাইপোথিসিস অনুযায়ী এটা বলা যায়। সময়ের নানা তল, ও নানা বাস্তবতা অস্তিত্বশীল থাকতেই পারে। একটার সাথে আরেকটার দেখা হয়ে গেলেই সমস্যা হয়, যেটা আপনার ক্ষেত্রে হলো। তবে এটি যে কোন কালেই হয় নি এমন বলা যায় না। এজন্যই প্রচলিত আছে ক্রিটের এপিমেনিডেস ঘুমিয়ে ছিলেন সাতান্ন বছর, রয়েছে রিপ ভ্যান উইঙ্কেলের গল্প, যে ঘুমিয়ে ছিল বছর বছর ক্যাটস্কিল পাহাড়ের মাথায়, রয়েছে কল্কি পুরাণে অনন্ত মুনির কথা। এইসব আমাদের মাঝে মাঝে যেন দেখিয়ে দিতে চায় আমাদের চারপাশ মায়ামাত্র। আমরা যেমন দেখি ও বুঝি তেমন নয়। অসম্ভব কিছুই নয় এখানে।
ভদ্রমহিলা আমার কথা শুনলেন। একটি ভারী নিঃশ্বাস ফেললেন, এবং আর কিছু না বলে বেরিয়ে গেলেন।