আমাদের বাড়িতে গঙ্গাজল দিতে আসেএকটি লোক। তার নাম ভূষণকুমার। আদি বাড়ি বিহারের ছাপরা জেলায়। শুনেছি সে খুব ছোটবেলায় বিহার থেকে এই শহরে চলে আসে তার বাবা-কাকার হাত ধরে। তখন গঙ্গার পাড়ে চটকল ছিল। ছোট-বড় সেইসব নানা চটকলে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করত। তার বাবা-কাকাও করত। বড় হয়ে সেও জুতে যায় ওই কাজে। সেই থেকে সে দেশে আর যায়নি বলতে গেলে। তার ছেলেমেয়েরা তো দেশ চেনেই না। এই বাংলার মাটিই তাদের সব।
গঙ্গার পাড় ধরে পরপর ঘর। ঠাকুমা বলে, প্রথমে গুটিকয় ঘর ছিল ওদের। এখন একেবারে পাড় ছেয়ে গেছে। আর হয়ে উঠেছে ঘিঞ্জি। নইলে ঠাকুমার যখন অল্প বয়স, আমার বাবা-কাকারা ছোট, স্নান করা মানে গঙ্গাই ভরসা। তখন পাড় খুব ফাঁকা ছিল আর ছিল প্রাচীন সব বৃক্ষেরা। সে-দিন আজ অতীত।
বয়স হলে ঠাকুমা আর নদীতে নাইতে যেতে পারত না। আমাদের বাড়ি থেকে গঙ্গা যেতে হলে অনেকটা হাঁটতে হয়। মিনিট দশ-পনেরো মত সময় লাগে। আসলে গঙ্গার কাছাকাছি আমাদের বাড়ি হলেও পথ তো আর সোজা নয়। অনেক গুলিঘুঁজি পেরুতে হয়। তবে গঙ্গা চোখের সামনে দৃশ্যমান হয়। তার পর প্রায় দশখানা সিঁড়ি ভেঙে নামা-ওঠা। আরকেবল নামা-ওঠা করলেই তো হল না; জলের চোরা টান আছে—সেটা সামলাবে কে? সুতরাং গঙ্গায় নামা বারণ হল। ঠাকুমা বলে, সারাজীবন গঙ্গায় নেয়ে এলুম, আর এই শেষ বয়সে এসে নলের জলে নাইতে হবে? ও আমি পারবনা। আমার গঙ্গাজল রোজ চাই—সে তোরা ব্যবস্থা করে দে।
সেই থেকে, প্রায় আট-দশ বছর হয়ে গেল; ভূষণকুমার আমাদের বাড়িতে গঙ্গাজল সাপ্লাই দিয়ে যাচ্ছে। দশ লিটারের জার। সাইকেলের পিছনে টিউ দিয়ে বেঁধে নিয়ে আসে। সেই জল ঢেলে দেওয়া হয় ঠাকুমার স্নানের জায়গায়। একটু বেলার দিকে নিত্যকার গঙ্গাস্নান সেরে ঠাকুমা পরিতৃপ্তির শ্বাস ফেলে, আঃ!
এমনকি এই সোস্যাল ডিস্টান্সের সময়েও! সেক্ষেত্রে লোকটা মুখে মুখোশ বেঁধে থাকে, ঠাকুমা বাঁধে না—পারে না বা চায় না। ভূষণকুমার ঠাকুমার কোল ঘেঁষে বসে নানা গল্পকথা বলে; বারণ করলেই বলে, ও আমার কিছু হবে না—গঙ্গাজলে সব জীবাণু নষ্ট।
ভূষণকুমার মুখোশ গলায় নামিয়ে বলে, আজ যে-জল দিয়ে গেলুম মা, যেনো এটি বারাণসী ঘাটের জল। কোনোদিন বলে, এই জলই সেই স্রোত থেকে তুলেছি যে ঘাটে মুনি-ঋষিরা স্নান সারতেন রোজ। আবার কখনও বলে, এটি প্রয়াগের জলের ধারা—এগুলি গল্পকথা নাতো কী?
আজ ভূষণকুমার বলে, এই যে জ্যারিকেন মা, কোন ঘাটের জল আছে জানেন এতে? ঠাকুমা বলে, কোন জল? সে বলে, তবে শুনুন সেই কাহিনি। ব্রম্ভর্ষি বিশ্বামিত্র অযোধ্যা থেকে রাম-লক্ষণকে নিয়ে চলেছেন তাঁর আশ্রমে। পথে পড়ল শোন নদ। তাঁরা সেই নদ অতিক্রম করে চলতে চলতে এসে পৌঁছলেন গঙ্গাতীরে। ক্লান্ত হয়ে গেছিলেন। দুই ভাই গঙ্গায় খুব করে স্নান করলেন। স্নান সেরে উঠে পূজা-পাঠ করলেন। এই জল হল প্রভু শ্রীরাম-এর সেই স্নানঘাটের জল। সন্দেহের কোন অবকাশই রইল না। কোনোদিনই থাকে না। তবে আজ ভক্তিতে গদগদ ঠাকুমা জোড়হাত মাথায় ঠেকাল। লোকটারও কিছু উপরি পাওনা হল। সেই টাকা পাঞ্জাবির বুক পকেটে ঢোকাতে ঢোকাতে সে বলে, একদিন গঙ্গা মাঈয়াকে দেখতে যাবেন? কতদিন তো যান না? বলেন তো, একটা টোটো বলি। এখন গঙ্গার রূপ দেখলে আপনি পাগল হয়ে যাবেন মা। সে গঙ্গা আর নেই।
ব্যাপারটা না বুঝে ঠাকুমা বলে, নেই মানে? এ কি তবে অন্য গঙ্গা?
আহা-হা, তা নয়! নদী যেমন ছিল তেমনি আছে। তবে নদীর রূপ খুলে গেছে। লকডাউন-এর ফলে এই যে টানা দুই মাস সব কলকারখানা বন্ধ হয়ে আছে, নদীতে ফুলফল ফেলা বারণ—তাতেই নদীর জল পরিষ্কার হয়ে গেছে। নদীতে এখন শুশুক খেলে বেড়ায়। ইলিশ এসে ডিম পেড়ে যায়। এত স্বচ্ছ জলদেশ যে, তার তলদেশ দেখা যায়। এখন জল এত পরিষ্কার যে আপনি পান করতে পারবেন। রাজা-বাদশারা তো নিত্য গঙ্গাজল পান করতেন। এতে পেট ভালো থাকে, অনেক রোগ-জীবাণু মারা যায়।
ঠাকুমা বলে, গঙ্গাজল পান তো আমি করি।
এখন আরও বেশি করে পারবেন।
আগে একছিপি করে খেতাম। এখন তুই যখন বলছিস, এক বোতল করে খাব। একদিন গঙ্গামাটি আনিস। নরম কাদামাটি আনবি, মেখে স্নান করব। আমাদের সময় তো সাবান ছিল না। ওই মেখেই গা পরিষ্কার করতাম। এখন জল যখন শুদ্ধ হয়ে গেছে, মাটিতেও আর তেলের, কালির স্তর নেই।
সেই বছরখানেক আগে গঙ্গায় স্নান করে আমার সারা গায়ে এলার্জি বেরিয়ে যায়। সেই থেকে নদীস্নান আমার বন্ধ। তবে হ্যাঁ, ঠাকুমার চামড়ায় কিছু হয় না। আমার যে কেন...! আর এখন যেহেতু নদীজল পরিষ্কার—না, এখনও নামা বারণ। ভূষণকুমার বলে, আনব মা। আর একটা কথা—
মুখ তুলে ঠাকুমা বলে, কী?
ভূষণকুমার বলে, গঙ্গামাঈয়ার কাছে একটি ইয়ং ছেলে আসে। সে গঙ্গামাঈয়াকে নিয়ে অনেক খারাপ খারাপ কথা বলে।
শুনে ঠাকুমা বলে, কী কথা?
ঠাকুমার সাদা ভুরু কুঁকড়ে ওঠে।
একটু ইতস্তত করে ভূষণকুমার বলে, সে বলে—আমি গঙ্গা নদীর প্রেমিক।
মানে! ঠাকুমা হাঁ হয়ে গেল।
তবে আর বলছি কী—আস্পর্দা দেখুন তার! প্রথম যখন শুনি, আমিও এমনি অবাক হয়েছি। রোজই দেখি পরিষ্কার জামা-প্যান্ট পরে নদীর পাড়ে চক্কর কাটে। গাছের নীচে বসে হাঁ করে নদীকে দেখে। নৌকা ভাড়া করে সারাদিন নদীতে পাক দেয়। রাত জাগে নৌকার খোলে, দুলুনিতে। কানে কানে সব খবর আমাদের মহল্লায় আসে। একদিন জিগাই, বাবু কর কী? কোথায় থাকো? এমনই করে নদী তোমায় টানে কেন? তখন সে বলে, সে হল গঙ্গা নদীর প্রেমিক। বললে, সেই কবে রাজা শান্তনু তার প্রেমে পড়েছিল, তার পর কতকাল কেটে গেল। রাজা শান্তনু কবেই মরেহেজে গেছে। নতুন করে সে আবার জন্ম নিয়েছে এমন কোনও সম্ভাবনার কথা শোনা যায়নি। সুতরাং আমার প্রেমিক হতে বাধা কোথায়? ঠাকুমা নিঃশ্বাস বন্ধ করে বললে, তার পর?
জানেন মা, আমার গা-টা শিউরে উঠেছে তখন। যে গঙ্গাকে আমরা মা বলে পুজো করি, লোকে যাকে ডাকে ‘গঙ্গামাঈয়া’ বলে, সেই গঙ্গামাঈয়াকে নিয়ে এমনি কথায় গা-টা কেবল কেঁপে উঠল না আমার—রাগও হল। গঙ্গামাঈয়াকে নিয়ে এমনি কথা—রাগ হয় না, বলুন?
ঠাকুমা কিছু বললে না। হাঁ করে চেয়ে রইলে লোকটির মুখপানে। লোকটা বলে, ওই ছোকরা যে প্রেমে পড়েছে, তার কারণ আছে। পরে অনেক ভেবেছি আমি—তবে কী জানেন, মানতে পারি না।
কথাটা বলার সময় যেন হাল ছেড়ে দিল লোকটা। এমনি করে সোজা হয়ে বসল। একটু খুলে বলো না, মাঝি।
ভূষণকুমার বলে, একটা স্বামী মারা গেলে যুবতী নারী কী আবার বিবাহ করে না? করে। আর যারা করে না, তারা...
ঠাকুমা ম্লান গলায় বলে, গঙ্গাস্নানে মানুষ উদ্ধার পায়, পবিত্র হয়। যুগ যুগ ধরে আমরা তাই জেনে এসেছি। ব্রম্ভার কমণ্ডুলে তার বাস, বিষ্ণুর পাদপদ্মে তার জন্ম, শিব তাঁকে মাথায় ধারণ করেন। সেই নদীকে নিয়ে এমনি কথা!
তবে আর বলছি কী! সে খ্যাপা ওসব বোঝে না। গঙ্গা তার কাছে এক সুন্দরী নারী ছাড়া আর কিছু নয়।
ঠাকুমা বলে, তা কী সঙ্গ দিয়েছে সে?
সে ছোটবেলায় ঠাকুমার হাত ধরে গঙ্গাতীরে আসত, বসে থাকত। দেখতে দেখতে গঙ্গার প্রতি তার ভালবাসা কখন জন্মে গেছে সে নিজেই তা জানে না। সে বলে, নদীর ধারে বসেই শুনেছি ভগীরথের কথা। তার পর গঙ্গার নানা কথা শুনেছি গঙ্গার কাছ থেকেই।
চটকল বন্ধ হয়ে যাবার পর, এক নৌকায় কাজ করত ভূষণকুমার। তাই ঠাকুমা ওকে মাঝে মাঝে মাঝি বলে ডাকে। এখন অবশ্য আর নদীতে কাজ করে না।স্থায়ী কোন কাজ নেই। যখন যা জোটে করে।
ভূষণকুমার বলে চলে, এটা জানার পর আমি ভাবলাম, ছেলেটি বুঝি পাগল; মানে পুরো পাগল না হলেও মাথায় যে ছিট থাকার কথাআমরা বলা-কয়া করি—নির্ঘাত সেটি আছে। কারণ আমার সঙ্গে তার নিত্য দেখা হয়, কথা হয়, আসা-যাওয়া হয়। নদীর ধারে বসে আমি হনুমান চালিশা পড়ি—তখন। দেখি যে, সে পাগল নয়, সেয়ানা পাবলিক। আমি তাকে বলেছি, আগামীকাল নদীর পাড়ে দাঁড়াতে, তখন গঙ্গা উঠে আসবে নদী থেকে।
কেন বললি?
কাল কি দিন বুঝলেন না? ঝড়ের দিন।
কী ঝড়?
উম্পুন। আয়লা এসেছিল বছর দশ আগে—মনে আছে?
হ্যাঁ, হ্যাঁ, আয়লার কথাকি আর ভোলা যায়? গঙ্গার জল তো বড় রাস্তায় চলে এল। ওঃ, সে কী দুর্যোগ, কী দুর্যোগ! কিন্তু এমনি বলে এলি কেন?
গঙ্গা মাঈয়াকে নিয়ে মস্করা! আর দাম দিতে হবে না? কল্কিপুরাণে ঋষিরা বলেছেন, সুরতরঙ্গিণী গঙ্গা সকলকে ভবসাগর পার করান। একেও আমি সেই ভবসাগর পার করাতে চাই। মরুক শালা ঝড়ের মুখে পড়ে। নদীতে ভেসে যাক তার দেহ—আমি এই চাই।
কোথা বাড়ি তার? বাড়িতে কে কে আছে, খোঁজ নিয়েছিস?
না।
কী নাম? কী কাজ করে? নাকি তার চাকরি চলে গেছে লকডাউন-এ? জানিস?
না।
তবে তুই কী জানিস?
কেবল এইটুকু, সে গঙ্গানদীর প্রেমিক।
এতেই তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে এলি? এই তো পুরসভা থেকে খানিক আগে মাইকে করে হেঁকে গেল, ঘর থেকে বেরোবেন না, পানীয় জল সংগ্রহ করে রাখুন, শুকনো খাবার ঘরে রাখুন। তুই আমাকে রামঘাটের জল দিয়ে যাস, আমি স্নান সারি। এই কাজটা ঠিক করলি তুই? ঠিক নয়। সে তো ঝড়ের কবলে পড়ে মারা যাবে। তার মৃত্যুর ভাগী হবি তুই। চারক্রোশী গঙ্গাতীর, পবিত্র হাওয়া বয়। হাওয়ারূপী নারায়ণ—পাপ লাগবে না তোর? আর এই পাপ, মনে রাখিস, শতবার গঙ্গায় নাইলেও যাবে না। নরকেও ঠাঁই হবে না তোর। যা, লোকটাকে গিয়ে বারণ করে দিয়ে আয়।
সুতরাং ভূষণকুমার-এর সঙ্গে আমাকে আসতে হয়। আমার বেশ লাগে।
গঙ্গার ধারে কেউ নেই কিছু নেই। প্রবল বাতাসের ভেতর ঢেউ নাচছে। সেখানে কোন নৌকা নেই। সব নৌকা বাঁধা আছে নদীর পাড়ে। ঢেউ আছড়ে পড়ছে ঘাটে। ঘাটের মাথায় একজন বসে আছে রিক্সার উপর তার হাতে একটি চ্যাপ্টা বোতল। তাতে হলুদ পানীয়। সে এক চুমুক করে খাচ্ছে আর নদীর রূপ দেখে বলছে, বাঃ বাঃ বাঃ! রিক্সাওয়ালাটা মাটিতে দাঁড়িয়ে। প্রাণপণে চেপে আছে রিক্সার হ্যান্ডেল। সেই একজন আমাদের দেখে অবাক হয়ে গেল। বলল, এই খোকা, তুমি এখানে কেন? যাও বাড়ি যাও।
ফস করে বলে বসি, তুমি কি গঙ্গার প্রেমিক?
লোকটা অবাক হল। ভুরু কুঁচকে উঠল। সে নদীকে দেখল। নদীও তাকে দেখল। তার পর হা হা করে হেসে বোতলে চুমুক দিয়ে বললে, ঠিক বলেছ। গঙ্গার প্রেমিক নাহলে এখন কেউ গঙ্গার সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ায়? হাঃ হাঃ হাঃ।
ভূষণকুমার আমাকে হাত ধরে টেনে আনে। বলে, যাকে-তাকে অমনি বলতে নেই বাবু।
মানে?
গঙ্গা নদীর প্রেমিক বলে আসলে কেউ নেই।
মানে!!
তোমার ঠাকুমা এই এতগুলোদিন ঘরে বসে বসে বেঁচে থেকে গেল, কেন জানো?
কেবল গঙ্গানদীর নানা কাহিনি শুনে। কাহিনি, কাহিনি—গঙ্গার এমনই মাহাত্ম্য যে, লোকে বিনা বিচারে তার সব কথা বিশ্বাস করে। অন্য সব কাহিনির মত এটাও একটা কাহিনি, ঘরবন্দি মানুষজন এইসব কাহিনি নিয়ে মনের মধ্যে আরও আরও কাহিনি ফাঁদে। এখন বাড়ি গিয়ে এই লোকটিকে নিয়ে ইনিয়ে-বিনিয়ে কিছু কথা বলে লোকটাকে নদীর প্রেমিক করে দাও। দেখবে, তোমার ঠাকুমার আয়ু আরও বেড়ে যাবে। তোমার চোখ দিয়েই উনি গঙ্গাকে দেখবেন। যাও, এবার বাড়ি যাও।
ভূষণকুমার চলে যায়।
বাতাস বাড়ছে, নির্জন নদীতীর; গঙ্গার জল ফুলে ফুলে উঠছে—কোন নৌকা নেই, যাত্রী নেই, মাঝি অমিল—প্রবল ঢেউ জাগছে নদীকে ঘিরে। পাড়ে বেঁধে রাখা নৌকাগুলি কেবল ঢেউ-এর ধাক্কায় ছটফটায়। পাখিরা কোথায় গিয়েছে কেউ তা জানে না। নদীর এই ফুঁসে ওঠা রূপ দেখতে আমার বেশ লাগে। ভয় পাই না, গুটিয়ে নিই না নিজেকে। এক পা, এক পা করে নেমে যাই ঘাটের ধারে। আমার পিছে কিছু নেই, উপরেও কিছু নেই; সামনে যা পড়ে আছে এই এই অনন্ত জলের বিস্তার। আশ্চর্য! যেন মনে হয়, যুগ যুগ ধরে যেন নদীকে আমি এমনই দেখতে চেয়েছি। এই রূপে। এই ভাবে। এখানে নদীর আর কোনো সঙ্গী নেই।কেবল আমি ছাড়া। আনন্দের সঙ্গে নদী যেন আরও মেলে ধরে নিজেকে। এখন আর তার এই কিশোর-প্রেমিকের কাছে আসতে আর কোন বাধা নেই।