১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে খাগড়াবাড়ি ড্রামাটিক ক্লাব মঞ্চস্থ করেছিল রামনারায়ণ তর্করত্নের লেখা ‘রত্নাবলী’। কোচবিহারের রাজন্যবর্গ ও অধিবাসীদের সক্রিয় চেষ্টা ও অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে নাট্যচর্চার পরিমণ্ডল গড়ে উঠেছিল। মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ ও কেশবকন্যা সুনীতি দেবীর বিবাহের মধ্য দিয়ে এই দেশীয় রাজ্যে সাংস্কৃতিক নবজাগরণের সৃষ্টি হয়। ‘শ্রীচিরঞ্জীব শর্মা বিরচিত’, ‘নববৃন্দাবন অর্থাৎ ধর্ম্মসমন্বয়’ নাটকের তৃতীয় সংস্করণ ‘কোচবিহার রাজকীয় যন্ত্রালয়ে রাজকীয় সাহায্যে মুদ্রিত’ হয়েছিল ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে। ‘কুচবিহার মহারাজার নূতন প্রাসাদ প্রতিষ্ঠা উপলক্ষ্যে ১৮০৮ শকে ৮ই বৈশাখ এটি অভিনীত’ হয়। মঞ্চস্থ হয়েছিল ত্রৈলোক্যনাথ সান্যালের লেখা ‘কলিসংহার’ নাটকটিও। মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ যুক্ত ছিলেন ভারত সংগীত সমাজের সঙ্গে, মহারাজা জিতেন্দ্রনারায়ণ লিখেছিলেন ‘Hello Darjeeling’ শীর্ষক একাঙ্ক নাটক। প্রসঙ্গত, “রাজার জ্ঞাতিভ্রাতা কুমার গজেন্দ্র নারায়ণের পুত্র কুমার কনকেন্দ্র নারায়ণ রবীন্দ্রনাথের ‘শেষরাত্রি’ গল্পটির নাট্যরূপ দিয়ে ‘গৃহপ্রবেশ’ নাটকটি রচনা করেছিলেন। ১৯২৬ সালে স্টার থিয়েটারে সেটি মঞ্চস্থ হয়। ইনি ইয়ংমেন্স থিয়েটার ক্লাবে অভিনয় করতেন। পরে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ‘কনকেন্দ্র ভূপ’ নামে ইনি প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলেন।”২ মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্রনারায়ণের অনুপ্রেরণায় ১৯৪০ সালের ৯ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘মহারাজা শ্রী জিতেন্দ্র নারায়ণ ক্লাব’, কোচবিহারের নাট্যচর্চায় যার বিশিষ্ট ভূমিকা রয়েছে। যাহোক, এবার আমরা রাজন্যশাসিত সময়পর্বের দু-একটি পত্রিকা প্রসঙ্গে আসতে পারি।
‘একখানি উচ্চাঙ্গের স্ত্রীপাঠ্য মাসিক পত্রিকা’ হিসেবে, ১২৮৫ বঙ্গাব্দের ১ জ্যৈষ্ঠ, ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ থেকে প্রকাশিত হতে শুরু করেছিল ‘পরিচারিকা’। প্রায় ২৮ বছর একটানা চলার পর এর প্রকাশ বন্ধ হয়। পরবর্তীকালে ১৩২৩ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ মাসে কোচবিহারের রানি নিরুপমা দেবীর সম্পাদনায় এটি নবপর্যায়ে মুদ্রিত হয়েছিল। কোচবিহার সাহিত্যসভা কর্তৃক প্রকাশিত ও কোচবিহার স্টেট প্রেসে শ্রী মন্মথনাথ চট্টোপাধ্যায় দ্বারা মুদ্রিত এই পত্রিকায় ‘মোগল-সন্ধ্যা’ নাটক লিখেছিলেন অশ্রুমান দাশগুপ্ত ও বিমলচন্দ্র চক্রবর্ত্তী। অগ্রহায়ণ ১৩২৯ সংখ্যায় শুরু হয়ে কার্ত্তিক ১৩৩০ সংখ্যায় রচনাটি সমাপ্ত হয়েছিল। এই ঐতিহাসিক নাটকে চরিত্র হিসেবে রয়েছে মোগল সম্রাট বাহাদুর শাহ, মারবার রাজ অজিতসিংহ, মেবারের রানা অমরসিংহ, অম্বরাধিপতি জয়সিংহ প্রমুখ। মোগল সাম্রাজ্যের ধ্বংসকালীন সময়ের ছবি ফুটে উঠেছে নাটকটিতে। লালকুমারীর (‘পরে জাহান্দারের বেগম ইম্তিয়াজ’) সংলাপের মধ্য দিয়ে হাহাকার প্রকাশিত-- “রূপ যৌবন আর দুর্দ্দমনীয় প্রবৃত্তির বলে আমি এ ভারত জোড়া সাম্রাজ্যটাকে শাসন করবার পদে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলুম—কিন্তু ক্ষণিকের জন্য। সে রূপ, সে যৌবন এখনও কুসুমিত লতার মত আমায় জড়িয়ে রয়েছে— সে আশা এখনও বাড়াবাগ্নির মত দাউ দাউ করে জ্বলছে, তবে আমার সাম্রাজ্য দুটো অকস্মাৎ ছায়াবাজির মত ক্ষণিকের খেলা দেখিয়ে অসীম শূন্যে মিলিয়ে গেল কেন? দু দুটো সাম্রাজ্য—আমার হয়েছিল। গেল দুটো একই সঙ্গে। যদি একটা থাকত। দিল্লীর সাম্রাজ্য শুধু যদি যেত ভাল, কিন্তু যে হৃদয়রাজ্যের সম্রাজ্ঞী আমি ছিলুম তা হারালুম কেন? জাহান্দার, নাথ।” ৩ নাটকের পরিসমাপ্তি ঘটেছে লয়লার উক্তির মাধ্যমে— ‘…ব্যথাই জগতের প্রাণের সুর। জীবন একটা বিয়োগান্ত নাটক।’
‘পরিচারিকা’ (নব পর্য্যায়) পত্রিকায় প্রকাশিত ফনীন্দ্রমোহন রায়ের ‘অন্তঃপুর’ (৮ম বর্ষ ৫ম সংখ্যা, চৈত্র ১৩৩০) নাটকটি ‘মেরিস্ মেতারল্যাঁকের Interieur-মূল ফরাসী হ’তে অনূদিত’। অনুরূপা দেবীর ‘বিদ্যারণ্য’ ঐতিহাসিক নাটকটি ফাল্গুন ১৩২৪ সংখ্যা থেকে আষাঢ় ১৩২৫ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল।
‘কোচবিহার দর্পণ’ পত্রিকার ১ম বর্ষ, ১ম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৪৫ সনের ১লা বৈশাখ। ইং ১৪ এপ্রিল, ১৯৩৮। সম্পাদক হিসেবে ছিলেন শ্রী শরচ্চন্দ্র ঘোষাল ও শ্রী জানকীবল্লভ বিশ্বাস। ‘কোচবিহার ষ্টেট প্রেস হইতে অফিসার-ইন-চার্জ্জ কর্ত্তৃক প্রকাশিত’ এই পত্রিকার প্রতি সংখ্যার মূল্য নির্ধারিত হয়েছিল দুই পয়সা। পাক্ষিক হিসেবে পথ চলা শুরু করলেও কয়েক বৎসর পর ‘কোচবিহার দর্পণ’ মাসিক পত্রিকায় রূপান্তরিত হয়। শরচ্চন্দ্র ঘোষাল ও জানকীবল্লভ বিশ্বাস ৪র্থ বর্ষ ৩য় সংখ্যা পর্যন্ত পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন। পরের সংখ্যাটি সম্পাদনা করেছিলেন শরচ্চন্দ্র ঘোষাল। ৪র্থ বর্ষ ১২শ সংখ্যায় সহসম্পাদক হিসেবে ছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ নিয়োগী। শরচ্চন্দ্র ঘোষালের মৃত্যুর পর ৭ম বর্ষ ২২শ সংখ্যা থেকে এর দায়িত্ব নেন অমূল্যরতন গুপ্ত। ‘কোচবিহার দর্পণ’ পত্রিকার শিরোনাম পরবর্তীকালে ‘কুচবিহার দর্পণ’ লেখা হচ্ছিল। নবম বর্ষেও আমরা তাই দেখি। এই পত্রিকা থেকেই নাট্যসংক্রান্ত কিছু সংবাদকে উদ্ধৃত করছি—
নাটকাভিনয়—নাটকের সামাজিক দায়বদ্ধতার সূত্র ধরে বিষয়টিকে পড়া যেতেই পারে। আরেকটি সংবাদ—
যক্ষ্মারোগ-নিবারণ ভাণ্ডারে সাহায্য দান কল্পে কলেজের ছাত্রগণ গত ১৪ই তারিখে স্থানীয় ল্যান্সডাউন হলে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘সাজাহান’ নাটক অভিনয় করিয়াছিল। সাজাহান ও ঔরঙ্গজীবের ভূমিকা সবিশেষ যোগ্যতার সহিত অভিনীত হইয়াছিল। সাজাহানের ভূমিকায় (??) ২য় বার্ষিক শ্রেণীর শ্রীমান্ সত্যনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ঔরঙ্গজীবের ভূমিকা অতি নিপুণভাবে অভিনয় করিতে সক্ষম হইয়াছিল। অভিনয় কৌশলে সত্যনারায়ণ অনেকদূর অগ্রসর, তাহার ঔরঙ্গজীব অভিনয়ে তাহা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হইয়াছে।কলেজ ইউনিয়নের সেক্রেটারী শ্রীমান্ সুধীরকুমার মৈত্র এই অনুষ্ঠান সফল করিতে অনেক পরিশ্রম করিয়াছে। মাননীয় ভাইস্ প্রেসিডেন্ট্, কোচবিহারের ফৌজদারী আহেলকার, প্রিন্সিপাল, অধ্যাপকবৃন্দ প্রভৃতি মহানুভব ব্যক্তিগণ দয়া করিয়া অভিনয় দর্শন করিয়া ছাত্রদিগের উৎসাহ বর্দ্ধন করিয়াছিলেন।৪
নাটকাভিনয়—অন্য একটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করছি—
গত ২৯শে জুলাই তুফানগঞ্জে অত্রস্থ ড্রামেটিক ক্লাব কর্ত্তৃক বভ্রুবাহন সর্ব্বসাধারণের জন্য অভিনীত হইয়াছে। ঐ দিবস খাসমহাল অফিসার শ্রীযুক্ত হিমাদ্রিবল্লভ বিশ্বাস এম,এ,বি. এল মহাশয়, পুলিশ ইন্স্পেক্টর শ্রীযুক্ত মণিমোহন গাঙ্গুলী এবং অন্যান্য স্থানীয় বহু ভদ্রমহোদয় উপস্থিত ছিলেন। সেই দিন অতিরিক্ত দর্শক সমাগমে মহিলাগণের অসুবিধা হওয়ায় ৬ই আগষ্ট তারিখে পুনরায় ঐ নাটক কেবলমাত্র মহিলাদিগের জন্য অভিনীত হয়। অভিনয় দর্শনে স্ত্রী পুরুষ সকলেই বিশেষ প্রীত হইয়াছেন। বর্ষান্তে মহামান্য বড়লাটপত্নী লেডী লিন্থিনগো প্রবর্ত্তিত যক্ষ্মানিবারণী ফণ্ডের সাহায্যকল্পে অত্রস্থ ড্রামেটিক ক্লাব একটী সর্ব্বাঙ্গসুন্দর নাটক অভিনয়ের জন্য প্রস্তত হইতেছেন।(নায়েব আহেলকার, তুফানগঞ্জ) ৫
তুফানগঞ্জ হইতে শ্রীবঙ্কিমবিহারী গঙ্গোপাধ্যায় লিখিয়াছেন—এছাড়া আরো অনেক প্রতিবেদনেই নাট্যকথা রয়েছে। যার মধ্য দিয়ে মেখলিগঞ্জ, দিনহাটা, হলদিবাড়িসহ তৎকালীন কোচবিহারের নাট্যসংস্কৃতির পরিচয় পাওয়া যায়। আরেকটি বিষয় এখানে উল্লেখ করা চলে, আলোচ্য পত্রিকার আশ্বিন ১৩৫৩ সংখ্যায় ‘শ্রীশঙ্করদেব’ প্রবন্ধ লিখেছিলেন হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়। এই লেখায় তিনি জানিয়েছেন যে, হরিলীলা বিষয়ক যে ছয়টি নাটক প্রণয়ন করেছিলেন শংকরদেব, ‘তন্মধ্যে সীতাস্বয়ম্বর নামক নাটক সেনাপতি শুক্লধ্বজের অনুরোধে রচিত।’মহামান্যা বড়-লাট-পত্নী মহোদয়ার প্রতিষ্ঠিত যক্ষ্মা নিবারণী ভাণ্ডারে অর্থ সাহায্য কল্পে শ্রীযুক্ত ললিতমোহন বকসী মহোদয়ের সোৎসাহ পৃষ্ঠপোষকতায় তুফানগঞ্জ ক্লাবের সভ্যগণ কর্তৃক বিগত ৪ঠা পৌষ, মঙ্গলবার স্থানীয় টাউনহলে ‘চক্রধারী’ নাটক অভিনীত হইয়াছে। স্থান সংকুলান সম্ভব না হওয়ায় সন্ধ্যার প্রথম অভিনয় পুরুষদের জন্য এবং মহিলাদের জন্য ঐ রাত্রেই দ্বিতীয়বার অভিনয়ের ব্যবস্থা করিতে হইয়াছিল। অভিনয়লব্ধ অর্থ হইতে খরচাদি বাদে ১২৫্ টাকা যক্ষ্মা ভাণ্ডারে দেওয়া হইয়াছে।
অভিনয় সত্যই সুন্দর ও হৃদয়গ্রাহী হইয়াছিল। এই উপলক্ষে কুচবিহারের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা শ্রীযুক্তা নগেন্দ্রনাথ সরকার, রূপসজ্জাকারক শ্রীযুক্ত দেবেন্দ্রনাথ তরফদার এবং তুফানগঞ্জ উচ্চ ইংরাজী বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র কইমারী নিবাসী শ্রীযুক্ত শিবেন্দ্র নারায়ণ রায় মণ্ডল বি, এ, সাহিত্যবিনোদ (তদীয় গ্রামস্থ অপেরা পার্টির যন্ত্রীসংঘ ও নৃত্যগীতকুশল বালকগণসহ) মহাশয়গণ অনুগ্রহ পূর্ব্বক এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়া অভিনয় সাফল্যমণ্ডিত করিয়াছিলেন। এতদ্ভিন্ন এই মহকুমার বিভিন্ন স্থান হইতেও অভিনেতাগণ এই সাহায্য রজনীর অভিনয়ে যোগদান করিয়াছিলেন। ইহাদের সকলের সাহায্য ব্যতীত অভিনয় সর্ব্বাঙ্গসুন্দর হইতে পারিত না।
অত্র মহকুমার বিভিন্ন স্থান হইতে বহুলোক এই সাহায্যরজনীর অভিনয়ের টিকেট ক্রয় করিয়া এবং অভিনয় দর্শন করিয়া ক্লাবের উৎসাহ বর্দ্ধন করিয়াছেন।৬
এবার আমরা আসতে পারি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়পর্বে। ‘অয়ন’ পত্রিকার ১ম বর্ষ ১ম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৫৭ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে-- সেপ্টেম্বর-অক্টোবর, ১৯৫০। সম্পাদক ছিলেন প্রবোধচন্দ্র পাল। ‘অয়ন’-কে কোচবিহারের প্রথম লিটল ম্যাগাজিন বলা যেতে পারে। প্রথম সংখ্যাতেই ‘লোক সংস্কৃতি’ বিভাগে হরিশ পাল পরিচালিত ‘বিষহরি’ (বেহুলা) নাটক আলোচিত হয়েছে। রচনা- কেশব বর্মণ। শিল্পী- পায়োনিয়ার ক্লাব, দিনহাটা।
কোচবিহারের লিটল ম্যাগাজিনের ধারায় নাট্যবিষয়ক লিটল ম্যাগাজিন খুব একটা বেশি নেই। ‘সপ্তর্ষি’ নামক একটি ম্যাগাজিনের কথা আমরা জেনেছি। আর একটি উল্লেখযোগ্য পত্রিকা হল— ‘রঙ্গনায়ক’। শঙ্কর দত্তগুপ্ত সম্পাদিত ত্রৈমাসিক এই পত্রিকাটি ১৯৮৯ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। জানুয়ারি ২০০৩ সংখ্যার ‘সম্পাদকীয়’-তে বলা হয়েছিল— ‘নাটক আমাদের হাতিয়ার।’ শুধু অবসর বিনোদনের সামগ্রীতে আটকে না থেকে নাটক তাঁদের কাছে হাতিয়ার হয়ে উঠেছে আর এই অস্ত্র দিয়েই তাঁরা গুজরাট পরবর্তী সময়ে উগ্র সাম্প্রদায়িকতাকে রুখতে চেয়েছেন। ‘রঙ্গনায়ক’ পত্রিকায় কোচবিহারের প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্বদের প্রবন্ধ ও বিভিন্ন নাট্যগোষ্ঠীর নাটক নিয়ে আলোচনা থাকত। এই পত্রিকার জানুয়ারি ২০০৩ সংখ্যাতেই প্রকাশিত হয়েছিল নীরজ বিশ্বাসের ‘উত্তরের নাট্যভাবনা’ শীর্ষক প্রবন্ধ। ১৯৯৯-২০০০ সালে ‘রঙ্গনায়ক’-এর বিশেষ সংখ্যা বেরিয়েছিল তিনদিনব্যাপী মূকাভিনয় উৎসব উপলক্ষ্যে। দীপায়ন ভট্টাচার্যের ‘আজ আরেকদিন’ নাটকটি এই পত্রিকাতেই মুদ্রিত হয়।
‘কোচবিহার সাহিত্যসভা’ পত্রিকায় শারদীয়া সংখ্যা ১৪০১ বঙ্গাব্দে ‘কিছু কথা—প্রসঙ্গ অভিনয়’ শীর্ষক গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ লিখেছিলেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ-দর্শক-অভিনয় সংক্রান্ত বেশ কিছু তাত্ত্বিক ভাবনার পরিচয় পাওয়া যায় এই লেখা থেকে। খুব সুন্দরভাবে প্রাবন্ধিক বলেছেন— “দ্বন্দ্ববাদের প্রধান কথাই হ’ল প্রত্যেকটি বিষয়, বস্তু, বা ঘটনা পরস্পরের সঙ্গে কোন কোন ভাবে সম্পর্ক যুক্ত, i.e. there is an [sic] universal connection. নাটক এমন এক শিল্পমাধ্যম যার সঙ্গে জীবনের অন্যান্য বিষয়গুলির যোগসূত্র বেশ স্পষ্ট, দৃঢ় এবং অবশ্যম্ভাবী। অর্থনীতি থেকে রাজনীতি, সমাজবিজ্ঞান থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল, দর্শন ইত্যাদি সব মানবিক অভিজ্ঞতাই নাটকের উৎসগত উপাদান।” ৭ নাট্যকর্মীদের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রস্তুত হয়ে উঠতে হবে শিল্পের পরিবেশনে, তবেই তাঁরা পারবেন সমাজ-বদলের স্বপ্নকে ‘লাখো কোটী জনতার মননে সৃষ্টিসুখের উল্লাসসহ উসকে দিতে।’
অমর চক্রবর্তী সম্পাদিত ‘চিত্রকল্প’ ভারতীয় সাহিত্য নিয়ে ধারাবাহিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে চলেছে। ‘মরাঠী ভাষা সাহিত্য’ সংখ্যায় (চিত্রকল্প ৩৫, অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০০১) ‘আচার্য্য অত্রে : এক অনন্য দ্রষ্টা’ প্রবন্ধে স্বপন বসু জানিয়েছেন— অত্রেজি ১৯২৬ সালে ছাত্রদের উপযোগী করে লিখেছিলেন নাটক ‘গুরু দক্ষিণা’। তাঁর ছাত্রপ্রিয় আরেকটি নাটক হল— ‘সাষ্টাঙ্গ নমস্কার’। আলোচ্য প্রবন্ধে বিখ্যাত নাট্যকার বিজয় তেন্ডুলকরের সঙ্গে অত্রেজির সম্পর্কের কথা উল্লেখিত হয়েছে।
স্বপনকুমার রায় সম্পাদিত ‘অন্যস্বর’ পত্রিকার জানুয়ারী-ডিসেম্বর ১৯৮৬ সংখ্যার প্রচ্ছদে লেখা হয়েছিল— “আয়ানেস্কো, বেকেট, জেনে বা অ্যাডামভের নাটকের প্রথম অভিনয়ে পশ্চিমে দেখা গেল এক দারুণ প্রতিক্রিয়া। প্রচলিত রীতি ও প্রকরণ ভেঙে দেয়া সেই অ্যাবসার্ড নাটক বিষয়েই ‘বিচূর্ণ দর্পণ’ লিখেছেন বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।” অ্যাবসার্ড নাটককে ‘জীবনবিমুখ ও পলায়নবাদী’ তকমা দিতে চাননি লেখক, বরং তিনি মনে করেছেন জীবনের মুখোমুখি হয়েই নিঃসঙ্গতার বোধকে তীব্রতর করে তুলেছেন নাট্যকারেরা। এই ধরনের নাটকের বাস্তবতাকে তাই মগ্নচৈতন্যের নিরিখে দেখাই যুক্তিযুক্ত। বহিরঙ্গের বিচার এক্ষেত্রে প্রযুক্ত হতে পারে না। লেখাটির উপসংহারে লেখক জোর দিয়েছেন দেশজ জীবন ও অভিজ্ঞতার ওপর। শুধু বিদেশি নাটকের ছায়া থেকে বেরিয়ে বাংলা অ্যাবসার্ড নাটক তার পথ খুঁজে পাক, এই ছিল প্রাবন্ধিকের অভিপ্রায়।
‘অন্যস্বর’ পত্রিকাতে ‘সংস্কৃতি পরিক্রমা’ বিভাগে প্রকাশিত নাট্যসমালোচনার নিদর্শন— “অভিনেতাদের ভূমিকা সম্পর্কে ব্রেশ্ট বলেছেন : বিচলিত হওয়ার চেয়ে বিচলিত করাই শ্রেয়। ‘থিয়েটার ইউনিট’ এ সত্যটাকে উপলব্ধি করেছে—তার প্রতিফলন দেখলুম সাম্প্রতিক প্রযোজনা ‘কেননা মানুষ’ নাটকে। এ নাটকে ‘থিয়েটার ইউনিট’ আমাদের বিচলিত করে। অমল রায়ের নাটকে আছে সুপ্ত গান। ‘থিয়েটার ইউনিট’ প্রয়োগের মাধ্যমে তাকে করে তোলে জীবনের জয়গান। অন্ধকার কারাগারে দুই বন্দীর কথোপকথনে তাদের মুক্তিপথ আলোচ্য নাটকের বিষয়। তাই সংলাপ হয়ে ওঠে নাটকের মূল সম্পদ যা নান্দনিক বিচারে ত্রুটিহীন। ‘থিয়েটার ইউনিটের’ উন্নত মানের টিমওয়ার্কের ফলে নাটক সাবলীল গতিতে এগিয়ে যায়। সবচেয়ে ভালো লাগে ‘কোরাস’-এর প্রয়োগ—একটা নতুন ডাইমেনশন খুঁজে পাই। বিজয় দেবের ভূমিকায় নীহার রায়ের বাচনভঙ্গী এবং অভিব্যক্তি উঁচু মানের অভিনয়ের পরিচয় দিয়েছে। দীবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের (চন্দ্রকেতু) অভিব্যক্তি দু’এক জায়গায় অর্থহীন হলেও তিনি ক্রমেই সার্থক পরিণতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন। বাহুল্যবর্জিত মঞ্চসজ্জা পরিবেশ রচনায় যথাযথ। আলো সুপ্রযুক্ত। তবে চন্দ্রকেতু যখন চিৎকার করে ওঠে, ‘এই যে শুনছেন?’ প্রতিধ্বনি শেষ হয়েও চন্দ্রকেতুর মুখ নিঃসৃত হবার পূর্বেই পরবর্তী কথা টেপ থেকে মুক্তি পেয়ে প্রসেনিয়ামে পরবর্তী ইকো সৃষ্টি করে। আমরা অবাক হই। বাকী সব মধুরেন। পরিচালক কমলেন্দু চৌধুরীর উদ্যম প্রশংসনীয়। (উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ মঞ্চ : একাঙ্ক নাটক প্রতিযোগিতা)।”৮
পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘ, কোচবিহার জেলা কমিটির ‘সমাজ ও সংস্কৃতি’ পত্রিকার শারদ সংখ্যা ১৪১৪ বঙ্গাব্দে ‘খুঁজে ফেরা’ নাটক লিখেছেন কিশোর নাথ চক্রবর্তী। এক রিপোর্টারের সঙ্গে একজন খ্যাপাটে মাঝবয়সী ভদ্রলোকের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি ও বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকার কথা উঠে এসেছে। নন্দীগ্রামে পুলিশের হাতে অতগুলো মানুষের প্রাণ হারানোর প্রসঙ্গ তোলে সহেলি চরিত্রটি। প্রত্যুত্তরে ‘লোকটা’ বলে— “শুধু পুলিশ? সাথে অন্য কেউ ছিল না? আড়াই মাসের বেলাল্লা পনা—চক্রান্তকারীর মুক্তাঞ্চল, তার ফল—কোথায় গিয়েছিলেন তখন প্রখ্যাত নাট্য পরিচালক, নাট্যকর্মী, শিল্পী, কবি এবং লেখিকাগণ?... কোথায় ছিল চোখের এত জল, কোন স্বার্থের কুম্ভীরাশ্রু ঝরালেন ঝরঝর করে? মানুষকে কি আপনারা প্রকৃতই ভালোবাসেন, না পেশাদারী ব্যবসার কথাই ভাবেন? তা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন এসে গেছে। করে খাওয়ার বাটোয়ারার ক্ষোভ। যদি প্রকৃতই আপনারা দেশটাকে ভালোবাসতেন, তাহলে সত্যি বলা যেত— তাহার মাঝে আছে দেশ এক…
কাঁদতে যদি হয় কাঁদনা। ভারতবর্ষতো কান্না নিয়ে বেঁচে আছে। এখানে বেঁচে থাকতে হলে প্রতিদিন চোখের জল বেরোনো উচিত। হঠাৎ একদিন কেন? কোন উদ্দেশ্যে?”৯ উদ্দেশ্যমূলকতায় আক্রান্ত হলেও যে শিল্পসৃষ্টি সার্থক হয়ে উঠতে পারে, এই নাটকটি তার প্রমাণ।
নীরজ বিশ্বাসের লেখা নাটক ‘নবাব’, উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের ‘অসদ্বিম্ব’, হীরেন চট্টোপাধ্যায়ের ‘বিকল্প’, সুনীল সাহার ‘গুরুদেব’, ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’, কিশোর চক্রবর্তীর ‘ধাপ্পা’-সহ অনেক নাটক প্রকাশিত হয়েছে কোচবিহারের পত্রপত্রিকায়। ‘তমসুক’ পত্রিকায় হরিমাধব মুখোপাধ্যায়ের লেখা নাটক প্রকাশিত হয়েছিল। তমসুক’ পত্রিকায় নাট্যবিষয়ক তিনটি প্রবন্ধ ছাপা হয়েছিল আশ্বিন ১৪১০ সংখ্যায়। শেখর সমাদ্দার লিখেছিলেন— ‘থার্ড থিয়েটারের সন্ধানে’। ‘থিয়েটার : অভিনেতা ও দর্শন’ শীর্ষক প্রবন্ধ লেখেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত। প্রাবন্ধিক দিগ্বিজয় দে সরকার ‘আধুনিক বাংলানাটকে লোকনাট্যের আঙ্গিক’ শিরোনামে প্রবন্ধ লিখেছিলেন। ‘আধুনিক কবিতা পরিচয়’ ১৪১৫ সালের শারদ সংখ্যায় সুনীলকুমার দাশগুপ্ত লিখেছিলেন-- ‘নাট্যসাহিত্যে কোচবিহার’।
‘পূর্বোত্তর’ ১৪১৫ উৎসব সংখ্যায় সুবোধ সেন লিখেছিলেন— ‘উত্তরবঙ্গের লোকনাটকের বৈশিষ্ট্য।’ এই লেখায় তিনি জানিয়েছিলেন যেহেতু উত্তরবঙ্গের লৌকিক জীবনে ‘কেন্দ্রীয় নাগরিকতার প্রভাব অনেক কম, এবং এই অঞ্চলে সামাজিক মন্থরতা ও রক্ষণশীলতা লক্ষণীয়, তাই ‘বাংলার অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় উত্তরবঙ্গের লোকনাটক অনেকটাই অবিকৃত রয়েছে।’ ‘ত্রিবৃত্ত’ শারদ সংকলন ২০০৫ সালে আশিস নাহা লিখেছিলেন— ‘নাট্যসাহিত্যে কোচবিহার’। এই প্রবন্ধে লেখক জানিয়েছেন অমিয়ভূষণ মজুমদারের নাটকগুলি গ্রন্থাকারে প্রকাশের আগে কোনো না কোনো সাময়িক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। এবারে সেইসব নাটক ও সাময়িকপত্রের নাম উল্লেখ করছি— ‘দি গড অব দি মাউন্ট সিনাই’ (মন্দিরা), ‘রাঙাদি’ (উত্তরায়ণ), ‘মহাসত্ব’ (চতুরঙ্গ), ‘বিয়োগ’ (উত্তরায়ণ), ‘মধুরার ফ্ল্যাট ও মিউজিয়াম’ (‘পাক্ষিক ত্রিবৃত্ত’)। এদের মধ্যে কোচবিহার থেকে প্রকাশিত একাধিক লিটল ম্যাগাজিন রয়েছে। আলোচ্য প্রবন্ধে লেখক অভিনয়ের নিরিখে কোচবিহারের নাট্যচর্চাকে পাঁচটি ধারায় বিভক্ত করে দেখতে চেয়েছেন—লোকনাটক, গ্রুপ থিয়েটার, শৌখিন নাট্যাভিনয়, গণনাট্য ও যাত্রাভিনয়। মিতায়তন এই লেখায় তিনি মূলত অমিয়ভূষণ মজুমদার, অরুণেশ ঘোষ, জীবনকৃষ্ণ দে, অলোক গঙ্গোপাধ্যায়, সুনীল সাহা, ভবেশ অধিকারী ও কল্যাণময় দাস রচিত নাটকের আলোচনা করেছেন।
হরিশ চন্দ্র পাল কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতিচর্চা ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর ‘এক রাত্রির ঘটনা’ ও ‘ব্ল্যাক মারকেট’ নাটকদুটি লেখা হয়েছিল ১৯৪৩-৪৭ সময়পর্বে। ‘অভিনেতা, পরিচালক ও নাট্যকার হরিশচন্দ্র পাল’ প্রবন্ধে অভিজিৎ দাশ লিখেছেন— “ ‘এক রাত্রির ঘটনা’ নাটকটিতে মানুষের জটিল মনস্তাত্ত্বিক সমস্যাকে উপজীব্য করা হয়েছে। এতে প্রধান পুরুষ চরিত্র ৭টি। এছাড়া রয়েছে কয়েকটি রোগী চরিত্র। স্ত্রীচরিত্র ৬টি। নাটকটি ১৯৪৩ খ্রীষ্টাব্দের জানুয়ারী মাসে পাইওনীয়ার ক্লাবে প্রথম অভিনীত হয়।… ‘ব্ল্যাক মারকেট’ নাটকটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও তার অব্যবহিত পরে সামাজিক ও প্রশাসনিক অবক্ষয়ের চিত্র তুলে ধরেছেন নাট্যকার।… ‘ব্ল্যাক মারকেট’ ১৯৪৭ খ্রীষ্টাব্দের জানুয়ারীতে প্রথম পাইওনীয়ার ক্লাব মঞ্চস্থ করে।”১০ হরিশ চন্দ্র পাল নাটক পরিচালনা ও অভিনয়ের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন।
পরিশেষে বলতে পারি, মৌলিক নাটক, অনুবাদ, নাট্যসমালোচনা, সাক্ষাৎকার ও নাট্যবিষয়ক লেখালেখির বিস্তৃত ভুবনের খোঁজ পাওয়া যেতে পারে রাজনগরের পত্রপত্রিকায়। বিভিন্ন নাট্যসংস্থা থেকে প্রকাশিত স্মরণিকাগুলি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। প্রসঙ্গত, ‘ইন্দ্রায়ুধ পত্রিকা’-য় প্রকাশিত হয়েছে দীপায়ন ভট্টাচার্যের লেখা শ্রুতিনাটক ‘সাগরসঙ্গমে’ (১৯৯১), ‘খোঁজ’ (১৯৯৪) এবং নাটক ‘অসম্ভব কিছ্যা’ (২০১৮)। এই সূত্রে বলা যেতে পারে, তাঁর ‘টার্গেট’ নাটকটি মুদ্রিত হয়েছিল অম্লানজ্যোতি মজুমদার সম্পাদিত ‘উত্তরপত্রী’ পত্রিকায়। তমোজিৎ রায়ের লেখা নাটক ‘হালুম’ প্রকাশিত হতে চলেছে এবছর ‘শারদছন্দ’-তে।
আপাতত এখানেই ইতি টানছি। জানি অনেক কথাই বলা হল না। সেইসব না-বলা কথা নিয়েই ভবিষ্যতে হয়তো গড়ে উঠবে অন্য কোনো লেখার আদল!
তথ্যসূত্র:--
১. দীপায়ন ভট্টাচার্য, ‘নাট্যচর্চা কোচবিহারে’, ‘কোচবিহার: ইতিহাস ও সাহিত্য’, দেবায়ন চৌধুরী ও মধুরিমা চৌধুরী (সম্পা.), ছোঁয়া, প্রথম প্রকাশ, জানুয়ারি ২০১৯, পৃ: ২২২
২. পূর্বোক্ত, পৃ: ২২৪
৩. অশ্রুমান্ দাশ গুপ্ত, ‘মোগল-সন্ধ্যা’, ‘পরিচারিকা’ (নব পর্য্যায়), রাণী নিরুপমা দেবী সম্পাদিত, ৭ম বর্ষ ৬ষ্ঠ সংখ্যা, কার্ত্তিক ১৩৩০, পৃ: ৩৪২
৪. শরচ্চন্দ্র ঘোষাল ও জানকীবল্লভ বিশ্বাস (সম্পা.), ‘কোচবিহার দর্পণ’, ১ম বর্ষ ১২শ সংখ্যা, ২১ আশ্বিন ১৩৪৫, পৃ: ১৫৩
৫. শরচ্চন্দ্র ঘোষাল ও জানকীবল্লভ বিশ্বাস (সম্পা.), পূর্বোক্ত, ১ম বর্ষ ৯ম সংখ্যা, ২রা ভাদ্র ১৩৪৫, পৃ: ১১১
৬. শরচ্চন্দ্র ঘোষাল ও জানকীবল্লভ বিশ্বাস (সম্পা.), পূর্বোক্ত, ১ম বর্ষ ১৮শ সংখ্যা, ১৬ই পৌষ ১৩৪৫, পৃ: ২৩৭
৭. প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘কিছু কথা—প্রসঙ্গ অভিনয়’, ‘কোচবিহার সাহিত্য সভা পত্রিকা’, সুবোধ সেন (সম্পা.), শারদীয়া সংখ্যা, ১৪০১, পৃ: ২০
৮. অমর চক্রবর্তী, ‘‘থিয়েটার ইউনিট’ এর ‘কেননা মানুষ’’, ‘অন্যস্বর’, স্বপনকুমার রায় (সম্পা.), ১ম বর্ষ ১ম সংকলন, রথযাত্রা ১৩৮৬, পৃষ্ঠাসংখ্যা অনুল্লেখিত
৯. কিশোরনাথ চক্রবর্তী, খুঁজে ফেরা’, ‘সমাজ ও সংস্কৃতি’, দিগ্বিজয় দে সরকার (সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি), শারদ সংখ্যা, অক্টোবর ২০০৭, পৃ: ৭২-৭৩
১০. অভিজিৎ দাশ, ‘অভিনেতা, পরিচালক ও নাট্যকার হরিশচন্দ্র পাল’, ‘তিস্তা-তোর্ষা সমাচার’, তরুণ দাশ (সম্পা.), বইমেলা ২০০৮-২০০৯, পৃ: ৩২-৩৩