তারকেশ্বর লোকালটায় ভিড় হয়েছিল ভালই। পাব্লিক বাসে, ট্রেনে নিয়মিত চলাফেরার অভ্যাস নেই দীপকের, একটু ধ্বস্তাধস্তি হয়ে গেল নামতে গিয়ে। নামার পরে অপসৃয়মান লোকাল গাড়িটা দেখতে দেখতে মনে হল, এই নামা আর ওঠা প্রথম শিখিয়েছিল মা। এমনকি নিয়ম ভেঙে যদি চলন্ত গাড়ি থেকে নেমেও পড়তে হয় কখনো, কিভাবে পড়ে না গিয়ে ব্যাপারটা ম্যানেজ করতে হবে.... দীপকের তখনো নিউটনের সূত্র পড়া হয়নি ইসকুলে। ক্লাস থ্রীতে হওয়ার কথাও না।
ওভারব্রীজ এখানে কেউ বড় একটা ব্যবহার করে না। ট্রেন চলে গেলে প্ল্যাটফর্মের ঢালু প্রান্তটা অব্দি হেঁটে গিয়ে রেললাইন পার হয়ে একটা মাটির রাস্তা ধরে প্রায় সবাই। একটা-দুটো দোকান - মিষ্টির, বই-খাতার। গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়ের আটচালা, সেটেলমেন্ট অফিস পার হয়ে গাছের ছায়ার ছায়ায় মেঠো রাস্তা গিয়ে পৌঁছেছে ইস্কুলটার সামনে।
আভারানি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। পুরনো আমলের মোটা গাঁথনির দোতলা ইস্কুল বাড়ি....সামনে লোহার পাতের পাল্লা দেওয়া বড় গেট বন্ধ, খুলবে সাড়ে নটায়, ইস্কুলের সময় অনুযায়ী। বড় গেটের বাঁদিকে পাল্লার মধ্যে একটা ছোট পাল্লা। সেটা খোলাই থাকে, সেই ফোকরটা দিয়ে মা মাথা একটু নিচু করে ঢুকবে দীপকের ঘেঁটি ধরে। ছোটো গেটের ঠিক ওপাশেই মিশিরজি, ইসকুলের পাহারাদার, খাটিয়ায় বসে। মাকে দেখেই তড়াক করে উঠে একটা সেলাম দিয়ে বলবে, পরনাম বড়দিদিমণি, খোখাবাবু আসো আসো। ভুরির ইত্তে ছোটে ছোটে বাচ্চা আসেছে, দেখাবো।
ভুরি মিশিরজীর পোষা বেড়াল। মিশিরজি জানে খোখাবাবু মাঝে মাঝে নিজের ইসকুল ফাঁকি দিয়ে মায়ের ইসকুলে চলে আসে। সারাদিন পাশের গ্রাম ঘুরে দেখে, লাইব্রেরিতে বই-টই পড়ে, তারপর মার সঙ্গেই ফিরে যায়। লাইব্রেরিতে দীপকের সবচেয়ে পছন্দ পাপুর বই সঙ্গে ছড়া। সাড়ে আট বছরের পাপু নাকি এই সব ছবি এঁকে রেখে ভগবানের কাছে চলে গেছে।
মার হাঁটাচলার মধ্যে একটা তাড়া থাকে। সকালে উঠে রান্না করে রাখার তাড়া, সময় মত উত্তরপাড়া স্টেশনে গিয়ে ট্রেন ধরার তাড়া, আবার সাড়ে চারটে বাজলে ইস্কুল থেকে আমেদপুর স্টেশনে এসে ফিরতি লোকাল ধরার তাড়া।
রাস্তায় ভেলকিওয়ালা যাচ্ছিল ডুগডুগি বাজিয়ে বাঁদরের দড়ি হাতে ধরে, দেখতে গিয়ে মার হাতের হ্যাঁচকা টানে ছোট গেটে ঠোক্কর খেল দীপক। মা খুব বিরক্ত হয়ে বলল, চারদিক দেখে চলতে হয় সবসময়। দীপক ভাবে, সে তো দেখছিলই। দোষটা হল কিসে!
ঘোর কেটে যেতে দীপক আবিষ্কার করল সে আসলে একটা সাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা খেতে খেতে বেঁচে গেছে। নীল রঙের ইউনিফর্ম পরা মেয়েরা ছোট ছোট সাইকেল নিয়ে রাস্তার দখল নিয়েছে এই সময়ে। চারপাশে তারা প্রজাপতির ঝাঁকের মত, জলের মত কলকল করতে করতে এঁকেবেঁকে নিজেদের মধ্যে ধাক্কা-লাগা বাঁচিয়ে টুক করে গেট দিযে ইস্কুলের ভেতরে ঢুকে পড়ছে । একজন ভদ্রমহিলা ইস্কুল গেটের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন, বোধহয় ভুরু কুঁচকে তাকেই দেখছিলেন। দীপক একটু আত্ম-সচেতন হয়ে গেল। এতদিন পরেও ইস্কুলের সামনের জায়গাটা প্রায় একই রকম। একটা বিজন তেমাথা, প্রাচীন শিরিষ গাছ, পাশেই একটা খাস জমি, তারকাঁটার বেড়া।
পকেট থেকে সিগারেট বের করে নাড়াচাড়া করে আবার রেখে দিল দীপক। থাক। মা বার-বার বলত, সিগারেটটা এবার ছাড় না বাবু। ডাক্তার বকেছে না তোকে?
সত্যিই ডাক্তার আব্রাহাম নভেম্বরেই শাসিয়েছিল, আপনি যদি স্মোকিং বন্ধ না করেন তো একটা কফিন কিনে রাখুন। সেভ ইয়োর ওয়াইফ দ্য ট্রাবল অভ লাস্ট মিনিট শপিং। ও হো, ইউ গাইজ সেট ইট অন ফায়ার, ডোন্ট ইউ? ইটস ওকে দেন। গার্গীর মুখ থমথম করছিল, বাইরে বেরিয়ে সে বলেছিল, দুর্মুখ ব্রুট একটা, আর আসবো না এখানে। ওর পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেটটা তুলে ফেলে দিয়েছিল।
দীপকের অত কিছু প্রতিক্রিয়া হয়নি। ভয় লেগেছিল, একটাই কারণে- তার কিছু হয়ে গেলে মাকে কে দেখবে? গার্গীরও শরীর তো ভাল না। এদিকে মার আশি, বয়সোচিত কিছু সমস্যা থাকলেও, কল-কব্জা মোটামুটি অটুট। অল্পবয়সের হাড়ভাঙা পরিশ্রম বুড়ো বয়সে এসে ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে।
কী অমূলক ছিল সেই আশঙ্কা!
শিরিষ গাছটার নিচে দাঁড়িয়ে পাঁচিলের ওধারে ক্লাসঘরটাকে দেখবার চেষ্টা করছিল দীপক। এই ঘরটায় হত ক্লাস টেন, এ সেকশন। মা ক্লাস টিচার। ইংরেজি টেক্সট পড়াত। কবিতা, ওয়ার্ডসওয়ার্থ, শেলী, টেনিসন....গতানুগতিকভাবে পড়ানো মা ভালবাসতো না একদম।
মার কাছে লুসি গ্রে বাংলা তর্জমায় প্রথম শুনে কেঁদেছিল দীপক, তখন সে ক্লাস থ্রি ফোর। মা একটু হেসে বলেছিল, বোকা ছেলে, লুসি হয়তো সেই খোকার মতন দুষ্টুমি করে চাঁপা হয়ে ফুটেছে, তার জন্য কাঁদতে আছে? পরে বড় ক্লাসে যখন মা পড়াল, ইংরাজিতে, তখন সেই ভাষ্যই ভরে উঠল নানান তথ্যে, টীকায়, রেফারেন্সে...
টেনিসনের ক্রসিং দ্য বার পড়াতে পড়াতে মা গীতার সেই শ্লোকগুলি বলে উঠত, যেখানে জীর্ণ শরীরকে পুরনো কাপড়ের মত ত্যাগ করার, মৃত্যুকে সহজভাবে নেবার কথা রয়েছে। পশ্চিমের কবির কল্পনার সাথে পূবের দার্শনিকের ভাবনা মিলিয়ে দিত।
ইস্কুল শুরু হয়ে গিয়েছে। ক্লাসে ক্লাসে দিদিমণিদের গলার আওয়াজ আসছে, আলাদা করে নয়, সব মিলেমিশে গুঞ্জনের মত। চোখ বন্ধ করতেই দীপক যেন টাইম মেশিনের যাত্রী। সানসেট এন্ড ইভনিং স্টার/অ্যান্ড ওয়ান ক্লীয়ার কল ফর মি..... মার্চ মাসে মা চলে গেল। দুপুরের খাবার পর সোফায় বসে বই পড়তে পড়তে মাথাটা হঠাৎই ঢলে পড়েছিল একদিকে। অ্যামবুলেন্স আসার আগেই সব শেষ।
অস্থি বিসর্জন দিতে খাড়ির যে দিকটায় গিয়েছিল দীপক তার চারপাশে গরানের জঙ্গল। একটেরে একটি ঘাট। জনহীন। ছোট ছোট সোঁতা বেয়ে খাড়িতে এসে মিশছে জলের ধারা। এছাড়া আর কোন শব্দ নেই চরাচরে। মাত্র দু-একটা জেলে ডিঙি বাঁধা। হয়ত জোয়ারে ভাসবে নৌকাগুলি। এইসব দেখতে-দেখতেই দীপক গোড়ালি অব্দি জলে নামল, মাথায় জলের ছিটে দিল। তারপর কাপড়ে মোড়া মাটির কলস উপুড় করে খালি করে দিয়েছিল জলে।
তীক্ষ্ণ-করুণ ডাকে খাড়ির বুক চিরে উজ্জ্বল কমলা রঙের মাছরাঙা উড়ে গেল। ঝমঝম শব্দ করে কলসের অস্থি-অবশেষ ঝরে পড়ছিল জলে। দীপকের মনে হল মার চুড়ির শব্দ যেন। মনে হল মা শান্তভাবে নৌকায় অপেক্ষা করছে জোয়ারের।....ঠিক যেমন টেনিসনের কবিতায় ছিল।
বুকে একটু চিনচিনে ব্যথা হচ্ছে কি? সকালে উত্তরপাড়ার বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় তেমন কিছু খাওয়া হয়নি। হওয়ার কথাও নয়, বাড়ি তো আজকাল তালাবন্ধ পড়ে থাকে। রান্নাঘরে নিয়মিত রান্না হয় না। মাকে বম্বেতে নিজের কাছে নিয়ে যাবার পর থেকেই বাড়ি আছে হাতে গোনা গুটিদুই কাজিন, পড়শীর ভরসায়।
দীপকের এখনো বিশ্বাস হতে চায় না মা সত্যিই আর কোনোদিন ফিরবে না। মা তো যেত, ইস্কুল থেকে রিটায়ার করার পর, ছেলে-মেয়ের বিয়ে দেবার পর, ছেলে-মেয়ে দুজনেই প্রবাসী হয়ে যাবার পর, ঝাড়া হাত-পা, ছটফটে মা তো নিজে-নিজেই চলে যেত সিঁথিতে, বড় মাসীর বাড়ি। আসানসোলে, ছোট মামার বাড়ি। অন্য মামাদের বাড়ি.... বম্বেতে, দীপকের কাছে ...হিউস্টনে, রিনির কাছে। আবার নিজে নিজেই ফিরে আসত। উত্তরপাড়ার বাড়ির তালা খুলত, দোকানে লোক পাঠিয়ে মুদিখানার জিনিষপত্র আনিয়ে নিত। পূর্ণিমাকে খবর পাঠালে সেও চলে আসত, গাছকোমর বেঁধে সাফসাফাই করে বাড়িকে আবার ঝকঝকে করে তুলত। তিরিশ বছর প্রতিদিন সকালে বিকেলে দুই-ঘন্টা নিত্যযাত্রা করে, ইস্কুল চালিয়ে, ছেলেমেয়ে মানুষ করে, রিটায়ার করার পর বসে থাকে কী করে?
কিন্তু এই প্রথম মা গিয়েছে কোথাও, আর ফিরছে না। দেখতে দেখতে ছ’মাস হয়ে গেল। গার্গীর অফিস চলছে, ছুটি নেই। এদিককার কিছু কাজ না সারলেই নয়। উত্তরপাড়ায় এবার সম্পূর্ণ একা আসতেই হল দীপককে। নিজেই কাঠের আলমারি ঘেঁটে বার করল বিছানার চাদর, বালিশের ওয়াড়....রান্নাঘরে চাল ডাল আলু ডিম আনিয়ে নিল। সারাদিন কাজ সেরে চালে ডালে ফুটিয়ে নেয়... সন্ধ্যায় গার্গীকে, ছেলেকে ফোন করে। শুয়ে পড়ার পর অবাধ্য স্মৃতিরা ভিড় করে.... গার্গীর মেসেজ আসে, প্লীজ কাম ব্যাক সুন, ওরিড আবাউট ইউ। ফোনটা মুঠোয় ধরে ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করে।
নাঃ, আজকে স্টেশন থেকে আসার সময় একটু মিষ্টি কিনে নিলেই হত। দানাদার, গরিবের মিষ্টি। মায়ের ইস্কুলের হেড-ক্লার্ক দাসবাবু বলতেন, রসগোল্লার প্রেতাত্মা। কারণ দানাদার বানাতে পুরনো রসগোল্লাকে শুকিয়ে কড়কড়ে চিনির আস্তরণে ঢেকে ফেলা হয় বলে জনশ্রুতি। মায়ের হাত ধরে আসা-যাওয়ার পথে দানাদার আর সিঙাড়া কিনে ওর কাঁধের ঝোলা ব্যাগে রেখে মা বলত, দুটো কিন্তু রিনির জন্য রাখবে, কেমন।
আচ্ছা, সুগার লেভেলটা বাড়া-কমা হলে এরকম হয় কি! এত বে-এক্তেয়ার তো লাগে না, সাধারণত!
শেষবার মার ইস্কুলে এসেছিল ক্লাস নাইনে। দুই বন্ধুর সঙ্গে। আমেদপুরে একটা প্রাচীন মসজিদের ধ্বংসাবশেষ আছে- সেইটা দেখতে। মার ইস্কুলের ইতিহাসের টিচার বরুণমামা মহা উৎসাহে সেই মসজিদ, প্রাসাদের পোড়ো ঢিপি ঘুরে-ঘুরে দেখিয়েছিলেন। ঢিপির একজায়গায় কিছু পোড়ামাটির টুকরো ছিল, যার একদিকে সবুজ এনামেলের মত প্রলেপ। বরুণমামা বলেছিল, শাহ্জাহানের সময়কার মৃৎপাত্র ওগুলো। সুদীপ পরে দীপককে শুনিয়ে শুনিয়ে বলেছিল, শাহ্জাহান! শালা, ঢপের চপ! গুল দেবার আর জায়গা পায় না!
দীপকের তখন খুব খারাপ লাগলেও পরে নিজেই ভেবেছে মাটির পাত্রের টুকরো খোলা আকাশের নিচে অতদিন পড়ে থাকতে পারে? হয়ত বরুণমামার অতিরিক্ত কল্পনাপ্রবণ মন এইসব আইডিয়ার জন্ম দিয়ে থাকবে।
কিন্তু না থাকলেও যা থাকে, তা-ই কি কিছু কম? শূন্যতা? স্মৃতিভার? আচ্ছা বরুণমামা এখন কোথায়? সামনে পেলে আরেকবার জিজ্ঞেস করা যেত ওই পাত্রের টুকরোগুলো সত্যিই কোনোদিন কোনো শাহ্জাহানের ওষ্ঠ ছুঁয়েছিল কি না !
--শুনুন, শুনছেন?
দীপক অতিকষ্টে চোখ খুলে দেখার চেষ্টা করে -–আমাকে বলছেন?
--হ্যাঁ। আপনি তখন থেকে এখানে বসে আছেন কেন? জানেন না, পাশেই মেয়েদের ইস্কুল?
--জানি। আমার মা তো পড়ায়।
--বটে? কী নাম আপনার মার....
দীপকের মাথা ঘুরছিল, কোনোমতে নামটা বলল। ততক্ষণে লোকটা পতনোন্মুখ দীপককে ধরে ফেলেছে। দীপক জড়ানো স্বরে বলল, আপনি কে স্যার?
হেড-মিস্ট্রেসের অফিসে বসে কথা হচ্ছিল। প্রায় কুড়ি বছর আগের বড়দিদিমণির কথা তিনি লোকমুখে শুনেছেন। দীপক নিজের ভাবনাকে গুছিয়ে বলার চেষ্টা করছিল...যদিও বলার বিশেষ কিছু নেই। আসলে তার লজ্জাই করছিল এখন। মার ক্লাসের নস্টালজিয়ায় ষাট কিলোমিটার উজিয়ে আসা...পাগলামির একটা সীমা থাকা উচিত।
আজকাল গাঁয়ের স্কুলে মিডডে মিল, ফার্স্ট এইড কিট ছাড়াও যে গ্লুকোজের পাউচ থাকে সেটা নতুন জানা হল। দীপকের সুগারের সমস্যা জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে গ্লুকোজের জল বানিয়ে এনেছে এখনকার হেড-ক্লার্ক, দেবাশিস কর। বড়দিদিমণির কথায় সে-ই গিয়েছিল খোঁজ করতে।
--ঈদগাহ্ ময়দানটা দেখে আসুন আগে।
--অ্যাঁ! দীপক ধরতে পারে না দিদিমণি কী বলছেন।
--আপনিই তো বলছিলেন, ছোটবেলায় পিছনের গ্রামটায় রাজহাঁস দেখতে যেতেন.... গ্রামটা আর সেরকম নেই, খড়ের চালা আর পাবেন না, সব পাকা গাঁথনি, নিদেনপক্ষে টিনের চাল। তবে পুকুরটা এখনো আছে। আছে ঈদগাহ্ ময়দান।
দেখে আসুন। ততক্ষণে দেড়টা বেজে যাবে। ইস্কুল ছুটি হয়ে যাবে। আজ শনিবার।
আমি দারোয়ানজিকে বলে দিচ্ছি, ছুটির পর সে আপনাকে লাইব্রেরিতে, ক্লাসঘরে ঘুরিয়ে আনবে। লাইব্রেরিতে পাপুর ছবির বইটা অবশ্য আর পাবেন না। উইয়ের পেটে গিয়েছে।
হঠাৎই আ-মর্ম কেঁপে গেল দীপক।
আজকাল চোখ বন্ধ করলে তার মনে ভেসে ওঠে আইরোলির সেই নির্জন খাড়ির বুকে শান্তভাবে অপেক্ষমান নৌকাগুলির ছবি। ভেসে ওঠে মা’র ক্লাসে পড়ানোর ছবি, মা পড়াচ্ছে ক্রসিং দ্য বার। ক্লাস টেন সেকশন এ শুনছে শান্ত হয়ে।
একটা সম্পূর্ণ শূন্য ক্লাসঘরে গিয়ে দাঁড়ানোটা কি ঝুঁকিপূর্ণ নয়? এই আবেশটা ভেঙে যায় যদি?