আজ ছুটির প্রথম দিন সন্ধ্যায় বইয়ের পড়া শেষ করে সে ছবি আঁকতে বসল । ছবি আঁকতে সে কাগজ, ফোর বি পেন্সিল ও ডুকি কালার ওয়েল পেস্টেল নিল । কিছু সময় ভাবল কী আঁকা যায় । পরী সাহিদের খুব পছন্দ । তাই সিদ্ধান্ত নিল পরী আঁকবে । প্রথমে ফোর বি পেন্সিল দিয়ে সাদা কাগজে লাইন টেনে একটা পরী আঁকল । পরে সেটায় রঙ দিল । একসময় সে দেখল চমত্কার একটা পরী হয়ে গেছে । দেখতে বেশ । চোখ, নাক, চুল, ডানা সবকিছুই সুন্দর হয়েছে । তার বিশ্বাসই হয় না যে, সেই এই পরীটা এঁকেছে । যাহোক, আঁকা পরীটাকে সে ঘরের দেয়ালে ঘাম দিয়ে আটকে রাখল ।
সাহিদের চোখে ঘুম এসে ভর করে । সে বিছানায় যায় । ঘুমিয়ে পড়ে । ঘুমোনোর পর হঠাৎ সে দেখে তার ঘর আলোয় ভরে গেছে । কতক্ষণ পর সে দেখতে পায় একটা পরী তার সামনে দাড়িয়ে আছে । পরীটা দেখতে খুব সুন্দর । ঠিক তার আঁকা পরীটার মতো । সে দেয়ালের দিকে তাকাল । দেয়ালে তার আঁকা পরীটা নেই ।
সাহিদ পরীটাকে জিজ্ঞেস করল, তোমার নাম কি ?
পরী বলল, আমার নাম ফুলপরী ।
তুমি কোথা থেকে এসেছ ?
পরীটা বলল, আমি আমার পরীরাজ্য থেকে এসেছি । তুমি খুব ভালো ছেলে । তাই আমি তোমাকে পছন্দ করি । তুমি কি আমাদের রাজ্যে যাবে ?
সাহিদ বলল, ঠিক আছে আমি যাবো ।
পরীটা বলল, তাহলে আর দেরি কেন, এখনি আমার সাথে চল ।
পরীটা সাহিদকে নিয়ে তার রাজ্যে গেল । পরীর রাজ্য এত সুন্দর ! সাহিদ অবাক হলো । সাহিদ দেখল পরীর রাজ্যে সুন্দর সুন্দর ফুল বাগান, ফলের বাগান । ফুলের বাগানে আছে গোলাপ, বেলি, টগর, জুই, চামেলী, জবা, হাসনাহেনা, রজনীগন্ধা আরো অনেক ফুল । আর ফলের বাগানে আছে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, আতা, কমলা, বেল, আঙুরসহ আরো অনেক ফল । এসব দেখতে দেখতে সন্ধ্যা নেমে এল । সাহিদের হঠাৎ করে তার মা-বাবার কথা মনে পড়ল । সাহিদ পরীটাকে বলল, আমাকে বাবা-মায়ের কাছে নিয়ে চল ।
পরীটা বলল, ঠিক আছে চল ।
সাহিদ বলল, তুমি কিন্তু আমাকে আবার আনতে যাবে ।
পরীটা বলল, ঠিক আছে । এবার চল ।
এরপর পরীটা সাহিদকে নিয়ে পরীরাজ্য ত্যাগ করল । সাহিদকে তার রুমে দিয়ে পরীটা বিদায় নিয়ে চলে গেল ।
তখনি সাহিদের ঘরের দরজায় কে যেন টোকা দিল । সাহিদের ঘুম ভেঙে গেল । সে তাড়াতাড়ি উঠে বসল । বসে প্রথমেই চোখ রাখল দেয়ালের দিকে । দেয়ালে তার আঁকা পরীটা সেভাবেই আছে । সাহিদ বুঝতে পারল এতক্ষণ সে স্বপ্ন দেখছিল । মজার স্বপ্ন ।
মাকে তো স্বপ্নটার কথা বলতে হয় ।
সাহিদ উঠে গিয়ে ঘরের দরজা খুলে দিলো ।
(পরবাস-৪০, ফেব্রুয়ারি, ২০০৮)