জন্মান্তরযে রাত্রে প্রথম চোখ মেলেছি
আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রের দিকে—
অতল আঁধারের কষ্টিপাথর,
আমায় সোনা বলে নিশ্চিত করেনি।
মৃত উল্কাখণ্ডের মতো শূন্য থেকে শূন্যে
তাই নিক্ষিপ্ত হয়েছি।
আমি অচেতন—
প্রমেথিউস!
তাই আলো বা আগুন কখনোই
এই নিকষ জড়পিণ্ডকে
সঞ্জীবনী উজ্জ্বল উষ্ণতা দিল না—
নিষিদ্ধ পাত্রাধারের
পরিশেষ "আশা"টুকুর দিকে
নির্ণিমেষ আকাঙ্ক্ষায় চেয়ে থাকি—
আজও,
একবার মানবী হতে চাই।
চলো নিরঞ্জন ...চলো নিরঞ্জন, দেখা হোক মহুলের দিনে
চালকুড়িপাহাড়ের দেশে,
শাল মাদারের জঙ্গলে—
বুকের দোলায় আমার দ্রিম দ্রিম তাল দিলে
তোমার জীবন জুড়ে বৃষ্টি-ঝরার সুর দেব—
বুনোরস আদ্যন্ত শুষে, দিন রাত একাকার—
পায়ে পায়ে নৃত্য আদিম।
পিছনের ঊষর জীবন আগুনে খাক হলে,
আলোর ফাগে আকাশ গোলাপি হবে।
এরপর,
ধর হাত, চল নিরঞ্জন
অরণ্যের গভীরতম সবুজে হারাই।
এ নির্বাসনেসজ্জিত কারাগারে,
নিমেষে বদলে গেছে প্রতিপক্ষের পরিচয়—
প্রতিরাতে অচেনা হিংস্র ঠোঁট
ছিঁড়ে ফেলে আমার পেলবতা ...
চলকানো আগুনের জ্বালা আমার উরুসন্ধিতে,
আমি এই নিস্তেজ উষ্ণতায় আরো আরো শীতল হতে থাকি।
অতৃপ্ত রমণের বিষাক্ত ক্লেদে
আমার বিন্দু বিন্দু শোণিত জল হয়ে যায়—
প্রিয়তম, একি নিরন্তর নির্বাসন!!
তবু জানি, এই জল মেঘ হয়ে কখনো
তোমার তন্ময় নির্জনতায়
ফেলে যাবে ছায়া—
এঁকে যাবে আমার বিস্মৃত হাসিমুখ।