|| সাঁকো ||
শুধু কি নদীই যেতে পারে?
সাঁকোরা কোথায় যায় তবে?
আঙুলে লেত্তিসুতো জড়াতে জড়াতে
আ-জঙ্ঘা ধূসর হাফপ্যান্ট কোথায় গিয়েছে?
বৈরাগী দাদু? যে গাইতো, তারকব্রহ্ম, তারকেশ্বরে...
তোবড়ানো গাল, জ্যাবড়া রসকলি, চাঁপাফুল গোঁজা একতারা?
বড় তাড়াতাড়ি সন্ধে হয়ে এলো।
অথচ সেদিন
ছিল না কিছুই স্মৃতিভার।
সাঁকোর ওপারে ইশকুল। এপারে কানাই নাটশাল।
জিটি রোডে ধুলোটের ঘূর্ণি মার্চ মাসে।
দোদমার রাংতায় সঙ্কেতে শিহরণ ছিল
খানিক এঁচোড়ে পাকা, খানিক শুদ্ধ ইনোসেন্স।
এখনো পিছন ফিরে তাকালে দেখতে পাব ঠিক।
টোটো, রিক্সার ভিড়ে দিশেহারা
লাইনের বাস, অকস্মাৎ হর্ন দিয়ে যায়।
মোমোর দোকানে ওই কিশোরীর মুখে
কার যেন ছায়া,
উদ্ভ্রান্ত সাঁকো,
দিন ফুরানোর আগে আমাকে কোথায় নিয়ে এলে!|| যতবার বিষ দেবে ||
যা আছে, তা এই,
ধুলো বল, ছাই বল, ফেলে রাখো একপাশে
অথবা উড়িয়ে দাও অবহেলে, কুলোর বাতাসে
মায়ার শিকড়।
প্রতিদিন
কিছুটা বিষের কোটা,
সকালেই, পলিপ্যাকে পানীয় যেমন
পাপোষে, অবহেলায় ফেলে দিয়ে যাও।
প্রতিদিন
আলোকিত বাদামের ছায়া
টিন্টেড কাচে হেলে পড়ে চারটেয়,
ফিসফাস, কর্পোরেট... কফি ডিসপেন্সার ঘিরে...
সেও বিষ, বিষের উৎসব।
তার চেয়ে ভালো
আমার মুঠির ধুলো, শু-বক্সে জমানো
তুচ্ছ পালক, নুড়ি, রাংতার কুচি।
যতবার বিষ দেবে ঠিক ততবার
মুঠি তুলে দেখাবই জীবন আমার।|| রৌদ্রের বাগানে শর্টকাট ||
পোড়ো সেমেটারি দিয়ে শর্টকাট রৌদ্রের বাগানে
বাকলের মসে, ঘাসের ফলকে বিদ্রোহ।
না-ছোঁওয়া স্বপ্নের ঋণে মৃতেরা কি দায়গ্রস্ত ছিল?
চিবুকের ভাঁজে, বিষবৎ জীবনের মোহ।
একদিন এইখানে প্লুতস্বর বেজে উঠেছিল,
মাত্র সাঁইত্রিশে, এমিলির শিরায় মজ্জায়।
এপিটাফ ছুঁয়ে আজ সসঙ্কোচে আলোর আঙুল
নামগুলি পড়ে, গাঁথে কোনো অয়নরেখায়।
ওদিকেই সংসার - ফুটপাথে ঘুমোচ্ছে শিশু।
ভাঙা ক্রুশকাঠে, দোনামনা বাদামি শামুক
লাল পিঁপড়ের সারি জীবনের কণা নিয়ে ফেরে
রৌদ্রের বাগানে, ফুটেছে কী গভীর অসুখ!