পর্বতের গুহার সামনে দাঁড়িয়ে, মুগ্ধ হয়ে এই শোভা দেখছিল কলু কর্মকার। বংশানুক্রমে তারা মৃৎশিল্পী ও ভাস্কর। বংশপরম্পরায় অধীত সেই শিক্ষা ও কুশলতার পূর্ণ বিকাশ ঘটেছিল কলুর মধ্যে। আবার, তার জন্মগত পটুত্বের সঙ্গে মিশেছিল অসীম ধৈর্য ও বুদ্ধি, অতি দ্রুত শিখে নেওয়ার অতুলনীয় ক্ষমতা এবং পরিচিত সব ভাস্করের কাছ থেকে তাঁদের নিজস্ব সব কৌশল শিখে নেওয়ার বিবেচনা। ফলে, সে যেমন ক্ষিপ্র হাতে মাটির কলস, দীপদান, শস্যভাণ্ড ইত্যাদি নির্মাণ করতে পারত, তেমনি দেবালয় প্রকোষ্ঠে বা প্রাচীর গাত্রের সুকঠিন প্রস্তর খোদাই করে অপরূপ লাবণ্যময় নর্তকী বা অমিতবিক্রম হস্তীযূথও রচনা করে ফেলতে পারত অক্লেশে।
এই গহন বনাভ্যন্তরে অবশ্য মন্দির, প্রাচীর বা গৃহস্থালি কিছুই নেই। থাকার মধ্যে আছে একটি গুহা, যেখানে গত এক সপ্তাহাধিক সময় ধরে কলু আশ্রয় নিয়েছে।
কীসের জন্য কলু এমন অজ্ঞাতবাস করছে কেউ জানে না, এমনকি সে নিজেও নয়। কোন অদম্য তাড়নায় সে গৃহের সুখশয্যা, পত্নীর কোমল বাহুডোর ফেলে একাকী ভূমিতলে শয়ন করছে, মাতার যত্ননির্মিত অন্নব্যঞ্জনের পরিবর্তে বন্য ফল-কন্দাদি ভক্ষণ করে ক্ষুন্নিবৃত্তি করছে, উপলবিন্যস্ত স্বচ্ছতোয়ার জল পান করে তৃষ্ণা নিবারণ করছে, এবং প্রতি সন্ধ্যায় প্রস্তরখণ্ডের উপর বসে দেবাদিদেব মহাদেব ও দেবী পার্বতীর তপস্যা করেই যাচ্ছে, করেই যাচ্ছে; কী আশায়, কী সাহসে, তা তার নিজের কাছেও একটা রহস্য। তবু, এই কদিনেই তার হৃদয়ে গভীর গোপন এক সুখ উন্মোচিত হয়েছে, এবং কোনো এক প্রকার সিদ্ধি লাভ না করে সে যে স্থানত্যাগ করবে না, তাতে কোনোই সন্দেহ নেই।
বর্ষণস্নাত আকাশের আলো এমনিতেও ম্রিয়মাণ, তবু মনে হচ্ছে এইবার সূর্য অস্তগামী, দিবারাত্রির সন্ধিক্ষণ আসন্ন। প্রস্তরখণ্ডের উপর সাব্যস্ত হয়ে ধ্যানমুদ্রায় বসে চোখ বুজে ফেলল কলু।
মুহূর্মুহু সর্বাঙ্গ শিহরিত হচ্ছে। উত্তেজনায়, আবেগে কলু প্রায় সারারাত্রিই জেগে কাটিয়েছে। শেষ প্রহরে সামান্য নিদ্রাবেশ হয়েছিল, সুখস্বপ্নে পুনর্বার সে তার ধ্যানলব্ধ পুরস্কার আপাদমস্তক দেখেছে। সেই অনৈসর্গিক রূপ। সেই ভস্মাবৃত দেহ। জটাজাল। বাঘছাল আর ডমরুসজ্জায় মনোহর।
“কী বাসনা, বৎস্য?”
“আপনার সঙ্গ, প্রভু। কৈলাসে নিয়ে চলুন আমায়, আপনার সঙ্গে।”
“কৈলাস! সেখানে তো শুধু দেবতাদের প্রবেশাধিকার! তোমায় নিয়ে যাওয়া কী প্রকারে সম্ভব?”
“আপনার অসম্ভব কিছু নেই প্রভু। আপনি চাইলে সব হতে পারে।”
এরকম অনুরোধে রুদ্রের নয়নযুগলে মেঘ ঘনিয়ে আসে। এমন এক সাধারণ মানবকে দেবত্ব প্রদান করতে ইচ্ছুক নন তিনি। দেবত্ব তো অর্জন করতে হয়। শুধুমাত্র তপস্যা করে তাঁকে এনে, বাহানার আতিশয্যে, এই মহাপুরস্কার সম্ভব নয়। কিন্তু কী যোগ্যতার পরীক্ষা দিতে সক্ষম এই ব্যক্তি! এক সামান্য ভাস্কর মাত্র তো এ!
“একটিবার আমার ভক্তি প্রমাণের সুযোগ দিন, হে দেব! একটিবার!”
ক্ষণিক বিরতি, তারপরই মহাদেবের অধরকোণে হাস্যাভাস দেখা দেয়।
বেশ, তাই হোক তবে। স্বকর্মে স্বধর্মে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে দেখাক কলু। আগামীকাল গুরুপূর্ণিমা। উপযুক্ত দিন। আগামীকাল সূর্যোদয় থেকে পরশু সূর্যোদয়ের মধ্যে, সামনের ঐ বৃহৎ পর্বতগাত্র জুড়ে দেবমূর্তি নির্মাণ করে দিতে হবে কলু ভাস্করকে।
একটি দুটি নয়। পুরো এক কোটি। সম্পূর্ণ করতে পারলে, তবেই সে দেবত্ব লাভ করে তাঁর সঙ্গে চিরকাল কৈলাসে বাস করার অধিকার পাবে।
কঠিন পরীক্ষা। শিব নিশ্চিত, এ কাজ কোনো মরমানবের পক্ষে সম্ভব নয়।
সাপ মরবে, যষ্টিও অক্ষত থাকবে!
তাঁর কাছে পরিস্থিতি অনুযায়ী এরকম অভাবনীয়সিদ্ধান্ত পলকের মধ্যে নেবার অভ্যাস তো নতুন নয়!
ফিরে যেতে যেতে কোনো পুরোনো কথা মনে পড়ল কি দেব শঙ্করের? আদি ত্রিপুরী নগরীর কথা? সেই অভাবনীয় নগরী যে নির্মাণ করেছিল, সেও ছিল এক ভাস্কর। ময়দানব নামে লোকে চিনত তাকে।
শুরু থেকেই ব্যাপারটা জানতে হয় তাহলে। শিবপুত্র কার্তিকের হাতে নিহত তারকাসুরের তিন পুত্র ছিল — তারকাক্ষ, বীর্যবান আর বিদ্যুন্মালি। ঘোর তপস্যা করে ব্রহ্মার বর পেয়েছিল তারা। না, তারা যা চেয়েছিল, সেই অমরত্বের বর পায়নি। কিন্তু তার বদলে পেয়েছিল তিনটি অপরাজেয় নগরী, যাদের কেবলমাত্র তখনই ধ্বংস করা যাবে যখন তিনটেই একই তীরের আঘাতে বিদ্ধ হবে।
সে কাজ অসম্ভবই বলা চলে। কারণ নগরী তিনটি তৈরী হয়েছিল তিন স্তরে। প্রথমটি পৃথিবীতে, লোহার প্রাচীর ঘেরা। পরেরটি আকাশে, রূপোর দেওয়াল তার। শেষেরটি স্বর্গভূমিতে, সোনার দেওয়ালে সুরক্ষিত।
শুধু তাই নয়, নগরী তিনটি চলমান ছিল। এমন অদ্ভুত হিসাবে ছিল তাদের গতি, যে হাজার বছরে মাত্র একবারই তারা এক সরলরেখায় আসত, যখন পূষ্য নক্ষত্র চাঁদের পাশে আসত। একমাত্র তখনই হয়তো সম্ভব হলেও হতে পারে তিনটি নগরীকে একই শরে বিদ্ধ করা, তাও কেবলমাত্র কোনো মহা ধনুর্ধরের পক্ষে।
অচিরেই, চরাচরের সব অসুর দানবদের মহা আশ্রয়স্থল হয়ে উঠল এই তিন নগরী। তাদের অত্যাচারে মানুষের ত্রাহি ত্রাহি রব চারদিকে, স্বর্গ টলোমলো। কারো ক্ষমতা হয় না এই তিন নগরীতে ঢুকে তাদের বধ করার। দেবতারা আবার তখন অগতির গতি পিনাকপাণির শরণ নিলেন।
ঘটনাচক্রে সেই বিশেষ সময়কালও হয়ে এসেছিল। অতএব, যুদ্ধযাত্রা হল।
সাধারণ আয়ুধ দিয়ে তো এই অসাধারণ যুদ্ধ হয় না। তাই, পৃথিবী হলেন শিবের রথ, সূর্য চন্দ্র সে রথের দুই চাকা। রথের রশি হাতে নিলেন ব্রহ্মা, যিনি বর দিয়ে এই সমস্যাটিকে তীব্রতর করেছেন। ধনুক হল মেরুপর্বত আর ধনুর গুণ হল বাসুকি নাগ। শর হলেন স্বয়ং বিষ্ণু।
তারপর, সেই মহামুহূর্তে পৌঁছনোর ঠিক আগে, দেবাদিদেব টের পেলেন অহংকারের বাষ্প। তাঁদের সাহায্য ছাড়া মহাদেব যে এই কাজ পারবেন না, এই গর্বে ডগমগ আয়ুধরূপী দেবগণ।
এরকমই পলকে সিদ্ধান্ত ছিল সেটি। কিছুমাত্র অস্ত্র স্পর্শ না করে শুধু হাসলেন তিনি। সেই হাসির তেজ নির্গত হল এক শরের মত, এক আঘাতেই তিনটি নগরী একসাথে পুড়ে ছাই হয়ে গেল। দর্পহারী ত্রিপুরান্তকেশ্বরের সামনে নত হলেন দেবতারা।
প্রথম সূর্যকিরণ আকাশের ললাট স্পর্শ করামাত্র কলুর ঘুম ভেঙে গেল।
ভোর হয়ে গেছে! সময়! বড় কম সময় যে!
তার প্রয়োজনীয় সব জিনিস সে কাল রাতেই গুছিয়ে রেখেছিল ঝোলায়। অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে সে দ্রুত পায়ে সেই পর্বতগাত্রের চিহ্নিত স্থানের দিকে দৌড়তে লাগল। এককোটি দেবমূর্তি গড়তে হবে। কোন দেবতা? কেন, শিবপার্বতী গণেশ, তার আরাধ্য দেবতারা! কলু মনের মধ্যে পুরো ছবি ভেবে নিয়েছে, এখন শুধু পাথর কুঁদে গড়ে তোলার অপেক্ষা।
অল্প পরেই, সেই নির্জন বনাঞ্চল এক আত্মসমাহিত উন্মত্তগতিতে কাজ করে যাওয়া ভাস্করের যন্ত্রের শব্দে মুখরিত হয়ে উঠল। সে শব্দ অবিরল চলল সারা দিন, সারা রাত — পূর্ণিমার জ্যোৎস্নায় ধুয়ে যাওয়া পাহাড়ের গায়ে ফুটে উঠতে লাগল অবয়বের পর অবয়ব।
শেষ মূর্তিটির শেষ পদাঙ্গুলি নিখুঁত যত্নে গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে প্রথম সূর্যকিরণ দেখা গেল। অসম্ভব ক্লান্ত কিন্তু ততোধিক তৃপ্ত কলু সব গুছিয়ে নিয়ে ফেরার পথ ধরল।
তাঁরাও সেই একই সময়ে, উপর থেকে নীচের দিকে যাত্রা শুরু করলেন। এতক্ষণ তাঁদের প্রথমে কৌতুকরঞ্জিত, পরে কৌতূহলী ও শেষে বিস্মিত দৃষ্টি কলুর এই অভাবনীয় কাজের গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করেছে। অবশেষে দুজনে প্রীত হৃদয়ে এসে দাঁড়িয়েছেন সূচনা স্থলে।
শ্রান্তিতে কলুর গতি ক্রমশঃ কমে আসছিল। তবু সে উঠছিল পাহাড়ী বন্ধুর পথে। ডান পাশে অতল খাদ, পদস্খলন মানে অমোঘ মৃত্যু, আর বাঁ পাশে পাহাড়চূড়া থেকে ধাপে ধাপে নীচের উপত্যকা অবধি নেমে গেছে তার সদ্যরচিত কীর্তিগুলি। মাঝামাঝি জায়গায় একটি প্রাকৃতিক বেদীর মত পাথর ছিল, সেটি কলু ইচ্ছা করেই স্পর্শ করেনি। সে তো জানে, অচিরেই তার এই অতুল কীর্তির কথা চতুর্দিকে রাষ্ট্র হবে, দলে দলে ভক্তসমাগম হবে এই পুণ্যভূমি দেখার জন্য। বন্ধুর পথের মাঝে এই বেদীটি সে তাদের বিশ্রামের প্রয়োজন ভেবেই ছেড়ে রেখেছিল।
এতক্ষণ চোখে পড়েনি, পড়া সম্ভবও ছিল না। এই বেদীর কাছাকাছি এসে কলু বেজায় চমকে উঠল। বেদীতে আসীন এই হরগৌরী মূর্তি তো সে বানায়নি!
গম্ভীর, সুনন্দিত কণ্ঠস্বরে অবশ্য পরক্ষণেই ভুল ভাঙল তার। এই যুগলমূর্তি তার বানানো নয়, এটি স্বয়ং তাঁরাই। তৎক্ষণাৎ আভূমি প্রণাম করল সে।
“চমৎকার করেছ বৎস্য। আমরা গণনা করতে করতেই নামছি। চলো বাকিটাও দেখি একসঙ্গে।“
আনন্দ, অহং, শিহরণ নিয়ে কলু তাঁদের পথ দেখিয়ে নেমে চলল আবার।
আশঙ্কা?
না। সে জানে। সে বারবার করে হিসেব করেছে। পুরো এককোটি। কম পাবেন না। কম নেই।
এতটা স্থির নিশ্চিত বলেই না সে তার গোপন ইচ্ছাটিকে প্রশ্রয় দিয়েছে রাত্রির শেষ যামে।
ধীরগতিতে নামতে নামতে মৃদু হাসে কলু। মহাদেবের চমৎকৃত হবার মত এখনো এক বিষয় বাকি আছে। দেখলে বুঝবেন, শুধু ক্ষমতাধর ভাস্করই না, কলু কর্মকার একজন দূরদর্শী বিবেচকও বটে!
মুগ্ধ হচ্ছিলেন হরপার্বতী! সত্যিই তাঁদের স্তম্ভিত করেছে এই ব্যক্তি। সুবিস্তৃত পর্বতের ঢাল জুড়ে পর পর তাঁরা দুজন ও তাঁদের পুত্র গণপতির রূপ বিরাজ করছে। কোনোটি পূর্ণমূর্তি, কোনোটি কেবল মুখাবয়ব। গঠনরীতি সরল, কিন্তু প্রতিটি স্পষ্ট দেবমূর্তিকল্প। একটিমাত্র মানব, একটিমাত্র দিবসরজনীর অধ্যবসায়ে এর চেয়ে বেশি আর কী-ই বা করবে! এটাই যে করেছে, তাই তো কোনো জাদুবিদ্যার সাহায্যে মনে হচ্ছে!
গুনতে গুনতেই নামছিলেন তাঁরা। এক কোটি পূর্ণ হতে যখন আর একটিমাত্র মূর্তি বাকি, এতক্ষণের ক্রমবর্ধমান মুগ্ধতার ছন্দভঙ্গ হল।
শেষতম মূর্তিটির সামনে দাঁড়িয়ে দেবী শরণ্যা হতচকিত হলেন, গঙ্গাধর উমাপতির কপালে ফুটে উঠল তীব্রতম ভ্রূকুটি।
“এ কার মূর্তি, বৎস্য কল্যাণ?”
তীব্র অসন্তোষের সুর বেজে উঠল রুদ্রকণ্ঠে। কলু, আনন্দে উচ্ছ্বসিত কলু, উল্লাসে অধীর কলু সহসা যেন আকাশ থেকে মাটিতে আছড়ে পড়ল।
বিজড়িত স্বরে সে যা বলে উঠতে পারল, তার নির্যাস — কোটিমূর্তি সমাপন হলে সে তো দেবত্বে উন্নীত হয়ে কৈলাসে প্রবেশাধিকার পাবে। তাই, আগে থেকেই বিবেচনা করে সে এই বিশেষ দেবতার মূর্তিটি বানিয়েছে। এ তার নিজের প্রতিকৃতি। মহাদেবের ভক্ত কল্যাণদেব।
কলুর দিকে আর একবারও ফিরে না তাকিয়ে, শিব এই ক’টি মাত্র বাক্য বললেন, “কিন্তু তুমি তো দেব হওনি এখনো। আর যেহেতু কোটি দেবমূর্তির শর্ত পূর্ণ হয়নি, তাই হবেও না আর।”
তারপর? দেবযুগল অন্তর্হিত হন। নিমেষে চরাচরের সকল শব্দ থেমে যায়। অতুল পরিশ্রম করেও নিজ দোষে ব্যর্থ ভাস্কর একাকী দাঁড়িয়ে থাকে ঊনকোটি দেবমূর্তির পাদদেশে। তারপর আছড়ে পড়ে পাথরের বুকে। বুকফাটা কান্না নিংড়ে দিতে থাকে তার ভ্রান্তির যন্ত্রণা।
আরো ঘন হয়ে আসে মেঘ আকাশে, আরো ঘন ঘন বিদ্যুৎ ঝলকায়। মনে হয় যেন দিনেই রাত নেমে এসেছে। তখনো পাথরে ফুটিয়ে তোলা ধ্যানের পায়ে মাথা ঠোকে এক অসাধ্য সাধন করে ফেলা অতিমানব। ঠুকতে ঠুকতে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছোটে, ভিজে যায় ধূলিমলিন বেশ। রক্তাক্ত শরীর নিয়ে উন্মাদের পদক্ষেপে সে ছুটে যেতে থাকে শিবের মুখ থেকে গণেশের নৃত্যে, সেখান থেকে পার্বতীর অভয়মুদ্রায়। কান্নায় চোখ অন্ধ, রক্তপাতে চরণ অশক্ত, কখন যেন এলোমেলো হতে হতে ডান বাঁ-ও গুলিয়ে যায় তার। অতল খাদের বুকে আছড়ে পড়ে এক আত্মগর্বে ভ্রান্ত শিল্পীর চূর্ণবিচূর্ণ শরীর।
তারপর আরো নিবিড় মেঘ করেছিল। হয়তো। হয়তো অনন্ত বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছিল সেই আদিম অরণ্যভূমি। পাথরের নিষ্পলক চোখগুলি বেয়ে হয়তো কান্নার মতো অঝোরে নেমে এসেছিল বৃষ্টির জলের ধারা।
শুধু, কেউ ছিল না আর চেয়ে দেখার জন্য।