• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৭৬ | সেপ্টেম্বর ২০১৯ | কবিতা
    Share
  • দুটি কবিতা : অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়


    || শোক অথবা শোকের কাছাকাছি ||


    আমার বাবার নাম মেঘ
    আমার মায়ের নাম মাটি
    যখন বৃষ্টি এল ঝেঁপে
    ফুটেছিলাম, শ্বেত দোপাটি।

    আমার বাবা গানের সুর
    আমার মায়ের গানের খাতা
    আমি মিলিয়ে দিয়ে দুয়ে
    মেলেছিলাম চিকন পাতা।

    মেঘের দেশান্তরী স্বভাব
    মাটি শান্ত হয়ে থাকে
    পাড়ি দিলাম অনেক দূরে
    তবু ছুঁয়েই ছিলাম মাকে।

    এখন ঘুম পেয়েছে ভারি
    চাঁদের, বিছোই শীতলপাটি
    আমার বাবার নাম মেঘ
    আমার মায়ের নাম মাটি।



    আমার ঈশ্বর ভীতু বেশ, ডাকাবুকো একটুও নয়।
    একটু বেরোবো যেই কাজে, মুখে-চোখে বিপন্নতা, ভয়।
         —দেরি হবে? কত দেরি? রাত হলে ফোন করে দিস।
    আমার ঈশ্বর রাত হলে     বেশ চাইল্ডিশ।

    আমার ঈশ্বর ভীতু, সর্বশক্তিমান মোটে নয়।
    খাওয়া-দাওয়া, ঘুম-যাওয়া সব লাগে সময় সময়।
    তেষ্টা পেলে মাঝরাতে জলের বোতল রাখা চাই।
    শিয়রে, হাতের কাছে...কখনো আমিও রেগে যাই।

    আমর ঈশ্বর ছিল সমুদ্রে অটল জাহাজ
    আমার ঈশ্বর যেন ছায়া ছিল বুড়ো অশথের
    বোধনের ঢাকে আজ কেঁপে যায় বুকের বাতাস...
    আমার ঈশ্বর ঘুমে, জেগে আজ উঠবে তো ফের?


    || দৃষ্টি ও ছায়াবাদীর হ্যান্ডবুক ||



    চোখের সময়বোধ প্রশ্নাতীত নয়
             অতিদ্রুত কিছু ঘটে গেলে
    চোখেরা গুলিয়ে ফেলে পূর্বাপর।


    দুটি চোখ
    সর্বদা আলাদা দেখে, তাই
    মিলিয়ে দেখতে হয়।


    নিজেদের ছায়ার ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই
    দৈর্ঘ্য, গাঢ়তা, সংখ্যা.....

    আলো নড়াচড়া করে
    আমাদের ছায়াগুলি ছোটবড় হয় সারাদিন।
    যে’কটি আলোর উৎস ঠিক ততগুলি ছায়া হয়ে থাকে।
    যেমন যেকোনো বস্তু, দুবার খণ্ডিত হলে, তিনটি টুকরো পাওয়া যায় কম করে।
    যতক্ষণ আলো আছে, অবধ্য ছায়া।


    ছায়া অবিনশ্বরঃ
    ১)যতক্ষণ আলো আছে
    ২)যতক্ষণ বস্ত আছে
    ৩)এবং যখন আলো নেই – সবটাই ছায়া।


    তাকে বলে ছায়া, তবু শূন্যতা সে নয়,
    কেউ কেউ চলে গেলে ছায়া পড়ে রয়।




    অলংকরণ (Artwork) : অলংকরণঃ অনন্যা দাশ
  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments