কলকাতায় ফিরে যাওয়ার পর আমার ফোনে প্রথম যে কলটা আসবে, সেটা এইরকম--
—কি রে জেটল্যাগ কেটেছে?
—খানিকটা।
—তাহলে চলে আয়। ছ’মাস দেখা হয়নি।
ডোর বেল বাজানোর সঙ্গে সঙ্গেই দরজা খুলে যাবে। সোজা তিনতলায়। সিঁড়ির মুখে কানাই ঝর্ণার হাসিমুখ পেরিয়ে সেই দরজায় দাঁড়াবো, যার ওপাশে বাড়ানো সেই দু’হাত। জড়িয়ে আদর।
—বিহান কত বড় হলো? আকাশলীনাকে বলিস, আর একটু বড় হলে ওকে নিয়ে লেখা আমার ছড়া দুটো ওকে শোনাতে।
—এখনই তো শোনায়। এর চেয়ে বড় উপহার তো বিহান পায়নি।
বিছানার ওপর ছড়ানো বই, একাধিক কলম, আইড্রপ, ছোট্ট প্রসাধনী ব্যাগে লিপস্টিক টিপের পাতা, চিরুনি, তাঁর সর্বক্ষণের প্রয়োজনের টুকটাক, তার মাঝখানে সেই ভুবনজয়ী হাসি। নবনীতাদির দক্ষিণের দরজা পেরিয়ে তাঁর ছোট্ট ছাদবাগিচা। সেখানে স্বর্ণচাঁপা, গন্ধরাজ, মল্লিকা, গোলাপ আরো কত ফুলের গাছ, এমন কি মাটির গামলায় শাপলা তাঁর সারাদিনের চোখের আরাম।
— এবার এত দোলনচাঁপা ফুটেছিল, তোকে দিতে পারলুম না। তুই পেলি না।
পেলাম না তো শেষ হাসিটুকুও।
না, ওপরের চিত্রকল্পটুকু আমার স্বপ্ন কল্পনা।
কিন্তু স্বপ্ন নয় ৭ই নভেম্বর। কঠিন বাস্তব।
৭ নভেম্বর, স্বপ্ন নয়...
যদি ভোরবেলা মুক্তো ছড়িয়ে থাকে ঘাসে,এই সময়টা আগে কখনও আটলান্টায় থাকিনি। এসেছি চেরিব্লসম-এর শেষ রঙটুকুতে চোখ রেখে। ফিরে গেছি প্রকৃতির রঙের উৎসব শেষ না হতেই। এই প্রথম একটা অদ্ভুত ধূসরতার মাঝখানে বসে আছি। চারপাশে পাতা-ঝরে-যাওয়া গাছের শূন্য ডালের দিকে চোখ রাখলে মনটা বিষাদে ভরে উঠছে। আর এই বিষাদ বয়ে নিয়েই এবার ফিরতে হবে কলকাতায়। সেখানেও অপেক্ষা করে আছে একটা অপূরণীয় শূন্যতা।
যদি ভেজা স্বপ্নে ভারি হয়ে থাকে ছাদ,
তবে বুঝি সারারাত কেঁদেছে মানুষ।
বিছানায় শূন্যতার চাদর বিছানো ছিল,
দীর্ঘশ্বাস ছিল, বিষাদের ঘুম ছিল
বন্ধ চোখে কোন পথে স্বপ্ন এলো তবে?
আসলে এ স্বপ্ন এক উৎস রক্ত, অন্ধবীজ ভালোবাসা
বুভুক্ষা জাগিয়ে রাখে সারারাত।
বিবর্ণ আকাশ দিয়ে দিন শুরু,
দুঃখ সুখ মুছে নিয়ে যে পথে উধাও রাত,
সেই পথ অশ্রুস্রোতে পিছল এখন, পা চলে না।
শব্দহীন হাওয়ার স্পর্শে বুঝি, সূর্যোদয় ব্যথায় নিথর আজ।
ভালোবাসা, নদীর সাঁতার শেষে সমুদ্রের মোহনায়।
বাংলা সাহিত্যের অঙ্গন সিক্ত হয়ে আছে মানুষের চোখের জলে। কান পাতলেই হাহাকার। নেই, বাঙালির পরম আপনজন প্রিয় লেখক নবনীতা দেবসেন আর নেই। শুধু কলকাতা তো নয়, সারা ভারত, এমনকি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই হাহাকার ভেসে আসছে। তাঁর ছাত্রছাত্রী বন্ধুস্বজন যে যেখানে ছড়িয়ে আছে তাদের সবার ভেজা নিশ্বাসে বাতাস ভারী। আমার মতো আরো অনেকের কাছে নবনীতা দেব সেন মুক্ত বাতাস, জীবনের ছোটবড় ওঠানামায় বাড়তি অক্সিজেন। উদ্দীপনা।
কলকাতায় ফিরবো মনে হতেই আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।
কিন্তু এটা কি সম্ভব? অনিঃশেষ প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা ওই মানুষ কখনও অত সহজে ‘নেই’ হতে পারে? পারে না। সারা জীবন নানারকম অসুখবিসুখকে নিয়ে হেসে খেলে সুস্থ মানুষদের চেয়ে বেশি সুস্থভাবে চারপাশকে প্রাণের বন্যায় ভাসিয়ে নিয়ে ষোলো আনা জীবনকে আঠারো আনা বাঁচেন, সেই মানুষ নেই হতে পারেন না। হয়তো কোথাও বেড়াতে গেছেন। যেমন চিরকাল হুটহাট বেরিয়ে পড়তেন। আজ হয়তো গিয়ে দেখলাম মুখে ‘বাইপাপ’ লাগিয়ে শুয়ে আছেন, তো পরদিন শুনলাম উড়িষ্যা... কিংবা পেরু, কিংবা কাজাকিস্তান... পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে হতে পারে।
এই সেই মেয়ে শৈশব থেকেই যার ডানায় লেগেছিল সাতসমুদ্রের হাওয়া। সেই ডানা প্রসারিত ছিল জীবনের শেষ পর্যায় অব্দি। যখন তার উড়ানে সামিল হতো লাঠি এবং হুইল চেয়ার। নীল নদের ধারে, পিরামিডের ছায়ায়, কিংবা মাচুপিচু পাহাড়ের পাদদেশ অব্দি তার অবাধ পদচারণা দেখে মানুষ যতই বিস্মিত হোক না কেন, তাঁর নিজের আপসোস মাচুপিচুতে চড়তে পারলেন না বলে। বাদ সেধেছিল সে দেশের আইন। তারা তো এমন নড়বড়ে শরীরের ডানপিটে মেয়ে জন্মেও দেখেনি। কোনো একটা জার্নালে গোলাপি ডানা ফ্লেমিংগোর ছবি দেখে এতটাই মুগ্ধ, পণ করলেন আলাস্কা যাবেনই। সেই সময় কোনো যাত্রীবাহী প্লেন সেখানে যেতো না। অগত্যা জ্বালানি বহনকারী হেলিকপ্টারের পাইলটকে ধরে পৌঁছে গিয়েছিলেন তখন প্রায় দুর্গম আলাস্কায়। এমন মেয়েকে বুঝে উঠতে বঙ্গসমাজ চিরকাল হিমসিম খেয়েছে। ধীরে ধীরে তারা চিনে নিয়েছিল ওই ডানাওলা মেয়েকে। সারা জীবন নিজের ইচ্ছাশক্তি আর আত্মবিশ্বাসে ভর করে সামনে আসা সব বাধা বিপত্তি আর দুর্যোগকে পরাস্ত করে গন্তব্যে পৌঁছেছেন।
তিনি তো কোনো জননেত্রী ছিলেন না। তাহলে সাধারণ মানুষের কাছে এত প্রিয় কেন ছিলেন?
সে কি শুধুই তাঁর লেখনীর জনপ্রিয়তার কারণে? না। মানুষের প্রতি তাঁর স্বতঃস্ফুর্ত ভালোবাসা তাঁকে আপনজন করে তুলেছিল সাধারণ মানুষের। জনপ্রিয় সাহিত্যিক আরো অনেকে আছেন, কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে পরম আত্মীয় হয়ে ওঠার এমন দৃষ্টান্ত আর নেই। বাঙালির অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছেন।
বাঙলা সাহিত্যের অন্যতম পীঠস্থান যে বাড়িতে তাঁর জন্ম, বেড়ে ওঠা, সেই বাড়িটির নামই তো ‘ভালোবাসা’। সেখানে শুধু সাহিত্যপ্রেমী মানুষই নয়, সবার জন্যেই অবারিত দ্বার। ভালোবেসে দু’হাত বাড়িয়ে ছিলেন আজীবন। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন একজন মানুষ, অথচ তাঁর প্রাত্যহিক জীবনচর্যায় তার ছিটেফোঁটা ছাপ ছিল না। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন ঠিক পাশের বাড়ির সাধারণ মেয়েটির মতো। অকাতরে ওঁর মতো ভালোবাসা বিলোতে কে কবে দেখেছে? বহু জনকে দেখেছি তাদের দুঃখের পসরা এনে উজাড় করে দিতে। মনের আশ্রয় মিলতো। পুরোনো ঝুরি নামানো বটগাছের মতো, যার ডালে এসে বাসা বাঁধে চেনা-অচেনা পাখপাখালি। কি আশ্চর্য মমতায় অসীম ধৈর্যের সঙ্গে তাদের কথা শুনতেন। উপশম দিতে চেষ্টা করতেন। আর এভাবেই তাঁর আত্মীয়তার পরিধি ক্রমেই প্রসারিত হয়েছিল।
ভালোবাসা দিতেও যেমন কার্পণ্য ছিল না, ভালোবাসা কেড়ে নিতেও তাঁর জুড়ি মেলা ভার ছিল। মানুষ যতই তাঁকে অনেক উঁচু আসনে বসাক না কেন উনি ঠিক নেমে এসে সবার মাঝখানে বসতে ভালোবাসতেন। ঘাসে ঘাসে ধুলোয় ধুলোয় পদচারণাতেই তাঁর আনন্দ ছিল।
আন্তর্জাতিক মানের পাণ্ডিত্য থাকলেও তাকে কখনো অলঙ্কার করেননি। তার আলোটুকু গ্রহণ করেছেন। যা তাঁর ব্যক্তিত্বকে একটা অন্য মাত্রা দিয়েছে। আলোকিত করেছেন চারপাশ। সমৃদ্ধ করেছেন ওঁর সান্নিধ্যে যারা এসেছে তাদের। ঐতিহ্য আর আধুনিকতা এমনভাবে মিশে ছিল তাঁর মধ্যে যে আঠারো থেকে আশি যে কোনো বয়সের বন্ধু হয়ে উঠতে পারতেন।
বিদূষী এই মানুষটি যখন কলম ধরতেন, তখন নিজের পাণ্ডিত্য আর বৈদগ্ধকে পাশে সরিয়ে রেখে হৃদয় দিয়ে কঠিন বিষয়কে সহজ করে উপহার দিতেন পাঠককে। ওঁর লেখা পড়তে পড়তে মনে হতো এই তো সামনে বসে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলছেন। সহজ কথা সহজ করে বলা তো সহজ নয়, নবনীতাদি সেটাও পারতেন। এই জন্যেই আপামর বাঙালি পাঠকের কাছে এত জনপ্রিয়। সাহিত্যের সবকটি ধারাতেই তাঁর সাবলীল ও সফল অবগাহন।
ওঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট হলো পজিটিভিটি। নিশ্ছিদ্র অন্ধকার বলে কিছু নেই, অন্ধকারকে উপেক্ষা করে আলোটুকু খুঁজে নিতে হয়, এটাই তাঁর মন্ত্র। বলতেন কি, “কী পাইনি দেখতে গেলেই দুঃখ। কী দিইনি সেটা দেখতে হয়। সেইখানেই সুখ। যে কোনো মানবিক সম্পর্কেরই গোড়ার কথা এবং শেষের কথা এইটে। পাওয়াটা তোমার নিজের হাতের মধ্যে নয়, দেওয়াটা নিজের ক্ষমতার মধ্যে।”
শিখিয়েছেন প্রচলিত ধারণার বিপরীতে দাঁড়িয়ে ভাবতে। শিখিয়েছেন নিজের শক্তিতে বাঁচতে। যেকোনো সামাজিক অন্যায় ও অসঙ্গতির বিরুদ্ধে সপাটে প্রতিবাদ করেছেন। প্রতিবাদ করতে গিয়ে ভাবের ঘরে চুরি না করে স্পষ্ট ভাষায় নিজের মত প্রকাশ করতে দেখেছি চিরকাল।
নবনীতাদি কখনো কোনো সম্পর্ককে ভাঙতেন না। কারো সঙ্গে সম্পর্কের মাঝখানে অপছন্দের দাগ লাগতে পারে, বিরক্তি আসতে পারে, সেটা মনে চেপে না রেখে তাকে সামনাসামনি বলে দিতেন। তার খারাপ লাগবে জেনেও বলতেন। আবার পরমুহূর্তে কাছেও টেনে নিতেন। ওঁর ভেতর আর বাইরে এক রকম।
পাঠক হিসেবে সেই কৈশোর থেকেই প্রিয় হয়ে উঠেছিল নামটি। দূরের নক্ষত্র ছিলেন। ১৯৯৯-এর শেষে কাছে আসার সুযোগ হলো ‘সই’ (পশ্চিমবঙ্গ মহিলা লেখক সমিতি)-এর সদস্য হিসেবে। মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই আপন করে নিলেন। দুজনের ভাবনা অনুভব, বিভিন্ন বিষয়ে সমমনস্কতা খুব কাছাকাছি নিয়ে এসেছিল আমাদের।
সালটা মনে নেই; ২০০৬ কিংবা ২০০৭ হবে। একদিন সুধীর চক্রবর্তী ফোন করে বললেন, ওঁর পত্রিকা ‘ধ্রুবপদ’-এর বিশেষ সংখ্যা ‘অন্যরকম বাঙালি’। নবনীতাদির ওপর লিখতে হবে আমাকে। উনি অন্য কাউকে দিয়ে লেখাবেন ঠিক করেছিলেন। নবনীতাদিকে সেটা জানাতে তিনি বলেছেন, ‘অঞ্জলিকে লিখতে বলুন, ও আমাকে ভালো বোঝে...’ ইত্যাদি। আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু লিখেছিলাম নবনীতাদির সামগ্রিক জীবন ও সাহিত্যকৃতি নিয়ে। সেই লেখার সূত্র ধরেই পুঙ্খানুপুঙ্খ জেনেছি ওঁকে। নিজেই বিস্মিত ও মুগ্ধ হয়েছি ওই মাপের একজন মানুষকে জেনে। চেষ্টা করেছি সঠিকভাবে ওঁকে চিত্রায়িত করতে।
নিজের লেখা নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকতেন বলে আগে থেকে ফোন না করে কেউ এলে বিরক্ত হতেন। আমার ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম ছিল। বলতেন তুই এলে আমার মন ভালো হয়ে যায়। এটা আমার বিরল সৌভাগ্য। আমি নতুন কিছু লিখলেই শুনতে চাইতেন। লেখা নিয়ে যেতে বলতেন। যেতে না পারলে নিজের লেখা বন্ধ রেখেও ফোনে লেখাটা শোনাতে বলতেন। মনে আছে ‘মা’ শিরোনামে তিনটে টুকরো কবিতা লিখেছিলাম। যেটা 'পরবাসে' বেরিয়েছিল। হঠাৎ শ্রাবস্তী আমাকে ফোন করে বললো, ‘তোমার কবিতা পড়ে মা কেঁদে ফেলেছেন। তুমি মায়ের সঙ্গে একবার কথা বলো।’ ফোনে অনেক কিছু বললেন। যেটা আমার লেখালেখির জীবনে বিরাট পুরস্কার।
গত চারপাঁচ বছরে এমন একটা দিন নেই যেদিন আমাদের কথা হয়নি। সারাদিন কাজে ব্যস্ত থাকলে অনেক রাতে একবার না একবার ফোন করতেন। প্রথমে এসএমএস ‘জেগে আছিস?’ তারপর সারাদিনের জমানো সব কথা শেয়ার করতেন, তা দুঃখ হোক বা আনন্দ। এটা জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি।
একসময় ওঁকে নিয়ে লিখেছিলাম —
নবনীতা, আনন্দের নাম
অসংখ্য মুখের ভিড়ে নিজেকে মিশিয়ে বসে আছোআমাকেও এবার বিশ্বাস করে নিতে হবে, ৭ই নভেম্বর স্বপ্ন নয়। ওটাই সত্যি। কলকাতায় ফিরে এই সত্যির মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে।
সবকিছু দিব্যি মানিয়ে গেছে তোমার দেয়ালে, তৃণ গুল্ম শাপলা শালুক, ঝরা তারা, টুকরো আকাশ,
এরা সব মিলে মিশে বানিয়ে তুলেছে এক অক্ষরপ্রতিমা।
অথচ বারবার তুমি মূর্তি ভেঙে চুপি চুপি একাই বেরিয়ে পড়ো
শিস দিতে দিতে ধুলো মাখো, বৃষ্টিধারায় ভেজো,
তারপর আঁচল শুকোতে দাও পৃথিবীর ছাদে।
বাংলার তাঁতে বোনা মেয়ে, কিছুতেই রঙ সুতো মলিন হবে না।
উড়ন্ত ডানার নিচে অক্ষরের খেলনাপাতি,
গোপন চিঠির মতো বারবার তারকাছে ফিরে যাও,
জ্যোৎস্না দিয়ে নিশ্বাসের আঁচড় মুছতে গিয়ে
আঙুল ভিজতে থাকে স্বাতী নক্ষত্রের অশ্রুপাতে
করতলে ব্যথা জমে, কথার মুক্তো তার নাম,
অক্ষর বন্ধন তার নাম।
খেলাচ্ছলে মেঘলা দিনের গায়ে চাঁদ আঁকো
অমনি ঝুরঝুর করে ভেঙে পড়ে তোমার বন্দিদশা।
পায়ে পায়ে ভেঙে ফেলো দুঃখের বেষ্টনী,
মানুষের কানে কানে বলে আসো,
পৃথিবীর আনন্দযজ্ঞের দায় অজান্তেই এসে গেছে আমার কলমে।
একসময় লিখেছিলেনঃ
“হে জননী, হে কল্যাণী পৃথিবী আমার,(তিলাঞ্জলি, নবনীতা দেব সেন)
তোমার গর্ভের মধ্যে আমি ফিরে যাবো,
জ্যোতির্ময় বীজ হয়ে, নক্ষত্রের ভ্রূণ হয়ে
আজ আমি ফিরে যাবো...”
তাহলে কি পৃথিবীকে আনন্দহীন করে ফিরে গেছেন গর্ভগৃহে... ওই জ্যোতির্ময় বীজ থেকে উৎসারিত কলমের আলো ছড়িয়ে রেখে গেছেন আমাদের জন্যে... তাঁর বিশাল সাহিত্যসম্ভার। তার মধ্যেই পাবো তাঁকে।