Click below to read comments on other sections:
|
অসাধারণ লাগল লেখাটা। লেখক খুব সুন্দরভাবে বইটার অসাধারণত্বকে প্রকাশ করেছেন। এত সুন্দর মূল্যায়নে বইটার গৌরব যে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। লেখককে অনেক ধন্যবাদ!
পৃথু হালদার (মে ২০২০; prithuhalder1...@gmail...)
ইন্দ্রনীল দাশগুপ্তর "জাসুসনামা" গল্প নয় প্রথম শ্রেণির ইন্দ্রজাল। আহা কী পড়লাম! এমন গল্প পড়ার জন্যই সব অসুখ তুচ্ছ করে আরও বেঁচে থাকতে ইচ্ছা হয়। এই সব গল্পে কাহিনি রূপক ইত্যাদি গৌণ হয়ে যায়। প্রথম দিকে আমি চেষ্টা করছিলাম রূপকের অর্থ বুঝতে। খানিক ক্ষণ পর থেকে সে সব ছেড়ে বুঁদ হয়ে পড়ে গেলাম। একটা আরব্য হাওয়া মায়া হাভেলীর দরজা খুলে দিল।
আর কিছু বলার নেই।
সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় (এপ্রিল ২০২০; smukh...@gmail...)
এতো অসাধারণ গল্প সুদীর্ঘকালের মধ্যে পড়িনি। পরবাসে প্রকাশিত একটি শ্রেষ্ঠ গল্প এটি। কুর্নিশ।
কুর্নিশ
দীপঙ্কর চৌধুরী (এপ্রিল ২০২০; cdp...@gmail...)
অসম্ভব ভালো লাগল এ পাঠ প্রতিক্রিয়া। বইটির সম্বন্ধে জেনে পড়ার আগ্রহ প্রচুর। সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের লেখা পরবাসে পড়ি। খুব ভালো লাগে। আজ ওনার বইটি সম্বন্ধে জেনেও ভীষণ ভালো লাগছে।
করোনা সময় কেটে গেলে ইচ্ছে রইল সংগ্রহ করব ও অবশ্যই পড়ব।
ঝর্না বিশ্বাস (এপ্রিল ২০২০; jharn...@gmail...)
সুবীরদা, খুব ভালো লাগল কবিতা গোধূলির ডাকপিওন # ৩২, # ৩৩। যে গুলো মিস করেছি পড়তে হবে।
ঝর্না বিশ্বাস (এপ্রিল ২০২০; jharn...@gmail...)
পরবাস পত্রিকায় অঙ্কুর সাহা-র Jorge Luis Borges-এর ইংরেজি থেকে অনূদিত লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো। কিন্তু এই গল্পটি আমি এর আগে ঋত্বিকের করা অনুবাদে পড়েছি। মনে হয়েছে সেই অনুবাদে প্রাঞ্জলতা অনেকটাই বেশি। বাংলায় বোর্খেস পাঠে আগ্রহীরা ঋত্বিকের দুটি অনুবাদ সংকলন দেখতে পারেন- ‘খোর্খে লুইস বোর্খেস’ এবং ‘ইত্যাদি ও অন্যান্য গল্প’।
পরবাস পত্রিকাকে ধন্যবাদ অন্য স্বাদের এই সমস্ত লেখা আমাদের পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
সৌমেন বসাক (এপ্রিল ২০২০; soumenbasak8...@gmail...)
ডাক্তার কৌশিক সেনের লেখাটি খুবই আগ্রহ সহকারে পড়লাম। আমি চিকিৎসক নই, অতি নগণ্য মানুষ, ভারতবর্ষে থাকি, তবে একদা ছাত্র থাকা, ও পরবর্তীকালে বহুবার ইতস্তত অধ্যাপনা তথা অন্যান্য প্রাসঙ্গিক পেশা সংক্রান্ত যাতায়াত সূত্রে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমার যৎসামান্য পরিচয় আছে। ওই একই পেশাগত কারণে আমি ইউরোপ, এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার বেশ কিছু দেশের সঙ্গে খানিকটা পরিচিত। একজন ম্যাংগো পিপলের দৃষ্টিকোণ থেকে তুলনামূলক আলোচনার প্রচেষ্টা হয়তো চালাতে পারি। বিস্তারিত আলোচনায় না গিয়ে আপাতত আমি একটি দেশের কথা খানিকটা বলি বরং, দেশটি দক্ষিণ কোরিয়া, আমার এই সসঙ্কোচ নিবেদন নিতান্ত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সূত্রে।
আমি দক্ষিণ কোরিয়ায় বহুবার গেছি। তবে ২০১৩-১৪ সালে আমি ওই দেশে একটানা মোট ৩৬৫ দিন অতিবাহিত করি। তার ঠিক আগে আমেরিকার চতুর্থতম ছাত্রবহুল বিশ্ববিদ্যালয়টিতে একটি শিক্ষাবর্ষ অধ্যাপনা করি। এই তথ্যটি কাজে আসবে, দু-দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে একঝলক মিলিয়ে নেওয়ার সূত্রে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় পদার্পণ করে আমি জানতে পারি:
১. আমার দীর্ঘস্থায়ী ভিসার কার্ডটি আমি ওদেশের যেকোনো হাসপাতাল, প্রাইভেট ক্লিনিক এবং ওষুধের দোকানে ব্যবহার করতে পারি।
২. চিকিৎসা বিনামুল্যে নয়। সব ক্ষেত্রেই আমাকে একটি কো-পেমেন্ট দিতে হবে।
৩. এই কো-পেমেন্টের পরিমাণ নির্ভর করে আমার আর্থিক অবস্থার ওপর। অর্থাৎ একই পরিষেবার জন্য এল জি ইলেকট্রনিক্সের বড়কর্তা আমার থেকে ঢের বেশি কড়ি গুনবেন, এবং রাস্তার ধরে যে মহিলা সব্জি বিক্রি করেন, তিনি দেবেন অনেক কম।
৪. প্রত্যেক মাসে এর জন্য আমার আয়ের ওপর নির্ভরশীল একটি অংক আমার অর্জন থেকে রাজকোষে জমা হবে।
আমার কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় আমি একজন মহিলা ডাক্তার পরিচালিত ক্লিনিকে যাই। এই লিঙ্গ-পরিচয়টি দিলাম এই কারণে যে এই ছোট ক্লিনিক এবং তার সংলগ্ন ল্যাবটি পরিচালনা করেন ওই মহিলা চিকিৎসক এবং তাঁর দুজন মহিলা সহকারী। তাঁদের কর্মদক্ষতা শুধু ঈর্ষণীয় নয় অননুকরণীয়। ওই চিকিৎসক আমাকে প্রথমেই বলেন যে, তিনি রোগলক্ষণ সারাতে অগ্রহী নন, তিনি ওই লক্ষণের উৎস খুঁজতে চান, এবং তার জন্য পর্যায়ক্রমে অজস্র পরীক্ষা করতে থাকেন, একটির পর একটি সম্ভাব্য কারণের এলিমিনেশন করে। আমার পরিচয়পত্রটি কম্পিউটারে ঢোকানো মাত্র আপনা থেকে আমার দেয় অর্থের পরিমাণ নির্ধারিত হয়ে যায়, এবং কখনোই তা আমার কাছে বিপুল বলে বোধ হয় না। পরিশেষে তিনি জানান যে আমার শরীরে প্লেটলেটের মাত্রা নিয়মিতভাবে কম এবং তৎক্ষণাৎ তিনি নিকটবর্তী হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগে ফোন করেন।
তারপরে ওই হাসপাতালে আবার একপ্রস্থ পরীক্ষা। ওঁরা বলেন যে এরপর বোনম্যারো বায়োপসি করা ছাড়া গত্যন্তর নেই। ওঁরা জানান যে এদেশ আমেরিকা নয়, এখানে এই পরীক্ষার জন্য তিনদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। এতএব ভর্তি হই। প্রথমদিন আবার একরাশ পরীক্ষা। সন্ধ্যাবেলায় হঠাৎ আমার কেবিনে দুই যুবক-যুবতীর আবির্ভাব। এরা দুজনেই চিকিৎসক, কিছুদিন ভারতবর্ষে কাটিয়েছে, সেদিন এসেছে আমার সঙ্গে গল্প করতে, আমাকে ভরসা জোগাতে! তারপরদিন প্রথাগত পরীক্ষা এবং রোগনির্ণয়; যে অভিজ্ঞতা ধরা আছে পরবাসে প্রকাশিত আমার 'সানলিন' হাপাতালের কবিতাটিতে।
পুরো পদ্ধতিতে আমার যা খরচা হয় তা আমার মাসিক অর্জনের একটা সামান্য ভগ্নাংশ মাত্র। শুধু তাই নয়, এই চিকিৎসা আমাকে তৎক্ষণাৎ ওদেশের জাতীয় কর্কট রোগ ডেটাবেসের অংশ করে নেয়, এবং যেহেতু আমি ভবিষ্যতে লুকেমিয়ায় আক্রান্ত হতে পারি, সেই কারণে আমার পরবর্তী চিকিৎসার মাত্র চার শতাংশ আমাকে বহন করতে হয়। আমি ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিই এই কারণে, যে আর এক বছর আগে আমেরিকায় এই চিকিৎসার প্রয়োজন হলে, পথে বসতে হত। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোটা অঙ্কের গ্রূপ ইন্স্যুরেন্স অতি অবশ্যই হাতে ছিলো সেখানে, কিন্তু তাতে যে প্রি-এক্সিস্টিং ক্লস বলে একটি বিষম বস্তু জড়িত আছে, সেখানে যে বেমালুম ফেঁসে যেতাম!
এবার একটা উপসংহার। এটা ভারতবর্ষের। দেশে ফিরে এক মহিলা রক্তবিদকে আমার কোরিয়ান চিকিৎসার একরাশ কাগজপত্র দেখাই। তিনি ক্রমাগত কফি খেতে খেতে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন দীর্ঘ সময় ধরে। তারপর আরও কিছু পরীক্ষা করতে বলেন। এবং তাতে জানা যায় যে আমার বোনম্যারো শুধু প্লেটলেট কম উৎপন্ন করে না, তার গড় ব্যাসও স্বাভাবিকের থেকে বেশি। ফলতঃ আমার বেশ কিছু প্লেটলেট পরীক্ষাযন্ত্রের অরিফিসে প্রবেশ করতে পারে না, আর তাই আমার রক্তের অণু-চক্রিকার সংখ্যা, যতটা কম তার চেয়েও অনেকটাই কম মনে হতে থাকে। কোরিয়ার চিকিৎসকেরা অত্যন্ত দক্ষ, কিন্তু এ সম্ভাবনার কথা তাঁরা চিন্তা করেননি।
আমি ব্যক্তিগতভাবে ওই ভারতীয় চিকিৎসকের কাছে কৃতজ্ঞ। যতদূর জানি, তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও পরবর্তীতে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউটের 'অপশিক্ষা' পেয়েছেন। ভাগ্যিস পেয়েছেন!
নিরুপম চক্রবর্তী (এপ্রিল ২০২০; nchak...@gmail...)
Thank you so much for creating and maintaining this rich resource.
Gita Madhu (April 2020; gita.ma...@gma...)
দুটো কবিতাই ভীষণ ভালো লাগল...
ঝর্না বিশ্বাস (এপ্রিল ২০২০; jharna.b....@gmai...)
সমাজের ধরাবাঁধা ছকে চলতে না পারলেই সমাজচ্যুত হতে হয় অথচ জীবনে যাঁরাই এই গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন তাঁরাই সমাজকে নতুন কিছু উপহার দিয়েছেন। গল্পটির মধ্য দিয়ে অনন্যা দাশ শিশুমনে যে প্রেরণা যুগিয়েছেন তা প্রণিধানযোগ্য।
স্বরূপ মণ্ডল (এপ্রিল ২০২০; bivart...@gmail...)
অসম্ভব ভালো লাগল...প্রচুর কিছু জানলাম।
ঝর্না বিশ্বাস (এপ্রিল ২০২০; jharna.b....@gmai...)
সিদ্ধার্থদার ছন্দ-বিষয়ক প্রবন্ধটা চোখে পড়ায় চটজলদি এক প্রতিক্রিয়া লিখছি। এ ব্যাপারে পরে বড় করে কিছু লেখার বাসনা রইল।
প্রথমে একটা ছোটোখাটো ভুলের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাক। জয়দেবের গীতগোবিন্দম্ আদ্যন্ত সংস্কৃত মাত্রাবৃত্তে লেখা, এর মধ্যে গোলমাল থাকা অসম্ভব। যে অংশটি উদ্ধৃত করা হয়েছে, ওটা আসলে ‘ধীরসমীরে যমুনাতীরে বসতি বনে বনমালী’ হবে, ধীরে সমীরে এখানে সমাসবদ্ধ হয়ে ধীরসমীরে। চার চার মাত্রার পর্ববিভাগ এতে – ধীরস / মীরে / যমুনা / তীরে / বসতি ব / নে বন / মালী। এর পরের লাইনও পীনপয়োধরপরিসরমর্দ্দনচঞ্চলকরযুগশালী তেমনি পীনপ / য়োধর / পরিসর / মর্দ্দন / চঞ্চল / করযুগ / শালী। সংস্কৃতে দীর্ঘস্বর ২ মাত্রার, এখানে ঈ-কার, আ-কার, এ-কার – এগুলো দীর্ঘস্বর।
এরপর শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের আলোচ্য কবিতাটির ছন্দ-সংক্রান্ত আমার
বক্তব্য এই রকম –
এক, ছন্দ জিনিসটা মাথায় বাজতে-থাকা সময়ের পর্ববিভাগ, তবলচি
গান শুনলে যেমন মুহূর্তে বুঝে ফেলেন দাদরা না কাহারবা, ঝাঁপতাল না
তেওড়া বাজবে। ছান্দসিকরা মাত্রাবিভাগের গণনার জটিল পদ্ধতি
(মাত্রাবৃত্ত হলে এইভাবে গণনা করবে, স্বরবৃত্ত হলে এইভাবে) নিরূপণ
করে কবিতাপাঠের অন্তর্গত স্বাভাবিক বিন্যাস থেকে ছন্দ বের করে
নেওয়ার প্রবণতায় আঘাত হেনেছেন। চারমাত্রার স্বরবৃত্ত হচ্ছে টিপিক্যাল
ঘুমপাড়ানি ছড়ার ছন্দ (যেটা সিদ্ধার্থদা শুরুতেই বলেছেন), টাপুরটুপুর
বৃষ্টি পড়ে নদেয় এল বান-এর ছন্দ, খুকু ঘুমাল পাড়া জুড়াল বর্গি এল
দেশে-র ছন্দ। শক্তির এই চাবি-র ছন্দ আদপেও তা নয়।
দুই, লেখকের ‘মাত্রাবৃত্ত মাত্রা নিয়ে অসৈরণ বরদাস্ত করে না’ প্রসঙ্গে বলি, রবি ঠাকুরের হাত দিয়েই যেহেতু এর সৃষ্টি, উনি এর অসৈরণের দিকে কদাপি যাননি, কিন্তু ইচ্ছে করলেই বরদাস্ত করানো যায়। ‘ভূতের মতন চেহারা যেমন নির্বোধ অতি ঘোর’-কে যদি উনি ‘ভূতের মত চেহারা যেমন নির্বোধ অতি ঘোর’ লিখতেন, বা ‘ভূতের মতন চেহারাখানা নির্বোধ অতি ঘোর’ লিখতেন, ছন্দ আদৌ বদলাত না, একই থাকত। কিন্তু মতন না লিখে মত (উচ্চারণে মতো) বা যেমন-এর বদলে খানা ব্যবহার করলে মাত্রাবৃত্ত ছন্দের প্রবোধচন্দ্রীয় মাত্রাগণনায় একমাত্রা হানি হয়।
তিন, সংস্কৃত ছন্দ ও বাংলা বৃত্তছন্দ আদৌ তুলনীয় নয়। সংস্কৃত বৃত্তছন্দে প্রতি লাইনে লঘু-গুরু-র বিন্যাস অপরিবর্তনীয়, পাথরে খোদাই করা, নড়চড় হবার নয়। আলোচ্য কবিতায় তার বিন্দুমাত্র ছায়া নেই। তালবৃত্ত জিনিসটার মাত্রা গণনা আমার বোধগম্য হল না। আমার মতে বাংলা (সংস্কৃত তো বটেই) প্রতিটি ছন্দই তালবৃত্ত, স্বরবৃত্ত-মাত্রাবৃত্ত-অক্ষরবৃত্ত সবগুলোই। এবং প্রবোধচন্দ্রীয় স্বরবৃত্ত ছন্দের মাত্রাগণনা পদ্ধতি অপ্রয়োজনীয়।
চার, প্রথম কয়েক লাইনে একটা ছন্দ প্রতিষ্ঠা করে নিলে বাদবাকি অংশে তা থেকে উপযুক্ত বিচ্যুতি নিলে তা সাধারণত কানে বাজে না। বৃত্তছন্দের কবিতায় ছন্দ বজায় রাখাটাই উদ্দেশ্য, মাত্রাগণনা কবির কাজ নয়। এই নিরিখে প্রথম দু’ লাইন দেখে চাবি কবিতাটিকে পাঁচমাত্রার মাত্রাবৃত্ত বলা যায়, পর্বভাগ এই রকম –
আমার কাছে / এখনো পড়ে / আছে
তোমার প্রিয় / হারিয়ে যাওয়া / চাবি
দুটো লাইনই ৫/৫/২ মাত্রাবৃত্তে। মোট বারো লাইনের এই কবিতায় এর অর্থ বারো দুগুনে চব্বিশটা ৫-মাত্রার পর্ব থাকার কথা। অথচ দেখা যাচ্ছে তা থেকে বেশ অনেকগুলো – গুনে দেখলে সাত সাতখানা – ব্যতিক্রম। দেখা যাক, সেই ব্যতিক্রমগুলো ঠিক কী প্রকৃতির।
এই হচ্ছে তার লিস্টি –
১ তোরঙ্গ আজ
২ তিল তো তোমার
৩ এখন ও মন
৪ হঠাৎ লিখতে
৫ পরম যত্নে
৬ আজই সময়
৭ স্মৃতির ভিতর
এক এক করে বলি, যদিও ক্রম একটু বদলে।
১ ‘তোরঙ্গ আজ’ উচ্চারণে তো-রোং-গো-আজ অথবা তো-রোঙ্গ্- ওয়াজ। মনে হচ্ছে ৬ মাত্রা। এই যে ওয়াজ, এর ওয়া অংশটা একমাত্রা হয়ে যায় বাংলা উচ্চারণে, যে জন্যে ঠিক এর আগের লাইনে যাওয়া-র ওয়া একমাত্রা, যাওয়া ২ মাত্রা। তাহলে তোরঙ্গ আজ ৫ মাত্রা হতে পারে, অসুবিধা নেই।
২ তিল তো তোমার স্পষ্টত ৬ মাত্রা। কিন্তু এর পরেই আছে – ‘আছে’ শব্দটা। এবার যদি পড়ি ‘তিল তো তোমা / রাছে, তাহলে এটাও মিলে গেল ৫ মাত্রার পর্বে।
৩ ‘এখন ও মন’ তো এখনো মন হতেই পারে, সমস্যা নেই। ৫ মাত্রা।
৬ ‘আজই সময়’-ও আজি সময়। ৫ মাত্রা।
৭ স্মৃতির ভিতর ৬ মাত্রা। কিন্তু এখানেও এর পরে – আছে। সুতরাং স্মৃতির ভিতো / রাছে পড়লেই ৫ মাত্রা।
তাহলে সাতখানার মধ্যে পাঁচখানা ম্যানেজ হয়ে গেল পাঁচমাত্রা দিয়ে। কিন্তু এত করেও ‘হঠাৎ লিখতে’ আর ‘পরম যত্নে’-কে কোনভাবেই ৫ মাত্রায় ফেলা যায় না, তাহলে?
এর উত্তর আগে যা বলেছি, তাই। এ দুটো পর্ব আছে কবিতাটার ঠিক মধ্যিখানে, যখন ছন্দটা অলরেডি প্রতিষ্ঠা হয়ে গেছে। তাই খানিকটা অক্ষরবৃত্ত গোছের প্রবণতায় লিখতে-র লিখ্ এবং যত্নে-র যৎ-কে ১ মাত্রা ধরে আমরা পড়ে ফেলি। কানে বাজে না, এমন নয়, বাজে, আমরা উপেক্ষা করি। এর কারণ, ৫ মাত্রার পর্ব ৩/২-এর অশ্রাব্য পর্বাংশে বিভক্ত থাকে এবং এর প্রবণতাও বিজোড় বিষমচলন ছেড়ে মাঝে মাঝে সমচলন ৬ মাত্রা হয়ে ওঠার। সে বিষয়ে পরে আলাদা করে লিখব।
শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের এ এক স্বাভাবিক গা-জোয়ারি। ছন্দটা উনি খুব ভাল বুঝতেন বলেই তা থেকে মাঝে মধ্যেই ছুটকারা নিতে পছন্দ করতেন। এই একই ‘দোষ’ ওঁর একাধিক কবিতায়। ‘ছেলেটা’ কবিতাও (ছেলেটা খুব ভুল করেছে শক্ত পাথর ভেঙে) এ রকম ৫-মাত্রার মাত্রাবৃত্তে, তবে মাঝেমধ্যে শক্ত পাথর, পথের হদিশ – ইত্যাদি ৬ মাত্রার পর্ব ব্যবহার করেছেন। অথচ ‘অবনী বাড়ি আছো’ (দুয়ার এঁটে ঘুমিয়ে আছে পাড়া) আদ্যন্ত ৫-মাত্রার মাত্রাবৃত্তে, ব্যতিক্রমহীন।
এবার ‘দুয়ার এঁটে ঘুমিয়ে আছে পাড়া’ আর ‘আমার কাছে এখনও পড়ে আছে’ পাশাপাশি পড়ুন। দেখবেন একই ছন্দ। মাত্রা গোনার দরকার নেই।
অমিতাভ প্রামাণিক (এপ্রিল ২০২০; amitava.ban....@gmai...)
আমার মতো 'অলস তৎপুরুষ'ও আপনার এই লেখা একটানে পড়ে ফেলেছে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে আপনার আলোচনার গতি, উপস্থাপনা কী মোলায়েম এগিয়েছে। শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের যে সব কবিতার ছন্দ আমার মাথার উপর দিয়ে চলে গেছে তার মধ্যে "চাবি" অবশ্যই আছে। আচ্ছা, কবি কি জানতেন না এই "ছন্দহরণ"-এর কথা। আমার ধারণা, উনি জানতেন, বেশ ভালো করেই জানতেন। তবে কেন এই তথাকথিত বিচ্যুতি! 'শক্তি'কে যতটুকু পড়েছি--আমার মনে হয়েছে কবি এগুলোকে 'দাপট' হিসেবেই ভাবতেন। যেভাবে লিখলে, পড়লে লাইনগুলো ভালো লাগবে কবি সেভাবেই তার কলমের ছায়া ফেলে গেছেন তাঁর কবিতার লাইনে। আর এখানে এসেই মনে হয়, এভাবেই বোধহয় একদিন আপনার 'তালবৃত্ত' আলোচনায় আসবে এবং প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবেন নিশ্চিতভাবেই।
চমৎকার আলোচনা। ঋদ্ধ হলাম। তবে হ্যাঁ, স্বরবৃত্ত শেখার জন্য আমার কাছে আজও কবিগুরুর "কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি"ই সেরা। শুভেছা...
সুবীর বোস (এপ্রিল ২০২০; subirb....@gmai...)
সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের মনোজ্ঞ আলোচনাটি পড়লাম। আমি নিজে বরাবর ভাবি এই রুদ্ধদল মুক্তদল বিশ্লেষণের সময় আমরা প্রায়ই অজান্তে বাংলা ভাষার নিজস্ব উচ্চারণের প্রাকৃত রূপটি বিস্মৃত হয়ে সংস্কৃতর কোলে লেপ্টে থাকি।
চাবি কবিতাটির গোলমেলে অংশগুলো আমি নিজে যেভাবে পড়ি তা নিচে দিলাম। আমার কানে তাতে স্বরবৃত্তের চার মাত্রার মূল চলন অর্থাৎ, ১-২ | ১-২ অক্ষুণ্ন থাকে। প্রথাগত ভাবে দুমাত্রাগুলিকে থেকে থেকে এক মাত্রায় পড়াটা বোধহয় 'স্বেচ্ছাচারী' শক্তি চট্টোপাধ্যায়কে বিচলিত করতো না!
আমার এই উচ্চারণভিত্তিক পাঠের সঙ্গে এই নিবন্ধে বর্ণিত তালবৃত্তের প্রকৃতপ্রস্তাবে খুব একটা ফারাক নেই। ক্ষেত্র বিশেষে একাধিক মুক্তদলের অন্বয় স্বরবৃত্তে একমাত্রিক হিসেবে গণ্য হলে, আমি মহাভারতের অশুদ্ধির কোনো কারণ দেখি না, যেমন একটি রুদ্ধদলকে দুমাত্রা বলে গণ্য করলেই স্বরবৃত্ত মাত্রাবৃত্ত হয়ে ওঠে না। তবে ব্যতিক্রমকে নিয়মে রূপান্তরিত না করাটাই বিধেয়।তো-রং | গো-আজ
অ-বান | ত-র
তো-মার | মু-খ
লি-খিও| উ-হা
এছাড়াও আমার মনে হয় অক্ষরবৃত্ত যেমন তার চারমাত্রার পর্বগুলিতে অনায়াসে কিছু বাড়তি মাত্রাকে আত্মস্থ করতে পারে, স্বরবৃত্তের ক্ষেত্রেও তাই, নতুবা 'এ পাড়েতে লঙ্কাগাছটি লালটুকটুক করে', বাংলা ছড়ার এই বিপুল স্বরসম্ভার স্বরবৃত্তের পক্ষে সামলানো সম্ভব হত না!
আরেকটি কথা। আমার নিজের মনে হয় সবরকম বাংলা ছন্দে গানের মতো 'ফাঁক' ব্যবহারের পরিসরটি থেকেই যায়, যেটা আমরা খুব কম চেষ্টা করে দেখেছি। সঙ্গীতের তালের মতো অজস্র ছন্দের সম্ভার কবিতার প্ৰয়োজন নেই ঠিকই, কিন্তু তার কিছু কিছু প্রকরণ কবিতাকে সমৃদ্ধ করতে পারে।
সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় গুণী এবং সৃষ্টিশীল মানুষ। এসব রচনায় আমরা সাধারণ পাঠকেরা আলোকিত হই।
নিরুপম চক্রবর্তী (এপ্রিল ২০২০; nchak...@gmail...)
কমলিকার কবিতা দুটি খুব ভালো লাগল। ছোটোবেলার ছাদ বিষণ্ণতা, অনুরাগ ও বিরহ পরিবেষ্টনের এক একান্ত জায়গা, যা থেকে নব প্রজন্ম হয়তো অনেকটাই বঞ্চিত।
পরজ রায় (এপ্রিল ২০২০; mailpa...@gmail...)
পরবাসের ৭৮ সংখ্যার ‘গ্রন্থ-সমালোচনা’-বিভাগে ভবভূতি ভট্টচার্যের চারটি বইয়ের আলোচনা পড়লাম।
খুব সংক্ষিপ্ত পরিসরে বইগুলির চমৎকার আলোচনা করেছেন তিনি। আলোচনাকালে ব্যবহৃত বিভিন্ন রেফারেন্সের উল্লেখ তাঁর পঠনের ব্যপ্তি আর প্রকাশের শিল্পিত অভিব্যক্তি দুটোই মুগ্ধ করেছে।
পাঠক হিসেবে লৌকিক সংস্কৃতির উপরে টান থাকায় রঞ্জন রায়ের ‘ছত্তিশগড়ের চালচিত্র’ বইটি পড়ার বিশেষ তাগিদ অনুভব করছি। ‘চিরায়ত শরদিন্দু’-র আলোচনার শেষ লাইনে ওই যে ভবভূতি বললেন: “প্রিয় শরদিন্দুর নানা দিক নিয়ে তো ১৬ খানা নিবন্ধ হল, অপ্রিয় শরদিন্দু নিয়ে একটাও হতে পারতো না কি, সম্পাদক-মশায়?” তো, সেই আলোচনা না থাকলেও জনপ্রিয়-শরদিন্দু, বাবা-শরদিন্দু, ব্রাত্য-শরদিন্দু-র উল্লেখ পড়তে পড়তে বইটি সম্বন্ধে আগ্রহী হই। না তাতালে আর বই-পাঠ ও পাঠ-প্রতিক্রিয়ার মজা কোথায়?
দিবাকর ভট্টাচার্যের লেখা কি আগে পড়েছি? ওই নামে আমার এক লেখক-বন্ধু থাকায় গুলিয়ে ফেলেছিলাম প্রথমটায়। কিন্তু আলোচ্য দিবাকর তো প্রয়াত (১৯২৮-২০০২)। সমালোচক-মশায় দিবাকরের সঙ্গে অমিয়ভূষণের মিল পেয়েছেন। এই উল্লেখ বইটি পড়বার আগ্রহ বাড়িয়ে দিল।
আমার ‘মেয়েদের চোরাগোপ্তা স্ল্যাংঃ শরীর ও অন্যান্য আলাপ’ বইটি আলোচনায় এসেছে। বেশ। শুধু শব্দভাণ্ডারের স্ল্যাং উজাড় করে অভিধান লেখা বইটির উদ্দেশ্য ছিল না। উদ্দেশ্য যা ছিল তা সমালোচক-মশাই ধরতে পেরেছেন, এবং যে-ভাবে এই লেখককে মান্যতা দিয়েছেন---তার জন্যে মনটা খুশিতে ভরে গেল এই লকডাউনের বাজারে।
‘নারী-স্বমেহন’, ‘নারী-সুন্নৎ’ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে শ্রীভট্টাচার্য গুস্তফ ক্লিম্টের ছবির কথা বলেছেন, যে ছবি আমি দেখিনি। ২০০৪ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া বইটি অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ২০১৯-এ প্রকাশিত হয়। এই ছবি, এবং আরও অনেক তথ্য পেলে বইটি সমৃদ্ধতর হতে পারত নিশ্চয়ই।
সেক্স-এডুকেশন, উভকামিতা, স্বমেহন প্রভৃতি দশটি বাঁধা বিষয় নিয়ে স্বনামধন্য নারীবাদীদের সাথে উপর্যুপরি আলোচনা আমার বইখানির পাঠগতিকে অযথা শ্লথ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ভবভূতিবাবু। নিবেদন করিঃ প্রাপ্তবয়স্ক ও আলোকপ্রাপ্ত মানুষজনের কাছে প্রশ্নগুলি ভারাক্রান্ত ও অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হতে পারে, কিন্তু পালটে যাওয়া ডিজিট্যাল পৃথিবীর ঘূর্ণিতে দাঁড়িয়েও নিজশরীরের গোপন কথা নিয়ে মেয়েরা এখনও দ্বিধান্বিত। নিজের শরীরকে জানা পাপ?! স্বমেহন পাপ?! এইসব ধারণাকে দূর করতে বর্ষীয়সী আলোকময়ীদের মতামতের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে সাক্ষাৎকারগুলি রাখা হয়েছে। বিয়ের বয়স নিয়ে, মা হওয়া নিয়ে, স্বমেহন নিয়ে, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিয়ে তাঁদের অনেকদিনের অনেক প্রশ্নের উত্তর তাঁরা এখানে পেয়েছেন। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই আমাকে জানিয়েছেন যে এই সাক্ষাৎকারগুলি নানাভাবে তাদের মানসিক বল বাড়াতে সাহায্য করেছে। আমি এইটুকুই করতে চেয়েছিলাম। মাটির কাছাকাছি মানুষের সাথে যোগাযোগের সূত্রে তাঁদের কিছু কিছু কথা কুড়িয়ে কুড়িয়ে সাজিয়েছি আমি মাত্র।
আরও উল্লেখ থাক যে এই বই লিখে নিজের জেলায় কুৎসিত সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে আমাকে। না পড়ে, শুধুমাত্র প্রচ্ছদ ও গ্রন্থনাম দেখেই আক্রমণাত্মক বিষোদ্গার এসেছে ভুরি ভুরি। সয়েছি। এ’যেমন এক আঘাত, নীরবতাও তেমনিই আরেক আঘাত। দায়সারা পাঠ-প্রতিক্রিয়া তো উপেক্ষার নামান্তর মাত্র।
‘স্থান পাওয়া প্রবন্ধগুলির যা ধার-ভার-মান, তা ভাবায়-জ্বালায়- রাগায়’!---শ্রীভট্টাচার্যের দেওয়া এই স্বীকৃতি বর্তমান লেখকের বুকের বল বাড়িয়েছে শতগুণ; তাঁর সযত্ন পাঠ ও আলোচনায় আমি সম্মানিত বোধ করছি!
ধন্যবাদ ভবভূতি ভট্টাচার্য ও ‘পরবাস’ সম্পাদক-মশাইকে।
তৃপ্তি সাঁতরা (এপ্রিল ২০২০; santratri....@gmai...)
অসীম (এপ্রিল ২০২০; shalini...@gmail...)
অসম্ভব ভালো এ সম্পাদকীয়...স্বল্প কথা ও ছবি সব মিলিয়ে দুর্দান্ত।
ঝর্না বিশ্বাস (এপ্রিল ২০২০; jharna.b....@gmai...)
একটি অসামান্য সম্পাদকীয়; আমার বিচারে ইদানীংকালে শ্ৰেষ্ঠতম।
নিরুপম চক্রবর্তী (এপ্রিল ২০২০; nchak...@gmail...)
শীল পদবির উত্পত্তি কি জানতে চাই? শীল পদবী শল্যচিকিত্সক থেকে এসেছে। নাপিতরা বর্ন হিন্দু জলচর জাত। নাপিতরা আসলে চিকিত্সক জাতি বা বৈদ্য বা কবিরাজ। পৃথিবীর ডাক্তারি ও সার্জারির জনক নাপিতরা। বৃটিশ আমলের শুরু পর্যন্ত নাপিতরা সবাই বৈদ্য ছিল। এটা আপনারা চেপে যান কেন?
গোপাল শীল (এপ্রিল ২০২০; gopal...@gmail...)
কী আশ্চর্য গল্প! গল্প না রূপকথা বোঝা গেল না। মন ভরে গেল পড়ে।
অতনু দে (এপ্রিল ২০২০; myata...@gmail...)
চমৎকার বিশ্লেষণ। আলাদা করে বলতে হয় শজারুর কাঁটা উপন্যাসটির বিশ্লেষণটুকু। এই উপন্যাস লেখার সময় শরদিন্দু সম্ভবত সচেতনভাবে চলচ্চিত্রর ফর্ম ব্যবহার করেছেন। এটা আমার বহুবার মনে হয়েছে, তবে এই আলোচনায় সেটা স্পষ্টভাবে পড়ে খুব ভালো লাগলো।
অতনু দে (এপ্রিল ২০২০; myata...@gmail...)
শাণিত, বিবৃতিমূলক এই কবিতা। কুর্নিশ কবিকে।
তৃণাঞ্জন চক্রবর্তী (এপ্রিল ২০২০; tricha...@yaho...)
বেশ ক'বার পড়লাম। কিছু ছবি এঁকে গেল মনের ভিতরে। ভিখারি বুড়োর মতই চিরন্তন শেয়ালের গল্প। অনেক শোনা, এবং আরো অনেক শুনতে হবে। আগামী দিনে আরো অনেক দেওয়াল গড়ে উঠবে। আরো অনেক ভিখারি ও তাদের টুপি ফুটপাথে থাকবে আমাদের খুচরোর আশায়। তখন যেন কবিকে পাই সে কথা জানানোর জন্য।
অতীন্দ্র ভট্টাচার্য (এপ্রিল ২০২০; atindra...@gmail...)
খুব সুন্দর, মায়াময় বর্ণনা। স্যান ডিয়েগোর বন্দরে ঘুরে বেড়ানোর জাহাজের নাম কেন স্টার অফ ইন্ডিয়া জানা হয়নি। সেই ভিখিরি সম্রাট কে যদি পেতাম, জিগ্যেস করতাম করোনা সম্পর্কে।
কঙ্কন ভট্টাচার্য (এপ্রিল ২০২০; kankan...@gmail...)
কবিতাটি তার মিস্টিক চলনে বার বার ছুঁয়ে গেল অনুভূতির চুড়া। অনবদ্য।
দেবাশিস দাস (এপ্রিল ২০২০; debashisdas...@gmail...)
খুব সুন্দর লিখেছিস মানা।
রাখী মিত্র চক্রবর্তী (এপ্রিল ২০২০; rakhi2007...@gmail...)
সম্ভাবনা আর বিপদ হাতে হাত রেখে চলে। এই দুঃসময়ের অন্ধকার আমাদের জীবনের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুহূর্তটির দ্বার খুলে দেবে। আপনার এই সুন্দর লেখনিতে সেই আভাষই পেলাম।
পার্থ প্রতিম দেব (এপ্রিল ২০২০; parthaprat...@gmai..)
The writer presented us a good picture of Rome and its people the way it is now in the midst of Corona virus. Very smooth reading. Very simple way of describing the surroundings and neighbourhood. We will wait for the next story from the writer. Hope we don’t have to wait too long.
Mita Ghatak (April 2020; mita...@gmail...)
খুব ভালো লাগল। সবচেয়ে ভাল লাগল ইতালীয়দের মানবিকতা যে তারা অনেকে গরিব মানুষের জন্য রাস্তার ধারের বেঞ্চে খাবার রেখে দেয়। তাদের চেয়ে খেতে হয় না।
তাপস কুমার পাল (এপ্রিল ২০২০; tkp...@rediffmmail...)
লেখাটি খুবই চিত্তাকর্ষক সাবলীল ও মনোগ্রাহী। বর্তমান সময়ের এক সঠিক দিনলিপি। আমার খুবই ভালো লাগল।
ব্যাসদেব দাশগুপ্ত (এপ্রিল ২০২০; byas...@gmail...)
খুবই মন ছুঁয়ে গেল। এইরকম সাবলীল এবং সরল ভাষায় লেখা, মনে হোলো পাশে বসে কেউ বলছেন ইতালির বর্তমান পরিস্থিতির কথা। আপনার আগামী লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
দীপায়ন (এপ্রিল ২০২০; Dipayanb...@yahoo...)
প্রত্যেকটি পর্ব পড়ার পরই "অসাধারণ" -- এমন মন্তব্য ক্রমে অর্থহীন হয়ে পড়ে। অতএব সে-মন্তব্যে বিরত থাকছি। লেখিকা যখন লেখেন : "আমার আনকোরা, স্বচ্ছ, ভুত-ভবিষ্যতচিন্তার অনুভূতিশূন্য মনে এক অপূর্ব স্বর্গীয় আনন্দের উপলব্ধি হত। ... চিন্তাভাবনাহীন নিরাপত্তার এই স্বর্গীয় আনন্দই হয়ত আসল স্বর্গীয় সুখ," তখন বুঝতে পারি ইনি একজন দার্শনিকও বটেন।
একটি গান লেখিকা স্মৃতি থেকে উদ্ধার করেছেন আংশিকভাবে। সেটি সমাপ্ত করে দিচ্ছি এই আশায় যে সম্পূর্ণ গানটি তাঁর মনে আরও সুখানুষঙ্গ জাগিয়ে তুলবে। গানটি কৃষ্ণচন্দ্র দে-র কণ্ঠে রেকর্ড হয়েছিল; গীতিকবি সম্ভবত হেমেন্দ্রকুমার রায়।
(সখি) আজ অবেলায় কলসি নিয়ে
জলকে যাব কেমন করে?
পথের মাঝে দাঁড়িয়ে ও কে
বল্না লো সই যেতে সরে।
নাম শুনেছি চিকন কালা
(তার) গলায় বনফুলের মালা
নয়নে তার রসের হাসি
ইশারাতে ডাকছে মোরে।
ভ্রমর-অলি গুঞ্জরণে
বাজছে বাঁশি কুঞ্জবনে
প্রাণ হারিয়ে আছে হায়রে,
চোখের জলে বুকটি ভরে।
আজ অবেলায়...
দত্তাত্রেয় দত্ত (এপ্রিল ২০২০; dattatreya...@gmail...)
দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য লিখছেন:
ফিডব্যাকটার জন্য ধন্যবাদ।
পুরো গানটা দত্তাত্রেয়বাবু পাঠানোয় খুব ভালো হল। মা [লেখিকা, সন্ধ্যা ভট্টাচার্য] আর নেই। আজ নববর্ষে মায়ের ছবির সামনে গানটা গেয়ে শোনালাম। গানটার সুর আমার মায়ের কাছেই শেখা। ধন্যবাদ দত্তাত্রেয়বাবুকে।
দত্তাত্রেয় দত্ত লিখছেন:
ফিডব্যাকটার জন্য ধন্যবাদ।
সন্ধ্যা ভট্টাচার্যের প্রয়াণ সংবাদে সত্যিই মর্মাহত হলুম। দশম পর্বের পরে আর পড়া হয়নি সময়াভাবে; কিন্তু অবশ্যই আবার শুরু করতুম। তাঁর লেখায় এক অবিশ্বাস্য মাত্রার প্রতিভার প্রকাশ ঘটছিল -- বিশেষত যখন ভাবি যে তিনি বাল্যজীবনে নিরক্ষর ছিলেন।
আর একটা কথা আমাকে ভাবিয়েছে। ছাপা হরফের সঙ্গে পরিচয় ছিল না বলেই কি তাঁর observation এত detailed এবং memory এত vivid? তাহলে এত বইপত্র পড়ে আমরা আমাদের জীবন্ত অভিজ্ঞতার কতটা হারিয়ে ফেলেছি? কতটা অনুভব-অনুভূতিকে বলি দিয়েছি 'শিক্ষা'-র পায়ে?
অনুগ্রহ করে তাঁর পুত্র-পরিবারের কাছে তাঁর প্রয়াণে আমার লোকসানের অনুভব পত্রযোগে পাঠিয়ে দেবেন।
খুব কমিয়ে বলতে গেলে বলতে হয় অনবদ্য। শুধু কথার ছবি দিয়ে নির্মাণ করে যাচ্ছেন জীবনের বৃত্তান্ত। বিষয়বস্তু মনে পড়ায় বিভূতিভূষণের কথা; শৈলী মনে আনে অবনীন্দ্রনাথকে। আমরা যারা পাক্কা কলকাত্তাইয়া, তাদের কাছে এ এক আশ্চর্য সুখানুভূতি।
দত্তাত্রেয় দত্ত (এপ্রিল ২০২০; dattatreya...@gmail...)
ভীষণ ভালো লাগে পড়তে। ওই রকম সময়ে ও সব কিছু কিছু দেখে আমি কলকাতা ছেড়ে বিহারে চলে গিয়ে আবার অনেক কিছু মিস করি। তাই আরও বেশি ভালো লাগে, তাছাড়া লেখকের ভাষা অতুলনীয়।
সমরেন্দ্র রায় (এপ্রিল ২০২০; roy.sam...@gmail...)
অতি চমৎকার রচনা। পরপর সবগুলো কিস্তি পড়লুম। তবে আত্মকথা থেকে কোলকাতার চালচিত্রে অবতরণ বোধহয় এই কিস্তিতেই যথার্থে ঘটল। যাঁরা ঐ যুগে কোলকাতায় চরে বেড়িয়েছেন, তাঁরা এ-লেখার রস আমার চেয়েও বেশি উপভোগ করবেন। লেখা আরও এগোক; চালচিত্র আরও অনুপুঙ্খে সচিত্র হোক।
প্রসঙ্গত, 'জুলু ফোক সং'-টি শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেও চালু ছিল। বাংলা সংস্কৃতিজগতে এ-গানটির অবদান লিপিবদ্ধ হয়ে আছে বাদল সরকারের 'রাম শ্যাম যদু' নাটকের একেবারে সমাপ্তিতে।
দত্তাত্রেয় দত্ত (এপ্রিল ২০২০; dattatreya...@gmail...)
বহুদিনের শখ সাঁওতালি ভাষার কবিতা পড়ার। আজ সেটা সম্ভব করে দেবার জন্য অজস্র ধন্যবাদ। বারে বারে পড়তে হবে তবে যদি কবিতাগুলি পড়ার উপযুক্ত হয়ে উঠতে পারি। এধরনের প্রয়াস চাই আরও বেশি।
রূপেন গোস্বামী (এপ্রিল ২০২০; rupen...@gmail...)
ছোট্ট আর মিষ্টি একটা ভালোবাসার গল্প। পিউয়ের লেখায় সাধারণ মানুষের চাওয়া পাওয়ার কথা এত সহজ আর প্রাণবন্ত ভাষায় লেখা থাকে যে মনে হয় এ যেন আমাদের জীবনের কথা। চরিত্রগুলো যেন আমারই কাছের কেউ। এক নিঃশ্বাসে পড়তে পড়তে নিজেকেই যে কখন গল্পের মাঝে হারিয়ে ফেলি! মনে হয় যেন নিজের চোখের সমনেই সব দেখতে পাচ্ছি। ভবিষ্যতে এরকম আরো অনেক আনন্দ-বেদনার ছোট ছোট টক-ঝাল-মিষ্টি জীবনের গল্প পড়তে পারি সেই প্রত্যাশা রইলো। আর পিউয়ের জন্য রইলো অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে অনেক অনেক শুভ কামনা আর ভালোবাসা। প্রার্থনা করি অনেক বড় হও।
শামীমা কামার (এপ্রিল ২০২০; shameema...@gmail...)
মানব সভ্যতার নগ্নরূপ প্রতিভাত হচ্ছে কবির চোখের সামনে। যে আশার আলোটুকু নিয়ে মা চেয়ে থাকে শূন্য পথের দিকে, যখন সেই আলোটুকুও নির্বাপিত হয়ে যায় হিংসা, ক্রোধ আর লালসার বিষবাষ্পে তখন কবি আক্ষেপ করে বলে ওঠেন মা তুমি অন্ধ হয়ে যাও। নিজের সন্তানদের এ হেন জিঘাংসু রূপ দেখার আগে অন্ধ হয়ে যাওয়াই শ্রেয়।
স্বরূপ মণ্ডল (মার্চ ২০২০; bivar...@gmail...)
(পরবাস-৭৮, ৮ই এপ্রিল, ২০২০)