‘এনিথিং হেল্পস ম্যান’ এই বলে স্যান্ ডিয়েগোর বিদগ্ধ ভিখিরি এক
গ্যাসল্যাম্প ডিসট্রিক্ট আলো করে বসে থাকে ফুটপাথ জুড়ে।
এভাবে সে বসে আছে, রাজপথে টুপি পেতে অনেক শতাব্দী ধরে।
বলিরেখা জমে ওঠে প্রশস্ত কপালে তার,
যেভাবে জমতে থাকে বছরে একটি করে বৃত্তাকার দাগ
গাছের গুঁড়িতে, অরণ্যের নিবিড় বিস্তারে।
বারবার চেয়েছি তো আজকের ক্যালেন্ডারে দাগ রেখে যেতে;
পারিনি তা, জমে ওঠে ক্ষোভ,
মিশে যায় স্থান কাল, মিশে যায় কয়েকশ বছর
কবিতার শহরেতে যেরকম হয়, সেইভাবে।
জেনে যাই এ শহরে ভিখিরিরা জাদুকর;
সম্রাটের চেয়ে তারা ঢের বেশি শাসন সফল!
স্টার অফ ইন্ডিয়া বলে পরদেশি একটি জাহাজ
সদ্য নঙ্গর ফেলে।
আর সেই জাহাজের পালে
চাঁদের আলোয় দেখি পিছলে যায় দীর্ঘ ছায়া, প্রতীক্ষায় গণিকার সারি:
গ্যাসল্যাম্প ডিসট্রিক্ট কয়েকশ বছর আগে আচমকা জেগে উঠে,
আড়মোড়া ভাঙে বর্তমানে।
জাহাজের পাশে বুঝি ভেসে আছে অনতিপুরনো
সোভিয়েত সাবমেরিন: জনশূন্য, কৃষ্ণকায়, নাবিকেরা নিরুদ্দেশে গেছে
তীক্ষ্ণ ছুরির মতো জ্যোৎস্নার চমকানি এ ডুবোজাহাজে আজ, এইসব রহস্যের শেষে।
আমরা বন্দরে যাই চুপিসারে।
কোনও এক নিঃস্পৃহ হুইস্কি গার্ল
পিছুপিছু হেঁটে চলে আসে, আর
চুরুটের ধোঁয়া ছাড়ে আমার জামায়!
সম্রাট ভিখিরি তার রাজ্যজয়ের গল্প আমাকে শোনাবে বুঝি আজ এই রাতে।
খোলা টুপি পাতা আছে, ফুটপাথে; আগাম দিয়েছি দক্ষিণা:
বিদ্বেষ দাঙ্গা আর ঘৃণা,
এসব খুচরো গুলো অকাতরে ঢেলে দিই তাতে
(আহা আমি স্বদেশ প্রেমিক!)
তারপরে সারারাত আমি আর হাভানার চুরুটের গন্ধমাখা সেই এক হুইস্কি গার্ল
গল্প শুনি প্রজ্ঞাবান সে ভিখিরি সম্রাটের মুখোমুখি বসে:
(চেনা গল্প, শেয়ালের; কতবার শুনেছি যে আগে!)
‘এসবই ঘটছে আজকাল,
কাছেই সীমান্ত আছে; শেয়ালের বুড়ো বাপ সেখানে দিয়েছে এক দুরন্ত দেয়াল।’
(পরবাস-৭৮, ৮ই এপ্রিল, ২০২০)