নির্বিষ
মাজা ভেঙেচুরে দ'য়ের মতন,
বাঁকাচোরা মুখ হাসলে দেখায়
ভেঙচির মত।
দেখা হলে বলে নুয়ে পড়ে মাথা
আরো নুয়ে পড়ে, 'পেন্নাম হই',
বড় তদ্গত।
চোখের সঙ্গে মেলায় না চোখ
হয়তো সে ভয়ে, তোমার বোধহয়
হাসি পায় তাতে?
খয়েরি চোখের তারা মাখামাখি
জবজবে ত্রাসে, খড়কুটো ক'টি
সেঁটে আছে দাঁতে।
চোখাচোখি হলে চমকাও যদি,
স্থগিতই থাক; জানি না করবে
বিশ্বাস কিনা।
বশংবদের চোখের পুকুরে
ভয় থাকে ঠিকই, তবে তার সাথে
এক কুশি ঘৃণা।
বিসর্জন কাছেই যখন
ঢের হল উপার্জন, ভস্ম ছেনে রতনের খোঁজ।
বিদ্যা, বিত্ত, প্রতিপত্তি--সম্ভ্রম জাগানো তিন টিলা।
এবার মৃগয়া শেষ, খুলে নাও ধনুকের ছিলা।
সমুদ্র সমীপে সূর্য, এ প্রদোষ আসে কই রোজ?
উড়ে যায় শঙ্খচিল, দিকচক্রে রাত্রির শিবিকা,
ডানা মেলে দীর্ঘ ছায়া, দূরে ওই সন্ধ্যার আরতি।
রথচক্র গ্রাসে পথ, মহাকাল নিষ্ঠুর সারথি,
তারপরে চলা শেষ, অনিমেষ কৃষ্ণ যবনিকা।
নাম অনিমেষ
ঝিক ঝিক ঝিক
খেলনা গাড়ির
উপলশোভিত
পাহাড়ের পিঠ বেয়ে এঁকেবেঁকে
আরো উঠবার
পালা বুঝি শেষ।
এবার গাড়িরএতদিন শুধু
প্রহরে প্রহরে
পাশে এসে এসে
উঁকি দিয়ে গেছে
রূপোলি ঝর্না,
রূপকথা দেশ।
ঢাল বেয়ে বেয়ে
নামবার পালা।
সেতু পেরোলেই
ভারি চুপচাপ
শেষের স্টেশন,--
নাম অনিমেষ।
(পরবাস-৭৮, ৮ই এপ্রিল, ২০২০)