Subscribe to Magazines





পরবাসে উদয় চট্টোপাধ্যায়ের
আরো লেখা


ISSN 1563-8685




রসে, না সন্দেশে?

রসগোল্লার হেরিটেজ ট্যাগ বা পরম্পরাগত স্বীকৃতি পেতে বাংলা অর্থাৎ পশ্চিম বঙ্গ আর ওড়িশার মধ্যে টানাপোড়েন চলল বেশ কয়েক বছর। শেষ পর্যন্ত বাংলার দাবি স্বীকৃতি পেয়েছে, ওড়িশা জগন্নাথদেবের ভোগের রসগোল্লা-সদৃশ এক রসালো ছানার মিষ্টির হেরিটেজ ট্যাগ পেতে উদ্যোগী হয়েছে। আমাদের মতো মিষ্টান্ন রসিকদের কাছে অবশ্য আইনের এই কচকচি অর্থহীন। আমরা রসগোল্লার স্বাদ উপভোগ করব বাংলায় বসে, পুরী গেলে অবশ্যই জগন্নাথ দেবের ভোগ থেকে নিজেদের বঞ্চিত রাখব না, আর ফেরার সময় এক বাকসো ছেনাপড়া নিয়ে আসতে ভুলব না। ছেনাপড়া ওড়িশার একান্ত নিজস্ব – বাংলার সঙ্গে তার কোন দ্বন্দ্ব নেই।

তবে রসগোল্লা নিয়েই যখন আলোচনার সূত্রপাত তখন রসগোল্লা আবিষ্কারের ইতিবৃত্তের খোঁজখবর নেওয়া যেতেই পারে। কলকাতার বাগবাজারের নবীনচন্দ্র দাস ওরফে নবীন ময়রা এই অপূর্ব সৃষ্টির জন্য কিংবদন্তি হয়ে আছেন। শোনা যায় তিনি তাঁর ভিয়েনের প্রথম ফসল মালসা ভর্তি করে ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের কাছে নিয়ে গেছলেন, সঙ্গে ছিলেন রাজস্থানের বিকানীর থেকে আগত তাঁর এক সহকারী। রসগোল্লার রসাস্বাদন করে রসিকপ্রবর শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁদের আশীর্বাদ করেছিলেন, আর নবীনচন্দ্রের সেই সহকারীকে পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁর দেশে অর্থাৎ বিকানীরে ফিরে গিয়ে তিনি সেখানে যেন রসগোল্লার প্রচলন শুরু করেন। কাহিনিটি বিকানীরবাসী আমার এক সহকর্মী অধ্যাপকের কাছ থেকে শোনা, কাজেই এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহের বিশেষ অবকাশ নেই। তবে হিন্দি বলয়ে রসগোল্লা হয়ে গেছে ‘রস্‌গুল্লা’। তাতে কী হয়েছে! গোলাপকে যে নামেই ডাকো সে সুন্দর।

মনে রাখা দরকার ফুটন্ত দুধে অম্ল মিশিয়ে ছানা কাটানো উত্তর ভারতে ‘গুনাহ্‌’ বা পাপকর্ম বলে বিবেচিত হত। তাই দুধকে জ্বাল দিয়ে ঘন করে তার থেকে রাবড়ি ক্ষীর আর ক্ষীরজাত পেঁড়া বরফি কালাকাঁদ – এরাই হল উত্তর ভারতের ঐতিহ্যবাহী দুগ্ধজাত মিষ্টি। তার বাইরে রয়েছে নানা ধরনের লাড্ডু – দরবেশ, মতিচুর, মুগ, বাদাম, বেসন, মেওয়া – যাদের মধ্যে ক্ষীরের নামগন্ধ নেই। ছানা কাটানোর কৃতিত্ব বা অপকীর্তি সম্পূর্ণভাবে ভারতের পূর্ব ভূভাগের, এবং তারই ফলশ্রুতি নানা কিসিমের সন্দেশ এবং রসগোল্লা সমেত নানা ধরনের রসের মিষ্টি । খেজুর রস জ্বাল দিয়ে তার থেকে তাতারসি নলেন পাটালি সৃষ্টিতে মুগ্ধ হয়ে সত্যেন দত্ত সোচ্চার ঘোষণা করেছিলেন ‘আমরা আদিম সভ্য জাতি/ আমরা বাঙালি’। ছানা কাটানো এবং সেই ছানা দিয়ে মিষ্টির সৃষ্টি তাঁর নজর এড়িয়ে গেছল, যায় নি সৈয়দ মুজতবা আলির। তাঁর ‘পঞ্চতন্ত্রে’ নানা দেশের নানা চিত্তরঞ্জন খাবারের বর্ণনা দিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন খাবারের জগতে বাঙালির অবদান কী এবং নিজেই তার উত্তরে জানিয়েছিলেন অবদান অবশ্যই আছে, এবং তা হল মাছ ছানা আর বাঙালি বিধবার নিরামিষ রান্না ।

বাঙালির মিষ্টি বললেই কিন্তু টানাপোড়েন চলবে সন্দেশ আর রসের মিষ্টির মধ্যে। কোন্‌টা পাবে অগ্রাধিকার? এর কোন ফয়সালা নেই। ‘ভিন্নরুচির্হি লোকাঃ’ – মানুষের মধ্যে রুচিভেদ থাকবেই । তাই এটা ভোক্তার উপরেই ছেড়ে দেওয়া যাক। তবে আমার অভিজ্ঞতা বলে এ বিষয়ে অধিকাংশ ভোক্তার কোন কট্টর মনোভাব নেই। তাঁদের মনোভাব ‘দুধও খাব, তামুকও খাব’। দ্বন্দ্ব কীসের? হক কথা।

সন্দেশ অবশ্যই রসগোল্লার পূর্ববর্তী । তবে ঠিক কোন্‌ সময়ে এর আবির্ভাব সেটা সঠিকভাবে বলা মুশকিল। মনসামঙ্গল চণ্ডীমঙ্গলে সন্দেশের উল্লেখ নেই। পঞ্চদশ শতকের শেষভাগে রচিত মনসামঙ্গল কাব্যে বিজয়গুপ্ত চাঁদ সদাগর-গৃহিণী সনকার রন্ধনের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে শেষকালে জানাচ্ছেনঃ

মিষ্টান্ন অনেক রান্ধে নানাবিধ রস,
দুই তিন প্রকারের পিষ্টক পায়স।
দুগ্ধে দিয়া ভালোমতো রান্ধে ততক্ষণ,
রন্ধন করিয়া হৈল হরষিত মন।

এর একশো বছর পরে ষোড়শ শতকের শেষভাগে দ্বিজ বংশীদাস তাঁর মনসামঙ্গলে লিখছেনঃ

কত যত ব্যঞ্জন যে নাহি লেখাজোখা,
পরমান্ন পিষ্টক যে রান্ধিছে সনকা।
ঘৃতপোয়া চন্দ্রকাইট আর দুগ্ধপুলি
ডাইল বড়া ভাজিলেক ঘৃতের মিশালি।
জাতিপুলি ক্ষীরপুলি চিতলৌটি আর
মনোহরা রান্ধিলেক অনেক প্রকার।

দেখা যাচ্ছে সন্দেশ নেই রসগোল্লা নেই । আছে পিঠা, পুলি, পরমান্ন, ঘিয়ে-ভাজা ডালের বড়া – যার রসে ফেলা সংস্করণকে আমরা বলি রসবড়া – এবং ঘিয়ে-ভাজা মালপোয়া। দেখা যাচ্ছে ডালবড়া মালপোয়া ভাজা হয়েছে ঘিয়ে, তেল দিয়ে নয়। আমরা অবশ্য এগুলোর তেলে ভাজা সংস্করণেই সন্তুষ্ট। সন্তুষ্ট না-হয়ে উপায় কী! সে রামও নেই, সে অযোধ্যাও নেই। ছেলেবেলায় ছড়া শুনেছি –

কড়াতে চড়িলে ঘৃত
গন্ধে পাড়া আমোদিত,
না হইলে নিমন্ত্রিত
আপনি যেতে বাসনা।

এখন সব ঘি পরশুরামের ‘শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্ব্ররী লিমিটেডে’ বর্ণিত ‘ঘই’-- পাড়া আমোদিত করার এলেম তার নেই। তবে যা জোটে তাতেই খুশি থাকা উচিত। ‘তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জীথা/ মা গৃধঃ কস্যস্বিৎ ধনম্‌’— ঈশ উপনিষদের গোড়াতেই যা বলা হয়েছে। বালক অশ্বত্থামাও তো পিটুলিগোলাকে সরলবিশ্বাসে দুধ ভেবে খেয়ে সন্তুষ্ট ছিল। অজ্ঞতা কখনো কখনো আশীর্বাদ। তবে ঘিয়ে-ভাজা মালপোয়া – দ্বিজ বংশীদাস যেটাকে ‘ঘৃত পোয়া’ বলেছেন – ‘ঘিপোয়া’ নামে কলকাতার বউবাজারে কোন কোন মিষ্টির দোকানে এখনও পাওয়া যায় দোলের সময়ে সীমিত দু চার দিন । আগ্রহী জনেরা সন্ধান নিতে পারেন।

আনুষ্ঠানিক ভোজনের শেষ পদে মিষ্টি হিসাবে পরমান্ন পরিবেশনই ছিল দস্তুর—‘মধুরেণ সমাপয়েৎ’। আমার ছোটোবেলায় গ্রামদেশে বাড়ির অনুষ্ঠানে আখের গুড়ের পায়েস ছিল আবশ্যিক পদ, এখন আর হয় না। তবে এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে তামিলনাড়ু – সেখানে মকর সংক্রান্তির পোঙ্গল পরবে ‘পোঙ্গল’ই মুখ্য পদ, এবং সেটা আখের গুড়ের পায়েস।

ষোড়শ শতাব্দীতে রচিত আর এক মঙ্গলকাব্য ‘চণ্ডীমঙ্গলে’ কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তী খুল্লনার রন্ধন আয়োজনের বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, মিষ্টির তালিকা সংক্ষিপ্তঃ

           ক্ষীর রান্ধে জ্বাল করি ভাঁটি,
কলাবড়া মুগসাউলি        ক্ষীরমোয়া ক্ষীরপুলি
           নানা পিঠা রান্ধে অবশেষে।

সন্দেশের উল্লেখ পাওয়া যাচ্ছে গোস্বামী কৃষ্ণদাস কবিরাজ রচিত ‘চৈতন্য চরিতামৃতে’, যার সম্ভাব্য রচনাকাল ১৬১৬ সাল অর্থাৎ সপ্তদশ শতকের গোড়ায় । শ্রীক্ষেত্রে সার্বভৌম ভট্টাচার্যের গৃহে চৈতন্য মহাপ্রভু নিমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলেন। ভট্টাচার্য গৃহিণী পঞ্চাশ ব্যঞ্জনের সাথে যে মিষ্টপদের আয়োজন করেছিলেন তার বর্ণনা দিতে গিয়ে কবিরাজ জানাচ্ছেনঃ

মুদ্‌গবড়া মাসবড়া কলবড়া মিষ্ট
ক্ষীরপুলি নারিকেল পুলি আর পিষ্ট।
কাঞ্জীবড়া দুগ্ধচিড়া দুগ্ধ লকলকি
আর যত পিঠা কৈল কহিতে না সকি।
ঘৃতসিক্ত পরমান্ন মৃৎকুণ্ডিকা ভরি,
চাঁপাকলা ঘনদুগ্ধ আম্র তার পরি।
রসালা মথিত দধি সন্দেশ অপার,
গৌড়ে উৎকলে যত ভক্ষ্যের প্রকার।

কৃত্তিবাসী রামায়ণে রাজা জনকের কন্যার বিবাহের আহার্য তালিকায় রয়েছে –

ভারে ভারে দধি দুগ্ধ ভারে ভারে কলা,
ভারে ভারে ক্ষীর ঘৃত শর্করা উজলা।
সন্দেশের ভার লয়ে গেল ভারিগণ,
অধিবাস করিবারে চলেন ব্রাহ্মণ।

তবে বিদ্বজ্জনের অভিমত সেই সব সন্দেশ ছিল নেহাতই চিনির মণ্ডা, কেন না মনুর বিধান অনুসারে দুধ কাটিয়ে তৈরী ছানা অন্ততপক্ষে ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদের কাছে অভক্ষ্যই ছিল। এখানে বলা প্রয়োজন কৃত্তিবাসের জন্মসময় নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। সুকুমার সেনের মতে প্রাচীনতম রামায়ণ পুঁথিটি সপ্তদশ শতাব্দীর শেষভাগের আগেকার নয়।

নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে ছানা চিনির পাকে বর্তমান চেহারার সন্দেশ জন্ম নিল। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে হুগলি জেলা সন্দেশের জন্য সারা বাংলায় খ্যাতিলাভ করেছে – জনাইয়ের মনোহরা, চন্দননগরের তালশাঁস, শ্রীরামপুরের গুপো সন্দেশ। সেই জেলা থেকে আসা মহেশচন্দ্র দে কলকাতাবাসীকে সন্দেশে আসক্ত করলেন। তাঁরই পুত্র কড়াপাক সন্দেশের আবিষ্কর্তা স্বনামধন্য গিরিশচন্দ্র দে। নাটোরের বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা নরম পাকের সন্দেশ – খুব মিষ্টি নয়, দানা জিভে লাগে। তারই এক সংস্করণ হুগলি সন্নিহিত বর্ধমান জেলায় ‘মাকা সন্দেশ’ নামে পরিচিত, এবং সেটি অতি উপাদেয় এক মিষ্টান্ন ।

উপাদানের তারতম্যে, নানা গন্ধ আর বর্ণের মিশ্রণে সন্দেশ এখন বৈচিত্র্যময়। তবে কিছু কিছু রসিকজনের কাছে যথাযথ অনুপাতে মিশ্রিত ছানা চিনি যথাযথ আঁচে এবং যথাযথ নৈপুণ্যে তৈরি হলে যে পদার্থের সৃষ্টি হয় তার স্বাদ অনবদ্য – অন্য কিছুর সংযোজন বাহুল্যমাত্র । সন্দেশ প্রসঙ্গে বলতেই হয় যে সন্দেশ শব্দটির আদি অর্থ সংবাদ বা বার্তা । সুসংবাদ লোক মারফৎ পাঠানোর সময় সঙ্গে থাকত মিষ্টান্ন। ক্রমে সেই মিষ্টান্নই সন্দেশকে তার আদি অর্থ থেকে স্থানচ্যুত করে নিজেই সমাসীন হয়েছে। এই মেটামরফসিসকে রবীন্দ্রনাথ বর্ণনা করেছেনঃ ‘সন্দেশ বাংলাদেশে বাজীমাত করেছে। যা ছিল খবর, বাংলাদেশ তাকেই সাকার বানিয়ে করে দিল খাবার’ ।

রসের মিষ্টিতেও বিবর্তন কিছু কম হয় নি। এসেছে স্পঞ্জ রসগোল্লা – মুখের মধ্যে ভরে একটু চাপ দিলেই যা চুপসে যায় আর তার পাতলা রস সারা মুখের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। রসগোল্লার আকার বাড়িয়ে দিয়ে সৃষ্টি হয়েছে রাজভোগের, কমলালেবুর রং এবং গন্ধের কমলাভোগ, একটু সুগন্ধি মিশ্রিত ক্ষীরের স্বাদের গোপালভোগ, আর পাতলা ক্ষীরের মধ্যে ছোটো ছোটো সাইজের রসগোল্লাকে হাবুডুবু খাইয়ে রসমালাই। কড়া পাকের রসগোল্লার উপর চিনি ছড়িয়ে হয়েছে দানাদার – যার বাইরেটা শুকনো, অন্তর রসালো। চিনির বদলে ক্ষীরের প্রলেপ দিয়ে রসকদম্ব – মালদা গেলে দেখা যাবে ক্ষীরের প্রলেপের উপর পোস্তদানা – দেখতে একেবারে কদম ফুল। কড়া পাকের রসগোল্লাকে লম্বাকৃতি করে এবং আর একটু রসালো করে তৈরি হয়েছে চমচম, গজার মতো চৌকো আকৃতি দিয়ে ছানার গজা -- সেটাকেই ছোটো আকার দিয়ে ছানার মুড়কি, দুধে ফোটালে যা ছানার পায়েস।

বাঙালি মিষ্টান্নশিল্পীরা এখানেই থেমে থাকেন নি। ছানার গোল্লাকে ঘিয়ে (পরে, বনস্পতি তেলে) ভেজে আর রসে ফুটিয়ে তৈরি করেছেন পানতুয়া, যেটা উত্তর ভারতে গুলাব্‌জামুন আখ্যা পেয়েছে, ভারতের ইংরেজ বড়লাট লর্ড চার্লস জন ক্যানিং-এর স্ত্রী লেডি শার্লট ক্যানিং-এর পাতে একদা যা লেডিকেনি নামে পরিবেশিত হয়েছিল। এককালে রানাঘাটের পানতুয়ার বিশেষ নামডাক ছিল। সেই পানতুয়ার আকৃতি গোলাকার নয়, লম্বাটে। তারই নধর এবং একটু কড়া করে ভাজা সংস্করণ হল ল্যাংচা – দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে যাবার সময় শক্তিগড়ে একটু দাঁড়িয়ে যার স্বাদ না-নিয়েছেন এমন পথিক বিরল । শোনা যায় এর আদি কারিগরকে বর্ধমানের মহারাজা কৃষ্ণনগর থেকে নিয়ে এসে জমিজমা দিয়ে শক্তিগড়ে বসিয়েছিলেন। কারণ ছিল কৃষ্ণনগর থেকে আগত তাঁর পুত্রবধূর ওই বিশেষ মিষ্টির জন্য বিশেষ আকর্ষণ। সেই কারিগর খঞ্জ হওয়ার দরুন মিষ্টির এই নামকরণ।

বর্ণিত সন্দেশ আর রসের মিষ্টির বাইরে যারা রয়ে গেল তারা কেউই ব্রাত্য নয়, বরং সকলেই স্বমহিমায় বিরাজমান। এদের মধ্যে রয়েছে বর্ধমানের মিহিদানা সীতাভোগ, জয়নগরের মোয়া, ঢাকার অমৃতি, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, খাগড়ার ছানাবড়া, নৈহাটির গজা, কৃষ্ণনগরের সরভাজা আর সরপুরিয়া এবং আরও অনেকে। এদের সবার বর্ণনা দিতে গেলে মহাভারত না-হোক একটা হৃষ্টপুষ্ট বই হয়ে যাবে। সুতরাং, অলমিতি বিস্তারেণ।

তথ্য স্বীকারঃ

১। মধ্যযুগে বাঙ্গালা – কালীপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায় (দেজ্‌)

২। বাংলার সাহিত্য-ইতিহাস – সুকুমার সেন (সাহিত্য অকাদেমি)

৩। বাঙালির খাওয়াদাওয়া – শংকর (সাহিত্যম্‌)

৪। বাঙালীর রসনাবিলাস – দেবী ঘোষ (বেস্ট বুক্‌স্‌)

৫। বাঙালিয়ানা – নারায়ণ সান্যাল (করুণা প্রকাশনী)



(পরবাস-৮২, ১৪ এপ্রিল, ২০২১)



অলংকরণঃ অনন্যা দাশ