পুকুরপাড়ে ছিল তোমার বাড়ি
জানালা ধরে দাঁড়াতে অবহেলে
বারান্দাতে শুকোতে ভিজে শাড়ি
উড়তো মন পাখির ডানা মেলে
গলির মোড়ে চায়ের কাপে মুখ
ডুবিয়ে দিয়ে প্রতীক্ষাতে থাকি
কখন যাবে কলেজে, কাঁপে বুক
আকাশে ডানা মেলতো সুখ পাখি
রাস্তা মুড়ে দিতাম কার্পেটে
থাক না পায়ে তোমার দামি জুতো
শরীরী ঘ্রাণ ছডিয়ে দিয়ে যেতে
মৃদু সুবাস আমাকে এসে ছুঁতো
রাঙানো ঠোঁট বাজাতো বুকে ড্রাম
সুরেলা চুড়ি শোনাতো রিনিঝিনি
তখনও বুকে জাগেনি বুনো কাম
এখন আমি যেভাবে তাকে চিনি
এখন আমি যাই না সেই মোড়ে
শূন্য পড়ে থাকে চায়ের কাপ
আকাশে শুধু বিষাদ পাখি ওড়ে
শরীরে মনে ঘনায় এসে পাপ
পুকুরপাড়ে থাকো না তুমি আর
রাস্তা পোড়ে রোদের খর আঁচে
দিনের শেষে ছায় অন্ধকার
কিভাবে আমি যাবো তোমার কাছে
সুখের সেই পাখির ডানা ছেঁটে
ভল্টে সোনা, ব্যাংকে টাকা কাঁড়ি
জমাতে থাকি, তবু কি তাতে মেটে
পিপাসা, তুমি সরালে দূরে বাড়ি
সারা জীবন খোঁজাই জানি রীতি
জেনেও তবু এখনও নাড়ি চাড়ি
পুরোনো সেই দিনের সুখস্মৃতি
পুকুরপাড়ে ছিল তোমার বাড়ি।
(পরবাস-৮২, ১৪ এপ্রিল, ২০২১)