মেয়ে
তার জীবন তাকে বেঁধে রেখেছে না পাওয়ার উঠোনে
না চাওয়ার আঙিনায়
তার বন্ধুত্বের দাবিদারেরা
ঋণশোধ না করেই চলে গেছে প্রমোদভ্রমণে
তার প্রতারক প্রেমিক
রোদের মত শুষে নিয়েছে তার সমস্ত সারল্য
এইবার, রাত ঘন হলে
তার পাশে এসে বসবে স্বপ্নেরা
তাদের শিশিরভেজা শরীর নিয়ে
আর অসহ্য অন্ধকারে,
সে আবারও উড়ে যাবে—বেহায়া জোনাকির মত।
সপ্রশ্ন
যে মেয়ে
তোমার বুকে মাথা রেখে কেঁদেছিল আলুথালু,
আর তোমায় পুড়িয়ে দিয়েছিল
তার বুকের ডৌলে আঁকা বিঘ্নকারী তিল
যে মেয়ে
তোমার সকল দুঃখপ্রহর আলো করে
তার পিদ্দিমের সলতেয় গেঁথে নিয়েছিল সস্নেহে,
আর নিজের জন্য রেখেছিল ব্যথাটুকু, জ্বালাটুকু—
যে মেয়ে
তোমার দোরগোড়া পেরিয়ে যেতে যেতে
নিঃস্বতায় নির্বিকার
অভিমানে ছুঁড়ে ফেলে দিল ভিক্ষামুষ্টি...
তাকে বলেছিলে তো, ভালোবাসো?
গল্প
জানলার ফাঁক দিয়ে একটা হাত দেখা যাচ্ছিল শুধু,
কাপড়ে ফোঁড় তুলছিল হাতটা।
রুক্ষ আঙুলে কত বঁটির দাগ, কত সাবানজলের ঘষা
ছুঁচটা সামান্য ভোঁতা, কাপড়ে বিঁধোতে জোর লাগছিল বেশ
আর হলদেটে সুতো
নিজস্ব চলাচলে আস্তে আস্তে ঢেকে ফেলছিল
হলুদ ব্লাউজের সেলাই খোলা ফাটা অংশ
লজ্জার আড়াল
আব্রু
আর
জানলার মুখোমুখি, অন্য প্রান্তে সে দাঁড়িয়েছিল সকাতর,
যার এই দিনযাপনে কোনো ভূমিকা নেই, কোনো ভূমিকা থাকতে নেই,
তবু যে না এসেও পারে না—
আর
জানলার পাল্লায়
পড়ন্ত রোদের মত লুটোপুটি ঝরে যাচ্ছিল
তাদের দুজনের সমস্ত বেয়াদব বে-আব্রু ইচ্ছেরা...
(পরবাস-৮২, ১৪ এপ্রিল, ২০২১)