তিন মাস আগে যখন পরবাস-৭৮ প্রকাশিত হল তখন কোনো সুস্পষ্ট ধারণা ছিল না এখন করোনার প্রভাবে পৃথিবীর
বিভিন্ন দেশ ও জায়গার অবস্থা কেমন দাঁড়াবে। এই তিন মাস যেন কত বিশাল এক সময়!
আশংকা ছিল নানারকম, দুঃখের কথা তার মধ্যে বেশ কয়েকটা সত্যে পরিণত হয়েছে। কিন্তু
প্রতিটি নাগরিক যদি অন্য লোকের সান্নিধ্যে মাস্ক পরার মতো সহজ কাজটিও ভালোভাবে করে উঠতে না পারেন তো শুধু
নেতাদের দোষ দিয়েও লাভ নেই।
'পথের আলো'-র ও অন্যান্য বন্ধুদের সহযোগিতায় পরবাসের পক্ষ থেকে রাজীব চক্রবর্তী 'লক ডাউনের' একদম প্রথমদিকে যখন খাদ্যবন্টন ব্যবস্থা ঠিকমতো গড়ে ওঠেনি কয়েকবার অনেক দুঃস্থদের চাল-আলু ইত্যাদি বিতরণ করেছিলেন, কিন্তু তার পরে এল বিধ্বংসী সাইক্লোন আমফান। তাতে 'পথের আলো'-র ঘরের টিনের ছাদ উড়ে যায়, এবং তার সঙ্গে করোনার প্রকোপ ও অন্যান্য অসুবিধার জন্যে খাদ্যবিতরণ প্রকল্প আপাতত স্থগিত, এই মুহূর্তে তার বোধহয় দরকারও নেই রেশন ব্যবস্থা কার্যকরী হওয়ায়। তবে 'এড হক বেসিস-এ' রুজি-রোজগার একেবারে বন্ধ ও অন্য কোনো আর্থিক সংস্থান নেই, এমন (খুব অল্পসংখ্যক) কিছু পরিবারকে যাহোক করে সাহায্য করা হচ্ছে যতটা সম্ভব। পরবাসের বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেক ধন্যবাদ তাঁদের।
কৌতূহলী পাঠক মাত্রই কয়েকটা সংখ্যার চিঠিপত্র বিভাগটিকে ভালোভাবে দেখলেই বুঝতে পারবেন যে অনেক চিঠিই, অধিকাংশই বলা যায়, ফেসবুকের 'লাইক'-এর সমতুল্য ও মূল্যেও তার চেয়ে বেশি নয়। এসব চিঠি ছাপিয়ে মনে হয় না লেখক বা সাধারণ পাঠক কারুরই বিশেষ উপকার হচ্ছে। অন্যদিকে, লেখার উপরে বিশদ আলোচনা সকলেরই ভালো লাগে, যেটার জন্যেই এই বিভাগটি। যতদিন না এর উপযুক্ত সমাধান পাওয়া যায় অনুরোধ করব যে কেবলমাত্র লেখকের প্রতি 'সামাজিক কর্তব্যবোধ' প্রকাশ করার জন্যে চিঠি না দিলেও চলবে।
সুখের কথা এই সংখ্যায় বেশ কিছু নতুন লেখকের লেখা থাকছে। পরবাসের তেইশ বছর সম্পূর্ণ হল। এবারে মনে হচ্ছে নতুনদের হাতে পরবাস-এর ভার তুলে দেবার সময় হয়ে এসেছে।
সবাই দয়া করে যথাসম্ভব সতর্ক হন এবং সুস্থ থাকুন। আর হ্যাঁ, মাস্ক ও পারলে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং!--যতদিন না বিজ্ঞানীরা আরো ভালো কোনো পন্থা বাতলে দেন।
(পরবাস-৭৯, ৯ জুলাই, ২০২০)