১
আমার খাতার নাম মহাকাল
বিধবা সফেদ নয়
পৃষ্ঠার রঙ টকটকে লাল
কলম আঁচড় দাগে
বড়ো সুড়সুড়ি লাগে
লিখে রাখি অনুক্ত গালাগাল
আমার কলম নাম রাজনীতি
নীতির রাজত্ব নয়
সন্ত্রাসবাদী তার পরিচিতি
কালি আঁকে পৃষ্ঠায়
আলপনা বিষ্ঠায়
ধর্ষণ হত্যা ও লুঠ স্মৃতি
আমার কালির নাম পিঠটান
ধর্মে সরীসৃপ
না হিন্দু মুসলিম খৃষ্টান
গোপন মারণবিষ
ফণাজিভ নিশপিশ
কখন হঠাৎ দেবে ভিত টান
২
আমার জয়ের নাম মারীচার্তনাদ
অন্য কারো নির্ঘাৎ তবে পরাজয়
তাই যদি হয়
নবজাত শত্রুপক্ষ
প্রতিহিংসা হবে লক্ষ্য
নখে বাড়বে ধার আর জিভে রক্তস্বাদ
ধ্বংসের মুখোমুখি বিবর্তনবাদ
দেখলে সেদিক থেকে মারীচও তো শেষাবধি জয়ী
বিনয় বাদল আর দীনেশ যেমন এই ত্রয়ী
আমার সটান প্রশ্ন –
জয়-পরাজয়টয় নয়
সত্য না ভণ্ডসত্য – কোনদিকে তুমি
সভ্যতার কেটে যাক ভয়
আর্তনাদটাদ ধুয়ে হোক
আমার জয়ের নাম বৃষ্টিমৌসুমি
৩
আমার যা কিছু পরাজয়
নশ্বর এ জীবনময়
তাদের সমষ্টিগত নাম সর্বজয়া
কারণ প্রতিটি হারে
খুলে গেছে বারেবারে
জয়ের দরজা নয়া নয়া
দরজায় সাঁটা নেমপ্লেট
শুধু নাম – পদবিবিহীন
আইহোলে দিনরাত
চোখ রেখে প্রাণপাত
অপেক্ষায় প্রোলেতারিয়েত
আমার অপেক্ষার নাম উল্লাস
অক্সিজেনমৃত এই বাতাসেই নিয়ে যাচ্ছি শ্বাস।
৪
কী নাম আমার কবিতার?
চুমু নাকি মৃতসঞ্জীবন –
এ নিয়ে আবাল্য আমি দ্বিধা পেন্ডুলাম
ইতিমধ্যে পানুবই টপকে হাতে এসে গেলো অস্ত্রভস্কি
রাতভর বৃষ্টির আগেই আমার পড়ার ঘরে ঢুকে
চেয়ারটা টেনে জানলায় পা তুলে বসলেন
উশকোখুশকো সুভাষ
ব্যাস, ঘেঁটে ঘ
ফিসফিসে সময় বললো – টিকটিক -
এখন আমার ঘড়ির নাম টিকটিকি
নাকি টিকটিকির নাম ঘড়ি?
অবুঝ কাঁপা হাতে সিলিঙকোণে ঝুলঝাড়ু বাগিয়ে
আর কোনো দ্বিধা নেই, কারণ
ইতিমধ্যে আমার কবিতার নাম সর্বনাশ
কিন্তু কার?
আমার না পাঠকের?
নাকি এই দমবন্ধ হেঁপোরুগি সভ্যতার?
সময় বলুক টিকটিক শব্দের মানে
(পরবাস-৭৭, ১০ জানুয়ারি ২০২০)