খুব শীঘ্রই আমার জাতীয় দলে নাম উঠবে বলে খবর পেয়েছি। আর হবে না-ই বা কেন? এত দিনরাত পরিশ্রম করছি। ব্যাডমিন্টনে এখন হাত আমার বেশ পাকা হয়ে গেছে। তবে আমি নিজেও ব্যাপারটা নিয়ে আগে ভাবিনি, ভাবলে হয়ত আরো অনেক আগেই চেষ্টা করতাম। আর, আরো আগে জাতীয় দলে ঢোকা মানে আরও বেশি নাম, আরও বেশি অর্থ। আমার ক্ষেত্রে একটু বেশিই দেরি হয়ে গেছে। তবে হ্যাঁ লোকে বলে, আলী সাহেবের কথায় ‘দের আয়েদ, দুরুস্ত আয়েদ’ এছাড়া বাংলায় বলে, ‘সবুরে মেওয়া ফলে’ কিংবা হিন্দীতে ‘সবর কা ফল মিঠা হোতা হ্যায়’ আবার বিদেশী ইংরেজিতেও বলে, ’বেটার লেট দ্যান নেভার’। তা যাক বাবা, দেরি হোক আর যাই হোক নাম যে উঠতে চলেছে, অর্থাৎ বিখ্যাত হতে আর যে বেশি দেরি নেই সে তো বুঝতেই পারছি। কিন্তু এত আনন্দের মুখে মনটা কেমন যেন খিঁচ মেরে আছে। ঠিক আনন্দটা পুরোপুরি বেশ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতে পারছি না। ওই খেতে খেতে গলায় মাছের কাঁটা ফুটলে বা ফুটে থাকলে যেমন হয় আর কি—সবই ঠিকঠাক চলছে তবুও সব সময়ই মনে খচখচ করে বিঁধছে। ব্যাপারটা হল কি মাত্র কদিন আগে পরপর, মা আগে তারপর বাবা স্বর্গযাত্রা করলেন। একটু বেশি পরিণত বয়সেই গেছেন। তাই সেইভাবে বলতে গেলে দুঃখ করার মত কিছু নেই। তবু মা-বাবার অপূর্ণ আশা থাকলে ছেলেমেয়ের একটু দুঃখ হয় বৈ কি। মারা যাবার কদিন আগেও বাবা বলছিলেন, দুঃখটা আমার এ জন্মে রয়েই গেল রে, তুই একমাত্র ছেলে—তোর ওপর কত আশা করেছিলাম—একটা নাম রেখে যাবি, অন্ততঃ বিখ্যাত কিছু একটা হবি। বড় ডাক্তার-ইঞ্জিনীয়ার-উকিল নিদেন একটা বড় খেলোয়াড়ও যদি হতিস, মরার আগে জেনে গেলে এতটা দুঃখ নিয়ে যেতে হত না।
আসলে বাবা নিজেও তো বড় কিছু ছিলেন না। তাঁর ছেলেও তাই তেমন কিছু হয় নি--কেরানির ছেলে কেরানি। একেবারে বাপ কা ব্যাটা। তবে যদি আর কটা দিন বাঁচতেন, দেখে যেতে পারতেন চাকরিসূত্রে কেরানি হলেও ছেলে অন্য ব্যাপারে নাম করতে চলেছে। আর আজকাল খেলাতেও যে প্রচুর নামডাক প্রচুর পয়সা, মিডিয়ার লোফালুফি, চাই কি এর থেকেই কপাল খুললে, একটা মন্ত্রীত্ব জুটে যাওয়াও আশ্চর্যের কিছু নয়। অনেকেরই তো এমন হয় আকছারই আজকাল। আর যদি একবার কপালগুণে মন্ত্রী হওয়া যায়, তখন আর পায় কে। আর তাছাড়া মন্ত্রীত্বের তো কোন বয়স নেই—মানে এতে একটু বেশি বয়স হলেও তো আর আটকাচ্ছে না কোথাও। বরং বেশি বয়স হলে একটু ভারিক্কি আর ওজনদার লাগবে। আসলে বয়সটা মানে জীবনের সবুজ অংশটাই চলে গেল চাকরি মানে চাকরগিরি করতে। আজ ভাবি, একটু আগে যদি এই দিকটাতে মন দিতে পারতাম, হায় হায়। আর হবেই বা কি করে! বাবা তো পড়া ছাড়া আর কোন দিকে যাতে মন না যায় তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টায় সব দিক আটকে রেখেছিলেন।
আবার নিজেকে নিজেই সান্ত্বনা দিই, গতস্য শোচনা নাস্তি। যাই হোক বাবা, দেরি হোক আর যাই হোক, হলেই হল। পৃথিবীর ইতিহাসে তো জীবনের শেষদিকে সাফল্যের মুখ দেখেছেন এমন অনেকেই আছেন, সে কে এফ সি কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা থেকে শূরু করে চার্লস ডারউইন কিংবা হেনরী ফোরড--আরও বহু আছেন। সে দিক থেকে দেখতে গেলে আমার বয়স আর এমন কি। রিটায়ার করে তবেই না এমন সময় পেলাম—এত নিবিষ্ট মনে খেলাটা প্র্যাক্টিস করতে পারলাম। এখন তো গিন্নি নিজেই র্যাকেটটা নিয়ে হাসিমুখে এগিয়ে দেন, নাও তোমার প্র্যাক্টিস শুরু করো। আমিও নেমে পড়ি খেলার মাঠে।
অবশ্য আমি খেলায় মেতে থাকলে ওনারও কিছু সুবিধা আছে। এই তো সেদিন শুনছিলাম, পাশের বাড়ির দত্ত বৌদির সাথে কথা হচ্ছে--
দত্ত বৌদি দুঃখ করে বলছেন, আর বলবেন না দিদি, কর্তা রিটায়ার করে আমার হয়েছে যন্ত্রণা--বসে বসে কেবল আমার ওপর চায়ের ফরমাস থেকে থেকে, আর পান থেকে চুন খসলো কি আমার ওপর চোটপাট, ঝগড়াঝাঁটি। নিত্য অশান্তি লেগেই আছে। এর থেকে মানুষটা যখন অফিসে ছিল আনন্দে ছিলাম। রিটায়ার করে বাড়ি আসবে ভেবে কত আনন্দে ছিলাম যে, এবার দুজনে বসে একটু সুখ-দুঃখের গল্প করব আর এখানে ওখানে বেড়াতে যাব। কত স্বপ্নই দেখেছিলাম দিদি, তা সে আশায় ছাই। আমার গিন্নি তখন মুচকি হেসে বললেন, সে যদি বলেন, আমার উনি তো দিন রাত র্যাকেট নিয়ে সমানে প্র্যাকটিস করে যাচ্ছেন—আমার সঙ্গে ঝগড়া করবেন তার সময় কোথা। ভালোই হয়েছে দিদি, উনি তবু রিটায়ার করে বসে না থেকে একটা জিনিষ নিয়ে মেতে আছেন—ভালোই আছি। এটা ওনার স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভাল, আর মনের দিক থেকেও। ডাক্তার তো বলছিলেন এই বয়সে চুপচাপ ঘরে বসে না থেকে কিছু কাজ করা ভাল। আমি তো প্রতি মাসেই দুজনেরই সুগার প্রেসার সব পরীক্ষা করাই। সব এক্কেবারে ঠিক—ডাক্তারবাবু তো পরীক্ষার রেজাল্ট দেখে খুব খুশী। বলেছেন, দাদা এই বয়সে আপনি যে ভাবে শরীর ফিট রেখেছেন তাতে একশ বছর আপনি হাসতে হাসতে পার করে দেবেন।
গিন্নীর মুখে সুখী মানুষের ছবি দেখে উৎসাহ বেড়ে ওঠে আমার।
সত্যি কথা বলব কি এখন আমার আর কোন ব্যায়াম করতে লাগে না, খিদে বেড়ে গেছে অনেক, আগে যে অল্প কিছু এধার ওধার খেলেই অম্বল গ্যাস বুকজ্বালা ছিল, কত ডাক্তার দেখিয়েছি, কিছুতেই সারেনি—তা সে-সব এক্কেবারে ফুসমন্তরে উধাও। হাতে পায়ে কোন ব্যথা নেই। ছাদের সিঁড়ি দিনে যে কতবার ওঠানামা করছি তার ঠিক নেই। তবে এ সবের যিনি আসল কৃতিত্বের দাবীদার তিনি আমার দাদা।
আমার যেদিন রিটায়ার হল, তার পরের জন্মদিনেই দাদা এল একটা র্যাকেট হাতে। এনে বলল, নে এখন তো অনেক সময় পাবি। এটা তোর কাজে দেবে। দাদা হয়ত দেবার সময় এত বিরাট কিছু ভাবে নি। কিন্তু আমি মোটেই জিনিষটা প্রথম থেকেই সহজ ভাবে নিই নি। সেটা কাউকে বুঝতে দিই নি। তবে উন্নতি যে এই হারে হবে সে ধারণাটা আগে আমিও করতে পারি নি। এখন বুঝেছি চীন কোরিয়া সব কেন ব্যাডমিন্টন বা টেবিল টেনিসে এত উন্নত। আসলে এই র্যাকেটটা চীনের তৈরি। যে দেশ এমন র্যাকেট তৈরি করে বিশ্বের বাজারে ছেড়েছে তারা নিজেরা কি আর সেগুলো প্র্যাকটিস না করে! আমার মত সবাই যদি এরকম প্র্যাকটিস করত বা ব্যাপারটা একটু সিরিয়াসলি নিত তাহলে আমাদের দেশও নিশ্চয়, অলিম্পিক যদি নাও হয়, এশিয়ান গেমস থেকেও বেশ কিছু পদক আনতে পারত। আমি যদি এই বয়সে জাতীয় দলে যাবার যোগ্যতা অর্জন করতে পারি তাহলে কমবয়সী ছেলেগুলো কত কিই না করতে পারত। (না এখনও, পেরেছি একথা জোর দিয়ে বলব না; তবে পাবার সম্ভাবনা তো আছে!)
এর পরে আমি আমার কৃতিত্বের জন্য যাঁর কাছে সব চেয়ে বেশি ঋণী তাঁর কথা না বললে অন্যায় হয়। তিনি হলেন, না তিনি বলাটা ঠিক হবে না, কারণ একজন নন, অনেকেই এই কৃতিত্বের দাবীদার। নাম করতে গেলে অনেকের নামই বলতে হয়, যেমন, স্থানীয় পৌরসভার চেয়ারম্যান, পাড়ার এবং আশেপাশের সম্মানীয় প্রোমোটারবৃন্দ, অঞ্চলের সম্মানীয় এম এল এ মহাশয় এবং সমস্ত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ---
না, না, এঁরা আমায় চোরা পথে জাতীয় দলে নাম তোলাতে সাহায্য করেন নি, তাহলে আমি তো সাহস করে এত কথা প্রকাশ্যে বলতামই না। চুপি চুপি চেপে যেতাম, যেমন অন্যান্য অনেক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিখ্যাত মানুষজন করে থকেন। রাজনৈতিক দাদা মামা সহায় থাকলে তিলকে তাল করা বা দিনে তারা দেখানো আজকাল কোন ব্যাপারই নয়, সেটা সবাই জানেন। এঁরা সবাই আমায় প্রত্যক্ষ নয় পরোক্ষে প্রচণ্ড সাহায্য করেছেন। তবে সে কথা হয়ত ওনারা নিজেরাও জানেন না যে আমার এই সার্থকতার পিছনে ওনাদের এত অবদান আছে।
তবে আসল কথাটা বলি। আসল কারণ, মশা—হ্যাঁ মশায়, বড় বড় চড়ুই পাখির মত, দিনে রাতে, ডেঁয়ো পিঁপড়ের মত, কালো কালো মশা-ই আমার এই সার্থকতার আসল কারণ।
ব্যাপারটা পরিষ্কার হল না তো? হওয়া সম্ভবও নয়। আমি নিজেই তো প্রথমে ভাবতে পারিনি।
যাক আর একটু খোলসা করেই বলি।
যতদিন অফিস করেছি, নাকে মুখে গুঁজে সকাল আটটায় বেরিয়ে আটটা পঁচিশের লোকালে ঝুলতে ঝুলতে শিয়ালদা—সেখান থেকে হেঁটে বিবাদীবাগ। তারপর একবার অফিসে ঢুকে পড়তে পারলেই ব্যস—সারাদিন এ সি ঘরের মধ্যে কোথায় দিয়ে দিন কেটে যেত টেরই পেতাম না। তারপর রাতে ঝিমোতে ঝিমোতে বাড়ি ফিরে দুটি খেয়ে নিয়ে মশা মারা ধুপ জ্বেলে ঘরে ঢুকে ঘুম। ব্যস আবার পরদিন সকাল এবং সেই একই চক্র।
কিন্তু যেই রিটায়ার করলাম, সারাদিন বাড়িতে থাকা। তখন বাড়িতে থাকার বাস্তব অভিজ্ঞতা হল। হাড়ে হাড়ে টের পেলাম যে বাস্তব কত রূঢ়। একেবারে হাড়ের মধ্যের যন্ত্রণা নিয়ে। ডাইনে বাঁয়ে সকাল সন্ধে শুধু লতা মঙ্গেশকর গান শুনিয়ে যাচ্ছেন আর সুদে মূলে তার ঋণ শোধ করতে হচ্ছে নিজের রক্ত দিয়ে। তাও যন্ত্রণাহীন হলেও বুঝতাম—চতুর্দিকে সারা দেহে এত ইঞ্জেকশন আমায় পাগলা করে তুলল। ঐ যে বললাম, ঐ রাজনৈতিক এবং প্রোমোটার দাদারা যদি জলনিকাশীর ব্যবস্থাটা নষ্ট করে না দিতেন তাহলে তো এত মশা জন্ম নিত না। আর ওই মশারাই তো আমার সাফল্যের প্রত্যক্ষ কারণ। কাজেই আমার সাফল্যে নেতা প্রোমোটারদের এই অবদানের জন্য আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম। বেঁচে থাকুক ওনাদের প্রোমোটারগিরি। আর তাছাড়া এটাই নাকি এখন এদেশে সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় শিল্প। আমার পাড়ার ছেলে-ছোকরারা তো, এখন যাকেই জিজ্ঞাসা করি, সবাই বলে প্রোমোটারী করছি, নাহলে, প্রোমোটারের কাছে হাত পাকাচ্ছি। খুব ভাল। ধনে-পুত্রে লক্ষ্মীলাভ হোক ওদের।
দাদা যে চীনা র্যাকেটটা এনে দিল সেটা দিয়ে তো মশা মারা যায়—প্লাগে ঢুকিয়ে চার্জ দিয়ে, ব্যস্, মশার গায়ে ঠেকালেই ‘পট’। সে ঊড়ন্ত মশা, ‘বসন্ত’ মশা, ছুটন্ত মশা, ঘুমন্ত মশা ডাইনে বাঁয়ে উপরে নীচে যেখানেই হোক লাগলেই ‘পট’, ব্যস ইহলীলা খতম ও ভূতলে পতন। শুধু মশা নয় মাছি, ছোট পোকা, বোলতা, মাকড়সা, মৌমাছি, এই সব যা কিছুই হোক, ঠেকালেই ‘পট’। আমিও ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠেই কোন ক্রমে দাঁত মেজেই নেমে পড়ি রণাঙ্গনে। ক্রমে ক্রমে চোখ হয়ে উঠল সতর্ক, রিফ্লেক্স বেড়ে গেল প্রচণ্ড। একটা মশাকেও ছাড়া নেই—কখনো ব্যাক ফুটে, কখনো ফ্রণ্ট ফুটে, কখনো ফোর হ্যান্ড কখনও ব্যাক হ্যান্ড, কখনও ওভারহেড আবার কখনও আন্ডারআরম, কখনও স্ম্যাশ্ কিংবা স্লো টাচ,কখনও এগিয়ে কখনও পেছিয়ে, সে কি মার, কি হাত পা চালানো—গোটা বাড়ি দৌড়ে বেড়াতে লাগলাম। গোটা বাড়ি আমার কাছে ব্যাডমিন্টন কোর্ট-এ পরিণত হল। কখনও বা সুকুমার রায়ের আবোলতাবোলের ছায়া ধরার কায়দায় ঘাপটি মেরে চুপি চুপি যাই এগিয়ে—গিয়েই ব্যস ‘পট’। একটা করে ‘পট’ হয় আর বিজয় গর্বে বুকটা ফুলে ওঠে। নিজেকে মনে হয় সিন্ধু কিংবা নেহাওয়াল, গোপীচাঁদ কি পাড়ুকোন। ততই বেড়ে ওঠে আমার বীর বিক্রমে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন।
আর এর ফলে আমার গিন্নী মশার তীব্র জ্বালা থেকে মুক্তি এবং এক সঙ্গে আমার ব্যায়াম করা নিয়ে খিচখিচ করা থেকে মুক্তি, সংসারের সব ব্যাপারে নাক গলানো থেকে মুক্তি এবং আরও আরও অনেক কিছু থেকে মুক্তি পেয়ে সকালেই দাঁত মাজার পরে টেবিলে চায়ের ধূমায়িত কাপটা রেখেই হাসি হাসি মুখে র্যাকেটটি এনে ধরিয়ে দেন আর আমিও সেই আদরের ধূমায়িত কাপ থেকে শক্তি সঞ্চয় করেই মাঠে নামি—‘পট’।
আমি নিজে যদিও কাউকে বলিনি, কিন্তু এরা সব কোথা থেকে খবর পায় কে জানে। আজকাল তো কাগজে ছাপার আগেই মিডিয়ার লোকজনেরা সব একেবারে ছিনে জোঁকের মত এসে হাজির হয়, ঠিক কাঁঠা্লের গন্ধে মাছির মত। অবশ্য আমার এই খবরটা ওরাই এনেছিল। তার পর থেকে তো বাড়িতে ভিড় একেবারে উপছে পড়ছে। ঐ যে মাধ্যমিকে, উচ্চমাধ্যমিকে যারা ফার্স্ট সেকেন্ড হয়, তারা জানার আগেই মিডিয়ার লোকজন সব গিয়ে হাজির। না হলে ওরা আর গর্ব করে বিজ্ঞাপন দেয়-—’ ---এগিয়ে থাকে এগিয়ে রাখে’। যদিও অতিথিদের চা দিতে দিতে গিন্নীর একেবারে নাভিশ্বাস ওঠার মত অবস্থা, তবুও এর মধ্যে যে প্রচ্ছন্ন গর্বটা ঝিলিক মারে মুখেচোখে সেটা কি আর আড়ে আড়ে লক্ষ্য করিনি! পাড়ার ছেলেরা, প্রতিবেশিরা সব মুহুর্মুহু আসছে যাচ্ছে—
আমি শুধু মনে মনে বাবাকে বলছি--’বাবাগো আর কটা দিন যদি থাকতে, সেঞ্চুরি তো প্রায় মেরেই এনেছিলে--আর কটা দিন নট আউট থাকলেই--'
হঠাৎ কানের পাশে পিন পিন করে একটু আওয়াজ হতেই প্রচণ্ড ক্ষিপ্রতার সংগে ঘুরিয়ে ব্যাট চালিয়েছি--”পট”---
(পরবাস-৭১, ৩০ জুন ২০১৮)