শপথ
থাকতেই পারি...
তুমি চাইলে আমি তেমন থেকেও যেতে পারি।
সব ঘরে যেমন রেখেছি নিজেকে, খর্ব করে বনসাই
কোণ ভরাতে আর শোভা বাড়াতে গৃহসজ্জার...
তেমনি করে কেটেছেঁটে মাপসই রয়েও যেতে পারি
আরো সহস্রবার।
কিন্তু আকাশ তোমার অনন্ত বুকে হেলান দিয়ে
যে পাইন হয়েছে একবার,
তোমার আলোয় মেলেছে ডানা,
তোমার বাতাসে ভাসিয়েছে পরাগ,
তোমার মিনারে জ্বালিয়েছে প্রদীপ,
আর নীল জ্যোৎস্নায় তুমুল ধারাস্নান -
আজ দু:সময় এসে যদি কড়া নাড়েই দরজায়,
আমার সেই অপার মুক্তির কসম,
আমি ঘাড়ও নোয়াবো না।
একা এসেছি...
একাই চলে যাব অসময়ে।
শবদেহ
শুধু একটু ছুঁয়ে থাকা বই তো নয়...
তাই নিয়ে এত ভয়?
এত দীর্ঘশ্বাস,
এত প্রলয়!
অনন্ত সেতুর হাতে হাত রেখে
শুয়ে থাকি আমি অতন্দ্রিতা।
কথাসাগরে আকন্ঠ অবগাহন...
খরস্রোতা হিমরাত্রি
শিয়রে জ্বলন্তঅক্ষর প্রেমের চিতা।
অখণ্ডমণ্ডলাকার ধরিত্রীর বুকে
ক্লান্ত প্রব্রজ্যার শেষ।
পথের প্রান্তদেশে
এঁকে দেয় ছায়াপুরুষ
কালের অঙ্গুলিনির্দেশ।
শবদেহ ছুঁয়ে থাকি।
কালরাত্রির শেষেও তো কিছু থাকে বাকি...
পূবের আকাশে বালার্ক,
সৃষ্টির বীজ, অবিনাশ নাভি...
ভস্ম তোলপাড় করেও একদিন খুঁজে পাব নাকি?
(পরবাস-৬৫, ডিসেম্বর ২০১৬)