বসতিতার উদ্ধত স্কন্ধে, পশ্চিমের রোদ —
পরিমিত কপাল জুড়ে অবাধ্য চুলের রাজত্ব;
চোখের তীব্র গভীরতায় নির্জন বিষন্নতা।
স্বপ্নে, বাস্তবে খনন করে চলে আমাকে — অবিরত।
তার চিবুকের উদাসীন হাসি, আকাশে আবিরের আবেশ ছড়িয়ে
রামধনু বিকেলে, আলতো ফুলের আদরের মত ছোঁয়ায়—
জমাট আঁধারের নিখাদ প্রহরা থেকে
আমায় নিয়ে চলে প্রজাপতির আনন্দে — দূর ছায়াপথে।
আমার কষ্টগুলো পড়ে থাকে পিছনে —
নিশ্ছিদ্র ঘেরাটোপে বদ্ধ হবার আগেই
নরম ভোরের পাখি হয়েই ... ফুড়ুৎ
তার বুকের আড়াল কোটরে
নিভৃত বাসার স্বপ্ন বুনি।
এভাবেই কোনদিন...চাবিটা হারিয়েছিলো ঘরেই, তবু
খুঁজতে খুঁজতে কখন বাইরে এলাম —
গভীরে কে যেন বলল,
এভাবেও একদিন উধাও হওয়া যায় —
তার আগেই,
শৈশবের কৌটোয় গুলির রঙিন সঞ্চয়...
রোজকার জানাচেনা শ্যাওলা দেওয়াল,
নিশ্চিন্ত আমলকি-ডালে টুনটুনির ঘর,
কুয়োতলায় গিঁটবাঁধা বালতি উপুড়...
চুপ চুপ দুপুর রোদে কড়িকাঠে ঘুলঘুলির ছায়া,
বাসনে ঘনিষ্ঠ গেরস্থালি আওয়াজ,
এমনকি ভোর-রাতের বালিসে ছড়ানো সোহাগের দাগ...
সবকিছু এমনটাই স্থিরচিত্রে নিখুঁত বন্দি রেখে,
টান আর ব্যথাগুলো আলগা করতে হয়।
তাই,
উজানে যাবার আগে নিঃশব্দে,
চাবি খোঁজার সযত্ন ইচ্ছে,
ঘূর্ণিতে হেলায় ভাসিয়ে যাই।
এবং আমিশব্দগুলো মাথার মধ্যে,
জব্দ হয়ে সঙ্গী বাড়ায়—
ভাবটা তখন ইচ্ছে-ফড়িং,
তিড়িং বিড়িং আকাশ ছাড়ায় ।
আমি তখন আঁচড় দিয়ে
বুকের উপর উল্কি আঁকি—
ভাব এলো না ছন্দ গেল ?
হয়তো সবাই দিচ্ছে ফাঁকি।
রাজ্য গেলো রাজাও গেলো —
আর যা যাচ্ছে হয়তো দামি,
রইলো তবু হাতের যে পাঁচ,
থাকবে সেটা সেটাই 'আমি'।
(পরবাস-৬৪, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬)