Parabaas Moviestore




Parabaas Musicstore




Subscribe to Magazines





পরবাসে
অনুষ্টুপ শেঠের

লেখা


ISSN 1563-8685




গুচ্ছকবিতা

বদল

আধেক জীবন পেরিয়ে গেল, দরকারি, অদরকারি।
কি করি যদি না পালটাই, কী হবে যদি না-ই পারি?

ভুলে ছিলাম। বেশ ছিলাম। নিরীহভাবে।
কেই বা এল, কেই বা যাবে
এসবে মাথা ঘামাতে নেই,
দিন বদলায় বদলাক দিন,
তার মানে কি সকল কিছু বদলাবেই?

একটা দুটো কথার ভুল। শব্দ কিছু মুখচেনা।
স্তব্ধতাও কিছু বলে। মনে তো হয়। কিংবা না?

ভীরু মানুষ, এত মোড়কে নিজেকে মোড়ো!
ফর্মালিটি… অন্যদের কাছে কোরো।
আধেক জীবন পেরিয়ে গেল ঘরদুয়োর—

কি হবে তবে, এত আগুন, বৃষ্টি, ঝড়?


অপেক্ষা

আর কথা বোলো না। অনেক তো বলা শোনা হল,
মাথা নত কর এবার, এখনো আরো কতই
ঘাসফুল তুলে নেওয়া বাকি
আরো কত বর্ণিল ঝরাপাতা...

ছবি আঁকো, যেমন সহজে, সকালের সূর্য আঁকে
মেঘে মেঘে, ঢেউ থেকে ঢেউয়ে—
আঙুলে হৃদয় নাও, সামনে উন্মুক্ত ক্যানভাস
রং লেখো। লেখো অপেক্ষার কথা।

আর কিছু বোলো না। ভাবনাগুলো পাশে রাখো কিছুক্ষণ।
সময় তো থেমেই যায়, জানো না, তুমি চোখ তুললে?

মাথা নত কর এখন। শিশিরে সিক্ত মাঠ, পথচলা
পথ চেয়ে আছে — নিঃশ্বাসে পেরোবে বলে সহস্র যোজন!


বাঁচা

এক নিবিড় বেঁচে ওঠায় কেঁপে যায়
দিন, রাত্রি, অবসরহীন কাজ, অকাজ
এক নিবিড় বেঁচে ওঠায় ঝরতে থাকে
মুখোশ পরা সভ্যসাজ…

নিজের সাথে নিজের কাছে মুখোমুখি
তবু আবেগ অজানা লাগে, চিনি না তা
শঙ্কা আশার দোলাচলে, চিনি খালি
চোখে চোখের স্নিগ্ধতা...

ভয়ে পালাই বারে বারে। বাড়ানো হাত থমকে যায়
কাকে ছোঁব, কাকে — যখন হাতে শুধুই শূন্য ওঠে!
তারপরেও, অত্যধিক তীব্র কোন সুখপাখি
বাসা বানায় হাতের পাতায়, দুই ঠোঁটে।

নিজেকে ভেঙে গড়তে গিয়ে দ্বিধা যত
ধুয়ে মুছে, মিলিয়ে যেতে সময় লাগে,
নিজের সাথে যখন হই মুখোমুখি
দেখি আকাশ আগুন ঢালে অস্তরাগে।

মুহূর্তরা
ফিরে আসে আচমকাই। ফিরে আসে যা ইচ্ছা, তাই।
এই বাঁচা
এক জীবনে কুলোবে না রে। আরেকটা চাই। আরেকটা চাই!


ফেরা

ঘরে ফিরতে হবে বলে
ডানা গুছিয়ে, বৃক্ষলতাফল ছেড়ে
একাকী বিষণ্ণ রোদে হেঁটে যায় পাখি

তখনো আঁধার নামেনি। তখনো সোনাঝরা রোদ
ছুঁয়ে ছুঁয়ে ডাক দিচ্ছে অরণ্যস্বপ্ন
তখনো বেলা বাকি ছিল। ছিল, কিন্তু
হয় না। হয় না মেঘমুক্ত ওড়া।

ঘরে আসতে হবে। বসতে হবে প্রসঙ্গপ্রাচীরে।
ডানায় হিমরাত্রি।
                        পাখি, শিকল খুলেও, ফেরে।


অন্যরকম

একটু ঝড় বয়েছে
কালকে রাতে,
আজকে আবার শান্ত বাতাস—

একটু বিশ্রী ছিল,
মাথার বালিশ
মনখারাপে মুখ লুকোনো,

তাতে আর কার কী হবে!
ছন্দপতন
হয় না এত অল্পস্বল্পে।
প্রশ্নটা তাও থেকেই যাচ্ছে
বৃষ্টিরাতের নিঝুম গল্পে,

একটু অন্যরকম
এখন তবে বাসায় ফেরা,
অন্যরকম, হয়তো আমি-ই।



(পরবাস-৬২, মার্চ - মে, ২০১৬)