সম্পর্ককাহিনী
স্টেশন থেকে স্টেশনে ছুঁয়ে যাচ্ছে ট্রেন
ওঠানামা করছে ছোটো বড়ো কাহিনীরা
এই স্টেশনের মেজোকাহিনী
ওই স্টেশনে নেমে বলছে – কই রে, ছোটো?
ছোটো হয়ত অন্য প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে
তখন মুহুর্মুহু বড়োর অপেক্ষায় হা পিত্যেশ
এমনিভাবে এখান থেকে ওখানে
এ গল্প থেকে ও গল্পে
এ নদী থেকে ও নদী
সমুদ্র পর্বত ধানক্ষেত
এ জানলা থেকে ও জানলা
এ নারী থেকে ও নারী
পুরুষ থেকে পুরুষে
নকশীকাঁথার শরীরের মানচিত্রে
অনর্গল এফোঁড় ওফোঁড় কাটাকুটোচ্ছে
অক্ষর, ড্যাশ, রেফ, র–এর ফুটকি
দুটো শব্দের মাঝখানের নিঃশ্বাসউঠোন –
কবিতা ছুটছে অল্পপ্রাণ থেকে মহাপ্রাণে
আর প্রাণ ছুটছে ইতিকাল থেকে ভাবিকালে
এর পরেও তুমি বলবে –
সম্পর্কের হাত–পা নেই? শিকড়বাকড় নেই?
সম্পর্কগণিত
সমস্ত সম্পর্কের মধ্যে গা ছমছম গণিত সন্ত্রাস
যোগ-গুণ-ব্র্যাকেট অস্ত্রেরা বোধ–অনুভূতি রাশিদের
চারপাশে সারাক্ষণ জায়গা বদল করে দৌড়ে যাচ্ছে
সমান সমান চিহ্ন–সীমান্তে শান্তি থাকে যেন -
সকালে বিয়োগ-অস্ত্র কাঁধে নিয়ে বেরলো যে রাশি
দুপুরে চানের আগে পুকুরের পাড়ে তাকে দেখি
মন দিয়ে ভাগ-অস্ত্রে লেগে থাকা রক্ত ধুচ্ছে বসে
রাশিরা গোপন পথে সীমান্ত পারাপার করে
যে যার মতোন মাটি কামড়ে পড়ে থাকে চিহ্ন-সেনা
কার কতো চিহ্ন আছে – উইকিপিডিয়া লিখে রাখে
বীজগণিতের বীজে রাশি ঢাকা অক্ষর পোশাকে
এই পুরো ব্যাপারটায় মানুষের কোনো স্থান নেই
মানুষে মানুষে আর কাঁধে কাঁধ সম্পর্কটা নিরাপদ নয়
দু’পাশে প্রহরী চিহ্ন ল্যাপটপ দূরত্বই বেশি স্বাস্থ্যকর
বারুদ আর কার্তুজে আপাতত পৃথিবীতে শান্তি অটুট
(পরবাস-৬১, ডিসেম্বর ২০১৫)